যুগান্তের কবি
(বিশ্বনন্দিত কবিশ্রেষ্ঠ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম দিবসে তাঁর লেখা কবিতা`য় তাঁকে শ্রদ্ধার্ঘ )
“অলস সময়-ধারা বেয়ে
মন চলে শূন্য-পানে চেয়ে,
কত কাল দলে-দলে গেছে কত লোকে
সুদীর্ঘ অতীতে;
জয়োদ্ধত প্রবল গতিতে ।
শূন্যপথে চাই,
আজ তার কোনো চিহ্ন নাই।”
“মাটির পৃথিবী-পানে আঁখি মেলি যবে,
নানা পথে নানা দলে দলে,
যুগ-যুগান্তর হতে মানুষের নিত্য প্রয়োজনে,
ওরা মাঠে মাঠে, বীজ বোনে, পাকা ধান কাটে,
এই ভারতের মহামানবের সাগরতীরে।”
“হেথা একদিন বিরামবিহীন
চাষি খেতে চালাইছে হাল,
তাঁতি বসে তাঁত বোনে, জেলে ফেলে জাল-
বহুদূর প্রসারিত এদের বিচিত্র কর্মভার
তারি পরে ভর দিয়ে চলিতেছে সমস্ত সংসার।”
“আজও বাংলার ঘরে ঘরে,
অঙ্গ-বঙ্গ-কলিঙ্গের সমুদ্র-নদীর ঘাটে ঘাটে,
জীবনে মরণে,নানা পথে নানা দল-দলে,
ওরা চিরকাল, টানে দাঁড়, ধরে থাকে হাল,
মন্দ্রিত করিয়া তোলে জীবনের মহামন্ত্রধ্বনি।”
যুগান্তর পর -----
“এল ওরা লোহার হাতকড়ি নিয়ে
নখ যাদের তীক্ষ্ণ তোমার নেকড়ের চেয়ে,
এল মানুষ-ধরার দল
গর্বে যারা অন্ধ তোমার সূর্যহারা অরণ্যের চেয়ে।
সভ্যের বর্বর লোভ
নগ্ন করল আপন নির্লজ্জ অমানুষতা।
স্ফীতকায় অপমান
অক্ষমের বক্ষ হতে রক্ত শুষি করিতেছে পান
লক্ষমুখ দিয়া! বেদনারে করিতেছে পরিহাস
স্বার্থোদ্ধত অবিচার!”
“সঙ্কুচিত ভীত ক্রীতদাস, মূক সবে-ম্লানমুখে,
দাঁড়ায়ে নতশির, মানবেরে নাহি দেয় দোষ,
যতক্ষণ থাকে প্রাণ তার,—
শুধু দুটি অন্ন খুঁটি কোন মতে কষ্টক্লিষ্ট প্রাণ
রেখে দেয় বাঁচাইয়া!
সে অন্ন যখন, কেহ কাড়ে,
সে প্রাণে আঘাত দেয় গর্ব্বাদ্ধ নিষ্ঠুর অত্যাচারে,
নাহি জানে কার দ্বারে দাঁড়াইবে বিচারের আশে।”
হে কবীন্দ্র,
তুমি বলেছিলে,
“এই সব মূঢ় ম্লান মূক মুখে
দিতে হবে ভাষা, এই সব শ্রান্ত শুষ্ক ভগ্ন বুকে
ধ্বনিয়া তুলিতে হবে আশা;
অন্ন চাই, প্রাণ চাই, আলো চাই, চাই মুক্ত বায়ু,
চাই বল, চাই স্বাস্থ্য, আনন্দ-উজ্জ্বল পরমায়ু,
সাহসবিস্তৃত বক্ষপট!
আজও কর্মজীবী-শ্রমজীবী মানুষের
শোণিতস্নাত ভারততীর্থে
লক্ষ গ্রাম হতাশায়-আশাহীনতায় নিস্তব্ধ।
নগ্ন করি “আপন নির্লজ্জ অমানুষতা
মিথ্যা দেনার খতে,
রাজার হস্ত করে সমস্ত, কাঙালের ধন চুরি।”
“আজ যখন পশ্চিমদিগন্তে
প্রদোষকাল ঝঞ্ঝাবাতাসে রুদ্ধশ্বাস,
যখন গুপ্তগহ্বর থেকে পশুরা বেরিয়ে এল,
অশুভ ধ্বনিতে ঘোষণা করল দিনের অন্তিমকাল,
চির নূতনের দিল ডাক পঁচিশে বৈশাখ”
এ তমসাবৃত সংকটে
“কৃষাণের জীবনের শরিক যে জন,
কর্মে ও কথায় সত্য আত্মীয়তা করেছে অর্জন,
যে আছে মাটির কাছাকাছি,
সে কবির বাণী-লাগি কান পেতে আছি।
এসো যুগান্তরের কবি,এসো কবি অখ্যাতজনের
নির্বাক মনের।”
জাগাও দেশ আরবার।
আর কত কাল রব প্রতীক্ষায়..........?
রচনাকাল...০৮/০৫/২০২৪
বাংলা ২৫শে বৈশাখ ১৪৩১
“অলস সময়-ধারা বেয়ে
মন চলে শূন্য-পানে চেয়ে,
কত কাল দলে-দলে গেছে কত লোকে
সুদীর্ঘ অতীতে;
জয়োদ্ধত প্রবল গতিতে ।
শূন্যপথে চাই,
আজ তার কোনো চিহ্ন নাই।”
“মাটির পৃথিবী-পানে আঁখি মেলি যবে,
নানা পথে নানা দলে দলে,
যুগ-যুগান্তর হতে মানুষের নিত্য প্রয়োজনে,
ওরা মাঠে মাঠে, বীজ বোনে, পাকা ধান কাটে,
এই ভারতের মহামানবের সাগরতীরে।”
“হেথা একদিন বিরামবিহীন
চাষি খেতে চালাইছে হাল,
তাঁতি বসে তাঁত বোনে, জেলে ফেলে জাল-
বহুদূর প্রসারিত এদের বিচিত্র কর্মভার
তারি পরে ভর দিয়ে চলিতেছে সমস্ত সংসার।”
“আজও বাংলার ঘরে ঘরে,
অঙ্গ-বঙ্গ-কলিঙ্গের সমুদ্র-নদীর ঘাটে ঘাটে,
জীবনে মরণে,নানা পথে নানা দল-দলে,
ওরা চিরকাল, টানে দাঁড়, ধরে থাকে হাল,
মন্দ্রিত করিয়া তোলে জীবনের মহামন্ত্রধ্বনি।”
যুগান্তর পর -----
“এল ওরা লোহার হাতকড়ি নিয়ে
নখ যাদের তীক্ষ্ণ তোমার নেকড়ের চেয়ে,
এল মানুষ-ধরার দল
গর্বে যারা অন্ধ তোমার সূর্যহারা অরণ্যের চেয়ে।
সভ্যের বর্বর লোভ
নগ্ন করল আপন নির্লজ্জ অমানুষতা।
স্ফীতকায় অপমান
অক্ষমের বক্ষ হতে রক্ত শুষি করিতেছে পান
লক্ষমুখ দিয়া! বেদনারে করিতেছে পরিহাস
স্বার্থোদ্ধত অবিচার!”
“সঙ্কুচিত ভীত ক্রীতদাস, মূক সবে-ম্লানমুখে,
দাঁড়ায়ে নতশির, মানবেরে নাহি দেয় দোষ,
যতক্ষণ থাকে প্রাণ তার,—
শুধু দুটি অন্ন খুঁটি কোন মতে কষ্টক্লিষ্ট প্রাণ
রেখে দেয় বাঁচাইয়া!
সে অন্ন যখন, কেহ কাড়ে,
সে প্রাণে আঘাত দেয় গর্ব্বাদ্ধ নিষ্ঠুর অত্যাচারে,
নাহি জানে কার দ্বারে দাঁড়াইবে বিচারের আশে।”
হে কবীন্দ্র,
তুমি বলেছিলে,
“এই সব মূঢ় ম্লান মূক মুখে
দিতে হবে ভাষা, এই সব শ্রান্ত শুষ্ক ভগ্ন বুকে
ধ্বনিয়া তুলিতে হবে আশা;
অন্ন চাই, প্রাণ চাই, আলো চাই, চাই মুক্ত বায়ু,
চাই বল, চাই স্বাস্থ্য, আনন্দ-উজ্জ্বল পরমায়ু,
সাহসবিস্তৃত বক্ষপট!
আজও কর্মজীবী-শ্রমজীবী মানুষের
শোণিতস্নাত ভারততীর্থে
লক্ষ গ্রাম হতাশায়-আশাহীনতায় নিস্তব্ধ।
নগ্ন করি “আপন নির্লজ্জ অমানুষতা
মিথ্যা দেনার খতে,
রাজার হস্ত করে সমস্ত, কাঙালের ধন চুরি।”
“আজ যখন পশ্চিমদিগন্তে
প্রদোষকাল ঝঞ্ঝাবাতাসে রুদ্ধশ্বাস,
যখন গুপ্তগহ্বর থেকে পশুরা বেরিয়ে এল,
অশুভ ধ্বনিতে ঘোষণা করল দিনের অন্তিমকাল,
চির নূতনের দিল ডাক পঁচিশে বৈশাখ”
এ তমসাবৃত সংকটে
“কৃষাণের জীবনের শরিক যে জন,
কর্মে ও কথায় সত্য আত্মীয়তা করেছে অর্জন,
যে আছে মাটির কাছাকাছি,
সে কবির বাণী-লাগি কান পেতে আছি।
এসো যুগান্তরের কবি,এসো কবি অখ্যাতজনের
নির্বাক মনের।”
জাগাও দেশ আরবার।
আর কত কাল রব প্রতীক্ষায়..........?
রচনাকাল...০৮/০৫/২০২৪
বাংলা ২৫শে বৈশাখ ১৪৩১
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ফয়জুল মহী ১০/০৫/২০২৪অসাধারণ সৃজনশীলতা প্রিয়