বিহবল
প্রাথমিক ধারনা : গল্পের প্রধান চরিত্রের নাম শুভ। শুভ’র ব্রেইন টিস্যু হেমারাইজড বা ড্যামেজ হয়েছে। অতিশিঘ্রিই অপারেশন হওয়ার কথা। বন্ধুরা সবাই এই ব্যাপারে জানে। কিন্তু কবে অপারেশন হবে এই ব্যাপারে কেউই জানে না।
*****
ফেসবুকে চ্যাট করতেছে শুভ। অনেকের সাথেই।
রিমু : তোমার না আজ গল্প পোষ্ট করার কথা ছিল?
শুভ : আমি তো এখন হাসপাতালে। দেখেও গেলে না একবার। শুধু নামের বন্ধুই হয়েছিলে। ও হো! বন্ধু তো না। বান্ধবী।
রিমু : হাসপাতালে তুমি ! কি অবস্থা এখন?
শুভ : প্রচূর কষ্ট হচ্ছে! অপারেশন করবে কিছুক্ষন পর।
*****
পুষ্প : কি রে শুভ, কেমন আছিস?
শুভ : তুই কেমন আছিস?
পুষ্প : সোজা ভাবে আন্সার দিতে পারিস না?
শুভ : পারি না।
*****
রিমু : তোমার সাথে কে কে আছে? তোমার বাবা মা কি সাথে আছে?
শুভ : এত ছোট খাটো অপারেশনে বাবা মা থাকবে কেন!
*****
পুষ্প : ক্যান? পারিস না ক্যান?
শুভ : কারন আমার মাথায় রক্ত আটকে গিয়ে দূষিত হয়ে গেছে। ডাক্তার আগে দূষণ মুক্তের কাজ করুক তারপর সোজা সোজা আন্সার দেব। এবার ভাগ।
*****
হিমু : ভাই, আপনি কোথায়?
শুভ : বেডে।
হিমু : শুনলাম আপনি বলে হাসপাতালে। মুরি আপু বললো, আজ নাকি আপনার অপারেশন?
শুভ : ঠিকই শুনেছ।
হিমু : কোন হাসপাতালে আছেন, বলেন?
শুভ : আসবা নাকি?
হিমু : আপনি লোক তো ভাল না। যাবো না মানে? অবশ্যই যাবো। আমরা কি আপনার মত নাকি? ঠিকানা দেন।
*****
পুষ্প : কি শুনছি এগুলো?
শুভ : কি?
পুষ্প : তোর মাথার কি হইছে?
শুভ : কাকে খেয়ে ফেলছে।
পুষ্প : ফাজলামো করোস ক্যান। তাহলে কথা বলছিস কিভাবে?
শুভ : কথা বলতেছি আবার কখন! আমি তো হাত দিয়ে টেক্সট পাঠাচ্ছি।
পুষ্প : উফ ! তুই একটা বান্দর, ছাগল, শয়তান…… আর নক করবি না আমায়।
শুভ : আমি আবার কখন নক করলাম। তুই-ই তো আগে আগে করিস =D
পুষ্প : কুত্তা। যা ভাগ।
*****
রিমু : এটা ছোট!! তোমার ফোন নাম্বার দাও। কথা বলবো।
শুভ : মোবাইল তো কিছুক্ষন পর ডাক্তার নিয়ে নেবে।
রিমু : ঠিক আছে। তাহলে বাসায় আসার পরে তো দিবা?
শুভ : ফেবুতে জানাবো। টেনশান ফ্রি এর জন্য ফেবুতে আছি।
রিমু : তাও নাম্বার দিবা না?
শুভ : কি করবা?
রিমু : তোমার মাথা করবো। কি আর করবো। যোগাযোগ করবো।
শুভ : মারা তো আর যাচ্ছি না। অপারেশনের পরে নাম্বার দেব। ঠিক আছে?
রিমু : ঠিক আছে।
২৪ ঘন্টা পর……
রিমু : মিথ্যা কথা বললে কেন কাল?
শুভ : কখন এবং কি?
রিমু : ঐ যে, অপারেশনের কথা?
শুভ : হয়েছে। সাকসেসফুল।
রিমু : মিথ্যা কথা।
শুভ : সত্যি কথা। তুমি তো আমাকে পঁচাতে পারো না। চাইলে গ্রুপে এই কথাটা নিয়ে পঁচাতে পারো =D
রিমু : দরকার নাই। আমি রাগ করলাম তোমার উপর। আমি অপারেশনের ব্যাপার নিয়ে জ্বালাইতেছি দেখে এই মিথ্যা বললা? ঠিক আছে
শুভ : সত্যি কথা কেউ বিশ্বাস করে না। আর সত্যি কথাই কমু না
রিমু : কি অপারেশন হইছে সেটা বলো?
শুভ : মাথার।
রিমু : ওও! কতক্ষন লাগছিলো?
শুভ : ১৫ মিনিট।
রিমু : এত কম!!
শুভ : প্রেফেশনাল স্পেশালিষ্ট বলে কথা।
রিমু : তাহলে বড় অপারেশন হয় নাই?
শুভ : অনেক বড় অপারেশন হইছে।
রিমু : আমি তো বুঝি না?
শুভ : কি?
রিমু : কোনটা বড় আর, কোনটা ছোট?
শুভ : বড় কোনটা?
রিমু : তোমাকে বোঝানো যাবে না। তুমি বুঝেও বুঝতে চাও না।
শুভ : ডাক্তার পরিক্ষা করে দেখেই কি বলেছিল জানো?
রিমু : কি?
শুভ : ব্যাটা বলে, মাথাটা কেটে ফেলে দাও। শালা, নিকশও এই কথাই বলে। শালারা এক জাত যে।
রিমু : বুঝতেছি না, কে ইয়ার্কি মারছে। তুমি না, নিকশ!
শুভ : আমিও বুঝি নাই। মাথার মাঝখান দিয়ে চিড়ে ফেলেছে। উহ ! কি ব্যাথা।
রিমু : মাইর খাবা উলটা পালটা কথা বললে।
শুভ : সত্যি কথা বলছি। এই কথপোকথনের উপরেই একটা গল্প লিখবো। হুহ।
রিমু : ওয়াও ! তা গল্পটা কোন বছর রিলিজ হচ্ছে?
শুভ : মজা করো, নাহ?
রিমু : তোমার গল্প তো এই বছর লিখলে পরের পরের বুছর প্রকাশ করো তাই বললাম =D
শুভ : নাহ। এটা আজই দেব।
রিমু : ঠিক আছে। অপেক্ষায় থাকলাম
শুভ : হুম।
৩ ঘন্টা পর……
পুষ্প : কুত্তা। তুই আসলেই কুত্তা।
শুভ :
পুষ্প : এই তোর অপারেশন?
*****
হিমু : ভাই, সিরাম মজা পাইলাম =D
শুভ : =D
*****
রিমু : ঐ শালা, তোকে আমি এই মুহূর্তে আনফ্রেন্ড করে দিচ্ছি। আমার সাথে মজা লস।
শুভ : সেটা কিভাবে সম্ভব
রিমু : চোপ। এই তোর মাথার অপারেশন? ফাজলামি করার জায়গা পাস না?
শুভ : অবশ্যই এটা মাথার অপারেশন। তবে, এখন থেকে কবি নির্বিকার। কারন, মুরি আপুর টেক্সট এ শালা শব্দটা দেখতে খারাপ লাগছে না! মুখে শুনতে পেলে, কবি মুগ্ধতায় অজ্ঞান হয়ে যেত =D
রিমু : ধ্যাত………
পরিশেষ : দুই ঘন্টা আগে যে স্ট্যাটাস বা গল্প পড়ে অনেকে আনন্দিত হয়েছে আবার অনেকে ক্ষেপে গেছে সেই গল্পের শেষে যা ছিল;
হাসপাতাল থেকে এই মাত্র রিলিজ নিয়ে বের হয়ে আসলাম। মাথায় ব্যাথা করলেও মনটায় কোন ব্যাথা নেই। কে বলে, ভার্চূয়াল লাইফের সাথে রিয়েল লাইফের কোন সম্পর্ক নাই। ভার্চূয়াল লাইফের কেউ রিয়েল লাইফে ছাপ ফেলতে পারে না। পারে। অনেকেই পারে। তা না হলে সামান্য আঙ্গুলের মাথায় নখের ভিতরে একটা কাঁটা ফুটেছে সেটা বের করার আগে এত খোঁজ, এত উদ্বেগ নিয়ে কেউ চেয়ে থাকতো না। সত্যি বলছি, আমি তোদের এমন ব্যাবহারে সত্যিই মুগ্ধ। চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে আসছে। তোরা কান খুলে শোন, আঙ্গুলের মাথা যখন চিঁড়লো তখন একটুও চোখ দিয়ে পানি বের হয় নাই অথচ এখন তোদের কথা ভেবে নিজের অজান্তেই চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে আসছে।
ভয় হয়, আমিও কি পারবো তোদের দুঃসময়ে কাছে থাকতে?
উৎসর্গ : আমার ফেসবুক ফ্রেন্ডদের নামে।
*****
ফেসবুকে চ্যাট করতেছে শুভ। অনেকের সাথেই।
রিমু : তোমার না আজ গল্প পোষ্ট করার কথা ছিল?
শুভ : আমি তো এখন হাসপাতালে। দেখেও গেলে না একবার। শুধু নামের বন্ধুই হয়েছিলে। ও হো! বন্ধু তো না। বান্ধবী।
রিমু : হাসপাতালে তুমি ! কি অবস্থা এখন?
শুভ : প্রচূর কষ্ট হচ্ছে! অপারেশন করবে কিছুক্ষন পর।
*****
পুষ্প : কি রে শুভ, কেমন আছিস?
শুভ : তুই কেমন আছিস?
পুষ্প : সোজা ভাবে আন্সার দিতে পারিস না?
শুভ : পারি না।
*****
রিমু : তোমার সাথে কে কে আছে? তোমার বাবা মা কি সাথে আছে?
শুভ : এত ছোট খাটো অপারেশনে বাবা মা থাকবে কেন!
*****
পুষ্প : ক্যান? পারিস না ক্যান?
শুভ : কারন আমার মাথায় রক্ত আটকে গিয়ে দূষিত হয়ে গেছে। ডাক্তার আগে দূষণ মুক্তের কাজ করুক তারপর সোজা সোজা আন্সার দেব। এবার ভাগ।
*****
হিমু : ভাই, আপনি কোথায়?
শুভ : বেডে।
হিমু : শুনলাম আপনি বলে হাসপাতালে। মুরি আপু বললো, আজ নাকি আপনার অপারেশন?
শুভ : ঠিকই শুনেছ।
হিমু : কোন হাসপাতালে আছেন, বলেন?
শুভ : আসবা নাকি?
হিমু : আপনি লোক তো ভাল না। যাবো না মানে? অবশ্যই যাবো। আমরা কি আপনার মত নাকি? ঠিকানা দেন।
*****
পুষ্প : কি শুনছি এগুলো?
শুভ : কি?
পুষ্প : তোর মাথার কি হইছে?
শুভ : কাকে খেয়ে ফেলছে।
পুষ্প : ফাজলামো করোস ক্যান। তাহলে কথা বলছিস কিভাবে?
শুভ : কথা বলতেছি আবার কখন! আমি তো হাত দিয়ে টেক্সট পাঠাচ্ছি।
পুষ্প : উফ ! তুই একটা বান্দর, ছাগল, শয়তান…… আর নক করবি না আমায়।
শুভ : আমি আবার কখন নক করলাম। তুই-ই তো আগে আগে করিস =D
পুষ্প : কুত্তা। যা ভাগ।
*****
রিমু : এটা ছোট!! তোমার ফোন নাম্বার দাও। কথা বলবো।
শুভ : মোবাইল তো কিছুক্ষন পর ডাক্তার নিয়ে নেবে।
রিমু : ঠিক আছে। তাহলে বাসায় আসার পরে তো দিবা?
শুভ : ফেবুতে জানাবো। টেনশান ফ্রি এর জন্য ফেবুতে আছি।
রিমু : তাও নাম্বার দিবা না?
শুভ : কি করবা?
রিমু : তোমার মাথা করবো। কি আর করবো। যোগাযোগ করবো।
শুভ : মারা তো আর যাচ্ছি না। অপারেশনের পরে নাম্বার দেব। ঠিক আছে?
রিমু : ঠিক আছে।
২৪ ঘন্টা পর……
রিমু : মিথ্যা কথা বললে কেন কাল?
শুভ : কখন এবং কি?
রিমু : ঐ যে, অপারেশনের কথা?
শুভ : হয়েছে। সাকসেসফুল।
রিমু : মিথ্যা কথা।
শুভ : সত্যি কথা। তুমি তো আমাকে পঁচাতে পারো না। চাইলে গ্রুপে এই কথাটা নিয়ে পঁচাতে পারো =D
রিমু : দরকার নাই। আমি রাগ করলাম তোমার উপর। আমি অপারেশনের ব্যাপার নিয়ে জ্বালাইতেছি দেখে এই মিথ্যা বললা? ঠিক আছে
শুভ : সত্যি কথা কেউ বিশ্বাস করে না। আর সত্যি কথাই কমু না
রিমু : কি অপারেশন হইছে সেটা বলো?
শুভ : মাথার।
রিমু : ওও! কতক্ষন লাগছিলো?
শুভ : ১৫ মিনিট।
রিমু : এত কম!!
শুভ : প্রেফেশনাল স্পেশালিষ্ট বলে কথা।
রিমু : তাহলে বড় অপারেশন হয় নাই?
শুভ : অনেক বড় অপারেশন হইছে।
রিমু : আমি তো বুঝি না?
শুভ : কি?
রিমু : কোনটা বড় আর, কোনটা ছোট?
শুভ : বড় কোনটা?
রিমু : তোমাকে বোঝানো যাবে না। তুমি বুঝেও বুঝতে চাও না।
শুভ : ডাক্তার পরিক্ষা করে দেখেই কি বলেছিল জানো?
রিমু : কি?
শুভ : ব্যাটা বলে, মাথাটা কেটে ফেলে দাও। শালা, নিকশও এই কথাই বলে। শালারা এক জাত যে।
রিমু : বুঝতেছি না, কে ইয়ার্কি মারছে। তুমি না, নিকশ!
শুভ : আমিও বুঝি নাই। মাথার মাঝখান দিয়ে চিড়ে ফেলেছে। উহ ! কি ব্যাথা।
রিমু : মাইর খাবা উলটা পালটা কথা বললে।
শুভ : সত্যি কথা বলছি। এই কথপোকথনের উপরেই একটা গল্প লিখবো। হুহ।
রিমু : ওয়াও ! তা গল্পটা কোন বছর রিলিজ হচ্ছে?
শুভ : মজা করো, নাহ?
রিমু : তোমার গল্প তো এই বছর লিখলে পরের পরের বুছর প্রকাশ করো তাই বললাম =D
শুভ : নাহ। এটা আজই দেব।
রিমু : ঠিক আছে। অপেক্ষায় থাকলাম
শুভ : হুম।
৩ ঘন্টা পর……
পুষ্প : কুত্তা। তুই আসলেই কুত্তা।
শুভ :
পুষ্প : এই তোর অপারেশন?
*****
হিমু : ভাই, সিরাম মজা পাইলাম =D
শুভ : =D
*****
রিমু : ঐ শালা, তোকে আমি এই মুহূর্তে আনফ্রেন্ড করে দিচ্ছি। আমার সাথে মজা লস।
শুভ : সেটা কিভাবে সম্ভব
রিমু : চোপ। এই তোর মাথার অপারেশন? ফাজলামি করার জায়গা পাস না?
শুভ : অবশ্যই এটা মাথার অপারেশন। তবে, এখন থেকে কবি নির্বিকার। কারন, মুরি আপুর টেক্সট এ শালা শব্দটা দেখতে খারাপ লাগছে না! মুখে শুনতে পেলে, কবি মুগ্ধতায় অজ্ঞান হয়ে যেত =D
রিমু : ধ্যাত………
পরিশেষ : দুই ঘন্টা আগে যে স্ট্যাটাস বা গল্প পড়ে অনেকে আনন্দিত হয়েছে আবার অনেকে ক্ষেপে গেছে সেই গল্পের শেষে যা ছিল;
হাসপাতাল থেকে এই মাত্র রিলিজ নিয়ে বের হয়ে আসলাম। মাথায় ব্যাথা করলেও মনটায় কোন ব্যাথা নেই। কে বলে, ভার্চূয়াল লাইফের সাথে রিয়েল লাইফের কোন সম্পর্ক নাই। ভার্চূয়াল লাইফের কেউ রিয়েল লাইফে ছাপ ফেলতে পারে না। পারে। অনেকেই পারে। তা না হলে সামান্য আঙ্গুলের মাথায় নখের ভিতরে একটা কাঁটা ফুটেছে সেটা বের করার আগে এত খোঁজ, এত উদ্বেগ নিয়ে কেউ চেয়ে থাকতো না। সত্যি বলছি, আমি তোদের এমন ব্যাবহারে সত্যিই মুগ্ধ। চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে আসছে। তোরা কান খুলে শোন, আঙ্গুলের মাথা যখন চিঁড়লো তখন একটুও চোখ দিয়ে পানি বের হয় নাই অথচ এখন তোদের কথা ভেবে নিজের অজান্তেই চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে আসছে।
ভয় হয়, আমিও কি পারবো তোদের দুঃসময়ে কাছে থাকতে?
উৎসর্গ : আমার ফেসবুক ফ্রেন্ডদের নামে।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
চিরন্তন ০৮/১২/২০১৫বাঃ
-
শাহানাজ সুলতানা (শাহানাজ) ০৮/১২/২০১৫ভালো লাগলো
-
জহরলাল মজুমদার ০২/০৭/২০১৫ভাল ভালই এবং ভাল
-
অ ২৬/০৬/২০১৫হায়রে ফেসবুক......।
-
মোবারক হোসেন ১৯/০৬/২০১৫ভাল বলেলই সব শেষ হয়ে যায় না।আরও ভাল কিছু
জন্ম দেওয়ার উৎসাহ জাগায়্ -
তরীকুল ইসলাম সৈকত ১৩/০৬/২০১৫অসাধারন লাগলো...।