।।। বীরাঙ্গনার আকুতি।।।
বাহ! বেশ কেতা দুরস্ত আছো তোমরা,
কি সুন্দর ফিটনেস, ফিটফাট বাবু আনা সাজে,
তোমাদের রমনীগুলো-
রেশমী কাপড় পরে, অর্ধ উলঙ্গো বাহারে,
দামী প্রসাধনীর অন্তরালে সদা সত্য মুখশ্রী ঢাকে।
তোমরা তো সমাজপতি, ব্যবসায়ী নেতা, রাজনীতি বিদ,
উপদেষ্টা, কুটনৈতিক আরো কত নিত্য নতুন নামে,
স্থলাভিষিক্ত তোমাদের লোকজন
সব সরকারি বেসরকারি উঁচু উঁচু পদে,
তোমরাই সুযোগ সন্ধানী, করিতকর্মা নর নারী,
এতকাল ভেড়ার পালে হায়না পরিচয় লুকিয়ে
তবে ভেড়া হয়েই ছিলে।
এদেশ তো তোমাদের বাপ দাদাদের পৈত্রিক ভূমি,
তোমরাই তো থাকবে এখানে জৌলুশে,
রাজাধিরাজ বেশে,
আলিশান প্রাসাদ রম্য অট্টালিকা বানাবে,
ঘুষ,চুরি, দুর্নীতি , কালো বাজারি নোটে
ব্যাংকের লকার ভরবে থরে থরে ,
নিয়ম বহির্ভূত , খুন, গুম, ধর্ষন, চাঁদা বাজিতে
করবে উৎসব পালন,
বুদ্ধিজীবি হয়ে বুদ্ধির সওদা করবে,
বৈষম্যতার বিষ বাস্প ঢালবে সাধারণের কানে,
মানবতা নিধনে, মানবতার সোচ্চারে
মিথ্যা নাটক বানাবে।
দখল করবে সব পতিত-
খাল, বিল, জমি, ঘর বাড়ি সব,
সবই তো তোমাদের উত্তরাধিকার সূত্রে
বানানো কল্প কাহিনী।
সাধারণের সাহস কোথায়,
সত্য ভাষণের গীতি নাট্যের প্রদর্শনে?
আজ -
স্বাধীনতার ৪৮- বছর পরে
কি পেয়েছি, কি দিয়েছো তোমরা?
আমরা যারা দেশের জন্য সতীত্ব হারিয়েছি,
লোক চক্ষুর অন্তরালে আমাদের গর্ভে –
একটু একটু করে বড় হয়েছে
রাজাকার আল বদরের যৌনাঙ্গ নিঃসৃত বীর্যের সন্তান,
প্রতিদিন পিতৃ পরিচয় হীন জারজ সন্তান হিসাবে
বড় হয়েছে তারা অতি গোপনে,
কখনও দেশে কখনও বিদেশীর ঘরে,
সামাজিক ভাবে হেয় করেছো সবাই প্রতিমুহুর্তে পদে পদে,
স্বাধীন দেশে জন্মেও
তারা স্বাধীন সূর্যের আলো মাখতে পারে না গায়ে,
একটি লাল সবুজের পতাকার জন্য,
লক্ষ লক্ষ নারীর হরণ হয়েছে সতীত্ব,
অথচ,অপরাধী না হয়েও,
আমাদের সন্তানেরা আজ অপরাধীর মত মাথা হেঁট করে চলে।
তোমরা সুযোগ সন্ধানী,
তোমরা যারা যুদ্ধ করোনি,
শুধু কৌশলী ছিলে যুদ্ধের ডামাডোলের সময়ে,
গুটি কতক তোমরাই লুটে নিলে সব,
বঞ্চিত করলে বাংলা মায়ের কোটি কোটি সন্তানেরে।
মনে রাখনি আমাদের আত্ম ত্যাগের কথা,
খবর নাও নি কেহ,
আমরা আজও কি ভাবে বেঁচে আছি?
কতটা পক্ষাঘাত গ্রস্ত, কতটা দুর্বিষহ জীবনে,
শুধু কয়েকটা জাতীয় দিবসে
আমরা ভেসে উঠি তোমাদের মনন মগজে,
তারপর আমরা ফের অবহেলিত
তোমাদের জীবন দর্শন থেকে,
চলে যাই শীত নিদ্রায়-
আবার কোন দিবসের আগমনের অপেক্ষা তে।
এই যে আমাদের-
পঞ্চান্ন হাজার পাঁচশত আটানব্বই বর্গ কিলোমিটারের জন্মভূমিতে,
ঠিকঠাক খুঁজে পাই না আমাদের ঘরটি কোথায়,
আমাদের তো যাযাবরের জীবন,
পরিচিত লোকালয়ে জায়গা নেই আমাদের,
তাই তো নিরন্তন অপরিচিত খুঁজে ফিরি,
প্রখর সূর্য আলোকেও আমরা রাতের অন্ধকার খুঁজি।
আমরা পরিচয় হীন ভাসমান,
জায়গা হয়নি আমাদের স্বীয় পরিবারেও,
অথচ আমাদের সতীত্বের বিনিময়ে –
যে লাল সবুজের পতাকা নিয়ে তোমরা গর্ব ভরে চলো,
আমাদেরকে ভুলে যাও তোমরা কতটা স্বার্থপরতায়,
এ লাল সবুজ পতাকা যে আমাদেরও।
যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে –
নেতা যদি যুদ্ধের ধর্ষিতা নারীদের,
নিজ মেয়ে পরিচয় না দিতেন,
সস্নেহে মাথায় হাত না রাখতেন,
বীরাঙ্গনা উপাধিতে ভূষিত না করতেন,
তবে স্বাধীনতার জন্য আমাদের আত্মত্যাগ
তোমরা কোনদিন স্বীকারও করতে না,
তোমরা ধূর্ত শিয়ালের চাইতেও চালাক,
তোমরা হায়নার চাইতেও নৃশংস ।
আজও তোমরা বীরাঙ্গনার সন্তান জেনে,
নাক সিঁটিয়ে চলো,
নিজ পরিবারের পুত্রবধু বা মেয়ের জামাই
খেতাবটি দিতে পারো না তাদের গলে,
কেন পার না দিতে তাদের-
একটি সামাজিক সন্মানিত স্থান,
কেন এখনও বিভেদ সৃষ্টি করো,
কেন পারোনা তাদের দিতে একটি ন্যায্য অধিকার,
কেন তাদের সন্তানেরা
বাংলার পথে প্রান্তরে আজও
নিঃশব্দে অশ্রু বিসর্জনে বাঁচে?
আজও তোমাদের কাছে নেই
কোন সুনির্দিষ্ট বীরাঙ্গনার সংখ্যা,
স্বাধীনতার সুফলে তোমরা ভুলে গেছো
পশ্চাতপদ আত্ম ত্যাগের কথা,
তোমরা সত্যিই
এক একজন দেশ প্রেমী হায়না ।
হে নেতা,
আমরা অপেক্ষায় আছি, থাকবো,
তোমার ফিরে আসার প্রতীক্ষাতে,
আবারও একটি যুদ্ধের ডাক দিতে হবে,
আবারও মুক্তি যোদ্ধাদের সুগঠিত করতে হবে,
আবারও যুদ্ধ ঘোষণা করতে হবে,
জাতির ভিতরে লুকিয়ে থাকা
সকল সুযোগ সন্ধানী, মিথ্যাচার, ভ্রষ্টাচার, দেশদ্রোহী,
সকল অন্যায় আর গা ঢাকা দেওয়া
তথা কথিত দেশ প্রেমী হায়না নিধনে।
-=============
#রূপনগর_ঢাকা_০৩/০৬/২০২০।
কি সুন্দর ফিটনেস, ফিটফাট বাবু আনা সাজে,
তোমাদের রমনীগুলো-
রেশমী কাপড় পরে, অর্ধ উলঙ্গো বাহারে,
দামী প্রসাধনীর অন্তরালে সদা সত্য মুখশ্রী ঢাকে।
তোমরা তো সমাজপতি, ব্যবসায়ী নেতা, রাজনীতি বিদ,
উপদেষ্টা, কুটনৈতিক আরো কত নিত্য নতুন নামে,
স্থলাভিষিক্ত তোমাদের লোকজন
সব সরকারি বেসরকারি উঁচু উঁচু পদে,
তোমরাই সুযোগ সন্ধানী, করিতকর্মা নর নারী,
এতকাল ভেড়ার পালে হায়না পরিচয় লুকিয়ে
তবে ভেড়া হয়েই ছিলে।
এদেশ তো তোমাদের বাপ দাদাদের পৈত্রিক ভূমি,
তোমরাই তো থাকবে এখানে জৌলুশে,
রাজাধিরাজ বেশে,
আলিশান প্রাসাদ রম্য অট্টালিকা বানাবে,
ঘুষ,চুরি, দুর্নীতি , কালো বাজারি নোটে
ব্যাংকের লকার ভরবে থরে থরে ,
নিয়ম বহির্ভূত , খুন, গুম, ধর্ষন, চাঁদা বাজিতে
করবে উৎসব পালন,
বুদ্ধিজীবি হয়ে বুদ্ধির সওদা করবে,
বৈষম্যতার বিষ বাস্প ঢালবে সাধারণের কানে,
মানবতা নিধনে, মানবতার সোচ্চারে
মিথ্যা নাটক বানাবে।
দখল করবে সব পতিত-
খাল, বিল, জমি, ঘর বাড়ি সব,
সবই তো তোমাদের উত্তরাধিকার সূত্রে
বানানো কল্প কাহিনী।
সাধারণের সাহস কোথায়,
সত্য ভাষণের গীতি নাট্যের প্রদর্শনে?
আজ -
স্বাধীনতার ৪৮- বছর পরে
কি পেয়েছি, কি দিয়েছো তোমরা?
আমরা যারা দেশের জন্য সতীত্ব হারিয়েছি,
লোক চক্ষুর অন্তরালে আমাদের গর্ভে –
একটু একটু করে বড় হয়েছে
রাজাকার আল বদরের যৌনাঙ্গ নিঃসৃত বীর্যের সন্তান,
প্রতিদিন পিতৃ পরিচয় হীন জারজ সন্তান হিসাবে
বড় হয়েছে তারা অতি গোপনে,
কখনও দেশে কখনও বিদেশীর ঘরে,
সামাজিক ভাবে হেয় করেছো সবাই প্রতিমুহুর্তে পদে পদে,
স্বাধীন দেশে জন্মেও
তারা স্বাধীন সূর্যের আলো মাখতে পারে না গায়ে,
একটি লাল সবুজের পতাকার জন্য,
লক্ষ লক্ষ নারীর হরণ হয়েছে সতীত্ব,
অথচ,অপরাধী না হয়েও,
আমাদের সন্তানেরা আজ অপরাধীর মত মাথা হেঁট করে চলে।
তোমরা সুযোগ সন্ধানী,
তোমরা যারা যুদ্ধ করোনি,
শুধু কৌশলী ছিলে যুদ্ধের ডামাডোলের সময়ে,
গুটি কতক তোমরাই লুটে নিলে সব,
বঞ্চিত করলে বাংলা মায়ের কোটি কোটি সন্তানেরে।
মনে রাখনি আমাদের আত্ম ত্যাগের কথা,
খবর নাও নি কেহ,
আমরা আজও কি ভাবে বেঁচে আছি?
কতটা পক্ষাঘাত গ্রস্ত, কতটা দুর্বিষহ জীবনে,
শুধু কয়েকটা জাতীয় দিবসে
আমরা ভেসে উঠি তোমাদের মনন মগজে,
তারপর আমরা ফের অবহেলিত
তোমাদের জীবন দর্শন থেকে,
চলে যাই শীত নিদ্রায়-
আবার কোন দিবসের আগমনের অপেক্ষা তে।
এই যে আমাদের-
পঞ্চান্ন হাজার পাঁচশত আটানব্বই বর্গ কিলোমিটারের জন্মভূমিতে,
ঠিকঠাক খুঁজে পাই না আমাদের ঘরটি কোথায়,
আমাদের তো যাযাবরের জীবন,
পরিচিত লোকালয়ে জায়গা নেই আমাদের,
তাই তো নিরন্তন অপরিচিত খুঁজে ফিরি,
প্রখর সূর্য আলোকেও আমরা রাতের অন্ধকার খুঁজি।
আমরা পরিচয় হীন ভাসমান,
জায়গা হয়নি আমাদের স্বীয় পরিবারেও,
অথচ আমাদের সতীত্বের বিনিময়ে –
যে লাল সবুজের পতাকা নিয়ে তোমরা গর্ব ভরে চলো,
আমাদেরকে ভুলে যাও তোমরা কতটা স্বার্থপরতায়,
এ লাল সবুজ পতাকা যে আমাদেরও।
যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে –
নেতা যদি যুদ্ধের ধর্ষিতা নারীদের,
নিজ মেয়ে পরিচয় না দিতেন,
সস্নেহে মাথায় হাত না রাখতেন,
বীরাঙ্গনা উপাধিতে ভূষিত না করতেন,
তবে স্বাধীনতার জন্য আমাদের আত্মত্যাগ
তোমরা কোনদিন স্বীকারও করতে না,
তোমরা ধূর্ত শিয়ালের চাইতেও চালাক,
তোমরা হায়নার চাইতেও নৃশংস ।
আজও তোমরা বীরাঙ্গনার সন্তান জেনে,
নাক সিঁটিয়ে চলো,
নিজ পরিবারের পুত্রবধু বা মেয়ের জামাই
খেতাবটি দিতে পারো না তাদের গলে,
কেন পার না দিতে তাদের-
একটি সামাজিক সন্মানিত স্থান,
কেন এখনও বিভেদ সৃষ্টি করো,
কেন পারোনা তাদের দিতে একটি ন্যায্য অধিকার,
কেন তাদের সন্তানেরা
বাংলার পথে প্রান্তরে আজও
নিঃশব্দে অশ্রু বিসর্জনে বাঁচে?
আজও তোমাদের কাছে নেই
কোন সুনির্দিষ্ট বীরাঙ্গনার সংখ্যা,
স্বাধীনতার সুফলে তোমরা ভুলে গেছো
পশ্চাতপদ আত্ম ত্যাগের কথা,
তোমরা সত্যিই
এক একজন দেশ প্রেমী হায়না ।
হে নেতা,
আমরা অপেক্ষায় আছি, থাকবো,
তোমার ফিরে আসার প্রতীক্ষাতে,
আবারও একটি যুদ্ধের ডাক দিতে হবে,
আবারও মুক্তি যোদ্ধাদের সুগঠিত করতে হবে,
আবারও যুদ্ধ ঘোষণা করতে হবে,
জাতির ভিতরে লুকিয়ে থাকা
সকল সুযোগ সন্ধানী, মিথ্যাচার, ভ্রষ্টাচার, দেশদ্রোহী,
সকল অন্যায় আর গা ঢাকা দেওয়া
তথা কথিত দেশ প্রেমী হায়না নিধনে।
-=============
#রূপনগর_ঢাকা_০৩/০৬/২০২০।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মোঃ হাবিবুল হক চয়ন (নিরব নির্বাসন) ০৫/০৬/২০২০ধন্যবাদ সকল কবি বন্ধুদেরকে।😍
-
বোরহানুল ইসলাম লিটন ০৫/০৬/২০২০বেশ ভালো লাগলো লেখাটি।
-
ফয়জুল মহী ০৪/০৬/২০২০Very good post.
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ০৪/০৬/২০২০আমরা অনেক পেয়েছি।
আমাদের আরও ভালো হতে হবে। -
শ্রীমান দে ০৪/০৬/২০২০দারুন কথামালার সুন্দর প্রকাশ কবিবন্ধু।
ভাল থাকুন। -
ন্যান্সি দেওয়ান ০৪/০৬/২০২০Bah ebong oshadharon Kobita.