www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

।।।। নিজ সৃষ্টিতেই কুপোকাত ।।।।

কপালে এত ভাঁজ কেন তোমাদের,
এত বলি রেখা, ফ্যাকাশে মুখো অবয়ব,
শীতল ঘর আর প্রাসাদ সুরম্য
বাস ভবনে থেকেও জুলফি বেয়ে ঘাম,
চোখের অগ্নি ঝরা চাহনি কোথায়,
কোথায় তোমাদের দৃষ্টির হিংস্র লিপ্সা,
কোথায় তোমাদের ক্ষমতার দাপট,
জীবনের জৌলুসতা কোথায়,
কোথায় তোমাদের মসনদের
হেরেম খানা,
দামী গাড়ি কেন আজ ভাগাড়ে
পড়ে আছে,
দামী গাড়ির চাকায় কেন নেই
আজ পথ পারাপারি পথিকের রক্তের দাগ?

এতদিন পৃথিবীর বুকেতে
নিজেরাই স্বীয় ভগবান ছিলে,
নিজেরাই আন্দোলিত হতে নিজেদেরই কর্মকান্ডে,
তোমাদের সিদ্ধান্তেই ছিল সাধারণের
জীবন মরণ,
তোমরাই সনদ দিতে কে বাঁচবে আর কে মরবে,
আজ এমন কি হলো
তোমরা নিজেরাই নিজেদের করেছো ঘর বন্দি?

শান্তি প্রতিষ্ঠার নামে,
বিশাল অশান্তির বীজ বুনেছো
তোমরা এ বসুন্ধরার বুকে,
উপযাচক হয়ে দখল করেছো
অন্যের ভুখন্ড, অন্যের স্বাধীনতা,
বিনা হিসাবে হত্যা করেছো তোমরা
অসহায় নারী, পুরুষ, শিশু সহ আবাল বৃদ্ধ বনিতা,
লুটে নিয়ে গেছো জীবন ধারণের সামান্য
রসদ টুকুও,
জ্বালিয়ে পুড়িয়ে তছনছ করেছো,
ঘর বাড়ি, গবাদি পশু সহ জীবন্ত মানুষ।

ধ্বংসের স্তূপ বানিয়েছো হাজারো জনপদকে,
তোমাদের সুসজ্জিত সাজোয়া বাহিনী
এলোপাথাড়ি গুলি বর্ষণ করেছে,
বেনোয়েট এর খোঁচায়, খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে
মেরেছো জ্যান্ত মানুষ,
হাত পা বেঁধে নারীদেরকে শুয়ারের মত
লাইন বেঁধে পর্যায় ক্রমে ধর্ষন করেছো,
আর এসব ধর্ষিতরা জন্ম দিয়েছে
তোমাদের জারজ সন্তানের।
বিনা বাক্য ব্যয়ে বসুন্ধরা
সবই মেনে নিয়েছে,
ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করেছে,
জানে,
তার স্রষ্টার প্রতি উত্তর আসবে,

আজ তবে কেন ঘর বন্দি তোমরা,
চুল উসকোখুসকো, চিরণী পড়েনি তাতে
কত বছরেও,
চোখের নিচে কালশিটে দাগ,
র্নিঘুম রক্তজবা চোখের তারা,
কদিনেই গলার নিচের চামড়া ঝুলে
পড়েছে গবাদী পশুর মত,
এত উদ্ভান্ত কেন, মদ না খেয়েও
মাতলামি চেহারা,

মানবতার না তোমরা রক্ষক,
তবে ভয় কিসের,
বেরিয়ে এসো বন্ধ দরজা খুলে,
এ মেঘমুক্ত নীল আকাশের নিচে
বুক উঁচিয়ে দাড়াও,
তোমার নিরাপত্তার জন্য তো
সবসময়ই সেনাবাহিনী নিচ্ছিন্ন বলয় করে রেখেছে,
তারপরও ভীত?

বিশাল মানব জাতির চোখের আড়ালে,
তোমরা জীবাণু অস্ত্র বানাও নিরবে
নিভৃতে গোপনে,
নিজেদের কে সুরক্ষিত রাখবে,
আর দাস করে রাখবে আপামর জন সাধারণকে,
তোমাদের মনঃপুত না হলেই চালাবে,
লক্ষ লক্ষ জীবন বদের মহা উৎসব,
তবে আজ কেন তোমার সৃষ্টি
তোমারই থলের বাইরে বেড়িয়ে
তোমাকেই বদে উদ্ধত ?
ভাবো তোমরা,
তোমাদের পাপের ষোল ঘড়া পূর্ণ হয়েছে ,
তাইতো তোমাদেরই আবিষ্কার
তোমাদেরই নিধনে নেমেছে।

আজ আক্রান্ত তোমার আদরের কন্যা,
কিংবা প্রিয়তমা সজ্জা সঙ্গিনী, কিংবা
তোমার বাবা মা,
আজ তুমি নিজেকে বাঁচাতে ব্যস্ত ,
কই তুমি তো আজ তোমার আদরীনি
কন্যার কপোলে একটি চুম্বন দিয়ে
বলতে পারছো না,
ভয় করিস না মা, সব ঠিক হয়ে যাবে,
কেন পারছো না স্ত্রীর হাতে মৃদু
চাপ দিয়ে তাকে আশ্বস্ত করতে,
পারছো না কেন আক্রান্ত বাবা মাকে
জাপটে ধরে ভরসা দিতে,
কেন আজ দূর থেকে নিস্প্রাণ চোখে
মৃত্যু পথযাত্রীকে বিদায় জানাও,
নিজ প্রিয় জনের দেহ সৎকারেও
তোমার দেহ সেখানে অনুপস্থিত ,

তোমার তো মহামারী কে
ভয় পেলে চলবে না,
তুমি তো দুনিয়ার বুকে সর্বে সর্বা ছিলে।

এ বিশাল রাজত্বের একক স্রষ্টা,
উনি তো মাথার উপরের
এ আসমানের ওপারে অন্য আসমানে,
এ মহামারী তো ওনার কাছ থেকে আসেনি,
এ তো মানব সৃষ্ট ইশ্বর সৃষ্ট নয়,
তবে আজ কেন,
মসজিদ, মন্দির, গির্জা , প্যাগোডায়
এত জন সমুদ্র,
ধর্ম উপাসনা লয়ের সামনের চত্বরও
আজ ফাঁকা নয়,
তিল ধরনের স্থান কোথায়,
এত কেন তোমাদের আরাধনা আজ ?

এ সু শীতল শ্যামল ছায়ার,
আবাস যোগ্য পৃথিবী টাকে তোমরা
নরক বানিয়েছো,
নরক বানিয়েছো তোমাদের
যাবতীয় কর্মকান্ডে, চাল চলনে, বলনে
আর নিজ স্বার্থ হাসিলে,
আজ কেন দিশাহারা,
আজ কেন,
নতজানু ঐ এক স্রষ্টার পদতলে ।
ফিরে এসো নিজের স্বীয় অপরাধ
স্বীকার করে,
ক্ষমা চাও তোমাদের যাবতীয় কৃতকর্মের,
নিজে বাঁচো অন্যকেও
স্বাধীনভাবে বাঁচতে দাও,
মনে রেখো ঐ একক খোদার ক্ষমতার
গন্ডির ভেতরেই তোমাদের বসবাস,
তার নাগালের বাইরে যাওয়ার সাধ্য আছে কার ।
------------.
#নিরব_নির্বাসন।
#ঢাকা_২৭/০৩/২০২০।
বিষয়শ্রেণী: কবিতা
ব্লগটি ৩১৫ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৮/০৩/২০২০

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast