www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

বর্তমান ছাত্র

সালটা ২০০২ নবম শ্রণীতে পড়ি। আমাদের ভূগোল বিষয়ের শিক্ষক ক্লাস করতে এসেছেন বাংলা কারন বাংলার শিক্ষক সেদিন আসেননি। তিনি বললেন ভূগোল না পড়িয়ে আজ বাংলার ক্লাসটা নেবেন। যেহেতু আমাদের প্রতয় করাচ্ছিলেন স্যার, আমি দাড়িয়ে জিজ্ঞেস করলাম "জিজ্ঞাসা" এর প্রত্যয় কি হবে স্যার? কোনো উত্তর না দিয়ে হতে ডাস্টার ছিল আমার কাছে এসে পিঠে দুই তিনবার সজোরে বসিয়ে দিলেন। পুরো ক্লাস চুপচাপ,সেই মতো আমিও। স্যার ও যা পড়াচ্ছিলেন আবার শুরু করলেন।
ক্লাস শেষের ঘণ্টা বাজলো,স্যার বললেন ভেবোনা যে আমি ভূগোলের শিক্ষক বলে প্রতয় জানিনা আর আমি এটাও বুঝতে পেরেছি যে তুমি আমাকে পরীক্ষা করার জন্য প্রশ্নটা জিজ্ঞেস করেছিলে।কিন্তু আজও আমি বলি সেটা স্যার এর পরীক্ষার জন্য ছিল না।
সালটা ২০০৫ গনিতে অনার্স নিয়ে কলকাতার একটি কলেজে ভর্তি হযেছি , পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের একজন প্রফেসর ভেক্টর পড়াচ্ছেন এবং বোর্ড ওয়ার্ক করছেন। সবশেষে আমার কাছে এলেন দেখলেন আমি খাতায় কিছুই নোট করিনি। সরি খাতা নয় ডায়রি। তা দেখে উনি ক্ষেপে গেলেন, গালে সপাটে কষলেন দুটো চড়। আমি নোট করিনি কারণ গনিতে ভেক্টর আমি করেছি আমার নোট করার কোনো দরকার ছিলনা। কিছুই বললাম না চুপচাপ চটজলদি বোর্ড থেকে টুকে নিলাম। আমার এক বন্ধু ইউনিয়ন ছেলেদের জানিয়ে দেয়,শুরু হলো স্যার এর নামে স্লোগান ক্লাস শেষ সে দিনের মতো। প্রিন্সিপাল এর সাথেও মিটিং,সবার একটাই আবেদন স্যার ক্ষমা চাইবেন আমার কাছে। লজ্জায় আমার মুখ লাল । আমি বললাম স্যার আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুক তা আমি চাইনা।
সালটা ২০১০ আমি এক স্কুলের শিক্ষক । পঞ্চম শ্রেনীর এক ছাত্র নামতা মুখস্ত না করে নিয়ে আসায় কান ধরে মলেছি। এবং বলেছি কান ধরে দাড়িয়ে থাকতে। ছাত্রের সরাসরি উত্তর কান ধরে দাড়াবেনা । এবং অ্যাভেসবসত দুই গালে দুই চড়। টিফিন করছি অফিসে,দেখি সেই ছেলেটি তার মা বাবাকে নিয়ে অফিসে হাজির।বক্তব্য এইভাবে আমার ছেলেটিকে মারা একদম উচিৎ হয়নি।কানের নিচে নাকি রক্ত জমাট বেঁধে গেছে। যেটা কিঞ্চিত মাত্র সত্যি নয়। একধরনের শাসিয়ে গেলেন বলা যায়।
এখন ২০১৮ ছাত্রদের মারধোর করা দণ্ডনীয় অপরাধ।যদি তুলনা করা যায় ২০০২ সালের একজন ১৫ বছরের ছেলের সাথে ২০১৮ সালের একজন ১৫ বছরের ছেলের তাহলে তার পার্থক্য লক্ষ্য করার মতো।
জানি মারধোর করে একজন অবাধ্য ছেলেকে বাধ্য করা যাইনা, তবে সব ক্ষেত্রে তা ঠিক নয়। বর্তমান আইনের বিরোধিতাও করছিনা, তবে এটুকু বলতে পারি যে অনেক অবাধ্য বাধ্য হয়ে জীবনে অনেক দূর এগিয়েছে এবং শেষে শিকার করেছে যে ভাগ্যিস ওই স্যার সেদিন আমাকে মেরেছিলেন তাই জীবনের মূল স্রোতে ফিরে আসতে পেরেছিলাম। শিক্ষক হলেন গুরুজন বাবা মা ভালো বন্ধু উনি জানেন কোন ছেলে কিভাবে বুঝবে।

দিন যত এগোচ্ছে কৃত্রিমতা কমছে, ছাত্র ছাত্রীরা শিখছে ডিজিটাল ভাবে। শিক্ষকদের সন্মান করা তাদের ভয়, ভালোবাসা সবই কৃত্রিম। এখনো আমাদের স্যার এর সাথে রাস্তায় দেখা হলে বাইক বা সাইকেল দাড় করে সালাম দিয়ে কথা বলি কিন্তু এখনকার ছেলেমেয়েরা সেগুলোকে তোয়াক্কা করেনা। এদের ধারণা হলো সরকারের কাছে টাকা পাচ্ছে তাই স্যারদের পড়াতে হচ্ছে বলেই পড়াচ্ছেন। এর একটা সংস্কার প্রয়োজন।


আমার প্রথম ব্লগ । ভুল হলে ক্ষমাপ্রর্থনা করছি।
বিষয়শ্রেণী: সমসাময়িক
ব্লগটি ৫৫৬ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২০/০৯/২০১৮

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast