বাঁশ দেওয়া
যুগে যুগে অনেক আর্শ্চয্যজনক নিদর্শন মহান রাব্বুল আল আমীন পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। তার মধ্যে একটি নিদর্শন হলো গায়েবী শিকল। যা প্রাচীন কালে আসমান থেকে পৃথিবীতে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। এটি ছিল সত্য মিথ্যার পার্থক্য নিরুপনকারী জ্বলন্ত অলৌকিক শিকল। সত্য সাক্ষ্যদানকারী ব্যক্তি আল্লাহর নাম নিয়ে ইহা ধরতে চাইলে তা ধরতে পারতো কিন্তু মিথ্যা সাক্ষ্য দানকারী ইহা কখনোই ধরতে পারতো না। তার হাত শিকলের আগুনে জ্বলসে যেত। মানুষের অতি চালাকী,ভন্ডামী আর প্রতারণার কারণে মহান আল্লাহ তাঁর এই মহান নিদর্শন পৃথিবী থেকে আসমানে তুলে নিয়েছেন। একবার এক প্রতারক ,তার একজন প্রতিবেশী লোকের নিকট থেকে একটি সোনার চেইন ধার নিলেন। কিছু দিন পর চেইনের মালিক চেইন ফেরৎ চাইলে প্রতারক লোকটি চেইন দাতাকে বললেন, আমি তো আপনার চেইন আপনাকে ফেরৎ দিয়ে দিয়েছি,আপনি আবার তা চাইতে এলেন কেন? এই কথা শুনে চেইনের মালিক তো হতবাক! তিনি গ্রাম্য সালিশ ডাকলেন। সালিশে সিদ্ধান্ত হলো কে মিথ্যা কথা বলছে তা প্রমানের জন্য দুই জনেই সকলের উপস্থিতিতে অলৌকিক শিকল ধরবে,তাহলে প্রমাণ হবে চেইন গ্রহীতা চেইন ফেরৎ দিয়েছে কিনা ? অথবা কে মিথ্যা কথা বলছেন তা প্রমাণিত হবে। সকলের উপস্থিতিতে দুই জনেই অলৌকিক শিকলের সামনে উপস্থিত হলেন। প্রথমে চেইন দাতা শিকল ধরে শপদ করে বললেন যে,অমুক ব্যক্তি আমার নিকট থেকে ধার নেওয়া চেইন এখন পর্যন্ত আমাকে ফেরৎ দেয় নাই। এর পর চেইন গ্রহীতাকে ডাকা হলো। তিনি কুটকৌশলের আশ্রয় নিলেন। তিনি ধার নেওয়া চেইনটি একটি ফাঁকা বাঁশের লাঠির ভিতর ভরে তা শক্ত ভাবে বেঁধে চেইন দাতার নিকট গিয়ে বললেন ,আপনি লাঠিটি কিছুক্ষণের জন্য আপনার নিকট রাখেন,আমি যে আপনার নিকট থেকে ধার নেওয়া আপনার চেইনটি ফেরৎ দিয়ে দিয়েছি তা অলৌকিক শিকল ধরে শপদ করে বলে আসি। অত:পর আমি এই লাঠিটি আপনার কাছ থেকে নিয়ে যাব। চেইন দাতা জানতো না যে, এই লাঠির ভেতর তার প্রদত্ত চেইনটি চেইন গ্রহীতা লুকিয়ে রেখেছেন। তাই তিনি সরল বিশ্বাসে লাঠিটি চেইন গ্রহীতার নিকট থেকে নিয়ে কিছুক্ষণের জন্য হাতে ধরে রাখলেন। লাঠিটি চেইন দাতার হাতে দিয়ে চেইন গ্রহীতা অলৌকিক শিকল ধরে শপদ করে বলল, হে আল্লাহ তুমি তো জান , আমি চেইন দাতাকে তার প্রদত্ত চেইন ফেরৎ দিয়ে এসেছি,যা তার নিকট আছে। শপদ শেষে সে চেইন দাতার নিকট রাখা লাঠিটি নিয়ে গেল। দুই জনেই অনায়াসেই অলৌকিক শিকল ধরে শপদ করায় এবং কারো হাত জ্বলসে না যাওয়ায় অলৌকিক শিকলের সত্য মিথ্যা নির্ণয়ের ক্ষমতা সর্ম্পকে সকলের মনে সন্দেহের সৃষ্টি হলো এবং সকলেই চিন্তা করতে লাগল বাদী - বিবাদী উভয় পক্ষ কিভাবে সত্যবাদী বলে প্রমাণিত হয়! ঐ দিন রাতেই আল্লাহ রাব্বুল আল আমীন তাহার প্রদত্ত অলৌকিক শিকলকে বির্তকিত করার কারণে আসমানে তুলে নিলেন । তা আর এক মূর্হুতের জন্যেও পৃথিবীতে দেখা যায়নি। এই ভাবে মানুষের প্রতারণার কারণে একটি অলৌকিক নিদর্শন পৃথিবী থেকে চিরতরে হারিয়ে গেল।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
শিবশঙ্কর ০৮/০১/২০১৮বেশ ভাল। অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল কবি ।
-
গোলাম মুস্তাফা ৩০/১২/২০১৭খুব ভাল
-
একনিষ্ঠ অনুগত ২৭/১২/২০১৭এটা কি লোককথা নাকি সত্যি নাকি কাল্পনিক?
-
কামরুজ্জামান সাদ ২৬/১২/২০১৭গল্প হলে ঠিক আছে।