www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

ফেইসবুকিয় সমাজ

ভাস্কর্য বসালে বা থাকলে দেশের অনেক কিছুই নষ্ট হয়ে যায়। তাই সারা দেশে ভাস্কর্য বিরোধী আন্দোলনে দেশ জাগ্রত। এক থেমিসের ভাস্কর্য সব শেষ করে দিয়েছিল....
পাঠক এই খানে মনে রাখুন, মাত্র একটি থেমিসের ভাস্কর্য সবকিছু ধ্বংস করে দিতে পারে বলে জনতার হাহাকার শুনেছিলাম।

কিছুদিন আগেও হিন্দুধর্মাবলম্বী দের  হেয় প্রতিপন্ন করা এক কাঠমোল্লাকে বাচানুর জন্যে আবার সমবেত জনতা ওই কাঠমোল্লার পেছনে/ ওই কাঠমোল্লার বিপক্ষে মামলা করা রাকেশ রয় য়ের ফেইসবুক হ্যাক করে জনতা আবার ধর্মীয় উন্মাদন রচনা করলো।
প্রিয় পাঠক লক্ষ্য করুন এখানেও আমার সমবেত জনতা ওই একজন আব্দুল আজিজের পক্ষেই সাফাই গান গেল। (মাত্র একজন আব্দুল আজিজ!!!।)

কিন্তু এই ফেইসবুকিয় সমাজটাই একেবারে ভিন্ন ভুমিকা পালন করে অন্যক্ষেত্রে।

রংগদুর এ গ্রামের পর গ্রাম আগুনে পুড়া হল...
এটা তেমন কিছু না, তা হওয়াই স্বাভাবিক(?) আর তাই ফেইসবুক ভাস্কর্য বিরোধিদের আন্দোলনের মত উত্তাল না হয়ে, নাকে তেল দিয়ে  ঘুমিয়ে পড়ল। কোথাও কেউ লিখল না , স্ট্যান্ড উইথ লংগদুর!!!
নীরবতায় মনে হল , যা হয়েছে ভালই হয়েছে। তা হওয়াই কাম্য। আমার মনে পড়ে নাসির নগরে হামলার পরিপ্রেক্ষিতে আমার এক অনলাইনের বন্ধু জিঙ্গাসা করেছিল...আচ্ছা তা কবে হয়েছে?
আমি জানি না আসলে আমার ওই বন্ধুদের কিছু জানালেও তারা জানবে কি না?
যা হোক ফেইসবুক সমাজ কখন বা কার প্রতিবাদ করবে তা তাদের নিজস্ব বিষয়। আবার লন্ডন বা প্যারিসের জন্যে আগে না পরে কাদবে তাও তাদের ব্যাক্তিগত বিষয়। স্থান ও অবস্থান ভেদে অনুভুতির যে তারতম্য হয়, সম্মতি বা অসম্মতির প্রকাশ যে স্থানভেদে প্রকাশিত হয় তা সবার নিজস্ব একটা অনুভুতি।আমি এই রুবেল বাংলাদেশের জন্যে যা লিখি তা ভারতের মাটিতে হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্যে লিখতাম কি না তাও অনেকের কাছেই কোটি টাকার প্রশ্ন। যদিও মমতা মাসীর সাহস আর দক্ষতাকে আমি বাংলাদেশে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বেগম খালেদাজিয়ার জন্য অনুকরনীয় বলে বিশ্বাস করি।

এই ফেইসবুকিয় সমাজ একটি লন্ডন বা একটি প্যারিসের গল্প অনুসারে যখন লংগদূরের ঘটনায়, সাওতালদের ঘটনায়, নাসির নগরের ঘটনায় জেগে উঠে  লন্ডন , প্যারিস, ব্রাসেলসসে ঘটে যাওয়া অঘটন গুলির পথ বন্ধ করে দেবার কথা ঠিক তখন ফেইসবুকিয় সমাজ সম্পূর্ণ ভাবে ঘুমিয়ে থেকে পক্ষান্তরে অপেক্ষা করে কবে কেমন করে লিখবে স্ট্যান্ড উইথ লন্ডন ইত্যাদি।
জানি সত্যটা হজম করা খুব কঠিন। ভারতে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন হলে অরুন্ধতি রায় রা পদ্মশ্রী পদক ও ফেরত দিয়ে প্রতিবাদ করে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাস্তা কাপিয়ে বেড়ায় আর বাংলাদেশে...? সবাই নাক ডেকেই ঘুমায়।
দুদিন আগে সুলতানা কামাল নাকি সবার সবকিছু নষ্ট করেদিয়েছিল! তাই সবার মাঝেই দেখেছিলাম লাটি হাতে নেবার প্রবণতা।
কিন্তু আজ কি কারো কোন কিছু নষ্ট হয় না বা হচ্ছে না? যখন ওই একজন পশু এক হিন্দু নারীর উপর নির্যাতন চালিয়ে প্রথমে তার স্বামী, পরে চাচাকে খুন করেও সমাজের কাছে , রাষ্ট্রের কাছে পাড় পেয়ে যায়।অতপর ওই অসহায় হিন্দু নারীটিকে ধর্ষণ করে রাস্তার উপর পিটিয়ে মারে। তখন কোথায় এই সমাজের বিবেক বোধ?

একটি হিন্দু বালিকাকে ইফতার খাওয়ানুর কথা বলে যখন দাদুর বয়সী দুই রোজাদার বালিকাটাকে ধর্ষণ করে তখন কোথায় থাকে এই ফেইস বুকিয় সমাজ? কোথায় স্ট্যান্ড উইথ লন্ডন লেখনির সমাজ? কোথায় ভাস্কর্য( প্রগতি) বিরোধী সমাজ ?
কোথায় কাঠমোল্লাদের বাচানুর জন্যে আন্দোলনের সমাজ?
বিষয়শ্রেণী: সমসাময়িক
ব্লগটি ১০০৫ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১২/০৬/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast