www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

বাংলাদেশে ধর্ম ব্যাবসা

আমাদের দেশে ধর্মকে পুজি করে সব ধরনের মানুষ কমবেশি ব্যাবসা করেছে। রাজনৈতিক দল, রাজনৈতিক ব্যাক্তি, ব্যাবসায়ীক প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সমাজের নিচু থেকে উচি স্তরের সবাই করছে ধর্ম ব্যাবসা। তারা এই দেশের মানুষের মানুষের ধর্মীয় অনুভুতিকে পুজি করে এই ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের ধর্ম ব্যাবসারই কয়েকটি বিষয় তুলে ধরলাম।


১। আমাদের দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল ধর্মকে ব্যাবহার করে রাজনীতি করেছে। ধর্মকে পুজি করতে পারলে ভোট ব্যাংক বাড়ে। তাই বড় দল, ছোট দল, ডান দল, বাম দল সকলে ব্যাবহার করে এই ধর্মকে। যে লোক কোনদিন মসজিদের সামনে যায়নি। সে নির্বাচনের আগে নিয়মিত নামাজি হয়ে যায়। ওয়াজ মাহফিলে নিয়মিত অতিথি হয়ে যায়। শার্ট, প্যান্ট ছেড়ে পাজামা, পাঞ্জাবি ধরে। যদিও নির্বাচনের কয়দিন পর তাদের সেই পুরনো রুপেই দেখা যায়।


২। ব্যাবসায়ীরা ধর্মকে পুঁজি করে ব্যাবসা করছে। এরোমেটিক ১০০% হালাল সাবানের কথা মনে আছে? ধর্মকে পুজি করে তারা সবচাইতে সফল ব্যাবসায়ী। আরএফএলের একটা নতুন পণ্য এসেছে কয়েকমাস আগে। প্লাষ্টিকের এই পণ্যটি অনেকটা মসজিদের গম্বুজের মত দেখতে। মসজিদে নামাজ পড়ার সময় এটা সামনে রাখা হয়। এটা ধর্ম ব্যাবসার আরেক নজির।


৩। মাজার বর্তমানে ধর্ম ব্যাবসার সব চাইতে সফল জায়গা। ইসলামী আলেম, ওলামাদের কবরকে বানানো হয় মাজার। তারপর, শুরু হয় ব্যাবসা। এই মাজারকে পুজি করে ধর্ম ব্যাবসায়ীরা আয় করছে কোটি কোটি টাকা। এই দেশের বহু মানুষ দোয়া চাইতে মাজারে যায়, ইচ্ছেমত সেখানে অর্থ দান করে আসে। মাজার ব্যাবসায়ীরা এই সাধারন মানুষের এই ধর্মীয় অনুরাগ দেখে, আরো বহু আজগুবি নামে, বহু মাজার চালু করেছে। আয় রোজগার তাতে কমেনি, বরং, বেড়েছে বহুগুণে।


৪। এই দেশে সরকারি ভুমি দখলের একটা বিশেষ মাধ্যম হচ্ছে ধর্মীয় স্থাপনা নির্মাণ। পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকারি কোন ভুমি দখল করার ইচ্ছে হলে উপজাতীয় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা নির্মাণ করে কেয়াং। অনেক সময় দেখা যায় যে, এই জায়গাগুলোতে ধর্মীয় উপসনালয় নির্মাণের নুন্যতম কোন প্রয়োজনও নেই।


৫। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়ে ব্যাবসা করা অনেক দিনের পুরাতন। আমি অষ্টম শ্রেনীতে পরিক্ষা দিতে গিয়ে যাকে দেখেছি, একটা মসজিদের নির্মাণের জন্য টাকা তোলা হচ্ছে, এসএসসি দিতে গিয়েও দেখলাম একই লোক একই মসজিদের জন্য টাকা তুলছে। এইচএসসি দিতে গিয়েও দেখলাম সেই লোক সেই মসজিদের জন্য টাকা তুলছে। আমার জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসি পার হয়েছে। এখন শিক্ষা জীবন সমাপ্তির পথে। কিন্তু, সেই মসজিদের নাম দিয়ে সেই লোক আজও টাকা তুলে।


৬। আমি গ্রামে থাকি। মাঝে মাঝে আমাদের গ্রামে কিছু লোক আসে। তাদের দাবি তারা কুরআন কিনতে পারছে না। কেউ হাফেজি পড়ছে বা পড়বে। কিন্তু, কুরআন কেনার সামর্থ্য নেই। তাই তাদের আর্থিক সহযোগীতা করতে হবে। আমি যখন ছোট ছিলাম, এমন একজনের হাতে কুরআন তুলে দিলে, সে তা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। কে জানে, তারাও যে ধর্মকে পুঁজি করে টাকা নিজের পকেটে পুরছে না।


 ধর্মের নামে ব্যাবসা আরো বহুভাবে হচ্ছে। বহু ধরনের লোকেরা অংশ নিচ্ছে ধর্ম ব্যাবসায়।  কেউ এই ব্যাবসা ধরতে পেরে এড়িয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ এই ব্যাবসাকে ধরতে পারছে না। তাই ধর্ম ব্যাবসায়ীদের ফাঁদে পা দিচ্ছে।
বিষয়শ্রেণী: সমসাময়িক
ব্লগটি ১৮৭৩ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৪/০৮/২০১৬

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • সোলাইমান ০৪/০৯/২০১৬
    yes
  • চপল ০১/০৯/২০১৬
    সুন্দর উপস্থাপন
  • মিজান রহমান ৩১/০৮/২০১৬
    এটাই বাংলাদেশ
  • মোনালিসা ৩০/০৮/২০১৬
    এটাই বাংলাদেশের মূল সমসসা।
  • এই ব্যবসায় পুঁজি লাগে না।
  • পরশ ২৮/০৮/২০১৬
    সুন্দর হয়েছে লেখাটি।
  • মোনালিসা ২৭/০৮/২০১৬
    অনেক ভাল হএছে।
  • পরশ ২৬/০৮/২০১৬
    ভাল লিখেছেন।
  • আনিসা নাসরীন ২৬/০৮/২০১৬
    ধর্ম নিয়ে এই খেলা গুলো অনেক পুরানো। মানুষের বিশ্বাস নিয়ে খেলা ছাড়া আর কিছু নয়।
  • ধ্রুব রাসেল ২৫/০৮/২০১৬
    কিছু মানুষ নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য উপযুক্ত মাধ্যম বের করে নেয়। সেক্ষেত্রে ধর্মকেও কাজে লাগায়। কেননা, ধর্ম সবচেয়ে স্পর্শকাতর। অনেকের কাছে অন্ধতা, গোঁড়ামি। তাই কিছু পুঁজিবাদীরা সহজেই একে কাজে লাগাতে পারে।
  • এমরান হোসেন ২৫/০৮/২০১৬
    আসলে সবাই কিন্তু ধর্ম ব্যবসায়ী নয়,,,,
  • স্বপ্নময় স্বপন ২৫/০৮/২০১৬
    সুন্দর উপস্থাপন!
  • ধন্যবাদ
  • আব্দুল হক ২৪/০৮/২০১৬
    ভালো লিখা
 
Quantcast