www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

স্বপ্ন দেখা পাপ(দ্বিতীয় পর্ব)

আন্দোলনকারীদের দাবী অনুযায়ী সরকার 'পতিতা সংরক্ষন কমিশন' গঠন করল।কমিশন কতগুলি শুপারিস পেশ করল সকারের কাছে।শুপারিস গুলি হল :(১)পতিতাদের জন্য পৃথক স্কুল নির্মান,কারন সাধারন স্কুলে তাদের ছেলে-মেয়েদের কে অনেক অবমাননার শীকার হতে হয়,(২) তাদের জন্য আবাসন নির্মান,(২)বৃদ্ধ অবস্থায় তাদের জন্য বিশেষ ভাতার ব্যবস্থা।
তাদের নিরন্তর সংগ্রামে আন্দোলন সফলতার রুপ নিল,সরকার 'পতিতা সংরক্ষন বিল' পাশ করতে বাধ্য হলেন।রিমির কর্মদক্ষতায় অনিকেতের বাবা থেকে শুরু করে সকলে তার প্রশংসায় পঞ্চমূখ।
রিমি এখন মহাখুশি,তার আন্দোলন সফল হয়েছে শুধু সে কারনে নয়,অনিকেতের বাবা তার পাশে এসে দাড়িঁয়েছে এটা তার জন্য একটা বিশাল সফলতা। অনিকেতকে নিয়ে ঘর বাধাঁর পিপাসা তার প্রবল হয়ে উঠল।


অনিকেত প্রথমে রিমির উপর রেগে গেলেও তার বাবার ইতিবাচক মনোভাব তাকে আপ্লুত করল,সে রিমির উপর খুবি প্রসন্ন হলো।এভাবে কেটে যায় দিবস-রজনী,স্বপ্নের জাল বুনে যায় তারা।একদিন তারা বেরিয়ে যায় 'লং ড্রাইভে',পুরো দিনটা তারা ঘুরে কাটাল।গাড়ির কাঁচটা নামিয়ে রিমি গলা জড়িয়ে ধরে,"অনি,আজ দিনটা আমার জীবনের সেরা মুহূর্ত,আমি এই দিনটা কখন ভুলবোনা; থ্যাঙ্কস এমন একটি সুন্দর মুহূর্ত উপহার দেওয়ার জন্য"।তারপর একটু বিষন্নতার সুরে,"কিন্ত খারাপ লাগলো বস্তিতে,ফুটপাথে অন্যের
করুণা নিয়ে বেচেঁ থাকা ছেলেমেয়ে গুলোকে দেখে।এদের এইটুকু বয়স,যে বয়সটায় এদের ব্যাগ কাধেঁ নিয়ে স্কুলে যাওয়ার কথা সেখানে এরা এদের ভাই-বোন কে কাঁধে নিয়ে ভিক্ষা করে বেড়াচ্ছে।এদের তো কোন দোষনেই,এদের বাবা-মা কোনদিক চিন্তা না করে অগনিত বাচ্চা নিয়ে যাচ্ছে অথচ এদের মাথা গোজার ঠাই নেই।"তারপর একটু থেমে সে উগরে দিলো তার ব্যাথা,"এই বাচ্চাগুলোকে ছেড়ে দিচ্ছে রাস্তায়,এদের মধ্যে কেউ কেউ ভদ্রলোকের তিক্ত করুণা পেয়ে পেয়ে ক্লান্ত হয়ে অবশেষে চুরি,পকেটমার ইত্যাদি পথ বেছে নিচ্ছে।আবার কিছু কিছু মেয়ে 'হুউম্যান ট্রাফিকিং' দলের প্রতারণার শিকার হয়ে আমার মত পতিতায় পরিণত হচ্ছে।আমি চাইনা কেউ আমার মত অন্ধকারময় জীবন বেছে নিক"।বলতে বলতে রিমির চক্ষুদুটি অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়লো,অনিকেত গাড়ি থামিয়ে তাকে নিজের বুকে জড়িয়ে সান্তনা দিতে লাগলো।সে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে, "অনি,আমরা কি এদের জন্য কিছু করতে পারিনা।একটা 'এনজিও' তৈরী করে তো আমরা এদের জন্য কাজ করতে পারি,এদের বাবা-মা কে বোঝাতে পারি।আমরা যখন কলকাতা তে থাকব,আমি এদের জন্য কাজ করব।তুমি আমাকে সাহায্য করবে তো?আমার পাশে থাকবে তো?" অনিকেত বলল,"আমি কেনো তোমাকে সাহায্য করবো না ,আমি সবসময় তোমার পাশে আছি,পাশে থাকব চিরকাল।"এভাবে তারা জীবনের অঙ্ক কষতে কষতে তাদের ঘরে ফিরল।

মাটিয়াতে একটি পিছিয়ে পরা মহিলাদের উন্নয়ন সমিতি আছে,সেই সমিতির সভাপতি হলেন অনিকেতের বাবা।সমিতিটি সরকারি সহযোগিতায় চলে,কিন্ত সমিতিতে যে টাকা গুলো আসে মহিলাদের সাহায্যের জন্য তার বেশীর ভাগ টাকা 'পাখা' দলের রাজনৈতিক তহবিলে জমা হয়।ঘটনাটি জানতে পেরে রিমি স্থানীয় থানায় সমিতির বিরুদ্ধে তহবিল তছরুপের অভিযোগ দায়ের করে।এই খবর জানতে পেরে অনিকেত খুবি রেগে যায়,সে রিমির উপর চড়াও হয়।সে তাকে থাপ্পড় মেরে, "তোমাকে কে বলেছে সমিতির নামে থানায় নালিশ করতে,তোমার এই হরকৎ এ আমার বাবার সম্মান ধুলোয় মিশে যাবে,তার রাজনৈতিক ভাবমূর্তি নষ্ট হয়ে যাবে।বাবা কতো খুশি হয়েছিলো তোমার উপর,এই সুযোগ টা কাজে লাগিয়ে আমার তার সম্মতিতে বিয়ে করতে পারতাম।তুমি আমার সব পরিকল্পনা মাটি করে দিলে।" বজ্র মেঘের ন্যায় রিমি,"তোমার বাবা লোকের টাকা চুরি করছে,তার বেলায় সম্মান যায়না।আমি অভিযোগ করেছি তাতে তার সম্মান যাবে?" আবার একটি চড় কষিয়ে, "তুমি আমার বাবাকে চোর অপবাদ দিলে,তোমার সাহস তো কম নয়"।কথাটা শেষ না হতেই রিমি কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি চলে আসে,ঘরের দরজা বন্ধ করে আরো বেশি কাঁদতে লাগলো।তার মনে বার বার ভেসে উঠল অনি তাকে কিভাবে চড় মারলো,সে তো কোন দোষ করেনি।অন্যায়ের প্রতিবাদ করা তো কোন দোষের নয়।অন্যায় যে করবে সে দোষী, তা সে যেই হোক না কেনো।অনির উপর রাগে,অভিমানে সে ফেটে পড়লো। অনিকে সে
সে ভুল বুঝেছিল, সেও আর পাঁচটা মুখোশধারী ভদ্রলোকের মত।সে এরকম একটা মানুষের সঙ্গে সারাজীবন কাটাতে চাইছিল।এসব ভাবতে ভাবতে রিমি সিধ্যান্ত নিল, সে অনির সঙ্গে সর্ম্পক ছিন্ন
করবে।তারপর সে অনির সাথে আর কোন যোগাযোগ করলোনা,অনিকেত ও তার কোন খোঁজখবর নিলনা।এভাবেই কেটে যায় বেশ কিছুদিন,অনিকেত একটা বড় চাকরি পেয়ে গেলো। কিন্ত সে তারপর ও রিমির সাথে কোনপ্রকার যোগাযোগ করলো না।রিমি তার চাকুরী পাওয়ার খবর শুনেছে,তবু ও সে অনির কাছে ফোন করেনি।
কিছুদিন পরে অনিকেতের বাড়ি হঠাৎ সেজে উঠল আলোকসজ্জায়,ভরে গেলো অথিতিতে।অনিকেতের বাবা তার এক বন্ধুর মেয়ে সঙ্গে তার আর্শীবাদের আয়োজন করল।খবর টা রিমির কানে যেতেই,সে তো কেঁদেকেটে অস্থির।

to be contiued












.
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৬৯৫ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২১/১০/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • সোলাইমান ২৭/১০/২০১৭
    অসাধারণ কবিতা। শুভেচ্ছা।
  • মধু মঙ্গল সিনহা ২১/১০/২০১৭
    খুব ভালো লাগল
  • আজাদ আলী ২১/১০/২০১৭
    Sundar galpo
 
Quantcast