স্বপ্ন দেখা পাপ(প্রথম পর্ব)
"চুপিচুপি এভাবে আর কতদিন!আমার বড্ড ভয় করে,তাছাড়া নানা অজুহাত দেখিয়ে আমাকে দেখা করতে আসতে হয়।"
রিমির হাতে হাত রেখে সান্ত্বনার সুরে অনিকেত বলল,"কী করব বলো,তোমাকে না দেখে আমি থাকতে পারিনা। কিছুদিন অপেক্ষা করো,চাকরিটা পেয়ে যায়,তারপর তোমাকে নিয়ে কলকাতায় চলে যাব।সেখানে আমাদের কেউ চোখ রাঙাবেনা,তুমি-আমি পাড়ি দেবো সুখরাজার দেশে।"রিমি দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে,"আর চাকরি!কতো পরীক্ষাই তো দিলে,এজন্মে আর জুটবে বলে মনে হয়না। সবাই পেটের জ্বালায় মরছে,ওদিকে শালাগুলো 'ঊলঙ্গ' হয়ে নাচছে।এতো চুরি-ডাকাতি,ছিনতাই,কিডন্যাপিং,সিন্ডিকেট দিনের পর দিন বাড়ছে শুধু বেকারত্বের কারনে"।তার কথায় অনিকেত একটু রেগে গিয়ে রিমির মুখ খামছে ধরে সাবধান করল,"তোমাকে কতবার বলেছি গালাগালি দেবেনা,এবার যদি কখনো গালিগালাজ করো তোমার সাথে দেখা করা বন্ধ করে দেবো "।
"sorry! আর কখনো গালাগালি দেবোনা,এবার একটু হাসো আমার 'অক্সিজেন'।" অনিকেতকে চিমটি কেটে খুনসুটির সুরে বলল, "বাই দ্যা ওয়ে,দেখা করার তাগিদ আমার থেকে তোমার বেশি"।অনিকেত রেগে উঠে চলেযাচ্ছিল, অমনি সে তার গলা জড়িয়ে ধরে আদর করে মায়াচুম্বনের জালে জড়িয়ে ফেলল।সিঁধেল কেটে চোর অমুল্য গহনায় হাত দেবে,হঠাৎ ফোনের 'রিং' বেজে ঊঠতেই বাড়িওয়ালী জেগে গেল।ফোনে কথা শেষ করেতেই তারা পরস্বপরকে বিদায়চুম্বন দিয়ে আপন আপন ঠিকানায় রওনা দিলো।
অনিকেতের জন্ম মাটিয়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত বিত্তশালী পরিবারে,সে কলকাতা থেকে পড়াশুনো করে এসেছে।এখন সে বাড়িতে থাকে এবং চাকুরী খুঁজছে কয়েক বছর যাবৎ।রিমি ও অনিকেতের প্রেম প্রায় চারবছর অতিক্রম করলো।অনিকেতের বাবা একজন ব্যাবসায়ী এবং রাজনীতিবিদ সে চাইলে চাকুরী না খুজেঁ বাবার ব্যবসা দেখাশোনা করতে পারে।কিন্তু তা সে চাইনা,তার পিছনে অবশ্য দুটি কারন আছে।প্রথমত সে তার বাবার পরিচয়ের বাইরে নিজের একটা 'আইডেন্টিটি' প্রতিষ্ঠিত করতে চায়,নিজের পায়ে সে দাঁড়াতে চায়।দ্বিতীয়ত রিমিকে নিয়ে সে কলকাতা অথবা বাইরে কোথাও থাকতে চাইছে।
হোটেল রুমে প্রবেশ করতেই মালিক বাবলুদা রিমিকে জিঞ্জাসা করল,"এতক্ষণে চরণধূলি পড়লো,আমার ব্যবসা তো লাটে উঠবে। কাস্টমার অপেক্ষা করছে অনেক্ষন,ঢং একটু কম দেখা।অনিকেতের জন্য এতো তোর বাড়ানি,দুদিন পরে যখন মজা নিয়ে লাথিমারবে তখন আমার পায়ে তোর কাঁদতে হবে।" রিমি কথার উত্তর না দিয়ে সোজা তার রুমে ঢুকে গেলো।সে চলে যেতেই বাবলু মনে মনে ভাবল,"তোর মত 'আইটেম' চলে গেলে আমার কী হবে! দেখা করছিস ঐ টুকুনিতেই সন্তুষ্ট থাক,বেশি উড়লে ডানা কেটে দেবো।"
রিমি মাটিয়াতে আছে অনেকদিন,তার মায়ের সঙ্গে সে আশ্রয় নিয়েছিলো এই হোটেলে।তার পিতৃ পরিচয় সে জানেনা,আর জানার চেষ্টা কখনো করেনি।সে জানে,তার মত পতিতাদের কোন পিতৃ পরিচয় থাকেনা।রিমি একজন দেহ ব্যবসায়ী,তার মাও এই কাজ করেছে।কয়েকবছর আগে তার মা পরলোকগত হয়েছে,এখন তার নিজের বলতে অনিকেত ছাড়া আর কেউ নেই এই দুনিয়ায়।রিমি অবশ্য পড়াশুনা করেছে বেশ কিছুদূর, সে স্নাতক পাশ করেছে।
এভাবে সময় পেরিয়ে যায়,অনিকেত চেষ্টা করেযাচ্ছে তার স্বপ্নের বাসর সাজাতে।অন্যদিকে উলঙ্গ নৃত্য আর হিংশ্র থাবায় রিমির দেহ-মন ক্ষতবিক্ষত ও শ্রান্ত।তার মাঝে চলেছে লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেমালাপ,গ্রামের অনেকের কানে গিয়েছে তাদের এই সর্ম্পকের কথা।সবাই কানাঘুষো করে কিত্ন সামনে বলার সাহস কারো নেই,সম্ভ্রান্ত পরিবারের ছেলে বলে কথা।অনিকেতের বাবার কানে কথাটা পৌঁছালে তিনি অনিকেতকে একটু সাবধান করে দেই।অনিকেত তার বাবাকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে গোপনে তাদের প্রেম বন্ধন অটুট রাখে।
হঠাৎ একদিন তাদের গ্রাম আবির,বাজি তে মেতে উঠল উৎসবের আনন্দে।সদ্য সমাপ্ত বিধায়ক নির্বাচনে 'ছাতা' দলের মনোনীত প্রার্থী জয়লাভ করেছে।অনিকেতের বাবা অবশ্য বিরোধী দলের নেতা,তার দলের ভাবমূর্তি এখন ভালোনেই তাই তিনি এই নির্বাচনে অংশগ্রহন করেননি।নতুন সরকার গঠন করল 'ছাতা' দল, নির্বাচনের আগে এই দল প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে তারা পতিতা দের জন্য বিশেষ সংরক্ষন আইন পাস করবেন।সরকার গঠন হয়ে গেলো প্রায় একবছর কিন্তু 'পতিতা সংরক্ষন বিল' নিয়ে সরকারের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।অনিকেতের বার বার বারন করা সত্ত্বেও রিমি নিজের নেতৃত্বে একটি আন্দোলন ও র্ধনায় বসে গেল বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে। দেখতে দেখতে তার আন্দোলনে সাড়া দিতে লাগলো রাজ্যব্যাপী সব পতিতারা।অনিকেতের বাবাও রিমির পাশে গিয়ে দাঁড়াল,তিনিও তার সাথে আন্দোলনে যোগ দিলেন ।....................চলবে
...।
রিমির হাতে হাত রেখে সান্ত্বনার সুরে অনিকেত বলল,"কী করব বলো,তোমাকে না দেখে আমি থাকতে পারিনা। কিছুদিন অপেক্ষা করো,চাকরিটা পেয়ে যায়,তারপর তোমাকে নিয়ে কলকাতায় চলে যাব।সেখানে আমাদের কেউ চোখ রাঙাবেনা,তুমি-আমি পাড়ি দেবো সুখরাজার দেশে।"রিমি দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে,"আর চাকরি!কতো পরীক্ষাই তো দিলে,এজন্মে আর জুটবে বলে মনে হয়না। সবাই পেটের জ্বালায় মরছে,ওদিকে শালাগুলো 'ঊলঙ্গ' হয়ে নাচছে।এতো চুরি-ডাকাতি,ছিনতাই,কিডন্যাপিং,সিন্ডিকেট দিনের পর দিন বাড়ছে শুধু বেকারত্বের কারনে"।তার কথায় অনিকেত একটু রেগে গিয়ে রিমির মুখ খামছে ধরে সাবধান করল,"তোমাকে কতবার বলেছি গালাগালি দেবেনা,এবার যদি কখনো গালিগালাজ করো তোমার সাথে দেখা করা বন্ধ করে দেবো "।
"sorry! আর কখনো গালাগালি দেবোনা,এবার একটু হাসো আমার 'অক্সিজেন'।" অনিকেতকে চিমটি কেটে খুনসুটির সুরে বলল, "বাই দ্যা ওয়ে,দেখা করার তাগিদ আমার থেকে তোমার বেশি"।অনিকেত রেগে উঠে চলেযাচ্ছিল, অমনি সে তার গলা জড়িয়ে ধরে আদর করে মায়াচুম্বনের জালে জড়িয়ে ফেলল।সিঁধেল কেটে চোর অমুল্য গহনায় হাত দেবে,হঠাৎ ফোনের 'রিং' বেজে ঊঠতেই বাড়িওয়ালী জেগে গেল।ফোনে কথা শেষ করেতেই তারা পরস্বপরকে বিদায়চুম্বন দিয়ে আপন আপন ঠিকানায় রওনা দিলো।
অনিকেতের জন্ম মাটিয়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত বিত্তশালী পরিবারে,সে কলকাতা থেকে পড়াশুনো করে এসেছে।এখন সে বাড়িতে থাকে এবং চাকুরী খুঁজছে কয়েক বছর যাবৎ।রিমি ও অনিকেতের প্রেম প্রায় চারবছর অতিক্রম করলো।অনিকেতের বাবা একজন ব্যাবসায়ী এবং রাজনীতিবিদ সে চাইলে চাকুরী না খুজেঁ বাবার ব্যবসা দেখাশোনা করতে পারে।কিন্তু তা সে চাইনা,তার পিছনে অবশ্য দুটি কারন আছে।প্রথমত সে তার বাবার পরিচয়ের বাইরে নিজের একটা 'আইডেন্টিটি' প্রতিষ্ঠিত করতে চায়,নিজের পায়ে সে দাঁড়াতে চায়।দ্বিতীয়ত রিমিকে নিয়ে সে কলকাতা অথবা বাইরে কোথাও থাকতে চাইছে।
হোটেল রুমে প্রবেশ করতেই মালিক বাবলুদা রিমিকে জিঞ্জাসা করল,"এতক্ষণে চরণধূলি পড়লো,আমার ব্যবসা তো লাটে উঠবে। কাস্টমার অপেক্ষা করছে অনেক্ষন,ঢং একটু কম দেখা।অনিকেতের জন্য এতো তোর বাড়ানি,দুদিন পরে যখন মজা নিয়ে লাথিমারবে তখন আমার পায়ে তোর কাঁদতে হবে।" রিমি কথার উত্তর না দিয়ে সোজা তার রুমে ঢুকে গেলো।সে চলে যেতেই বাবলু মনে মনে ভাবল,"তোর মত 'আইটেম' চলে গেলে আমার কী হবে! দেখা করছিস ঐ টুকুনিতেই সন্তুষ্ট থাক,বেশি উড়লে ডানা কেটে দেবো।"
রিমি মাটিয়াতে আছে অনেকদিন,তার মায়ের সঙ্গে সে আশ্রয় নিয়েছিলো এই হোটেলে।তার পিতৃ পরিচয় সে জানেনা,আর জানার চেষ্টা কখনো করেনি।সে জানে,তার মত পতিতাদের কোন পিতৃ পরিচয় থাকেনা।রিমি একজন দেহ ব্যবসায়ী,তার মাও এই কাজ করেছে।কয়েকবছর আগে তার মা পরলোকগত হয়েছে,এখন তার নিজের বলতে অনিকেত ছাড়া আর কেউ নেই এই দুনিয়ায়।রিমি অবশ্য পড়াশুনা করেছে বেশ কিছুদূর, সে স্নাতক পাশ করেছে।
এভাবে সময় পেরিয়ে যায়,অনিকেত চেষ্টা করেযাচ্ছে তার স্বপ্নের বাসর সাজাতে।অন্যদিকে উলঙ্গ নৃত্য আর হিংশ্র থাবায় রিমির দেহ-মন ক্ষতবিক্ষত ও শ্রান্ত।তার মাঝে চলেছে লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেমালাপ,গ্রামের অনেকের কানে গিয়েছে তাদের এই সর্ম্পকের কথা।সবাই কানাঘুষো করে কিত্ন সামনে বলার সাহস কারো নেই,সম্ভ্রান্ত পরিবারের ছেলে বলে কথা।অনিকেতের বাবার কানে কথাটা পৌঁছালে তিনি অনিকেতকে একটু সাবধান করে দেই।অনিকেত তার বাবাকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে গোপনে তাদের প্রেম বন্ধন অটুট রাখে।
হঠাৎ একদিন তাদের গ্রাম আবির,বাজি তে মেতে উঠল উৎসবের আনন্দে।সদ্য সমাপ্ত বিধায়ক নির্বাচনে 'ছাতা' দলের মনোনীত প্রার্থী জয়লাভ করেছে।অনিকেতের বাবা অবশ্য বিরোধী দলের নেতা,তার দলের ভাবমূর্তি এখন ভালোনেই তাই তিনি এই নির্বাচনে অংশগ্রহন করেননি।নতুন সরকার গঠন করল 'ছাতা' দল, নির্বাচনের আগে এই দল প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে তারা পতিতা দের জন্য বিশেষ সংরক্ষন আইন পাস করবেন।সরকার গঠন হয়ে গেলো প্রায় একবছর কিন্তু 'পতিতা সংরক্ষন বিল' নিয়ে সরকারের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।অনিকেতের বার বার বারন করা সত্ত্বেও রিমি নিজের নেতৃত্বে একটি আন্দোলন ও র্ধনায় বসে গেল বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে। দেখতে দেখতে তার আন্দোলনে সাড়া দিতে লাগলো রাজ্যব্যাপী সব পতিতারা।অনিকেতের বাবাও রিমির পাশে গিয়ে দাঁড়াল,তিনিও তার সাথে আন্দোলনে যোগ দিলেন ।....................চলবে
...।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মোঃ ইমরান হোসেন (ইমু) ০৩/০৫/২০১৮একটা ভাল থিম
-
সোলাইমান ২৭/১০/২০১৭জীবন সত্য ! জীবনে অধিক সত্য সেখানে বাস্তব বড্ড নির্মম।প্রিয় কবি।
-
অধীতি ২০/১০/২০১৭অসাধারণ
-
সুমন দাস। ২০/১০/২০১৭দুর্দান্ত
-
কামরুজ্জামান সাদ ১৯/১০/২০১৭সুন্দর
-
আব্দুল হক ১৯/১০/২০১৭সুন্দর লিখা , ধন্যবাদ!!
-
মধু মঙ্গল সিনহা ১৯/১০/২০১৭অপূর্ব
-
আজাদ আলী ১৯/১০/২০১৭Valo golpa