www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

অপ্রকৃতিস্থ এক ডায়েরীর পাতা

সকাল দশটা, একটা আস্ত আর মস্ত বড় ,লম্বা জ্বলজ্বলে দিন সামনে পড়ে আছে। চারপাশ সকালের নরম-তরল রোদের মায়ায় ভেসে যাওয়া, কেমন উজ্জ্বল অথচ ম্লান আর এলোমেলো, অন্য দিনের চেয়ে শান্ত,নীরব আর নিশ্চুপ। রোদরঙে ভেসে যাওয়া ঘরের দেয়ালে লেপ্টে থাকা আলসেমি ভরা সকালে স্বাভাবিকভাবেই ঘুম ভাঙতে দেরী হয়ে যায়, আমার ও হলো। ঘুম ভাঙতেই বিছানায় শুয়ে থাকা, নীরবে এদিক ওদিকে গড়াগড়ি দেয়া সময়টা কেমন যেন আড়ষ্ট আর কোঁকড়ানো লাগছে। জানালার পর্দা গলিয়ে ভেতরের দেয়ালে আছড়ে পড়া আলোর সাথে সাথেই হঠাৎ নেমেছে মন খারাপের সন্ধ্যা। চুপিচুপি, অগোচরে এগিয়ে আসছে হুড়মুড় করে বুক ভাঙ্গা দীর্ঘশ্বাস। এরকম আলোয় ভেসে যাওয়া সকালের মুখে সন্ধ্যা দেখতে ভাল লাগেনা বলেই বিছানা ছেড়ে উঠলাম, আম্মুর দেয়া ধোঁয়া ওঠা চায়ের সাথে দিন শুরুর প্রস্তুতি নিলাম। ভার্সিটি নেই, সেমিস্টার ফাইনাল শেষ তাই মোটামুটি একমাসের ছুটি।

আমার সেমিস্টার ফাইনাল মোটেই ভাল হয়নি, খুব বাজে পরীক্ষা দিয়েছি। অবশ্য তা নিয়ে আমার তেমন কোন মাথাব্যথাও নেই।পরীক্ষা ভাল হতেই হবে এমন কোন কথা নেই, পরীক্ষা নিয়ে ভাবতে গিয়ে আমার সকালটাই মাটি হয়ে যাচ্ছে।কি দরকার এসব ফালতু সাবজেক্ট নিয়ে ভাবার, তার চেয়ে বরং আম্মুদের কি অবস্থা দেখে আসা যাক।আগামী সপ্তাহে আমার ছোটমামার বিয়ে।আম্মুদের তাই গ্রামের বাড়ি যেতে হচ্ছে।আম্মু গত কয়েকদিন ধরেই আমাকে জোরাজুরি করছেন বিয়েতে যাবার জন্য, সমস্যা হলো আমি আগে কখনো কোন বিয়ে অথবা অন্য কোন পার্টিতে এটেন্ড করিনি,আমার খুব অস্বস্তি লাগে আর নিজেকে পার্টিতে একেবারেই বেমানান লাগে,এই সমস্যা আমার ছোটবেলা থেকেই।আম্মু খুব ভাল করেই জানে আমি যাবনা তারপরও শুধু শুধু ঘ্যান ঘ্যান করেই যাচ্ছে।আজই তাদের যেতে হবে, আমার ছোট দুই ভাইবোন গ্রামে যাবার আনন্দে আত্মহারা প্রায়। আমি অপেক্ষা করছি কখন সবাই বের হয়ে যাবে। আমার কোথাও যেতে ইচ্ছে করেনা, বাসায় বসে কয়েকদিন পুরোপুরি একলা কাটাবার আনন্দই অন্যরকম লাগে। আম্মু অনেক উপদেশ দিয়ে আর রান্না খাওয়ার সব বুঝিয়ে দিয়ে দুপুরের দিকে আব্বুর সাথে আমার ভাইবোনদের নিয়ে গ্রামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে গেলেন। বুয়া এসে রান্না করে দিয়ে যাবার কথা কিন্তু আমি পুরো একা থাকতে চাই তাই আম্মুরা যাবার পরপরই বুয়াকে আম্মু ফিরে না আসা পর্যন্ত এখানে আসতে মানা করে দিলাম।

এবার আমার নিরন্তর একাকীত্ব, কয়েকদিনের অস্বস্তিকর একা থাকার মধ্যে ভীষণ নিজস্ব কিছু সময় কাটানোর অবসর দারুণ আনন্দে আছড়ে ফেলে। তবে এই আনন্দেরও যন্ত্রনা রয়েছে, আনন্দময় অথচ কঠিন একাকীত্বের যন্ত্রনা, খুব সুক্ষ্ম আর ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকা যন্ত্রনা।একে অনুভব করা যায় কিন্তু হাতের নাগালে পাওয়া যায়না।এরকম নিরন্তর আর অস্বস্তিকর একাকীত্বের সকাল, দুপুর, সন্ধ্যা,রাত কাটাতে আমার খারাপ লাগেনা।বরং এইরকম সময়গুলোর জন্যই আমি সারাবছর অপেক্ষা করে থাকি।আমি একাকী থাকব আর কোথাও কেউ থাকবেনা, যেখানে যাব সেখানেই আমি, আমি এবং আমি।

আস্তে আস্তে দুপুর গড়াচ্ছে, পুরো বাসায় আমি একা, বাসায় একা থাকলেই বাইরের পৃথিবী থেকে নিজেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন লাগে।বাইরের নিত্যদিনের কর্মময় পৃথিবীর সব শব্দও যেন দূরে কোথাও মিলিয়ে যায়, বাড়ির সামনের রাস্তায় চলা প্রাইভেট কার,রিকশা, সাইকেল, বাইক আর মানুষের নিত্যগুঞ্জন যেন অনেক অনেক দূর থেকে ভেসে আসে আবছাভাবে। এসবের মাঝে আমি আমার জন্য আলাদা একটা জগৎ তৈরী করি, নিজেকে খুঁজে পাই পৃথিবী থেকে বহুদূরে থাকা কোন জগতে। এই খুঁজে পাওয়া কখনো কখনো হয় বিপুল তৃপ্তিতে ভরা আবার কখনো তোলে বুকভাঙ্গা বিষাদের ঝড়।মন খারাপের মায়াবী , আলো-আঁধার ঘেরা ছাইরং এর স্মৃতিকাতর ছবিতে সমস্ত মন ভরে ওঠে তখন। আমি আনমনে এসব ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ খোলা জানালা দিয়ে হু হু করে বাতাস ঢুকে আমাকে আরো একবার এলোমেলো করে দিয়ে গেল। বাইরে তাকিয়ে দেখলাম আকাশ ঝাপসা হয়ে আসছে, কালো মেঘ জমছে এখানে ওখানে।রোদের তরল সোনা রং মুছে ছাইরং ছড়িয়ে পড়ছে।গম্ভীর, বিষন্ন, ছোট ছোট কালো মেঘের টুকরো এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ছে আকাশ জুড়ে।

রৌদ্র ঝলমলে দুপুরের এমন বদলে যাওয়া, হু হু বাতাস,জমতে থাকা মেঘ যেমন তেমন করে এই আমাকে, আমার আমিকে অসময়ে অতর্কিত সুখের ঝাপ্টায় ছুড়ে ফেললো অপ্রস্তুত একাকীত্বে।আমি শাড়ি বদলালাম, সবুজ-হলদে-বেগুনী আভা মেশানো মেঘভেজা হাওয়ার স্পর্শ নেওয়া রং অনেকটা।
বাতাসে ভিজে ভিজে ভাব ছড়িয়ে পড়ছে, ঝিরঝির দুপুরের তপ্ত তৃষার সাথে অভিমান করে প্রকৃতির শরীর জুড়ে যেন ঠান্ডা পরশ ঢেলে দিয়েছে কেউ । এরকম সময়ে ঘরে বসে থাকার কোন মানে হয়না, ছাদে উঠে এলাম। হুড়মুড়িয়ে বাতাস এসে ঘাসরঙ্গা শাড়ির আঁচল উড়িয়ে ঘুড়ির মত মেলে ধরার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে, সেই সাথে মাতাল চুলও, অস্থির,চঞ্চল আর অসহায় উড়ার অক্ষমতার ভঙ্গিতে সব ছাড়িয়ে যাবার প্রচেষ্টায় যেন বিভোর।ছাদে আসার পর মনে হয় আশেপাশের সব বিল্ডিং আর বাড়িগুলো হাত বাড়িয়ে আমাকে অভিনন্দন জানায়, আমি হেসে ফেললাম।বাড়িগুলোও কি হাসছে? আমাদের বাড়ির সামনের রাস্তা পেরিয়ে দুটো বিল্ডিং পরে একটু দূরে , ছাদ থেকে তাকালেই দেখা যায় শ্যাওলা রঙ্গের অদ্ভুত একটা বাড়ি, খুব সাদাসিধা, তুলনাহীন শ্রীবিহীন সৌন্দর্য, শ্যাওলা-সবুজ মায়ায় জড়ানো, অসম্ভব চাকচিক্যহীন অসাধারনভাবে সাধারন ঐ বাড়ির ছাদের এককোণায় সামান্য একটু বসার জায়গা সিমেন্ট দিয়ে বানানো,তার উপর টিনশেডের ছাউনী, পাশেই কবুতরের জন্য খুব ছোট একটা খোপ খোপ করা বাড়ির মত আছে। ঐ বাড়িরই কোন মেয়ে অথবা বউ হয়তো কবুতর ভালবাসে বলে ঐ কবুতরের বাসাটা বানিয়ে নিয়েছে। এগুলো দেখতে আমার ভাল লাগে। ঐ বাড়িটাও ভাল লাগে।প্রায় প্রতি বিকেলে অথবা দুপুরেই ঐ বাড়ির ছাদে একটা মেয়েকে বসে থাকতে দেখি, উথালপাতাল, এলোমেলো,শব্দহীন, আড়ষ্ট, নড়াচড়া ছাড়া সে সেখানে ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়ে দেয়।এতদূর থেকে মেয়েটার চেহারা দেখা যায়না, শুধু তার শরীর ঘিরে থাকা কমলা, সবুজ অথবা হলুদ রঙ্গের ওড়নার ওড়াউড়ি আমাকে মুগ্ধ করে।কখনো কখনো দেখি নীল পাড়ের সবুজ জমিনের শাড়ি পরে ছাদের রেলিং ঘেঁষে শুন্যদৃষ্টিতে মূর্তির কোথায় যেন তাকিয়ে থাকে।

আমিও প্রায়ই ছাদে যাই, দিন-রাত,দুপুর-বিকেল-সন্ধ্যা যখন খুশি তখন।কোন কোন দুপুরের প্রখর রৌদ্রে ছাদের রেলিং এর উপর এককোণে বসে থাকি চুপচাপ, অনেকক্ষণ। মেয়েদের প্রখর রৌদ্রে বসে থাকার নিয়ম নেই হয়তো তাই আশেপাশের অনেক কৌতূহলী দৃষ্টি আমাকে ভেদ করে চলে যায়, এসব কিছুই আমাকে স্পর্শ করেনা। এসব সময়ে আমার মন পড়ে থাকে সহস্র সাধনায় পাওয়া এক দুপুরের সরল স্বীকারোক্তিময় নিশ্চিত, নিশ্চিন্ত দুটি চোখের গভীর স্তব্ধতায়। যে দুপুরের ম্লান আলোয় তার চোখে চোখ রেখে ভেসে গিয়েছিলো আমার আমার দীর্ঘবিস্তৃত সংযমের অতীত ইতিহাস। অনাবিল প্রশান্তির বিষাক্ত নিশ্বাসের আড়ালে মুগ্ধ,তন্ময় অথচ বিধ্বস্ত এক হৃদয়ের কিছুক্ষণের সুগভীর বৈচিত্র্যের নেশাতুর দৃষ্টি, প্রচন্ড সুখে জমতে থাকা নীলসুখ, গভীর থেকে গভীরে, আমার হৃদয়ের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিস্তৃতি খুঁজে পেয়েছিল। আমি জমে যাইনি, গলে যাইনি, ভেসে যাইনি, হঠাৎ পাওয়া চূড়ান্ত সুখের আকস্মিক আগমনে স্তব্ধতা আঁকড়ে ধরেছিলাম হয়তো, তবুও কি অপরিসীম পরিতৃপ্তি ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছিল রক্তের প্রতি কণায় কণায়। তারপরের সুবিস্তৃত গল্পের প্রতি অক্ষরে অক্ষরে শুধুই অবহেলা আর উপেক্ষার ছড়াছড়ি।

এসব এলোমেলো ভাবনার অবকাশে মাঝে মাঝে ঐ মেয়েটাকে দেখি।যেদিন সে ছাদে শাড়ি পড়ে আসে সেদিন ছাদের রেলিং ঘেঁষে দাঁড়ায়, কেন দাঁড়ায় কে জানে।আমি তাকিয়ে থাকি,কখনো অকারনেই হাসি, মেয়েটা হাসে কি না জানিনা।এতদূর থেকে তার মুখের অভিব্যাক্তি বোঝা যায়না। মেয়েটা শুধু এই একরঙ্গের শাড়িই পড়ে, কে জানে তার হয়তো এই একটাই মাত্র শাড়ি। এক রং এর শাড়ি পড়ে বলেই আমি মেয়েটার একটা নাম ও দিয়েছি। সবুজ জমিনের নীল পাড়ের শাড়ি পড়ে বলে তার নাম 'ঘাসফুল' ।নীল ঘাসফুল।খুব ছোটবেলায় কোথায় যেন ঘাসফুল দেখেছি, নীল রং এর। অদ্ভুত নীল রং, আকাশের মত হালকা নয়। গাঢ়,গভীর, সুকঠিন আর সুকোমল নীল।ইচ্ছে করলেই যেন এই নীলে নিজেকে ডুবিয়ে দেয়া যায়। ছোটবেলার এই নীল রং এর ঘাসফুল আর তার সুকোমল নীল কতটা সত্যি আমি জানিনা।নীল ঘাসফুল আমি বড় হবার পর দেখিনি, দেখতে চাইওনি, ইচ্ছাও করেনি।তাই জানিনা আমার স্মৃতিতে জমা নীল রং এর ঘাসফুল বাস্তবে আছে কি না, থাকলেও তা দেখতেই বা কেমন।
ছোটবেলায় হয়তো সত্যিই কোথাও দেখেছি অথবা হতে পারে পুরোটাই আমার কল্পনা।কিন্তু আমার মস্তিষ্কের কোন একটা কোষ খুব সযত্নে একটা স্মৃতি সাজিয়ে রেখেছে যেখানে আমি তন্ময় হয়ে, উন্মত্ত দৃষ্টিতে পৃথিবীর সমস্ত বিস্ময় চোখে নিয়ে কতগুলো সবুজ ঘাসের ওপর নীল রং এর ফুল দেখছি।সেই মুগ্ধতা, সেই বিস্ময় আমাকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল বহুদিন।

তারপর এক এলোমেলো ঝিরঝিরে, হালকা বৃষ্টিময়, যে বৃষ্টিতে শরীর ভিজে না প্রকৃতি ভিজেনা, শুধু হালকা একটা কুয়াশার মত আবেশে চারপাশ ঘিরে রাখে; তেমন এক স্বপ্নময়, ঝাপসা,ঝিমানো, রোদপালানো বিকেলে ঐশ্বর্যময় সুখ নিয়ে এলো সেই অগভীর,তন্দ্রালু,মায়ামায়া দুটি চোখ যার কাছে আমার অসংখ্য সুখের ঋণ জমা হয়েছে প্রতি মূহুর্তে, প্রতিক্ষণে।সে পড়ন্ত বিকেলে তার সাথে শহর ছেড়ে বহুদূরে যাবার স্মৃতি, একপাশে বয়ে যাওয়া নদী আর তার পাশে কাশফুলের মেলায় নিজেকে হারিয়ে ফেলার অকৃত্রিম অনুভূতি সবকিছু আমাকে অপরিসীম ভাল লাগার আবেশে জড়িয়ে ছিল।যখন হালকা শুভ্র, শান্তস্নিগ্ধ কাশফুলের দুলুনির তালে তার সাথে আমিও হারিয়ে গিয়েছিলাম অজানা অচেনা এক অস্পষ্ট অনুভূতির জগতে তখনই সে কোথা থেকে হঠাৎ একটা ফুল কুড়িয়ে এনে আমাকে দিল। একটাই মাত্র ফুল, অসামান্য নীল, অতিশয় ক্ষুদ্র, অসম্ভব দীপ্তিময় নীল রং এর ঘাসফুল, হয়তো বা কোন বন্যফুল। অযত্নে অবহেলায় বেড়ে ওঠা এই খুব ক্ষুদ্র আর দীন জ্বলজ্বলে নীল রং এর ঘাসফুল আর সাথে মিশে থাকা তার হাতের স্পর্শ, যখন আমার হাতের ছোঁয়া পেল তখনই খুব গোপন একটা প্রতিজ্ঞায় নিজেকে জড়িয়ে ফেললাম তার সাথে।

সেই ফুল এখনো সযত্নে আমার কাছে আমার প্রিয় এই মানুষটার লেখা কবিতার খাতার ভিতর রাখা আছে।এই ফুল তার স্মৃতিসহ স্পর্শ নিয়ে আমার চোখের ভিতর, মনের ভিতর বিঁধে আছে।এই বিঁধে থাকা সুখের নয়। এখানে চাপ , সেখানে টান, ওখানে ধাক্কা।ভীষণ অসহায় একাকীত্বে কোন অভাব ছাড়া, দুঃখ ছাড়া, যন্ত্রণা ছাড়াই সীমাহীন যন্ত্রণার সমুদ্রে নিক্ষেপ করেছে আমাকে।তবু ভাল লাগে, ভাল, আরো ভালো, অনেক ভালো লাগা। হয়তো সেই নীল ঘাসফুলের বিনিময়ে কোন ভালবাসা ছিলনা তার, হয়তো বা শুধুই করুণা, না কি করুণা থেকে বহুদূরের কিছু। বিশ্বাস হয়না, বিশ্বাস করতে আস্থাও হয়না। আমরা বহুদিন ধরে এক অসম্ভব অবস্থায় বসবাস করছি, এই অসম্ভব অবস্থা বোঝার মত ক্ষমতা আমি আর সে ছাড়া আর কারো নেই;আমার সামনে থাকা ছাদ, চারপাশের বাড়ি, পুরো শহর শুন্য হয়ে যায়, এখন আর মিথ্যে শান্তনায় নিজেকে ভোলাবার সময় নেই, সুযোগ নেই, আর লুকোবার অবকাশ নেই। শুধু শুন্য হয়ে যাওয়া আকাশ বাতাস, আসন্ন অপরাহ্নের এই দিন, বাড়ী, ছাদ সবকিছু মিলিয়ে গিয়ে সে থাকে, আর কোথাও কিছু নেই, থাকে না।

দুপুর বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামার পথে, অন্যদিনের চেয়ে তাড়াতাড়িই সন্ধ্যা নামছে, পশ্চিমের আকাশে কমলার আভা নেই, কেমন ধূসর আর মন-মরা ভাব চারদিকে।রাস্তাঘাটও শান্ত চুপচাপ, মানুষজনের চলাফেরা প্রায় নেই বললেই চলে।
ছাদ থেকে নিজের রুমে ফিরে আসলাম।সারাদিন কিছু খাওয়া হয়নি, ক্ষুধাও টের পাচ্ছিনা। তবু এক কাপ চা বানালাম, কবিতার বই হাতে নিয়ে বসলাম,কিন্তু আজ কিছুতেই কোনকিছুতে মন বসাতে পারছিনা।ভাল লাগছেনা। ধীরে ধীরে অন্ধকার হয়ে আসছে চারপাশ। মসজিদ থেকে মাগরিবের আযান শোনা যাচ্ছে। আযান শেষ হতেই সব চুপ।চারপাশ এমন নিঝুম আর নিস্তব্ধ কেন? প্রতিদিনতো এমন থাকেনা।জানালা দিয়ে বাইরে তাকালাম, বৃষ্টি নেমেছে তার সাথে পাল্লা দিয়ে অন্ধকার।খুব নিঃশব্দ, আস্পষ্ট আর অদৃশ্য বৃষ্টির পানি কুয়াশার মত সন্ধ্যার অন্ধকারকে আরো ঝাপ্সা আর ঘন-মনমরা রঙ্গে রাঙ্গিয়ে তুলছে।চারপাশ এতই নিঃশব্দ আর চুপচাপ যে অনেকদূর থেকে ট্রেনের হুইসেলের শব্দ মৃদুভাবে ভেসে আসছে।খুব মৃদু হলেও সেই হুইসেল আমার হৃদয় কেটে কেটে মস্তিষ্কের কোষে জমা হচ্ছে।সন্ধ্যার ধীরে ধীরে নেমে আসা অন্ধকারের জাল চারপাশের শান্ত সীমানার কোন কাজে না লাগা সৌন্দর্যের মত বৃষ্টির সাথে মিশে যাচ্ছে, সেই সাথে বিলীন হয়ে যাচ্ছে পৃথিবীর সব শব্দ।

বিদ্যুৎ থাকা স্বত্তেও বাতি জ্বালাতে ইচ্ছে করছেনা। আমার টেবিলের ড্রয়ারে কতগুলো মোমবাতি রাখা আছে।ঘি এর মাটির প্রদীপ ও আছে বেশ অনেক্গুলো।জানালা দরজা সবকিছু বন্ধ করে আমার নিজেকে পৃথিবী থেকে আলাদা এক জগতে নিয়ে যাবার উদ্দেশ্যে মোমবাতি গুলোকে একসারিতে আর মাটির প্রদীপগুলোকে রুমের বিভিন্ন জায়গায় সাজিয়ে জ্বালিয়ে দিলাম। এবার পুরো ঘরটাকেই অন্যরকম লাগছে, যেন এটা কোন ঘর নয়,পৃথিবী নয়,পৃথিবী থেকে বহু বহুদূরের কোন গ্রহ। ছবির মত, অদ্ভূত, দূর আর উদাসীন কোন নির্জন, নিস্তরঙ্গ গ্রহ। এখানে শূন্যতা আছে আবার শূন্যতার বিরাট জগৎজুড়ে থাকা অশান্তিও আছে।তবে কোন আবেগ নেই,দুঃখ-সুখ কিছুই নেই,ভালবাসা নেই,ভয়,প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি অথবা ব্যর্থতা সবকিছুই এখানে নেই হয়ে আছে।শূন্যতার এই ধূ ধূ রাজ্যের ভিতর স্তব্ধতায় ডুবে থেকে প্রচন্ড বিতৃষ্ণায় আমার শরীর কুঁকড়ে আসছে।
আয়নার সামনে দাঁড়ালাম, নিজের প্রতি জমতে থাকা বিতৃষ্ণার তরল লাভা যেন চোখমুখ উপচে পড়ছে। আয়নায় নিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে না পেরে দৃষ্টি ফেরালাম। কি আশ্চর্য ! এতক্ষণের প্রসারিত জগৎ টা হঠাৎ করেই ভীষণ সংকীর্ণ হয়ে আসছে। ঘরের চারদিকের দেয়ালগুলো ধীরে ধীরে যেন এগিয়ে আসছে আমার দিকে ,সংকীর্ণ থেকে সংকীর্ণতর হচ্ছে। এতক্ষণের স্তব্ধ অনুভূতি এখন ক্রমেই বিস্তৃত হয়ে পরিণত হচ্ছে সীমাহীন ক্রোধসমুদ্রে, আমি সেই সমুদ্রের উত্তাল ঢেঁউয়ের ধাক্কায় ছিটকে পড়ছি বহুদূরে।এখন মনে হচ্ছে সীমাহীন অসীম নৈঃশব্দে চারপাশ ডুবে গেছে, আমার শ্রবণেন্দ্রীয় কি কাজ করা বন্ধ করে দিলো? বুঝতে পারছিনা,সবই এলোমেলো লাগছে। নিজেকে খুব অপ্রকৃতিস্থ লাগছে।আজ আমার সমস্ত মন-মস্তিষ্ক একযোগে আমাকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে আমার কোন নিয়মের আরাম নেই। সবাই নিয়ম দিয়ে নিয়ম, নিয়ম থেকে অনিয়ম করেই জীবন তৈরী করে আর আমি অনিয়মকে নিয়ম ভেবে আঁকড়ে ধরি।তারও কোন স্থিরতা নেই।আমার গত করে আসা সতেরো বছরের সব অতীত ইতিহাস আজ আমার সামনে অবলীলায় বলে দিচ্ছে আমার কোন অভ্যাসের আশ্রয়ও নেই, কখনো ছিলোনা।সবাই যা খুব সহজে করতে পারে, যা করা উচিৎ আমি সেগুলো করতে পারিনা। করার ইচ্ছাও আমার হয়না, দরকারও মনে হয়না।

আমার সব প্রতীক্ষা আজ এই মূহুর্তে এসে থেমে গেছে। কেউ আমাকে বলে দেয়নি কিন্তু তবু আমার অনেক আগেই জানা হয়ে গেছে আমি যাকে চির আরাধ্য ধন হিসেবে সমস্ত হৃদয় দিয়ে কাছে টেনেছি তার আর আমার জগৎ আলাদা, আমরা একে অন্যের জগতে প্রবেশের অধিকার কেউ কাউকে দিতে পারিনি।আমাদের মধ্যে নিজেদের তৈরী করা নিরন্ধ্র ব্যবধান। তার চোখভর্তি পৃথিবীতে ছুটে আসা জ্বলন্ত উল্কাপিন্ডের মত আভা । আমি তার কাছে ধূমকেতুর মত আকস্মিক, আকস্মিক এর মত নতুন এবং গুরুগম্ভীর রচনার মত অবোধ্য।বহুদিন ধরে আমার হৃৎপিন্ডের প্রতি স্পন্দনে ছড়িয়ে পড়ে ভীষণ প্রতীক্ষায় থাকা সেই আরাধ্য অকৃত্রিম অনুভূতি ছড়িয়ে দেয়া মানুষটার পাশাপাশি থেকেও না থাকার উপেক্ষা, পেয়েও না পাবার অবহেলা, ভালো না বেসেও ভালোবাসার করুণা। অসহ্য, যন্ত্রণাময়, অপরিসীম অতৃপ্তি !

একজন মাত্র মানুষই তো, সে যেখানে থাকবেনা সেখানে কোনকিছুই থাকবেনা এমন অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রণার অবিচার বিধাতা কেন করেন? কতো জন্মের পাপের শাস্তি জমিয়ে মানুষ নামক প্রাণিটি বিধাতার দেয়া এই অশান্তি কাঁধে নিয়েছে? অন্যেরা হয়তো জীবনের তীব্র প্রতিযোগীতায় এমন হাজারো সমস্যা সাথে নিয়ে, সমাধান করে, সামনে এগিয়ে যাবার ইচ্ছের সাথে তাল মিলিয়ে জীবনের সাথে মানিয়ে নেয়ার নিরন্তর খেলার খেলোয়াড় হয়ে জীবন কাটিয়ে দিতে পারে। স্বাভাবিক মানুষদের এই অসাধারন মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা আমার নেই, আমি খুব নিচুস্তরের মনুষ্যপ্রবৃত্তি নিয়ে পৃথিবীতে এসেছি, অসামাজিকতার বীজ আমার অণু পরমাণুতে । অদূরবর্তী সফল জীবনের আশায়, স্বপ্ন নিয়ে অন্য মানুষদের মত বাস্তববাদী, প্রায়োগিক মানুষ হবার ক্ষমতা আমি চাইলেও আর আমার পক্ষে অর্জন করা সম্ভব নয়।সুতরাং এই মূহুর্তে আমার নিজের জন্য একটি মাত্র সিদ্ধান্তই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। খুব কঠিন কিছু নয় তবে ভয়ংকর সিদ্ধান্ত হয়তো।
আমি অনেক ভেবে, অনেক অনেকদিন একান্তে বসে সবদিক ভেবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

আমার সামান্যতম স্মৃতিও আমি কোথাও রাখতে চাইনা, আমাকে মনে রাখার সর্বশেষ শব্দটিও আমার পরিচিত সবগুলো মানুষের মন থেকে, দৈনন্দিন জিনিসপত্র,আমার সকল ব্যবহার্য জিনিস থেকে মুছে যাক।পৃথিবী তন্ন তন্ন করেও আমার সামান্য চিহ্নও যেন কেউ কখনো কোথাও খুঁজে না পায়। হাসি পাচ্ছে আমার, অপ্রকৃতিস্থের মত অথচ ক্রুড় হাসি। আজকের এই সময়টাই আমার সিদ্ধান্ত কার্যকরের জন্য বেছে নিলে কেমন হয়।মনে হচ্ছে আমি এখন সব করতে পারি, নিজেকে নিয়ে পৃথিবীর নিকৃষ্টতম নিষ্ঠুরতার খেলা খেলার অদম্য ইচ্ছা আমার আপাদমস্তক পর্যন্ত অজানা শিহরনের স্পর্শ নিয়ে শরীরময় ছড়িয়ে পড়ছে।মনে হচ্ছে আমার পরিবার পরিজন, ভাই-বোন, বন্ধু-বান্ধব সর্বোপরি সবচেয়ে প্রিয় মানুষটিকেও আমার কোন প্রয়োজন নেই।পৃথিবীর কেউ এখন আমার কিছু নয়, আমিও কারো কোনকিছু নই। এখন আমি শুধুই আমার।নিজেকে নিয়ে যা খুশি তা করার এই তো সর্বশ্রেষ্ঠ সময়, এই সুযোগকে কাজে লাগানো উচিৎ বলে মনে হচ্ছে আমার।প্রতিদিনকার এসব অকারন অর্থহীন বেঁচে থাকা, সুখ সুখ যন্ত্রণার ছাপ মুখে নিয়ে ঘুরে বেড়ানো, সফল হবার উচ্চাকাঙ্খা এসবের কোন মানে হয়না। আমি বিলুপ্তি চাই, নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে চাই শতাব্দী থেকে।

পড়ার টেবিলের ড্রয়ার টেনে খুললাম, একটা ছোট বক্স বের করলাম। এই বক্সে আমার বহুদিন ধরে জমানো ১০৪ টা ঘুমের ট্যাবলেট রাখা আছে।ঘরের মোমবাতি গুলো জ্বলতে জ্বলতে প্রায় শেষের দিকে।মাটির প্রদীপগুলো এখনো মায়াবী আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে। আমি আমার সমস্ত বই, খাতাপত্র, কাপড়চোপড় ঘরের মাঝখানে জড়ো করছি, আমার মোবাইল,ল্যাপটপ, ছবির এ্যালবাম যেখানে যা কিছু আছে সব এই ঘরের মাঝখানে একত্র করছি।তাড়াহুড়ো করার কোন কারন নেই, ধীরে সুস্থেই সব করছি। নিজেকে ধ্বংসের সর্বশেষ প্রস্তুতি আর যাবতীয় আয়োজন শেষ করতে করতে অদ্ভুত এক অনুভূতি হচ্ছে আমার।যেন কোথাও বেড়াতে যাব।আস্তে আস্তে রাত বাড়ছে। আমি শাড়ি বদলে নতুন একটা সিল্কের সাদা পাড়,নীল জমিনের শাড়ি পড়লাম, চোখে অনেক সময় নিয়ে কাজল লাগালাম।আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখলাম, আর কেউ আমাকে এভাবে দেখবেনা, আমার চুল,চোখ, হাত আর কেউ কখনো ছুঁয়ে দেখতে পারবেনা।কিছুক্ষনের মধ্যে সব বন্ধনের মায়া কাটিয়ে আমি স্বেচ্ছায় চিরমুক্তির সন্ধানে যাব।এসব ভাবতে আমার আবারো হাসি পাচ্ছে, অপ্রকৃতিস্থের মত ভয়ংকর সেই ক্রড় হাসি। সব প্রস্তুতি শেষ, নিজেকে ধ্বংসের জন্য আর মাত্র দুটো কাজ বাকী আছে।এই দুটো কাজ করতে পারলেই আমি নেই হয়ে যাব,এতবড় পৃথিবীর কোথাও আমি থাকবোনা, আমার কথা, হাসি,কন্ঠস্বর সবকিছু মিলিয়ে যাবে চিরতরে।

সব প্রস্তুতি শেষে আমি ডায়েরী লিখতে বসেছি। আমি কখনো ডায়েরী লিখিনি, আজই প্রথম আজই শেষ লিখা।কেন লিখছি তাও বুঝতে পারছিনা।কিছুক্ষণের মধ্যেই তো সবকিছু নষ্ট হয়ে যাবে। এই ডায়েরী,কলম, আমার হাত আর আমাকে ঘিরে যা কিছু আছে আর যা কিছু জড়িয়ে ছিল।তবুও আমি লিখছি, ডায়েরী লিখতে লিখতেই আমি অন্ধকারে পাড়ি জমাবো বলে ঠিক করেছি, ডায়েরী লেখাও শেষ হয়ে এসেছে। আর অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে আমি সর্বশেষ কাজগুলো করে ফেলব।কাজগুলো খুব দ্রুত আমাকে শেষ করতে হবে।,কতক্ষণ সময় পাব জানিনা।কিন্তু আমি শুরু করছি। আর কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব নেই, আমি হয়তো অনেকখানি স্বার্থপরতা দেখাচ্ছি, অবশ্য তাতে কিছু যায় আসেনা। সব মানুষই কখনো কখনো স্বার্থপর হয় অতএব আমিও হলাম।রূমের মাঝখানে জড়ো করা জিনিসগুলোতে একটা মোমবাতি থেকে আগুন ধরিয়ে দিলাম,এই আগুন ছড়াতে সময় লাগবে কিছুক্ষণ।ততক্ষনে আমি প্রায় ১০-১২ টার মত ঘুমের ট্যাবলেট পানি দিয়ে গিলে ফেললাম।আর বেশীক্ষণ সময় নেই। আমার এখনো কোন ভয় লাগছেনা, শুধু চেতনা ধীরে ধীর আচ্ছন্ন হয়ে আসছে। সেইসাথে ঘরের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ছে, আর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আমার শাড়ির আঁচল ছুঁয়ে ফেলবে ঐ আগুন।আগুনের লেলিহান শিখায় আমার চোখ ঝলসে যাচ্ছে যেন, প্রবল নৈঃশব্দ আর ভয়ংকর শূন্যতা জড়িয়ে ধরছে।আগুন আমার আঁচল ছুঁয়ে ফেলেছে, এগিয়ে আসছে গুটি গুটি পায়ে।আমি চোখ বন্ধ করলাম চিরতরে, এখন চারপাশ ধূসর,কুয়াশার মত ঝাপ্সা আর ম্লান আলোয় সবকিছু অস্পষ্ট হয়ে আসছে।তার মাঝখানে আবছামতন একটা রেলস্টেশন যেন চোখের সামনে।রেললাইন ছাড়িয়ে আমি দূর থেকে দূরে হারিয়ে যাচ্ছি, স্টেশনের সাথে দূরত্ব বাড়ছে তবু ও স্টেশনের প্ল্যাটফরমে কাকে যেন দেখতে পাচ্ছি।এতদূর থেকে দেখা যায়না তবু স্পষ্ট জানি সে কে।আমার তার কাছে ছুটে যেতে ইচ্ছে করছে কিন্তু আর উপায় নেই।সবকিছু শেষ।




আনানদের বাড়িটার দোতলায় আগুন লেগেছে।এখনো কেউ দেখতে পায়নি।এখন গভীর রাত, মধ্যরাতে সবাই ঘুমের প্রগাঢ় প্রশান্তি নিয়ে মগ্ন। আগুন ইতিমধ্যে পুরো বাড়িতে ছড়িয়ে পড়েছে।কেউ জানেনা এই গভীর রাতে আনান নামের অপ্রকৃতিস্থ মেয়েটিও চিরতরে ঘুমিয়ে পড়েছে।তার লেখা ডায়েরীর পোড়া পাতার ছাই বাতাসে উড়ে গিয়ে সময়ের সাথে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বাতাসে।আনানের শেষ ইচ্ছানুযায়ী প্রকৃতি তার সমস্ত চিহ্ন যেন ধীরে ধীরে মুছে দিচ্ছে পৃথিবী থেকে।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ১০৯৬ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৮/০৩/২০১৫

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • পরিতোষ ভৌমিক ১৮/০৩/২০১৫
    সাহিত্যে ভরপুর একটি লেখা কিন্তু থিমটা বিশেষ করে শেষটা ভালো লাগল না কেননা জানিনা, নাকি এই ভালো না লাগাই আরেক ধরনের মুগ্ধতা !!!
  • অগ্নিপক্ষ ১৮/০৩/২০১৫
    "নহাজা য়াজিনা" নামটা ঠিক মতো আসেনি দেখছি! তোমার নামটা আসলে কি বলো তো?
 
Quantcast