নোয়া
তুমি ,হ্যাঁ একমাত্র তুমি,তোমাকে আমি বিশ্বাস করি,ভালোবাসি। জানি আমার ভালোবাসা প্রমান করার প্রয়োজন নেই ,কিন্তু তবুও আমি তোমার জন্য সব করতে পারি , মরতে পারি মারতেও পারি। অনেকটা ফিল্মি হয়ে গেলো ,যদিও এটা কোনো সিনেমা নয় কিন্তু আমি আসলেই তোমার জন্য সব করতে পারি। কারন আমি চাই তুমি শুধু আমার হও।
সত্যি এভা আমি তোমার জন্য একদম পারফেক্ট একজন প্রেমিক,
শুধু মাত্র তোমার জন্য কত কিছু করতে হয়েছে আমাকে তুমি যদি তা জানতে ! আফসোস তুমি কখনো তা জানতে পারবে না। কারণ আমি কোনো প্রমাণ ফেলে আসিনি।
আজও কোনো প্রমান রেখে যাবো না । আসলে আমি এটা করতে চাইনি বিশ্বাস করো ও আমাকে বাধ্য করেছে, আমার কোনো দোষ নেই ,ইথেন আমার হাঁতে গুলি ও চালিয়েছে , আর তারচেয়ে বড় অপরাধ সে আমার কাছ থেকে তোমাকে আলাদা করতে চেয়েছে । কেনো তোমাকে সবাই আমার কাছ থেকে আলাদা করতে চায় এভা ! আমার এতগুলো ভালোবাসা কি ওদের কাছে মিথ্যে মনে হয় !জানি তোমার কষ্ট হবে ,কিন্ত ইথেনকে মরতে হবে । আমি জানি এভা ইথেন তোমার খুব ভালো বন্ধু কিন্তু সত্য বলতে সে তোমার ভালো সহ্য করতে পারে না। আমি কোনো ভুল করছি না এভা, আমি ইথেন কে মারতে যাচ্ছি। আমেরিকার মতো দেশে কাউকে হত্যা করা খুব সহজ কোনো একটা বিষয় নয়,আবার এতটা কঠীন ও নয়। তবে সাধারণ মানুষের জন্য খুবই কঠীন। সেই সাধারণ আমি আমেরিকার ওয়াসিংটন শহরের মাজে অবস্তিত একটি চমৎকার বাড়ীর পিছনে দাঁড়িয়ে আছি । আচ্ছা আমি কি সাধারণ ! নাহ মোটেও না !
আমি জানি এভা তোমার কাছে আমি খুভ স্পেশাল , ঠিক যতটা তুমি আমার কাছে !
জানালা দিয়ে তাকিয়ে অবশেষ নিশ্চিত হওয়া গেলো বাসায় ইথেন একাই আছে । ইথেন কে কি ঘুমের মধ্য হত্যা করবো! না। ইথেনের মৃত্যু যন্ত্রনা দায়ক হতে হবে। কৌশলে দরজা খুলে ঘরের ভিতরে ডুকে পরলাম। ইথেন তার বেড রুমেই আছে। আমি জানি ইথেনের কাছে পিস্তল আছে। এবং সে আমাকে দেখলে গুলি ও ছুঁড়তে পারে , কিন্তু তাও আমি ইথেনকে সামনে থেকে মারবো,ভাবতে পারো এভা তোমার জন্য জন্ম, তোমার জন্য মৃত্যু। আবার মনে হয় কিছুটা ফিল্মি হয়ে গেলো ! আবার বলছি এটা কিন্তু সিনেমা নয়। তবে আমি প্রেমিক পুরুষ তোমাকে সিনেমার থেকেও বেশি ভালোবাসতে পারি।
ইথেনের সামনে বসে আছি ,আমার হাঁতে একটা ওয়াইনের গ্লাস। আমার সামনে ইথেন দাঁড়িয়ে আছে তার হাঁতে Glock 17 পিস্তল। এটি একটি অস্ট্রেলিয়ান পিস্তল, আমি কখনো পিস্তল ব্যাবহার করিনি কিন্তু Glock 17 চিনতে আমার কোনো অসুবিধে হয়নি,আমি এর সম্পর্কে বইয়ে পরেছি। সাতটা গুলি বেরিয়ে আসতে পারে মুহুরতেই , যদিও আমাকে মারার জন্য একটি গুলি যথেস্ট। ভাবতে পারো এভা মৃত্যু দাঁড়িয়ে আছে ঠিক আমার সামনে তার নিশ্বাস এসে পরছে আমার কপালে ,কিন্তু ভয় হচ্ছেনা। এভা তুমি সত্যি ভাগ্যবতী আমার মতো প্রেমিক পেয়ে।
ইথেনের কপালে ঘাম জমেছে,তার চোখে স্পস্ট ভয়। ঠোঁট কাঁপছে, ভয়ার্ত গলায় ইথেন প্রশ্ন করলো, “নোয়া কেনো এসেছো এখানে! কি চাই !”
আমি একটু হেঁসে বললাম,“কিছুনা দেখতে এলাম তোমাকে ইথেন।“
“তুমি আমাকে হত্যা করতে এসেছ। এতটাও বোকা না আমি নোয়া , রাতে ১.০০টা থেকে তুমি আমার বাড়ীর পিছনের বাগানে লুকিয়ে আমাকে দেখছিলে , তারপর তুমি নিশ্চিত হয়ে নিলে আমি বাড়ীতে একা কি না,এবং চোরের মতো ঘরে ডুকলে। “
“ আহহহ,মানে তুমি দেখতে পেয়েছিলে ! তাহলে তখনি কিছু করোনি কেনো !”
“হা হা ! সুযোগ নিজে আসতে চাচ্ছে আমার কাছে,আমি হাত ছাড়া করবো কেনো!”
এভার ইথেন পিস্তলের নলা আমার কপালে লাগিয়ে দিলো । মনে হচ্ছে আমি ইথেন কে নয় বরং ইথেনই ফাঁদ পেতে বসে ছিলো আমাকে মারার ! আর সে ফাঁদে পা দিয়ে আমি এসে দাঁরিয়েছি এঁকেবারে মৃত্যুর সামনে। আসলে দাঁড়িয়ে নেই আমি বসে আছি। ভাবছ মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে মজা করছি ! আরে নাহ নাহ আমি শুধু সত্যটা বলছি। কারণ এই সত্য এরপর আর কেউ জানবে না।
“ তার মানে সেদিন গুলি তুমি চালিয়ে ছিলে ?”
“ আমি ছাড়া তোমাকে আর কে মারবে নোয়া,আমি জানি তুমি একটা মানুষ রুপে শয়তান, আর তোমার হাত থেকে এভাকে বাঁচানোর দ্বায়িত্ব আমার। তোমাকে মরতে হবে নোয়া।
ইথেন উওেজিত হতে শুরু করলো ,এবং একসময় মাটিতে লুটিয়ে পরলো। হা হা । হাসি পাচ্ছে এভা খুভ বেশি হাসি পাচ্ছে ! মৃত্যু আমাকে ছুঁয়ে চলে গেলো , আমার কাছে আবারো হেরে গেলো।
আহ ইথেন তুমি ভেবেছিলে তুমি আমাকে লুকিয়ে থাকা অবস্তায় দেখে ফেলেছো,মানে আমার মৃত্যু তোমার হাঁতে ! তুমি জাননা ইথেন তুমি আমাকে দেখেছ কারণ আমি চাইছিলাম তুমি আমাকে দেখো।আমাকে দেখে তুমি উওেজিত হও ,নিজেকে শান্ত করার জন্য চুমুক দাও ওয়াইনে,যেখানে মিশানো আছে Thiopental 500mg ,১৫ মিনিটে অজ্ঞাণ। জানো আজ এক মুহূর্তের জন্য মনে হয়ে ছিলো আমি শেষ।হয়তো ওয়াইন তুমি খাওনি। কিন্তু ভাগ্য আমার সাথে আছে ইথেন, তোমাকে মানতে হবে আমার ভালোবাসায় এক ফোটা মিথ্যে কিছু নেই ।
১.
রিংটনের আওয়াজে ঘুম ভাঙ্গলো, মোবাইল হাঁতে নিয়ে দেখি ৭টা কল এসেছে। সাথে ছোট্র করে একটা ম্যাসেজ,” তারাতারি কল দাও নোয়া, খুব তারাতারি।”
আমি এভাকে ফোন করলাম, এভা কেঁদে অস্তির, কাঁদতে কাঁদতে বললো,
”তারাতারি ইথেনের বাড়িতে চলে আসো নোয়া।“
আমি ফোন রেখে একটু ফ্রেশ হয়ে নিলাম। স্যান্ডউইচে কামর বসাতে বসাতে রেডি হয়ে ইথেনের বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পরলাম। এভা তোমার কান্নার শব্দ বারবার আমার কানে বাজছে।আমার খারাপ লাগছে এভা,কিন্তু বিশ্বাস করো ইথেন তোমার জন্য ক্ষতিকর ছিলো।
ইথেনের বাড়িতে অনেক ভিড় জমে আছে। পুলিশ ও এসেছে ,কিন্তু তোমাকে দেখতে পাচ্ছি না কেনো এভা ! কোথায় তুমি! আহ এইতো পেয়েছি। তুমি আমার দিকে এগিয়ে আসছো, আমাকে জড়িয়ে ধরলে এভা! এভা আমার তোমাকে খুভ করে বলতে ইচ্ছে করছে ইথেনের জন্য কেদো না ,ও তোমার কেউ ছিলো না,তোমার শুধু আমি। কিন্তু বলা হলো না । বরং অবাক চেহারা তৈরি করে জিগ্যাস করলাম,
”কি হয়েছে এভা ! এখানে এতো ভীর কেনো ! ইথেন কোথায় !”
“ইথেন নেই নোয়া। ইথেনকে হত্যা করা হয়েছে “ এভা কাঁদছে ।
“কিন্তু কে হত্যা করবে ! কেনো করবে!”
“আমি জানিনা নোয়া। তবে পুলিশ বলছে ইথেনের প্রেমিক লুকাসকে তারা সন্দেহ করছে।”
এভা আমাকে ছেড়ে ঘরের ভিতরে চলে গেলো। আমি death spot এর দিকে এগিয়ে গেলাম, ইথেন এর লাস আমার চোখে ভাসছে , দেখো এভা আমি ইথেনকে কোনো সহজ মৃত্যু দেইনি, ওর হাত দুটি দেখো, আমি ব্লেড দিয়ে চামড়া কেটে হাত দিয়ে টেনে টেনে ওর সব চামড়া খুলে নিয়েছি,যেমন কলার খোসা ছারানো হয়েছে। এটা কি যথেস্ট হয়েছে,আরো দেখো, ওর দাঁত গুলো আমি সব তুলে নিয়েছি। দাঁত ছাড়া কেমন লাগছে ওকে দেখো,আমি ওর স্তন কেটে দিয়েছি ওর পায়ের সব হাড় আমি ভেঙ্গে গুরো গুরো করে দিয়েছি।এভা এবার মনে হচ্ছে ওর প্রাপ্য শাস্তি ও পেয়েছে ।মৃত্যুর আগ মুহূর্তে ও কি বলেছে জানো! ও বলেছে,”আমি নাকি শয়তান-পাগল।”
কারো ভালোর জন্য হত্যা করা কি ভুল কিছু! আমার মনে হয় না। আমি কোনো নিরিহ কে হত্যা করিনি আমি একজন খারাপকে হত্যা করেছি। তুমি কি এমনটাই ভাববে ! যদি জানতে তাহলে হয়তো ভাবতে। কিন্তু তুমি জানবে না এভা। কেউ জানবে না আমার মতো একজন প্রেমিক ও জন্মেছিলো পৃথিবীর বুকে। আমি চাই না জানুক আমি চাই একটু ভালোবাসা।
আমার কাঁদে কারো হাতের স্পর্শ পেলাম, ঘুরে তাকালাম ,ভদ্র লোক আমার দিকে হাত বারিয়ে দিয়ে বললেন,” হাই আমি ডিটেক্টিভ মার্ক।“
“অহহ,আমি নোয়া। ইথিনের বিষয়টা নিয়ে আসলে খুভ খারাপ লাগছে।“
“ আপনার সাথে ইথিনের পরিচয়……”
“অহ ইথিন আমার গ্রালফ্রেন্ড এভার ফ্রেন্ড ।”
“আপনাকে দূর থেকে দেখলাম কথা বলছেন,কিন্তু আশে পাশে কেউ নেই !”
“আপনি হয়তো খেয়াল করেননি আমার হাতে একটি ফোন ছিলো,আমি আমার পাবলিসারের সাথে কথা বলছিলাম।“
তাঁকে দেখে মনে হচ্ছে না সে আমার কথায় বিশ্বাস করেছে, তবে মনে হচ্ছে এ যাত্রায় বেঁচে গেছি ।
সে আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললো,” আপনি লেখক?”
“জি”
তার ভিজিটিং কার্ড আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো,” যদি কিছু জানতে পারেন আমার সাথে যোগাযোগ করবেন।”
আমি একটু হেসে কার্ড হাতে তুলে নিলাম। তবে একা কথা বলার রোগ আমাকে ভবিষ্যতে আরো বড় বিপদের দিকে নিয়ে যেতে পারে ,এর সমাধান করতে হবে শীগ্রই। কিন্তু কীভাবে? আমি জানি না।হঠাৎ করে আমার যেনো কি হয়ে যায় ,চোখের সামনে ভেসে উঠে ভয়ঙ্কর সব মানুষ, যারা বার বার আমাকে মারতে আসে।আমার কানের কাছে এসে চিৎকার করে বলে উঠে, ”তুই মরবি ,তুই খুনি ,তুই আমাকে মেরেছিস, দেখ আমার গলায় !”
আমি ওর গলার দিকে তাকাই কি বীভৎস্য দৃশ্য, গলার মাজে ছুরি দিয়ে একটা অংশ কেটে দেয়া, একটা রগ বেরিয়ে সেখানে ঝুলে আছে। রক্ত গুলো শুখিয়ে কালো হয়ে গেছে ।
সেই মুহূর্তে আমি চিৎকার করতে থাকি, “চলে যাও আমি তোমাদের চিনিনা,আমি তোমাদের সাথে কথা বলতে চাই না, আমি মৃত দের সাথে কথা বলি না।“
কিন্তু বাস্তবে আমি জানি এরা আমর মস্তিষ্কে ভর করে আছে আমি জানি না ,এদের থেকে আমি কীভাবে মুক্তি পাবো।কিন্তু আমর ভয় হয় যদি এভা জেনে যায় !
২.
এভা তুমি আমার বুকের উপর শুয়ে আছো ।তুমি ধারনাও করতে পারবে না এই মুহূর্তে আমার থেকে সুখি ব্যাক্তি আর কেউ নয়। আমি সারাজীবন ভালোবাসা খুজেঁছি আর আমি তোমাকে পেয়েছি।আমি তোমার সাথে পরিপূর্ণ এভা। মনে আছে তোমার সাথে আমার পরিচয় ! আহ সেইদিন , সেই বৃষ্টি ভেজা দিন , লাইব্রেরির মাজে বইয়ে মুখ গুঁজে ছিলে তুমি ,এতটা যে তোমার আশেপাশে কি হচ্ছে তার দিকে তোমার কোনো খেয়ালই নেই। বুঝে নিলাম পড়তে ভালোবাসো। কিন্তু এর বাইরেও একটা তুমি আছো,আমি সেই তুমি টাকে আরো বেশি ভাবে জানার জন্য তোমার পিছু নিলাম। তুমি কোথায় যাচ্ছ জানি না,তবে তোমাকে জানতে হবে কারণ আমি চাই তুমি আমার হও। তোমাকে আমার করে নেয়ার জন্য তোমাকে জেনে নেয়াটা জরুরী। তোমার ফোনে রিং বাজলো তুমি ফোন ধরলে না। কে হতে পারে ! কার উপর তুমি এমন রাগ করে থাকতে পারো! আচ্ছা তুমিও রাগ করতে পারো ! আহ ক্লিনটনের এই বিশাল বাড়িতে তুমি থাকো ! তুমি ঘরে ঢুকে গেলে। দেয়াল টপকে বাড়ির ভেতরে ডুকে পরলাম । এই বিশাল বাড়িতে তুমি একা থাকো এভা ! এর মানে তুমি শোখিন,নীরবতা ভালোবাসো। গারির শব্দ শুনতে পেলাম কেউ আসছে । Land Rover গাড়ি থেকে বেরিয়ে এলো উস্ক খুস্ক চুলের ব্যাক্তি হাঁটার ধরণ দেখে বোঝা যাচ্ছে নিজেকে গোপন রাখতে পছন্দ করে ,বেশ বড়লোক-সেটা গাড়ি দেখেই বোঝা যাচ্ছে।
কিন্তু এভা সে এখানে কেনো ! লোকটির তোমার বাসায় ঢুকলো তোমাদের হাত -পা নারানো দেখে মনে হচ্ছে তুমি তার উপর রাগ করে আছো সে তোমার রাগ ভাঙ্গানোর চেষ্টা করছে ! আহ না না না এভা আমি বিশ্বাস করতে পারছি না, ছেলেটি তোমায় চুমু খেলো ! এভা এই ছেলে তোমার যোগ্য নয়। তোমার চাই এমন ছেলে যে তার সবটুকু সময় উৎসর্গ করবে তোমাকে। যে ভালোবাসবে নিজের চেয়েও বেশি তোমাকে। এমন ছেলে নয় যে মধ্যরাতে তোমার শরীর পাওয়ার জন্য তোমার রাগ ভাঙাবে,তারপর আবার উদাও হয়ে যাবে। এটা আমি মানতে পারিনি এভা। তোমাকে পেতে হলে তোমার সেই শরীর প্রেমিককে তোমার মন থেকে ভুলিয়ে দিতে হবে। কিন্তু ছেলেটা কে ! আহ এটা এতটাও কঠিন না, ইন্টারনেটের যুগে কাউকে খুঁজে বের করা এতটা কঠীন কিছু নয়। এই যে পেয়ে গেছি। জ্যাক। আকুয়া ফার্মাসিটিকাল কোম্পানির CEO । ড্রাগ নেয়ার অভ্যাস আছে । হট বার্ড বারে নিয়মিত যায় ।এতটুকুই যথেষ্ট।
তুমি আমার সামনে বসে বই পরছো , গতদিন লক্ষ্য করেছি তুমি থ্রিলার পরো,শুধু পরো না ভালোবাসো। এটাই সুযোগ,আমি একটা বই নিয়ে তোমার দিকে এগিয়ে দিলাম । তুমি আমার দিকে তাকিয়ে তারপর বইয়ের দিকে তাকালে,”The Guest list“! থ্রিলার ?”
“জী, ট্রাই করতে পারেন।”
“আপনার পরিচয় !”
আমি তার দিকে হাত বারিয়ে দিলাম,”আমি নোয়া। ”
“আমি এভা। এখানের পাঠক।“
“অহ।আমি লেখক।“
সে একটু চোখ বাঁকা করে তাকিয়ে তারপর সেখান থেকে উঠে চলে গেলো ।
আমি অবশ্যই তার পেছনে যেতাম তবে একটা প্রয়োজনীয় কাজ এখনো বাকি আছে ।
হট বার্ড বারে জ্যাক কে খুঁজে পেতে খুব একটা কষ্ট হয়নি, ঠিক আমার সামনের টেবিলে মাতাল হয়ে পরে আছে জ্যাক । একটা সময় বার থেকে বের হয়ে হাঁটতে লাগলো।আমি তার দিকে এগিয়ে গেলাম।
“আপনি মনে হয় বেশি খেয়ে ফেলেছেন ।“
“নাহ মোঠেও না আমি ঠীক আছি।“
“কিন্তু আপনি ঠিক করে হাঁটতে ও পারছেন না,আমি আপনাকে কি একটু এগিয়ে দিব।“
“আপনি কে?”
“আপাতত আপনার সাহায্যর প্রয়োজন ,আমি কে সেটা পরে জানলেও চলবে“
আমি জ্যাককে ধরে আমার গাড়িতে তুললাম। গাড়িতে উঠেই সে ঘুমিয়ে গেলো,আমার কাজটা সহজ করে দিলো ।
আমার ঘরের পিছনের জঙ্গলে একটা লুকানো আন্ডারগ্রাউন্ড ঘর আছে ,আমি জ্যাককে সেখানে নিয়ে গেলাম। যা করতে হবে তারাতারি করতে হবে।কিন্তু এর আগে জ্যাক থেকে কিছু বিষয় জেনে নিতে হবে,এভার বিষয়। এভা কি পছন্দ করে ,কি ভালোবাসে এসব। আমি নাইফ হাতে নিয়ে জ্যাকের একটা আঙুল কেটে দিলাম, তাঁর ঘুম ভেঙ্গে গেলো ,সে সমস্ত শক্তি দিয়ে চিৎকার করার চেষ্টা করছে,কিন্তু মুখ বাঁধা থাকার কারনে পারছে না। আহ বেচারা বুজতেও পারছে না তাঁর সাথে কি হতে চলেছে ,কিন্তু এমন হওয়া দরকার ,সে কোনো ভাবেই বেঁচে থাকার অধিকার রাখে না। আমি তাঁর হাত পা কেটে নিলাম, বুকের মাঝে কেটে দুই ভাগ করে নিলাম,তার রক্ত এসে আমার পুরো শরীর লাল করে দিয়েছে।আমি তাঁর দাঁত গুলো খুলে নিলাম।দাঁত গুলো পরে আমার জন্য বিপদ হয়ে উঠতে পারে। আপাতত আমার কাছে আর সময় নেই আমাকে যেতে হবে ।
আমি এভার ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে আছি,অপেক্ষা করছি। একটু পরই এভা বেরিয়ে এলো ।এভা এখন তাঁর বন্ধুদের কাছে যাবে ,আজ তাঁর জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ দিন ,আর এই দিনের শুরুটা যেন আমার থেকে হয়,সেই উদ্দেশ্য আমি এভার দিকে এগিয়ে গেলাম। হাতের মাজ থেকে ফহুলের তোরা এগিয়ে দিয়ে বললাম,” শুভ জন্মদিন এভা।”
এভা আমার দিকে তাকিয়ে আছে যেন অনেকটা অবাক হয়েছে,এটাই তো আমি চেয়েছিলাম। আমি জানি এভার মতো মেয়েরা চায় কেউ তাদের হুট-হাট এসে চমকে দিক , জন্মদিনে আচমকা বিভ্রান্ত করে দিক। যেন তারা বিভ্রান্ত হতেই ভালোবাসে।এভা হেঁসে বললো,” ধন্যবাদ নোয়া। কিন্তু তুমি কেমন করে জানলে!”
“জেনে নিয়েছি,চাইলে সব হয়।“
এভা আবারো ধন্যবাদ দিলো। আমি এভার চোখে চোখ রেখে বললাম,” তোমার জন্য আমি কিছু ভেবে রেখেছি । যাবে আমার সঙ্গে ?”
এভা এক মুহূর্ত ভেবে নিয়ে তারপর ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটিয়ে বললো,”চলো।“
আমি তোমাকে নিয়ে পুরো শহর গুরে বেড়ালাম, মানুষের ভিড়ে তোমার যে ভয় ছিলো ,যা তুমি কাউকে বুজতে দাওনি কোনদিন, সেই ভয় আমি তোমার মাজ থেকে কেরে নিলাম। লেস্ট-রন বারে আমি একটু বেশি খেয়ে নিয়েছিলাম ,তবে তোমাকে নিয়ে আমি বিশেষ সতর্ক ছিলাম ।পার্টি শেষ করে যখন তোমাকে তোমার বাড়িতে পৌঁছে দিলাম ,আহ মনে আছে এভা! তুমি ঠোঁট দিয়ে ঠোঁট ছুঁয়ে দিয়েছিলে। তোমার চোখে মধ্য রাতে আমি স্পষ্ট তোমার ঘড়ে যাওয়ার নিমন্ত্রণ দেখতে পেয়েছি।কিন্তু আমি যাবো না এভা।সঠিক সময় আসেনি। এখনো জ্যাক পুরোপুরি ভাবে মুছে যায়নি।
সারাদিনের ক্লান্তি নিয়ে বাসায় ঢুকেই বুক ধক করে উঠলো। কারেন্ট নেই ! আমি দৌরে আন্ডার-গ্রাউন্ডের ঘড়ে গেলাম,ওক কি দুর্গন্ধ, তাঁর মানে জ্যাকের শরীরের অংশ গুলো পচে গেছে ।এই ভয় ছিলো আমার,সব ঠিক চলছিলো জানতাম গন্ধ বের হতে পারে তাই -৪৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় লাশ রেখে গিয়েছিলাম, কারেন্টের সমস্যার কথা মাথায় ও আসেনি । তবে ঘাবরে গেলে চলবে না এখনো সব ঠিক করা যাবে। কিছুটা মেথানল পাউডার ছিটিয়ে দিলাম বডির মাজে। এর মাজেই ৩ বার বমি করে আমার অবস্তা খারাপ।কিন্তু এটা আমাকে করতেই হবে আমি তোমাকে হারাতে পারবো না এভা।
পেট্রল ঢেলে দিয়ে আগুন দিয়ে জালিয়ে দিলাম। শেষ এভা। তোমাকে মধ্য রাতে এখন আর কেউ বিরক্ত করবে না । তুমি কি কখনো জানবে এভা তোমার জন্য আমার এতসব পরীক্ষা। তুমি কি কখনো আমাকে ভুল বুঝবে? যদি তুমি সত্যটা যেনে যাও, আমাকে ভুল বোঝো ? আমি কি তোমাকে ও মেরে ফেলবো !
নাহ আমি পারবো না। ছি এ আমি কি ভাবছি মাজে মাজে কি যেন হয়ে যায় এভা,আমায় ভুল বোঝো না ।
তুমি আমার বুক থেকে মাথা নামিয়ে নিয়েছো ,কাঁদতে কাঁদতে গুমিয়ে গেছো। এভা ইথেনের জন্য এতো কাঁদার প্রয়োজন নেই,। এভা ঘুমিয়ে গেলে তোমাকে অসাধারণ লাগে ,টানা চোখ দুটো কি অপূর্ব দেখায়।আমি কি তা কখনো বলেছি! হয়তো বলা হয়নি। কালকে বলবো, আপাতত মনে রেখে দিলাম কথাটা। ঘুমাও এভা শান্তিতে ঘুমাও ।
( চলবে )
(পর্ব-১)
সত্যি এভা আমি তোমার জন্য একদম পারফেক্ট একজন প্রেমিক,
শুধু মাত্র তোমার জন্য কত কিছু করতে হয়েছে আমাকে তুমি যদি তা জানতে ! আফসোস তুমি কখনো তা জানতে পারবে না। কারণ আমি কোনো প্রমাণ ফেলে আসিনি।
আজও কোনো প্রমান রেখে যাবো না । আসলে আমি এটা করতে চাইনি বিশ্বাস করো ও আমাকে বাধ্য করেছে, আমার কোনো দোষ নেই ,ইথেন আমার হাঁতে গুলি ও চালিয়েছে , আর তারচেয়ে বড় অপরাধ সে আমার কাছ থেকে তোমাকে আলাদা করতে চেয়েছে । কেনো তোমাকে সবাই আমার কাছ থেকে আলাদা করতে চায় এভা ! আমার এতগুলো ভালোবাসা কি ওদের কাছে মিথ্যে মনে হয় !জানি তোমার কষ্ট হবে ,কিন্ত ইথেনকে মরতে হবে । আমি জানি এভা ইথেন তোমার খুব ভালো বন্ধু কিন্তু সত্য বলতে সে তোমার ভালো সহ্য করতে পারে না। আমি কোনো ভুল করছি না এভা, আমি ইথেন কে মারতে যাচ্ছি। আমেরিকার মতো দেশে কাউকে হত্যা করা খুব সহজ কোনো একটা বিষয় নয়,আবার এতটা কঠীন ও নয়। তবে সাধারণ মানুষের জন্য খুবই কঠীন। সেই সাধারণ আমি আমেরিকার ওয়াসিংটন শহরের মাজে অবস্তিত একটি চমৎকার বাড়ীর পিছনে দাঁড়িয়ে আছি । আচ্ছা আমি কি সাধারণ ! নাহ মোটেও না !
আমি জানি এভা তোমার কাছে আমি খুভ স্পেশাল , ঠিক যতটা তুমি আমার কাছে !
জানালা দিয়ে তাকিয়ে অবশেষ নিশ্চিত হওয়া গেলো বাসায় ইথেন একাই আছে । ইথেন কে কি ঘুমের মধ্য হত্যা করবো! না। ইথেনের মৃত্যু যন্ত্রনা দায়ক হতে হবে। কৌশলে দরজা খুলে ঘরের ভিতরে ডুকে পরলাম। ইথেন তার বেড রুমেই আছে। আমি জানি ইথেনের কাছে পিস্তল আছে। এবং সে আমাকে দেখলে গুলি ও ছুঁড়তে পারে , কিন্তু তাও আমি ইথেনকে সামনে থেকে মারবো,ভাবতে পারো এভা তোমার জন্য জন্ম, তোমার জন্য মৃত্যু। আবার মনে হয় কিছুটা ফিল্মি হয়ে গেলো ! আবার বলছি এটা কিন্তু সিনেমা নয়। তবে আমি প্রেমিক পুরুষ তোমাকে সিনেমার থেকেও বেশি ভালোবাসতে পারি।
ইথেনের সামনে বসে আছি ,আমার হাঁতে একটা ওয়াইনের গ্লাস। আমার সামনে ইথেন দাঁড়িয়ে আছে তার হাঁতে Glock 17 পিস্তল। এটি একটি অস্ট্রেলিয়ান পিস্তল, আমি কখনো পিস্তল ব্যাবহার করিনি কিন্তু Glock 17 চিনতে আমার কোনো অসুবিধে হয়নি,আমি এর সম্পর্কে বইয়ে পরেছি। সাতটা গুলি বেরিয়ে আসতে পারে মুহুরতেই , যদিও আমাকে মারার জন্য একটি গুলি যথেস্ট। ভাবতে পারো এভা মৃত্যু দাঁড়িয়ে আছে ঠিক আমার সামনে তার নিশ্বাস এসে পরছে আমার কপালে ,কিন্তু ভয় হচ্ছেনা। এভা তুমি সত্যি ভাগ্যবতী আমার মতো প্রেমিক পেয়ে।
ইথেনের কপালে ঘাম জমেছে,তার চোখে স্পস্ট ভয়। ঠোঁট কাঁপছে, ভয়ার্ত গলায় ইথেন প্রশ্ন করলো, “নোয়া কেনো এসেছো এখানে! কি চাই !”
আমি একটু হেঁসে বললাম,“কিছুনা দেখতে এলাম তোমাকে ইথেন।“
“তুমি আমাকে হত্যা করতে এসেছ। এতটাও বোকা না আমি নোয়া , রাতে ১.০০টা থেকে তুমি আমার বাড়ীর পিছনের বাগানে লুকিয়ে আমাকে দেখছিলে , তারপর তুমি নিশ্চিত হয়ে নিলে আমি বাড়ীতে একা কি না,এবং চোরের মতো ঘরে ডুকলে। “
“ আহহহ,মানে তুমি দেখতে পেয়েছিলে ! তাহলে তখনি কিছু করোনি কেনো !”
“হা হা ! সুযোগ নিজে আসতে চাচ্ছে আমার কাছে,আমি হাত ছাড়া করবো কেনো!”
এভার ইথেন পিস্তলের নলা আমার কপালে লাগিয়ে দিলো । মনে হচ্ছে আমি ইথেন কে নয় বরং ইথেনই ফাঁদ পেতে বসে ছিলো আমাকে মারার ! আর সে ফাঁদে পা দিয়ে আমি এসে দাঁরিয়েছি এঁকেবারে মৃত্যুর সামনে। আসলে দাঁড়িয়ে নেই আমি বসে আছি। ভাবছ মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে মজা করছি ! আরে নাহ নাহ আমি শুধু সত্যটা বলছি। কারণ এই সত্য এরপর আর কেউ জানবে না।
“ তার মানে সেদিন গুলি তুমি চালিয়ে ছিলে ?”
“ আমি ছাড়া তোমাকে আর কে মারবে নোয়া,আমি জানি তুমি একটা মানুষ রুপে শয়তান, আর তোমার হাত থেকে এভাকে বাঁচানোর দ্বায়িত্ব আমার। তোমাকে মরতে হবে নোয়া।
ইথেন উওেজিত হতে শুরু করলো ,এবং একসময় মাটিতে লুটিয়ে পরলো। হা হা । হাসি পাচ্ছে এভা খুভ বেশি হাসি পাচ্ছে ! মৃত্যু আমাকে ছুঁয়ে চলে গেলো , আমার কাছে আবারো হেরে গেলো।
আহ ইথেন তুমি ভেবেছিলে তুমি আমাকে লুকিয়ে থাকা অবস্তায় দেখে ফেলেছো,মানে আমার মৃত্যু তোমার হাঁতে ! তুমি জাননা ইথেন তুমি আমাকে দেখেছ কারণ আমি চাইছিলাম তুমি আমাকে দেখো।আমাকে দেখে তুমি উওেজিত হও ,নিজেকে শান্ত করার জন্য চুমুক দাও ওয়াইনে,যেখানে মিশানো আছে Thiopental 500mg ,১৫ মিনিটে অজ্ঞাণ। জানো আজ এক মুহূর্তের জন্য মনে হয়ে ছিলো আমি শেষ।হয়তো ওয়াইন তুমি খাওনি। কিন্তু ভাগ্য আমার সাথে আছে ইথেন, তোমাকে মানতে হবে আমার ভালোবাসায় এক ফোটা মিথ্যে কিছু নেই ।
১.
রিংটনের আওয়াজে ঘুম ভাঙ্গলো, মোবাইল হাঁতে নিয়ে দেখি ৭টা কল এসেছে। সাথে ছোট্র করে একটা ম্যাসেজ,” তারাতারি কল দাও নোয়া, খুব তারাতারি।”
আমি এভাকে ফোন করলাম, এভা কেঁদে অস্তির, কাঁদতে কাঁদতে বললো,
”তারাতারি ইথেনের বাড়িতে চলে আসো নোয়া।“
আমি ফোন রেখে একটু ফ্রেশ হয়ে নিলাম। স্যান্ডউইচে কামর বসাতে বসাতে রেডি হয়ে ইথেনের বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পরলাম। এভা তোমার কান্নার শব্দ বারবার আমার কানে বাজছে।আমার খারাপ লাগছে এভা,কিন্তু বিশ্বাস করো ইথেন তোমার জন্য ক্ষতিকর ছিলো।
ইথেনের বাড়িতে অনেক ভিড় জমে আছে। পুলিশ ও এসেছে ,কিন্তু তোমাকে দেখতে পাচ্ছি না কেনো এভা ! কোথায় তুমি! আহ এইতো পেয়েছি। তুমি আমার দিকে এগিয়ে আসছো, আমাকে জড়িয়ে ধরলে এভা! এভা আমার তোমাকে খুভ করে বলতে ইচ্ছে করছে ইথেনের জন্য কেদো না ,ও তোমার কেউ ছিলো না,তোমার শুধু আমি। কিন্তু বলা হলো না । বরং অবাক চেহারা তৈরি করে জিগ্যাস করলাম,
”কি হয়েছে এভা ! এখানে এতো ভীর কেনো ! ইথেন কোথায় !”
“ইথেন নেই নোয়া। ইথেনকে হত্যা করা হয়েছে “ এভা কাঁদছে ।
“কিন্তু কে হত্যা করবে ! কেনো করবে!”
“আমি জানিনা নোয়া। তবে পুলিশ বলছে ইথেনের প্রেমিক লুকাসকে তারা সন্দেহ করছে।”
এভা আমাকে ছেড়ে ঘরের ভিতরে চলে গেলো। আমি death spot এর দিকে এগিয়ে গেলাম, ইথেন এর লাস আমার চোখে ভাসছে , দেখো এভা আমি ইথেনকে কোনো সহজ মৃত্যু দেইনি, ওর হাত দুটি দেখো, আমি ব্লেড দিয়ে চামড়া কেটে হাত দিয়ে টেনে টেনে ওর সব চামড়া খুলে নিয়েছি,যেমন কলার খোসা ছারানো হয়েছে। এটা কি যথেস্ট হয়েছে,আরো দেখো, ওর দাঁত গুলো আমি সব তুলে নিয়েছি। দাঁত ছাড়া কেমন লাগছে ওকে দেখো,আমি ওর স্তন কেটে দিয়েছি ওর পায়ের সব হাড় আমি ভেঙ্গে গুরো গুরো করে দিয়েছি।এভা এবার মনে হচ্ছে ওর প্রাপ্য শাস্তি ও পেয়েছে ।মৃত্যুর আগ মুহূর্তে ও কি বলেছে জানো! ও বলেছে,”আমি নাকি শয়তান-পাগল।”
কারো ভালোর জন্য হত্যা করা কি ভুল কিছু! আমার মনে হয় না। আমি কোনো নিরিহ কে হত্যা করিনি আমি একজন খারাপকে হত্যা করেছি। তুমি কি এমনটাই ভাববে ! যদি জানতে তাহলে হয়তো ভাবতে। কিন্তু তুমি জানবে না এভা। কেউ জানবে না আমার মতো একজন প্রেমিক ও জন্মেছিলো পৃথিবীর বুকে। আমি চাই না জানুক আমি চাই একটু ভালোবাসা।
আমার কাঁদে কারো হাতের স্পর্শ পেলাম, ঘুরে তাকালাম ,ভদ্র লোক আমার দিকে হাত বারিয়ে দিয়ে বললেন,” হাই আমি ডিটেক্টিভ মার্ক।“
“অহহ,আমি নোয়া। ইথিনের বিষয়টা নিয়ে আসলে খুভ খারাপ লাগছে।“
“ আপনার সাথে ইথিনের পরিচয়……”
“অহ ইথিন আমার গ্রালফ্রেন্ড এভার ফ্রেন্ড ।”
“আপনাকে দূর থেকে দেখলাম কথা বলছেন,কিন্তু আশে পাশে কেউ নেই !”
“আপনি হয়তো খেয়াল করেননি আমার হাতে একটি ফোন ছিলো,আমি আমার পাবলিসারের সাথে কথা বলছিলাম।“
তাঁকে দেখে মনে হচ্ছে না সে আমার কথায় বিশ্বাস করেছে, তবে মনে হচ্ছে এ যাত্রায় বেঁচে গেছি ।
সে আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললো,” আপনি লেখক?”
“জি”
তার ভিজিটিং কার্ড আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো,” যদি কিছু জানতে পারেন আমার সাথে যোগাযোগ করবেন।”
আমি একটু হেসে কার্ড হাতে তুলে নিলাম। তবে একা কথা বলার রোগ আমাকে ভবিষ্যতে আরো বড় বিপদের দিকে নিয়ে যেতে পারে ,এর সমাধান করতে হবে শীগ্রই। কিন্তু কীভাবে? আমি জানি না।হঠাৎ করে আমার যেনো কি হয়ে যায় ,চোখের সামনে ভেসে উঠে ভয়ঙ্কর সব মানুষ, যারা বার বার আমাকে মারতে আসে।আমার কানের কাছে এসে চিৎকার করে বলে উঠে, ”তুই মরবি ,তুই খুনি ,তুই আমাকে মেরেছিস, দেখ আমার গলায় !”
আমি ওর গলার দিকে তাকাই কি বীভৎস্য দৃশ্য, গলার মাজে ছুরি দিয়ে একটা অংশ কেটে দেয়া, একটা রগ বেরিয়ে সেখানে ঝুলে আছে। রক্ত গুলো শুখিয়ে কালো হয়ে গেছে ।
সেই মুহূর্তে আমি চিৎকার করতে থাকি, “চলে যাও আমি তোমাদের চিনিনা,আমি তোমাদের সাথে কথা বলতে চাই না, আমি মৃত দের সাথে কথা বলি না।“
কিন্তু বাস্তবে আমি জানি এরা আমর মস্তিষ্কে ভর করে আছে আমি জানি না ,এদের থেকে আমি কীভাবে মুক্তি পাবো।কিন্তু আমর ভয় হয় যদি এভা জেনে যায় !
২.
এভা তুমি আমার বুকের উপর শুয়ে আছো ।তুমি ধারনাও করতে পারবে না এই মুহূর্তে আমার থেকে সুখি ব্যাক্তি আর কেউ নয়। আমি সারাজীবন ভালোবাসা খুজেঁছি আর আমি তোমাকে পেয়েছি।আমি তোমার সাথে পরিপূর্ণ এভা। মনে আছে তোমার সাথে আমার পরিচয় ! আহ সেইদিন , সেই বৃষ্টি ভেজা দিন , লাইব্রেরির মাজে বইয়ে মুখ গুঁজে ছিলে তুমি ,এতটা যে তোমার আশেপাশে কি হচ্ছে তার দিকে তোমার কোনো খেয়ালই নেই। বুঝে নিলাম পড়তে ভালোবাসো। কিন্তু এর বাইরেও একটা তুমি আছো,আমি সেই তুমি টাকে আরো বেশি ভাবে জানার জন্য তোমার পিছু নিলাম। তুমি কোথায় যাচ্ছ জানি না,তবে তোমাকে জানতে হবে কারণ আমি চাই তুমি আমার হও। তোমাকে আমার করে নেয়ার জন্য তোমাকে জেনে নেয়াটা জরুরী। তোমার ফোনে রিং বাজলো তুমি ফোন ধরলে না। কে হতে পারে ! কার উপর তুমি এমন রাগ করে থাকতে পারো! আচ্ছা তুমিও রাগ করতে পারো ! আহ ক্লিনটনের এই বিশাল বাড়িতে তুমি থাকো ! তুমি ঘরে ঢুকে গেলে। দেয়াল টপকে বাড়ির ভেতরে ডুকে পরলাম । এই বিশাল বাড়িতে তুমি একা থাকো এভা ! এর মানে তুমি শোখিন,নীরবতা ভালোবাসো। গারির শব্দ শুনতে পেলাম কেউ আসছে । Land Rover গাড়ি থেকে বেরিয়ে এলো উস্ক খুস্ক চুলের ব্যাক্তি হাঁটার ধরণ দেখে বোঝা যাচ্ছে নিজেকে গোপন রাখতে পছন্দ করে ,বেশ বড়লোক-সেটা গাড়ি দেখেই বোঝা যাচ্ছে।
কিন্তু এভা সে এখানে কেনো ! লোকটির তোমার বাসায় ঢুকলো তোমাদের হাত -পা নারানো দেখে মনে হচ্ছে তুমি তার উপর রাগ করে আছো সে তোমার রাগ ভাঙ্গানোর চেষ্টা করছে ! আহ না না না এভা আমি বিশ্বাস করতে পারছি না, ছেলেটি তোমায় চুমু খেলো ! এভা এই ছেলে তোমার যোগ্য নয়। তোমার চাই এমন ছেলে যে তার সবটুকু সময় উৎসর্গ করবে তোমাকে। যে ভালোবাসবে নিজের চেয়েও বেশি তোমাকে। এমন ছেলে নয় যে মধ্যরাতে তোমার শরীর পাওয়ার জন্য তোমার রাগ ভাঙাবে,তারপর আবার উদাও হয়ে যাবে। এটা আমি মানতে পারিনি এভা। তোমাকে পেতে হলে তোমার সেই শরীর প্রেমিককে তোমার মন থেকে ভুলিয়ে দিতে হবে। কিন্তু ছেলেটা কে ! আহ এটা এতটাও কঠিন না, ইন্টারনেটের যুগে কাউকে খুঁজে বের করা এতটা কঠীন কিছু নয়। এই যে পেয়ে গেছি। জ্যাক। আকুয়া ফার্মাসিটিকাল কোম্পানির CEO । ড্রাগ নেয়ার অভ্যাস আছে । হট বার্ড বারে নিয়মিত যায় ।এতটুকুই যথেষ্ট।
তুমি আমার সামনে বসে বই পরছো , গতদিন লক্ষ্য করেছি তুমি থ্রিলার পরো,শুধু পরো না ভালোবাসো। এটাই সুযোগ,আমি একটা বই নিয়ে তোমার দিকে এগিয়ে দিলাম । তুমি আমার দিকে তাকিয়ে তারপর বইয়ের দিকে তাকালে,”The Guest list“! থ্রিলার ?”
“জী, ট্রাই করতে পারেন।”
“আপনার পরিচয় !”
আমি তার দিকে হাত বারিয়ে দিলাম,”আমি নোয়া। ”
“আমি এভা। এখানের পাঠক।“
“অহ।আমি লেখক।“
সে একটু চোখ বাঁকা করে তাকিয়ে তারপর সেখান থেকে উঠে চলে গেলো ।
আমি অবশ্যই তার পেছনে যেতাম তবে একটা প্রয়োজনীয় কাজ এখনো বাকি আছে ।
হট বার্ড বারে জ্যাক কে খুঁজে পেতে খুব একটা কষ্ট হয়নি, ঠিক আমার সামনের টেবিলে মাতাল হয়ে পরে আছে জ্যাক । একটা সময় বার থেকে বের হয়ে হাঁটতে লাগলো।আমি তার দিকে এগিয়ে গেলাম।
“আপনি মনে হয় বেশি খেয়ে ফেলেছেন ।“
“নাহ মোঠেও না আমি ঠীক আছি।“
“কিন্তু আপনি ঠিক করে হাঁটতে ও পারছেন না,আমি আপনাকে কি একটু এগিয়ে দিব।“
“আপনি কে?”
“আপাতত আপনার সাহায্যর প্রয়োজন ,আমি কে সেটা পরে জানলেও চলবে“
আমি জ্যাককে ধরে আমার গাড়িতে তুললাম। গাড়িতে উঠেই সে ঘুমিয়ে গেলো,আমার কাজটা সহজ করে দিলো ।
আমার ঘরের পিছনের জঙ্গলে একটা লুকানো আন্ডারগ্রাউন্ড ঘর আছে ,আমি জ্যাককে সেখানে নিয়ে গেলাম। যা করতে হবে তারাতারি করতে হবে।কিন্তু এর আগে জ্যাক থেকে কিছু বিষয় জেনে নিতে হবে,এভার বিষয়। এভা কি পছন্দ করে ,কি ভালোবাসে এসব। আমি নাইফ হাতে নিয়ে জ্যাকের একটা আঙুল কেটে দিলাম, তাঁর ঘুম ভেঙ্গে গেলো ,সে সমস্ত শক্তি দিয়ে চিৎকার করার চেষ্টা করছে,কিন্তু মুখ বাঁধা থাকার কারনে পারছে না। আহ বেচারা বুজতেও পারছে না তাঁর সাথে কি হতে চলেছে ,কিন্তু এমন হওয়া দরকার ,সে কোনো ভাবেই বেঁচে থাকার অধিকার রাখে না। আমি তাঁর হাত পা কেটে নিলাম, বুকের মাঝে কেটে দুই ভাগ করে নিলাম,তার রক্ত এসে আমার পুরো শরীর লাল করে দিয়েছে।আমি তাঁর দাঁত গুলো খুলে নিলাম।দাঁত গুলো পরে আমার জন্য বিপদ হয়ে উঠতে পারে। আপাতত আমার কাছে আর সময় নেই আমাকে যেতে হবে ।
আমি এভার ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে আছি,অপেক্ষা করছি। একটু পরই এভা বেরিয়ে এলো ।এভা এখন তাঁর বন্ধুদের কাছে যাবে ,আজ তাঁর জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ দিন ,আর এই দিনের শুরুটা যেন আমার থেকে হয়,সেই উদ্দেশ্য আমি এভার দিকে এগিয়ে গেলাম। হাতের মাজ থেকে ফহুলের তোরা এগিয়ে দিয়ে বললাম,” শুভ জন্মদিন এভা।”
এভা আমার দিকে তাকিয়ে আছে যেন অনেকটা অবাক হয়েছে,এটাই তো আমি চেয়েছিলাম। আমি জানি এভার মতো মেয়েরা চায় কেউ তাদের হুট-হাট এসে চমকে দিক , জন্মদিনে আচমকা বিভ্রান্ত করে দিক। যেন তারা বিভ্রান্ত হতেই ভালোবাসে।এভা হেঁসে বললো,” ধন্যবাদ নোয়া। কিন্তু তুমি কেমন করে জানলে!”
“জেনে নিয়েছি,চাইলে সব হয়।“
এভা আবারো ধন্যবাদ দিলো। আমি এভার চোখে চোখ রেখে বললাম,” তোমার জন্য আমি কিছু ভেবে রেখেছি । যাবে আমার সঙ্গে ?”
এভা এক মুহূর্ত ভেবে নিয়ে তারপর ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটিয়ে বললো,”চলো।“
আমি তোমাকে নিয়ে পুরো শহর গুরে বেড়ালাম, মানুষের ভিড়ে তোমার যে ভয় ছিলো ,যা তুমি কাউকে বুজতে দাওনি কোনদিন, সেই ভয় আমি তোমার মাজ থেকে কেরে নিলাম। লেস্ট-রন বারে আমি একটু বেশি খেয়ে নিয়েছিলাম ,তবে তোমাকে নিয়ে আমি বিশেষ সতর্ক ছিলাম ।পার্টি শেষ করে যখন তোমাকে তোমার বাড়িতে পৌঁছে দিলাম ,আহ মনে আছে এভা! তুমি ঠোঁট দিয়ে ঠোঁট ছুঁয়ে দিয়েছিলে। তোমার চোখে মধ্য রাতে আমি স্পষ্ট তোমার ঘড়ে যাওয়ার নিমন্ত্রণ দেখতে পেয়েছি।কিন্তু আমি যাবো না এভা।সঠিক সময় আসেনি। এখনো জ্যাক পুরোপুরি ভাবে মুছে যায়নি।
সারাদিনের ক্লান্তি নিয়ে বাসায় ঢুকেই বুক ধক করে উঠলো। কারেন্ট নেই ! আমি দৌরে আন্ডার-গ্রাউন্ডের ঘড়ে গেলাম,ওক কি দুর্গন্ধ, তাঁর মানে জ্যাকের শরীরের অংশ গুলো পচে গেছে ।এই ভয় ছিলো আমার,সব ঠিক চলছিলো জানতাম গন্ধ বের হতে পারে তাই -৪৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় লাশ রেখে গিয়েছিলাম, কারেন্টের সমস্যার কথা মাথায় ও আসেনি । তবে ঘাবরে গেলে চলবে না এখনো সব ঠিক করা যাবে। কিছুটা মেথানল পাউডার ছিটিয়ে দিলাম বডির মাজে। এর মাজেই ৩ বার বমি করে আমার অবস্তা খারাপ।কিন্তু এটা আমাকে করতেই হবে আমি তোমাকে হারাতে পারবো না এভা।
পেট্রল ঢেলে দিয়ে আগুন দিয়ে জালিয়ে দিলাম। শেষ এভা। তোমাকে মধ্য রাতে এখন আর কেউ বিরক্ত করবে না । তুমি কি কখনো জানবে এভা তোমার জন্য আমার এতসব পরীক্ষা। তুমি কি কখনো আমাকে ভুল বুঝবে? যদি তুমি সত্যটা যেনে যাও, আমাকে ভুল বোঝো ? আমি কি তোমাকে ও মেরে ফেলবো !
নাহ আমি পারবো না। ছি এ আমি কি ভাবছি মাজে মাজে কি যেন হয়ে যায় এভা,আমায় ভুল বোঝো না ।
তুমি আমার বুক থেকে মাথা নামিয়ে নিয়েছো ,কাঁদতে কাঁদতে গুমিয়ে গেছো। এভা ইথেনের জন্য এতো কাঁদার প্রয়োজন নেই,। এভা ঘুমিয়ে গেলে তোমাকে অসাধারণ লাগে ,টানা চোখ দুটো কি অপূর্ব দেখায়।আমি কি তা কখনো বলেছি! হয়তো বলা হয়নি। কালকে বলবো, আপাতত মনে রেখে দিলাম কথাটা। ঘুমাও এভা শান্তিতে ঘুমাও ।
( চলবে )
(পর্ব-১)
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মধু মঙ্গল সিনহা ১৭/০৯/২০২২অতি সুন্দর !
-
সুসঙ্গ শাওন ১৫/০৯/২০২২বেশ ভালো
-
ফয়জুল মহী ১৫/০৯/২০২২সুন্দর লেখা। পাঠে মুগ্ধ হলাম।