www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

পরিস্থিতির কাঁটাতারে ১ (দ্বিতীয় অংশ)

অপর্ণার একমাত্র ছেলে সুজয় রেনু কে বেশ পছন্দ করত।অমন হীরের টুকরো রাজপুত্তুরের মত ছেলে রেনুর মত অত্যাধুনিকা মেয়ে কে বিয়ে করবে এ তিনি ভাবতেই পারছেন না । যদিও তার মনে হয় রেনু ও সুজয়ের মধ্যে তেমন কোন গভীর সম্পর্ক নেই । তবু ও তিনি তো মা ,তাই মনের কোণে একটি দুশ্চিন্তা সর্বদাই জেগে উঠত । আজ বোধ হয় সেই দুশ্চিন্তারই পরিসমাপ্তি ঘটল । এই মুহূর্তে তার খুব আফসোস হচ্ছিল তার ছেলে এখানে নেই বলে । থাকলে সে দেখত তার পছন্দ করা মেয়ের কুকীর্তি ।

ফিরোজ ও নীল সুইটির নিমন্ত্রিত । সুইটি কনের ছোট বোন । তার দিকে নজর পরতেই তাকেই সব থেকে চিন্তিত দেখাচ্ছিল । তবে কি রেনুর ঘর ছাড়ার পিছনে সুইটির কোন হাত আছে ! না আসলে ব্যাপার টা অন্য । রেনুর আসন্ন উচ্চমাধ্যমিক পরিক্ষার জন্য তার মা -বাবা তাকে যখন বিয়ে বাড়িতে যেতে নিষেধ করে তখন সুইটিই নিজস্ব জিম্মায় রেনু কে নিয়ে আসে । সুইটির শুধু একটি কথায় বার বার মনে হচ্ছিল--"বিয়ে বাড়িতে তো অনেক মেয়ে এসে ছিল কিন্তু তোকেই পালাতে হল !"

বিয়ে বাড়িতে বেশিরভাগ সময় রেনুকে দেখা গেছে ফিরোজ ও নীলের সঙ্গে । ফিরোজ 'হয়ে ওঠা কবি' তার চারিত্রিক গুনের মধ্যে এমন কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যাতে অতি সহজেই মেয়েদের সে আকৃষ্ট করে , কিন্তু সে কোন মেয়েকে অস্বাভাবিক স্বপ্ন দেখায় না । কবিতা ও গল্পের নতুন চরিত্র সন্ধানের জন্য তাকে খুব কাছ থেকেই চরিত্রগুলিকে পরখ করতে হয়। অন্যদিকে নীলের কোন মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠতেই একমাস লেগে যায় । দুদিনের পরিচয়ে কোন মেয়ে কে নিয়ে ঘর ছাড়া তার কাছে কাঁঠালের আমসত্তের মত।

ফিরোজের প্রতি রেনুকে একটু বেশিই অস্বাভাবিক ভাবে আচরণ করতে দেখা গেছে। ফিরোজ যখন তার স্বরচিত কবিতা পাঠের আড্ডা বসায় তখন সেই আসরে রেনু ধ্যানমগ্ন হয়ে বসে যায় ,আর উঠতে চায় না ; যেন চুম্বকের সাথে লোহার আকর্ষণের মত সেঁটে যায় । পূর্ণিমার কোয়াটারের পাশে তিনবাত্তি মোড়ের এক ক্লাবে পতাকা উত্তোলন করার জন্য সকালে ঘুম থেকে ফিরোজকে সে জাগায়্ , একসঙ্গে ফুল তুলে পতাকার নিচের অংশ সাজায় , ক্লাব সম্পাদক তাদের দুজন কে প্রেমিক-প্রেমিকা ভেবে আকার ইঙ্গিতে অনেক ঠাট্টা মজা করে , বরযাত্রী দের দেওয়ার জন্য বরাদ্দ গোলাপের একটি ফিরোজ কে উপহার দেয় , ফিরোজ শিরঃপীড়ায় কষ্ট পেলে তাকে ঔষধ দেয় , কফি খেতে চাইলে তাকে কফি এনে খাওয়ায় অথচ সুইটির মা কফি খেতে চাইলে তার মুখের সামনে বলে দেয় " অত ছেলের ভিড়ে আমি কফি আনতে পারব না "

সকলে যখন বিবাহ অনুষ্ঠানে ব্যাস্ত তখন ফিরোজ ও রেণু ভবনের উপর তলার বারান্দায় বসে গল্পে মসগুল থাকে । ফিরোজ -রেণুর এই রোমাঞ্চকর আচরণ অনেকের চোখ এড়ালেও কারো কারো চোখ এড়াতে পারেনি ।দুই যুবক - যুবতির এই অবাধ মেলামেশার বিরুদ্ধে অভিভাবকদের নজর এড়িয়ে অনেকেই রেণুকে সাবধান করে । তারা যে হিন্দু-মুসলমান অন্য জাতির সেটা কেও কেও রেনু কে বোঝায় ।রেনু শুধু ছোট্ট কথাই উত্তর দেয় " তোমরা শুধু শুধু ভুল ভাবছ! "রেনুর সেই কথা কি সত্যি ছিল। নাকি আমাদের বোকা বানিয়ে ফিরোজ কে নিয়ে সে ঘর ছেড়েছে !
------------------------ চলবা ---------------------------
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৮৬৪ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৭/০২/২০১৮

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast