করুন জীবন
পাঁচ জন মানুষের সামনেই মেয়েটি বাকরুদ্ধ হয়ে গেল।
তার রোগের ইতিহাস শুনছিলাম তখন । একটির পর একটি
প্রশ্ন করছিলাম এবং রোগের গভীরতা উপলব্ধি করে আমরা
সবাই আঁতকে উঠলাম।
মেয়েটির পরনে জীর্ণ পোশাক । তার সাথে আসা দুইজন স্বজনের
পরনের পোশাকের অবস্হা ও করুণ । তার বাকরুদ্ধতার কারণ
জিজ্ঞেস করা মাত্রই সে অঝোর ধারায় কাঁদতে লাগল। দুই চোখ
বেয়ে টপ টপ করে অশ্রু গড়িয়ে গড়িয়ে মাটিতে পড়তে লাগল।
কক্ষটির ভিতরে উপস্হিত আমরা ও বেদনা অশ্রু নি:সরণ সংবরণ
করতে পারলাম না । হঠাৎ নিংশব্দ নিরবতার পরিবেশ সৃষ্টি হল তখন।
মেয়েটির বয়স মাত্র পনের বছর। নবম শ্রেণীতে পড়ে । রোগের কারণে
দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ায় ঠিকভাবে পড়ালেখাও করতে পারে না ।
তাদের সংসারে প্রচন্ড আর্থিক অনটন । তার বাবা একজন দিনমজুর ।
নিত্যদিনের আহার অর্জনই যেখানে প্রচন্ড কঠিন,সেখানে মেয়ের সুচিকিৎসা
অলিক কল্পনা মাত্র। তবুও গত তিন মাসে সামান্য সঞ্চয় করে আমার
চেম্বারে নিয়ে এসেছে ।
মেয়েটির নাম কণা । সে খুব ভাল ছাত্রী এবং বুদ্ধিমতী । স্কুলে স্যারদের
পাঠদান সে মনোযোগ দিয়ে শুনে । বাড়িতেও সে যতদূর সম্ভব পড়াশুনা
করে । কিন্তুু কণা নিশ্চিত নয়, অভাবী সংসারে সে কতদূর পড়াশোনা করতে
পারবে । কণাদের বাড়ি কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলার প্রত্যন্ত
ঘনিয়ারচর গ্রামে । গত দুই সপ্তাহ ধরে সে বাম হাতে দূর্বলতা অনুভব
করে । বাম হাত দিয়ে ভারী কিছু ধরে রাখতে পারে না । সে গত কয়েকদিন
ধরে প্রচন্ড দু:শ্চিন্তা করে যে, এভাবে যদি তার ডান হাতও অবস হয়ে যায়,
তাহলে সে কিভাবে লিখবে , কিভাবে পড়ালেখা চালিয়ে যাবে ?
আমি তার বাবা এবং আত্নীয়দের বুঝিয়ে বললাম, তার এ রোগের নাম
মাল্টিপল স্ক্লেরসিস । এ রোগেই সে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে এবং তার বাম
হাত দূর্বল হয়ে গেছে । এ রোগ নিশ্চিতকরণের জন্য মস্তিষ্কের
এম,আর,আই পরীক্ষা জরুরী । এ পরীক্ষা ঢাকা মেডিকেল থেকে করতে
হয়। রিপোর্ট সহ শীঘ্রই আমাকে দেখাতে হবে । দেরি হয়ে গেলে দৃষ্টিশক্তি
আর ফিরে আসবে না। তার বাবা আমাকে বলল,এ পরীক্ষা করতে
প্রয়োজনীয় ছয় হাজার টাকা তাঁর হাতে নেই। যদি টাকা জোগাড় করতে
পারেন, তাহলে ঢাকা যাবেন। আমি গোপনে তার বাবাকে বললাম, পরীক্ষা
করে রোগ নিশ্চিতকরণের পর শীঘ্রই চিকিৎসা শুরূ না করলে মৃত্যুর
ঝুঁকি আছে । আমি আরও বললাম এ ধরনের রোগী অজ্ঞান হলে মৃত্যুর
ঝুঁকি শতকরা ৫০ ভাগ। আবার চিকিৎসা করলে বহু বছর ভাল থাকে ।
এ রোগের অনেক আধূনিক চিকিৎসা আছে । কিন্তু সবার আগে মস্তিষ্কের
এম,আর,আই পরীক্ষা করতেই হবে । তার বাবা কোন কথা না বলে চলে
গেল। তার পর দুই সপ্তাহ কেটে গেল ; আমি হোমনা হাসপাতালের জরুরী
বিভাগে কর্তব্যরত। হঠাৎ একটি সি,এন,জি আসল একটি অজ্ঞান রোগী
নিয়ে । রোগীটিকে দেখেই আমি কণাকে রোগীর বেডে আবিস্কার করলাম ।
আমি প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কণাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
রেফার করলাম ।
তার রোগের ইতিহাস শুনছিলাম তখন । একটির পর একটি
প্রশ্ন করছিলাম এবং রোগের গভীরতা উপলব্ধি করে আমরা
সবাই আঁতকে উঠলাম।
মেয়েটির পরনে জীর্ণ পোশাক । তার সাথে আসা দুইজন স্বজনের
পরনের পোশাকের অবস্হা ও করুণ । তার বাকরুদ্ধতার কারণ
জিজ্ঞেস করা মাত্রই সে অঝোর ধারায় কাঁদতে লাগল। দুই চোখ
বেয়ে টপ টপ করে অশ্রু গড়িয়ে গড়িয়ে মাটিতে পড়তে লাগল।
কক্ষটির ভিতরে উপস্হিত আমরা ও বেদনা অশ্রু নি:সরণ সংবরণ
করতে পারলাম না । হঠাৎ নিংশব্দ নিরবতার পরিবেশ সৃষ্টি হল তখন।
মেয়েটির বয়স মাত্র পনের বছর। নবম শ্রেণীতে পড়ে । রোগের কারণে
দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ায় ঠিকভাবে পড়ালেখাও করতে পারে না ।
তাদের সংসারে প্রচন্ড আর্থিক অনটন । তার বাবা একজন দিনমজুর ।
নিত্যদিনের আহার অর্জনই যেখানে প্রচন্ড কঠিন,সেখানে মেয়ের সুচিকিৎসা
অলিক কল্পনা মাত্র। তবুও গত তিন মাসে সামান্য সঞ্চয় করে আমার
চেম্বারে নিয়ে এসেছে ।
মেয়েটির নাম কণা । সে খুব ভাল ছাত্রী এবং বুদ্ধিমতী । স্কুলে স্যারদের
পাঠদান সে মনোযোগ দিয়ে শুনে । বাড়িতেও সে যতদূর সম্ভব পড়াশুনা
করে । কিন্তুু কণা নিশ্চিত নয়, অভাবী সংসারে সে কতদূর পড়াশোনা করতে
পারবে । কণাদের বাড়ি কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলার প্রত্যন্ত
ঘনিয়ারচর গ্রামে । গত দুই সপ্তাহ ধরে সে বাম হাতে দূর্বলতা অনুভব
করে । বাম হাত দিয়ে ভারী কিছু ধরে রাখতে পারে না । সে গত কয়েকদিন
ধরে প্রচন্ড দু:শ্চিন্তা করে যে, এভাবে যদি তার ডান হাতও অবস হয়ে যায়,
তাহলে সে কিভাবে লিখবে , কিভাবে পড়ালেখা চালিয়ে যাবে ?
আমি তার বাবা এবং আত্নীয়দের বুঝিয়ে বললাম, তার এ রোগের নাম
মাল্টিপল স্ক্লেরসিস । এ রোগেই সে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে এবং তার বাম
হাত দূর্বল হয়ে গেছে । এ রোগ নিশ্চিতকরণের জন্য মস্তিষ্কের
এম,আর,আই পরীক্ষা জরুরী । এ পরীক্ষা ঢাকা মেডিকেল থেকে করতে
হয়। রিপোর্ট সহ শীঘ্রই আমাকে দেখাতে হবে । দেরি হয়ে গেলে দৃষ্টিশক্তি
আর ফিরে আসবে না। তার বাবা আমাকে বলল,এ পরীক্ষা করতে
প্রয়োজনীয় ছয় হাজার টাকা তাঁর হাতে নেই। যদি টাকা জোগাড় করতে
পারেন, তাহলে ঢাকা যাবেন। আমি গোপনে তার বাবাকে বললাম, পরীক্ষা
করে রোগ নিশ্চিতকরণের পর শীঘ্রই চিকিৎসা শুরূ না করলে মৃত্যুর
ঝুঁকি আছে । আমি আরও বললাম এ ধরনের রোগী অজ্ঞান হলে মৃত্যুর
ঝুঁকি শতকরা ৫০ ভাগ। আবার চিকিৎসা করলে বহু বছর ভাল থাকে ।
এ রোগের অনেক আধূনিক চিকিৎসা আছে । কিন্তু সবার আগে মস্তিষ্কের
এম,আর,আই পরীক্ষা করতেই হবে । তার বাবা কোন কথা না বলে চলে
গেল। তার পর দুই সপ্তাহ কেটে গেল ; আমি হোমনা হাসপাতালের জরুরী
বিভাগে কর্তব্যরত। হঠাৎ একটি সি,এন,জি আসল একটি অজ্ঞান রোগী
নিয়ে । রোগীটিকে দেখেই আমি কণাকে রোগীর বেডে আবিস্কার করলাম ।
আমি প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কণাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
রেফার করলাম ।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
অঙ্কুর মজুমদার ০২/০৭/২০১৬besh vlo
-
ফয়জুল মহী ২৯/০৬/২০১৬যথাযথ ভাবনার শব্দসমষ্টি
-
মোঃ ইমরান হোসেন (ইমু) ২৯/০৬/২০১৬ধন্যবাদ, সামনে চলুন আর শেয়ার করুন।
আমরা পড়ব আপনার বাস্তব অভিজ্ঞতা। -
দেবব্রত সান্যাল ০৬/০৬/২০১৬প্রথমেই বলি অনেক টাইপো আছে। শুদ্ধ করতে হবে। ঘটনা যা লিখেছেন , দুঃখজনক এবং হয়ত আপনার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা প্রসূত। মুশকিল হোলো ঘটনা আর গল্পের তফাত আছে। বনফুল ডাক্তার ছিলেন , নিজস্ব অভিজ্ঞতা আর সাহিত্যিক চেতনা মিশিয়ে অনবদ্য গল্প লিখেছেন। এখানে গল্পটার অভাব আছে।