টোনাটুনির সংসার ২
হাসপাতালের রুমে অনেক লোকজন।পেশেন্ট রুমটা এখন ফ্যামিলি রুম হয়ে গেছে।সেই রোগীটার অনেক আত্নীয় স্বজন এসেছে। সাথে সেই মেয়েটিও!পালাক্রমে সবাই জানতে চাইলো,এখন আমি কেমন আছি?সকলের সাথে পরিচিত হয়ে আমি আড়মোড়া দিয়ে শুয়ে আছি।একে একে সবাই চলে গেল।শুধু সেই মেয়েটি রয়ে গেল।রোগীটার আত্নীয় স্বজন চলে যাওয়াতে আমার মন খারাপ হয়ে গেলো।আমি হয়তো মায়ায় পরে গেছি!
মেয়েটি যেন কেমন।অদ্ভুত চাহুনি,মুখে হাসি লেগেই থাকতো।যেন জগতের কোন প্রতিকূলটাই তাকে স্পর্শ করতে পারেনা।একসময় সে কাছে এসে জানতে দ্বিতীয় বারের মত জানতে চাইল,কিভাবে দুর্ঘটনা হল?কিসে পড়ি?কি করি ইত্যাদি।সব প্রশ্নের উত্তর শেষে সে তার পূর্বের জায়গায় সরে গেল।আমি শুয়ে ফেসবুকে ঘোরাঘুরি করছি। একটুপর সেই মেয়েটি আবার এসে বলল,ভাইয়া চার্জার আছে?আমি ফোনের চার্জারটা এগিয়ে দিলাম।পাওনা স্বরূপ বোধহয় বাঁকা ঠোঁটের একটু মিষ্টি হাসি দিয়ে গেল।রুমে চারজন আছি কিন্তু ফ্যানের পাখার আওয়াজ ব্যতীত আর কোন শব্দ নেই।একদম শুনশান নিরিবতা।যদিও বাইরে থেকে একটু আওয়াজ ভেসে আসছে মাঝে মধ্যে।মেসেঞ্জারের মেসেজিং টোন রুমের নীরবতাকে মাঝে মধ্যে ভেঙ্গে দিচ্ছে।ফোনটা রেখে পাশ ফিরে চেয়ে দেখি সেই মেয়েটার দিকে।দেখি,সেই মেয়েটি আমার দিকে অপলক ভাবে তাকিয়ে আছে।কেন জানি মনে হল,মেয়েটি অনেকক্ষন থেকেই এভাবে তাকিয়ে আছে।মেয়েটির চোখে চোখ পড়তেই আমি জেন কেমন শিহরিত হয়ে গেলাম।আমি আবার ফেসবুকে মগ্ন হয়ে গেলাম।মেয়েটিও বোদহয় ফেসবুকে ব্যস্ত হয়ে গেছে।
ফেসবুক হল এমন একটি জায়গা,যেখানে মানুষ সকল পরিস্থিতিতে ব্যস্ত থাকতে পারে।মৃত্যুর আগে যদি সুযোগ পায় তো হয়তো আজরাইল সাহেবকে বলবে,দাঁড়ান জান কবচের আগে একটা স্ট্যাটাস দিয়ে নেই।মানুষ মানুষকে কোপায়,পিটিয়ে হত্যা করে আর আমার লাইক কমেন্টের আশায় দাঁড়িয়ে থেকে ভিডিও করি,প্রতিবাদ করিনা।কারণ,যেদিন ফেসবুক শুরু করেছি সেদিন প্রতিজ্ঞা করেছি, মানুষের সেবা নয়,আমাকে সেলিব্রেটি হতে হবে।
সেই মেয়েটির ডাকে আবারও মনোযোগে ব্যঘাত ঘটলো।
ভাইয়া,হ্যান্ডওয়াশ টা নিতে পারি।
হ্যা,অবশ্যই।
আবার একটুপরে,ভাইয়া আপনার পানির বোতলটা…….
হ্যা অবশ্যই।
আমার পাওনা মুচকি হাসি দিয়ে গেল।হাসিটা খুব অদ্ভুত!আমি এই হাসিটার মানে জানিনা।তবে বুঝতে পারলাম,আমি হয়তো মায়ায় পরে গেছি।এভাবে চলতে চলতে কখন যে ঘুমিয়ে গেলাম বুঝতেই পারলাম না।সন্ধ্যা বেলায় ঘুম জেগে দেখি,মেয়েটি নেই।মনটা জানি কেমন করছে।হয়তো আমি মায়াতেই পরে গেলাম।সেই মেয়েটির রিপ্লেসে একজন ভদ্রমহিলা এসেছেন।তার কথা জানতে চাওয়ার কোন উপায় নেই।
মাথায় অনেক ভাবনা এসে গেল।বাইকটি কোথায় আছে,কি অবস্থা?কি ভাবে কি সব হয়ে গেল?কদিন পরেই ছোটবোনের বিয়ে।বিয়েটা পিছিয়ে যাওয়াতো এখন সময়ের ব্যপার মাত্র।এইসব ভাবনা আর ফেসবুকিং করতে করতে ডাক্তার রাউন্ড দিতে এলেন।আমাকে ঔষধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিলেন।জানি,গভীর ঘুম হলেও স্বস্তি পাবোনা।কারণ,স্বপ্ন ছাড়া ঘুম মধুর হয়না।আর হাসপাতালের বেডে স্বপ্ন আসেনা।আসেনা বলতে,আমি এখনো দেখিনি।কেউ দেখলে সে তার সৌভাগ্য।
(চলবে……)
মেয়েটি যেন কেমন।অদ্ভুত চাহুনি,মুখে হাসি লেগেই থাকতো।যেন জগতের কোন প্রতিকূলটাই তাকে স্পর্শ করতে পারেনা।একসময় সে কাছে এসে জানতে দ্বিতীয় বারের মত জানতে চাইল,কিভাবে দুর্ঘটনা হল?কিসে পড়ি?কি করি ইত্যাদি।সব প্রশ্নের উত্তর শেষে সে তার পূর্বের জায়গায় সরে গেল।আমি শুয়ে ফেসবুকে ঘোরাঘুরি করছি। একটুপর সেই মেয়েটি আবার এসে বলল,ভাইয়া চার্জার আছে?আমি ফোনের চার্জারটা এগিয়ে দিলাম।পাওনা স্বরূপ বোধহয় বাঁকা ঠোঁটের একটু মিষ্টি হাসি দিয়ে গেল।রুমে চারজন আছি কিন্তু ফ্যানের পাখার আওয়াজ ব্যতীত আর কোন শব্দ নেই।একদম শুনশান নিরিবতা।যদিও বাইরে থেকে একটু আওয়াজ ভেসে আসছে মাঝে মধ্যে।মেসেঞ্জারের মেসেজিং টোন রুমের নীরবতাকে মাঝে মধ্যে ভেঙ্গে দিচ্ছে।ফোনটা রেখে পাশ ফিরে চেয়ে দেখি সেই মেয়েটার দিকে।দেখি,সেই মেয়েটি আমার দিকে অপলক ভাবে তাকিয়ে আছে।কেন জানি মনে হল,মেয়েটি অনেকক্ষন থেকেই এভাবে তাকিয়ে আছে।মেয়েটির চোখে চোখ পড়তেই আমি জেন কেমন শিহরিত হয়ে গেলাম।আমি আবার ফেসবুকে মগ্ন হয়ে গেলাম।মেয়েটিও বোদহয় ফেসবুকে ব্যস্ত হয়ে গেছে।
ফেসবুক হল এমন একটি জায়গা,যেখানে মানুষ সকল পরিস্থিতিতে ব্যস্ত থাকতে পারে।মৃত্যুর আগে যদি সুযোগ পায় তো হয়তো আজরাইল সাহেবকে বলবে,দাঁড়ান জান কবচের আগে একটা স্ট্যাটাস দিয়ে নেই।মানুষ মানুষকে কোপায়,পিটিয়ে হত্যা করে আর আমার লাইক কমেন্টের আশায় দাঁড়িয়ে থেকে ভিডিও করি,প্রতিবাদ করিনা।কারণ,যেদিন ফেসবুক শুরু করেছি সেদিন প্রতিজ্ঞা করেছি, মানুষের সেবা নয়,আমাকে সেলিব্রেটি হতে হবে।
সেই মেয়েটির ডাকে আবারও মনোযোগে ব্যঘাত ঘটলো।
ভাইয়া,হ্যান্ডওয়াশ টা নিতে পারি।
হ্যা,অবশ্যই।
আবার একটুপরে,ভাইয়া আপনার পানির বোতলটা…….
হ্যা অবশ্যই।
আমার পাওনা মুচকি হাসি দিয়ে গেল।হাসিটা খুব অদ্ভুত!আমি এই হাসিটার মানে জানিনা।তবে বুঝতে পারলাম,আমি হয়তো মায়ায় পরে গেছি।এভাবে চলতে চলতে কখন যে ঘুমিয়ে গেলাম বুঝতেই পারলাম না।সন্ধ্যা বেলায় ঘুম জেগে দেখি,মেয়েটি নেই।মনটা জানি কেমন করছে।হয়তো আমি মায়াতেই পরে গেলাম।সেই মেয়েটির রিপ্লেসে একজন ভদ্রমহিলা এসেছেন।তার কথা জানতে চাওয়ার কোন উপায় নেই।
মাথায় অনেক ভাবনা এসে গেল।বাইকটি কোথায় আছে,কি অবস্থা?কি ভাবে কি সব হয়ে গেল?কদিন পরেই ছোটবোনের বিয়ে।বিয়েটা পিছিয়ে যাওয়াতো এখন সময়ের ব্যপার মাত্র।এইসব ভাবনা আর ফেসবুকিং করতে করতে ডাক্তার রাউন্ড দিতে এলেন।আমাকে ঔষধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিলেন।জানি,গভীর ঘুম হলেও স্বস্তি পাবোনা।কারণ,স্বপ্ন ছাড়া ঘুম মধুর হয়না।আর হাসপাতালের বেডে স্বপ্ন আসেনা।আসেনা বলতে,আমি এখনো দেখিনি।কেউ দেখলে সে তার সৌভাগ্য।
(চলবে……)
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
জহির রহমান ২৬/১১/২০১৬
-
আব্দুল মান্নান মল্লিক ১৭/১১/২০১৬দারুণ লিখনি। শুভকামনা রইলো
-
মোনায়েম খান নিজাম ১৭/১১/২০১৬ভালো লাগলো।
পরবর্তী অংশের অপেক্ষায় রইলাম। -
মোমিনুল হক আরাফাত ১৭/১১/২০১৬o sad
এই একটি শব্দই বলবো।