আধুনিক শহর হবে পুরান ঢাকা
রাজধানীতে পুরান ঢাকা নামে পরিচিত এলাকাটির জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা প্রণয়নের কাজ শুরু করছে রাজউক। পুরান ঢাকার আধুনিকায়নে উন্নত ভবন স্থাপন করে আধুনিক নগর গড়ার লক্ষ্যেই রাজউক এ কাজ শুরু করেছে। বিদ্যমান ঘিঞ্জি ও ছোট ছোট ভবন ভেঙে সেখানে নির্মাণ করা হবে আধুনিক বহুতল ভবন। পাশাপাশি ওই এলাকার রাস্তা ও ফুটপাতও প্রশস্ত করা হবে। থাকবে খোলামেলা জায়গা ও বাগান। জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার আরবান সিস্টেম পদ্ধতিতে একটি নতুন শহর গড়ে তোলার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে রাজউক। এ জন্য ‘আরবান রিডেভেলপমেন্ট প্রকল্প’ নামে এই কর্মসূচি নিয়ে পুরান ঢাকায় কাজ শুরু করেছে রাজউক। কীভাবে এটা করা যাবে, তার একটি নকশাও করেছে রাজউক। এ প্রকল্পের অধীনে ছোট ছোট বাড়িঘরগুলো ভেঙে ফেলে একটি বা একাধিক বহুতল ভবন করা হবে। এ লক্ষ্যেই বংশাল এলাকায় জরিপের মধ্য দিয়ে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। ওই এলাকায় পুরনো, ঘিঞ্জি ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন কতগুলো আছে তার তালিকা করা হচ্ছে। আগামী ১০ থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে এই কাজ শেষ হবে। প্রস্তাবিত বহুতল ভবনগুলিতে আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে। আর ভেঙে ফেলা বাড়িঘরের জায়গায় নির্মাণ করা হবে চওড়া সড়ক, পানি নিষ্কাশনের নালা, পার্ক, রোপণ করা হবে গাছপালা। এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হলে উল্লেখিত এলাকার সার্বিক আধুনিকায়নে কোনো জমি অধিগ্রহণ করার দরকার পড়বে না। স্থানীয়দের মধ্যেই সকল স্থাপনার মালিকানা থাকবে। সরকার কেবল তাদেরকে সহযোগিতা করবে। রাজউকের পক্ষ থেকে পুরান ঢাকার যে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে, সেগুলো হলো- আবাসন, পুরনো ও জরাজীর্ণ ভবন, অপর্যাপ্ত আলো-বাতাস; অতি ঘিঞ্জি পরিবেশ; অপরিকল্পিত, ফুটপাতবিহীন, সঙ্কীর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থা, সরু রাস্তা, অপরিকল্পিত রাস্তা, অপর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, অপর্যাপ্ত ও অস্বাস্থ্যকর পানি সরবরাহ ব্যবস্থা, অপ্রতুল খোলা জায়গা ও অপ্রতুল গাছপালাবিহীন পরিবেশ, ভূমিকম্প ও অগ্নিদুর্ঘটনার অতিমাত্রার ঝুঁকিযুক্ত এলাকা, দূষণযুক্ত পরিবেশ, অপরিকল্পিত ও অপর্যাপ্ত নাগরিক সুবিধাদি। জাপানে একটি আরবান রিডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট বাস্তবায়নের ফলে ওই এলাকার চিত্র পাল্টে গিয়েছে। সেই সাফল্যের আদলে আমাদের পুরান ঢাকাকেও আধুনিক মেগা প্রকল্পের আওতায় নিয়ে এসে ‘আরবান রিডেভেলপমেন্ট প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করা গেলে পুরান ঢাকাও বদলে যাবে। তখন ওই এলাকায় দুঃসহ যানজট ও জলজট হবে না। তবে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ছোট ছোট ও পুরনো ভবনগুলো ভেঙে ফেলা হলেও ওল্ড হ্যারিটেজ হিসেবে স্বীকৃত স্থাপনাগুলো সংরক্ষণ করা হবে।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ধ্রুবক ০৯/০৮/২০১৭ভালো।
-
আব্দুল হক ০৮/০৮/২০১৭অন্ধকারে আশার আলো রাখা ভালো।
-
তীর্থের কাক ০৮/০৮/২০১৭ভালো