শুল্কছাড়ে বাড়ছে বিনিয়োগ
বাংলাদেশকে একটি আকর্ষণীয় বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার চেষ্টার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগে গতি আনতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ বিভিন্ন সংস্কারের মধ্য দিয়ে একটি উদার বিনিয়োগ পরিবেশ তৈরি করেছে, যা কিছু ক্ষেত্রে থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ার চেয়েও উৎসাহব্যাঞ্জক। সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবান্ধব নীতির কারণে বাংলাদেশ দেশি-বিদেশি প্রযুক্তি পণ্য নির্মাতাদের নতুন গন্তব্যস্থল হিসেবে পরিচয় পাচ্ছে। দেশের প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনের ৯৪টি যন্ত্রাংশের ওপর ১ শতাংশ আমদানি শুল্ক ঘোষণা করার পর দেশি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বিদেশি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে পণ্য উৎপাদনে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে। বাংলাদেশে বর্তমানে ১০ কোটি মুঠোফোন ব্যবহারকারীর মধ্যে পাঁচ কোটি স্মার্টফোন ব্যবহারকারী আছে। প্রতিদিন ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় এটি আমাদের শরীরের বিকল্প অঙ্গ হিসেবে অবদান রাখছে। বাংলাদেশের আইসিটি খাতে অগ্রগতি বহির্বিশ্বে প্রশংসা অর্জন করেছে। থাইল্যান্ডের সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্ব পাচ্ছে আইসিটি খাত। থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের আইসিটি ডিভিশন একটি উদ্যোগ নিচ্ছে। বিশ্বের আইসিটির অগ্রগতিতে বাংলাদেশও অংশীদার হচ্ছে। বিনিয়োগ পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশে ওয়ানস্টপ সার্ভিস চালুর বিষয়ে আইন হয়েছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এ সেবা চালু হবে সেবা নিতে কাউকে আর কোন দফতরে যেতে হবে না। যে কোন জায়গায় বসে যে কোন বিনিয়োগকারী এ সুবিধা নিতে পারবে। এবং এই সেবা বিশ্বমানের হবে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ বিশ্বমানের বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে পরিচিতি পাবে। এ লক্ষ্য অর্জনে সরকারের পক্ষ থেকে তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নের ওপর জোর দেয়া হয়েছে। লার্নিং এ্যান্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের আওতায় ৫৫ হাজার জনকে যথাক্রমে বেসিক আইসিটি, টপ-আপ, ফিউচার লিডার এবং ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ প্রদানের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বর্তমান সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের লার্নিং এ্যান্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ঘরে বসে অর্থ উপার্জন করছেন অনেক তরুণ-তরুনী। ঘরে বসে নারীদের জন্য ঝুঁকিহীন কাজ হলো ফ্রিল্যান্সিং। লার্নিং এ্যান্ড আর্নিং প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিয়ে এই প্রকল্প থেকে অনেক বেকার ঘরে বসে কিভাবে আউটসোর্সিংয়ের কাজ করে বিদেশী মুদ্রা অর্জন করতে পারে, তা শেখানো হচ্ছে। প্রশিক্ষণ নিয়ে একজন ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে ঠিক কত টাকা আয় করতে পারে, তা নির্ভর করে তার দক্ষতার ওপর। সাধারণত প্রতিমাসে কাজের ধরনভেদে ৩০ হাজার থেকে চার-পাঁচ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। সম্প্রতি, সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের লার্নিং এ্যান্ড আর্নিং প্রকল্পের এক জরিপে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন জেলায় তরুণরা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বাড়িয়ে নিজেদের আয় বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। বৃহত্তর ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলায় এ চিত্র দেখা গেছে। ঢাকা বিভাগে এ পর্যন্ত মোট প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন ১ হাজার ৫৬০ জন। এর মধ্যে সফলভাবে আউটসোর্সিংয়ে যুক্ত হয়েছেন ৪৮৫ জন। বৃহত্তর ঢাকার বিভিন্ন জেলায় তাদের সম্মিলিত আয় ৪১ হাজার ৫৭৯ ডলার বা টাকার অঙ্কে ৩৩ লাখ ২৬ হাজার ৩২০ ঢাকা। ফ্রিল্যান্সারদের ব্যক্তিগত এই আয়ের পরিমাণ দিনে দিনে বাড়ছে। নারীর পাশাপাশি পুরুষও আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে তাদের ভাগ্য বদল করছে। এভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে যুব সমাজ এবং সোনার বাংলা গড়তেও সহায়তা করছে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে। দেশকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবান্ধব হিসেবে তৈরি করতে সরকার সকল সহায়তা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মোজাহিদুর ইসলাম ইমন ১১/০৮/২০১৭বেশ্ হয়েছে
-
আব্দুল হক ০৫/০৮/২০১৭সুন্দর কথা
-
অর্ক রায়হান ০৫/০৮/২০১৭প্রাসঙ্গিক।