২০১৯ সালে মেট্রোরেল চালুর পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে সরকার
গত সাত বছরে দেশের যোগাযোগ খাতের উন্নয়নে রীতিমতো বিপ্লব ঘটে গেছে। প্রতিবন্ধকতাহীন ধারাবাহিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফলে গত মহাজোট সরকারের পাঁচ বছর এবং বর্তমান সরকারের প্রায় দুই বছরে দেশের রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্প থেকে শুরু করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীত করা, কর্ণফুলী নদীতে টানেল নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেওয়া, বিমানবন্দর থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু করা, উত্তরা থেকে আশুলিয়া পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হাতে নেওয়া, ফেনীতে ফ্লাইওভার নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ, গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত বাস র্যা পিড ট্রানজিট প্রকল্প গ্রহণ, মেট্রোরেলের কাজ শুরু করাসহ অনেকগুলো উন্নয়ন কাজ এযাবৎকালে সরকারের বড় সাফল্য। এর বাইরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ, পার্বত্য তিন জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নয়ন সরকারের অন্যতম সাফল্য। দেশজুড়ে যোগাযোগ খাতের এমন উন্নয়নের সুফল ইতিমধ্যে পেতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গঠনের পর সর্বাগ্রে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল সারা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার সামগ্রিক উন্নয়নে। সরকারের গৃহিত পদক্ষেপগুলো এক এক করে বাস্তবায়িত হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় মেট্রোরেলের স্টেশন ও উড়ালপথ (ভায়াডাক্ট) নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনের কাছে এই কাজের উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ২০১৯ সালে মেট্রোরেলের একাংশ চালু করার পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে সরকার। মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ আট ভাগ বা আটটি প্যাকেজে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথমে প্যাকেজ ৩ ও ৪-এর কাজ শুরু করা হচ্ছে। এর আওতায় উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত নয়টি স্টেশন নির্মাণ করা হবে। আর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার উড়ালপথ নির্মাণ করা হবে। এই উড়ালপথেই মেট্রোরেলের লাইন নির্মাণ করা হবে। আর স্টেশনগুলোও হবে উড়ালপথে। এই কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এই মেট্রোরেলের পথটির নাম দেওয়া হয়েছে এমআরটি-৬, দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ কিলোমিটার। শুরু উত্তরা তৃতীয় পর্ব থেকে এবং পল্লবী, ফার্মগেট, দোয়েল চত্ত্বর, প্রেসক্লাব হয়ে মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে গিয়ে শেষ হবে। পুরোটাই হবে উড়ালপথে। এই পথে স্টেশন হবে ১৬টি। উড়ালপথ নির্মাণের পর লাইন বসানো, ইঞ্জিন-কোচ ক্রয় এবং বিদ্যুতের সাবস্টেশন বসানোর কাজ হবে আলাদা প্যাকেজের অধীনে। আগারগাঁও থেকে উত্তরা পর্যন্ত মেট্রোরেল ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চালু করার কথা রয়েছে। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত বাকি অংশ ২০২০ সালের মধ্যে সম্পন্ন করার কথা রয়েছে। তবে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে এই প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২৪ সাল পর্যন্ত। প্রতি ৪ মিনিট পরপর ১ হাজার ৮০০ যাত্রী নিয়ে চলবে মেট্রোরেল। ঘণ্টায় চলাচল করবে প্রায় ৬০ হাজার যাত্রী। প্রায় ২০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সময় লাগবে ৪০ মিনিটের কম। মেট্রোরেলের প্রস্তাবিত ১৬টি স্টেশন হচ্ছে উত্তরা (উত্তর), উত্তরা (সেন্টার), উত্তরা (দক্ষিণ), পল্লবী, মিরপুর ১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, তালতলা, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, সোনারগাঁও হোটেল, জাতীয় জাদুঘর, দোয়েল চত্বর, জাতীয় স্টেডিয়াম এবং বাংলাদেশ ব্যাংক এলাকায়। মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৬ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা দেবে জাপানের সংস্থা জাইকা। বাকি ৫ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা জোগাবে সরকার।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
কামরুজ্জামান সাদ ২৪/১২/২০১৭ভাল লেখা।উন্নয়ন এগিয়ে চলুক।