নৈতিকতার স্থান নেই বিএনপির রাজনীতিতে
বিএনপির রাজনীতিতে নৈতিকতার যে স্থান নেই তা হারে হারে টের পেয়েছেন জেনারেল মাহবুব। ১৯৯৬ সালে দেশের এক ক্রান্তিকালে লে. জে. মাহবুব সেনাপ্রধান হয়েছিলেন। অবসরে যাবার পর তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। ২০০১ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বিএনপির সর্বোচ্চ সংস্থা স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সম্প্রতি তিনি রাজনীতির কর্মকান্ড থেকে নিজেকে কিছুটা গুটিয়ে রেখেছেন। অপমানে, গ্লানিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দল থেকে সরে যাবেন। ঘনিষ্টদের বলেছেন, ‘বিএনপি করার চেয়ে বাড়ির চাকর হওয়াও সম্মানের। নিজেকে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়াবেন বলেই তাঁর ঘনিষ্ট স্বজনরা জানিয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি পদত্যাগও করবেন না। গত এক মাসে দলের কোনো কর্মকাণ্ডে তাঁকে দেখা যায়নি। নির্ভরযোগ্য এক সুত্রে জানা যায়, গত কয়েক বছর ধরে বেগম জিয়া সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন না। গত বছর বেগম জিয়ার পক্ষ থেকে শিমুল বিশ্বাস জে. মাহবুবকে সশস্ত্র বাহিনীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে না বলেন। উত্তরে জেনারেল মাহবুব স্পষ্ট বলেন, ‘সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য হিসেবে এসব অনুষ্ঠানে যাওয়া তাঁর কর্তব্য।’ সর্বশেষ গত এপ্রিলে বিএনপির এক অনুষ্ঠানে বেগম জিয়া তাঁকে প্রকাশ্যে ভৎর্সনা করেন। জেনারেল মাহবুবকে উদ্দেশ্য করেই বলেন ‘দলে কিছু এজেন্ট আছে, যারা দলের ক্ষতি করতে চায়’। এরপর আর বেগম জিয়ার সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ নেই তাঁর। বেগম জিয়ার সাক্ষাৎ চেয়েছেন তিনবার। দলীয় কার্যালয়ে গেছেন। গেছেন বেগম জিয়ার বাসভবনে। চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত সহকারীকে ফোন করে অনুরোধ করেছেন ফোনটা ‘ম্যাডাম’ কে দেবার জন্য। কিন্তু ওপ্রান্ত থেকে ফোন কেটে দেওয়া হয়েছে। দলের কোনো বিষয়েই তাঁর মতামত নেওয়া হয় না। ২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেনে এলে তিনি ‘সংস্কারপন্থী’ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০০৭ এর জুন মাসে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বেগম জিয়াকে দলীয় প্রধানের পদ ছাড়তে বলেন। এর কিছুদিন পরই জিয়ার কবরের কাছে যুবদল কর্মীদের হাতে তিনি লাঞ্চিত হন। সে সময়ও বিএনপি থেকে নিষ্ক্রিয় ছিলেন। পরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অনুরোধে আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হন। বিএনপির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তার সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছিল। রাজনীতির বাইরে সেনাবাহিনীর অনুষ্ঠান, রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে তিনি অংশগ্রহন করেন নিয়মিত।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।