মরিয়া হচ্ছে সদস্য সংগ্রহে
এ মুহূর্তে বিএনপি তিন কাজ নিয়ে ব্যস্ত। তা হলো দলের নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযান, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সংলাপে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি ও নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা তৈরি। দলের নেতারা বলছেন, এরপর ডিসেম্বরের দিকে একাদশ সংসদ নির্বাচনের পথনকশা চূড়ান্ত করা হবে। তবে দলের যে বেহাল অবস্থা তা কাটিয়ে উঠতে পারবে কি? দলের শীর্ষ নেতৃত্ব নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবি দিচ্ছেন। এর লক্ষ্য সরকারের ওপর চাপ তৈরি করা। এ ছাড়া দলের নেতাদের অনেকের অনুমান, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলা দুটির বিচারকাজ ডিসেম্বরের আগেই শেষ হতে পারে। এতে দলীয় প্রধানের সাজার আশঙ্কা করছেন অনেকেই। এ বিষয়টি বিবেচনায় রেখে চলতি বছরের শেষ নাগাদ একাদশ সংসদ নির্বাচনের দলীয় পথনকশা ঠিক করার লক্ষ্য স্থির করেছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা। বিগত দিনে নানা ক্রোন্দলে বিএনপির দলের অবস্থা এখন নড়বড়ে। অনেকেই চলে গেছেন দল ত্যাগ করে। তাই আগামী নির্বাচনের আগে সারা দেশে এক কোটি নতুন সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যে অভিযান শুরু হয়েছে। এবার ইউনিয়ন পর্যায়ের প্রতিটি ওয়ার্ডে ২০০, পৌরসভার ওয়ার্ডে ৩০০ ও সিটি করপোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডে ১ হাজার করে নতুন সদস্য সংগ্রহ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে কেবল জেলা, উপজেলা, পৌরসভার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, সাবেক দলীয় সাংসদ এবং নির্বাহী কমিটির সদস্যদের ফরম দেওয়া হচ্ছে। এ কর্মসূচি সফল করতে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের ৫৩ জন কেন্দ্রীয় নেতাকে ৬৪ জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কোরবানির ঈদ পর্যন্ত নতুন সদস্য সংগ্রহ চলবে। নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযান বিএনপির একটি বড় কর্মসূচি। তা না হলে দলের অবস্থা বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে নেতা-কর্মীরা যেন দলের প্রতি উজ্জীবিত হয় সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে যেতে চাচ্ছে দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। এর বাইরে মাঠপর্যায়ে দল পুনর্গঠন করছে বিএনপি। যদিও দলাদলি ও কোন্দলের কারণে গত দেড় বছরেও পুনর্গঠনের কাজ শেষ হয়নি। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, ৭৫টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ৪৯টিতে কমিটি গঠন করা হয়েছে। খালেদা জিয়া দেশের বাইরে যাওয়ায় কমিটি গঠনের কাজ স্থগিত থাকবে বলে জানা গেছে। কমিটি পুনর্গঠন এবং সদস্য সংগ্রহ অভিযানের মধ্য দিয়ে সংসদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী বাছাইয়ের কাজটিও এগিয়ে রাখতে চাইছে বিএনপি। এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক কার্যক্রমে সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া সেপ্টেম্বরের মধ্যে দল পুনর্গঠন কার্যক্রম শেষ করতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তাগাদা দেওয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে দলের সব ইউনিট, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের কমিটি পুনর্গঠন করারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এভাবে বিভিন্ন নতুন কায়দায় দলের একত্রীকরণ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দলটি। তবে এর সাফল্য কতটুকু হবে তা অনুমান করা যাচ্ছে না। বিগত দিনে বিএনপির জ্বালাও পোড়াও কর্মসূচি দলের অনেকে প্যতাখ্যান করেছে। দেশের মানুষের উপর অত্যাচার, হামলা ও নানা অপকর্মের জন্য দলের এই বেহাল অবস্থা। তাই নতুন কর্মসূচি দলের জন্য কতটুকু সুফল বয়ে আনবে তা সময় হলেই সবাই দেখতে পারবে।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
কামরুজ্জামান সাদ ১৬/০৭/২০১৭প্রথম আলোর অনলাইন ভার্সনে এরকম কিছুই পড়েছিলাম