জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে অনলাইন বাজার
তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারে বিশ্বব্যাপী অনলাইন বাজারের পরিধি ক্রমেই বাড়ছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ ভাবনার বিস্তারের কল্যাণে এক্ষেত্রে আমাদের দেশীয় প্রেক্ষাপটও অত্যন্ত সম্ভাবনাময় ও ভোক্তাদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। নিত্যনতুন পণ্যের সমাহার, বিভিন্ন ছাড় ও উপহারের কমতি নেই ভার্চুয়াল এ বাজারে। নগরজীবনের ব্যস্ততায় যখন নাভিশ্বাস অবস্থা সবার, নিজের জন্য একান্ত কিছু সময় বের করতে গিয়ে গলদঘর্ম হচ্ছেন যারা, তাদের ব্যস্ত জীবনযাপনে অনেকটাই স্বস্তি এনে দিয়েছে এই অনলাইন বাণিজ্য। একটি মোবাইল ফোনই সহজ করে দিচ্ছে ক্রেতা-বিক্রেতার জীবনাচরণ। দেশের নামি-দামি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ওয়েবসাইটের পাশাপাশি নানা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, বিশেষ করে ফেসবুকের মাধ্যমেও বেচাকেনা হচ্ছে বিভিন্ন পণ্য। এ খাতে চলতি বছরের প্রবৃদ্ধি গত বছরের এ সময়ের বিবেচনায় প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি। বর্তমানে এ দেশে অনলাইনে কেনাকাটার ৭০ শতাংশই সম্পন্ন হয় ক্যাশ অন ডেলিভারি সিস্টেমে। এর বাইরে ১০ শতাংশ ক্রেডিট কার্ড ও ২০ শতাংশ হয়ে থাকে বিকাশের মাধ্যমে। বিশেষ করে পোশাকসামগ্রী, কসমেটিকের পাশাপাশি ইলেকট্রনিক পণ্যের চাহিদাই বেশি বেড়েছে। এ বছরই প্রথম ঢাকার বাইরে প্রচুর পরিমাণে পণ্য বিক্রি হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে পোশাক। বাজার ঘুরে ঘুরে জিনিস কেনা বিরক্তিকর। ফলে শহর কেন্দ্রিক ক্রেতাদের অনেকেই এখন অনলাইনে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। দৈনন্দিন কর্মব্যস্ততা ও যানজটের ভোগান্তি থেকে রেহাই পেতেও অনেকে অনলাইন কেনাকাটায় নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। নগর জীবনে কাজের ব্যস্ততায় মাঝে অনলাইনে কেনাকাটার সুযোগ আমাদেরকে হয়রানিমুক্ত করছে, জীবনে এনেছে গতি, দিয়েছে স্বস্তি। সুই-সুতা থেকে ফ্রিজ, গাড়ি সবই এখন অনলাইনে কেনা যাচ্ছে। পণ্যের ছবি দেখে নির্দিষ্ট মূল্যে অর্ডার করলেই ২/১ দিনের মধ্যে পণ্য বাসায় পৌঁছে যায়। ক্রটিপূর্ণ পণ্য ফেরতের ব্যবস্থাও আছে। পণ্য কুরিয়ার সার্ভিসে বাসায় পৌঁছে দেয়ার পর তা সঠিক কিনা যাছাই-বাছাই করেই মূল্য পরিশোধ করা যাচ্ছে । যা কেনাকাটাকে অনেক সহজসাধ্য করে তুলেছে। ক্রেতা শুধু পণ্য পছন্দ করে অনলাইনে ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, মাস্টার কার্ড, ভিসা কার্ডের মাধ্যমে অথবা বাসায় নগদে পণ্যমূল্য পরিশোধ করেন। ক্রেতা আগ্রহের বিষয়টি বিবেচনায় ইতিবাচক বাণিজ্যিক সম্ভাবনা থাকায় দেশে গত কয়েক বছরে সব মিলিয়ে প্রায় দুই হাজারের মতো অনলাইনে বেচাকেনার প্লাটফর্ম গড়ে উঠছে। এর মধ্যে প্রায় ৮৫টির মতো অনলাইন হাটও সক্রিয় রয়েছে। বর্তমানে দেশে অনলাইন বাজারের সংখ্যা ১ হাজার। এছাড়াও ফেসবুক পেইজ রয়েছে আরও ৮ হাজার। এসব মাধ্যমে প্রতিদিন ৩০ হাজার অর্ডার ডেলিভারি হচ্ছে। আর মাসে ডেলিভারি হচ্ছে ৮ থেকে ৯ লাখ অর্ডার। এ খাতে এখন পর্যন্ত ২৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থানও হয়েছে।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।