বাংলাদেশের উজ্জ্বল উপস্থিতি
বর্তমানে একটি চিহ্নিত গোষ্ঠির অপতৎপরতায় দেশিয় পরিমন্ডলে বাংলাদেশ নিয়ে যত নেতিবাচক প্রচারণা শুনতে ও দেখতে পাওয়া যায় বিদেশে আন্তর্জাতিক ফোরামে প্রতিনিয়ত ঠিক তার বিপরীত প্রতিচ্ছবি মিলছে। তাহলে স্বদেশের অর্জনগুলো কি আমরা দেশের মানুষের কাছে ঠিকমত তুলে ধরতে পারছি না? নাকি বিপুল এই জনসংখ্যার দেশে আশেপাশে ঘটে যাওয়া নিত্যদিনের অসংগতি, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে আমাদের ধীরে ধীরে বেড়ে উঠা ‘আরেক বাংলাদেশে’র সাফল্যের বিষয়গুলো আমাদের ঝাপসা চোখে ধরা পড়ছে না? বিদেশি পর্যবেক্ষকরা খোলা চোখে যা দেখতে পাচ্ছেন দেশবাসী কেন তা দেখতে পাচ্ছে না? সমকালীন বাংলাদেশে বিপরীত এই প্রতিচ্ছবি আসলেই এক বড় খটকা। তবে বিদেশি বিশ্লেষকদের চোখে বিশ্ব পরিসরে সমসাময়িক বাংলাদেশের উজ্জ্বল উপস্থিতির বেশকিছু কারণ লিপিবদ্ধ করা যায়। সবচেয়ে প্রথমেই যে কথাটি বিদেশিরা বলেন, তাহলো বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও দীর্ঘ প্রায় এক দশক ধরে বাংলাদেশের ম্যাক্রো অর্থনীতি শুধু যে স্থিতিশীল ও বাড়ন্ত তাই নয়, এর সুফল সমাজের নিচের তলার মানুষের কাছেও পৌঁছে গেছে। তাই দশক জুড়েই বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার ছয় শতাংশের বেশি এবং একই সঙ্গে দারিদ্র্যের হারও (বিশেষ করে অতি দারিদ্র্যের হার) দ্রুত কমছে। আমাদের প্রবৃদ্ধিও কর্মসংস্থান সঞ্চারী। প্রবৃদ্ধির বাড়ন্ত ‘কেক’ আমরা সকলেই ভাগ করেই খাচ্ছি। কমছে মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার। বাড়ছে জীবনের গড় আয়ুস্কাল। আয়-বৈষম্যও অনেকটাই স্থিতিশীল। ভোগ-বৈষম্য কমতির দিকে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ ধীরে হলেও বাড়ছে। সামাজিক অশান্তি কমছে। মানুষ খেয়ে-পরে বেঁচে থাকার অবলম্বন খুঁজে পাচ্ছে। সৃজনশীল উদ্যোক্তার সংখ্যা বাড়ছে। ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রয়োগ বাড়ছে। খুব শিগগীরই ‘ফোরজি’ মোবাইল প্রযুক্তির যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে। এর ফলে ‘মোবাইল ফার্স্ট’ সম্পর্কিত ব্যবসা-বাণিজ্য, সার্ভিস, জন-প্রশাসন সেবার ব্যাপক প্রসার ঘটবে। গতিও বাড়বে। সরকারের সার্বিক অর্থনৈতিক নীতি কৌশলও মূলত গরিব-হিতৈষী। মুদ্রানীতিও বিনিয়োগ এবং উদ্যোক্তা-বান্ধব। তাই ক্ষুদে ও মাঝারি উদ্যোক্তার সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যাও। স্থানীয় বাজারের আকার যেমন বাড়ছে, রপ্তানিও তেমনি বাড়ছে। বাড়ছে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি। রেমিটেন্স খানিকটা কমলেও সমাজ ও অর্থনীতিতে তার প্রভাব এখনো ব্যাপক। এসবই শুধু আমার কথা নয়। সম্প্রতি ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে’র এক প্রতিবেদনেও এসব কথার প্রতিফলন ঘটেছে। বাংলাদেশকে ‘নয়া উদীয়মান ব্যাঘ্র’ বলে স্বাগত জানিয়েছে এই প্রতিবেদন। আর এই ইতিবাচক ধারায় বদলে যাওয়া বাংলাদেশের মূল স্থপতি হচ্ছেন আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। তার গতিশীল নেতৃত্বের দূরদর্শীতার কারণেই আজ সর্বক্ষেত্রে বাংলাদেশের উজ্জল উপস্থিতি। জীবন্ত কিংবদন্তীসম এই নেত্রী তাই আজ বিশ্ব পরিমন্ডলে এক অনন্য বিষ্ময়ের অপর নাম। সম্প্রতি মার্কিন লেখক ও ব্রায়েনের বইয়ের প্রচ্ছদে সাতজন সফল নারী নেত্রীর একজন হিসেবে স্থান করে নিয়েছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি গণতন্ত্র উদ্ধারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে যেসব অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের সংগ্রাম করেছেন সেসব এই বইতে স্থান পেয়েছে। জি-২০সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে এখন অহরহই তাঁর ডাক পড়ছে। তাঁর উপস্থিতি মানেই তো বাংলাদেশের সরব উপস্থিতি। তাই প্রতিটি দেশপ্রেমিক নাগরিকের অকুন্ঠ চিত্তের উচ্চারন – জয়তু শেখ হাসিনা।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।