কি হতে পারে তারা ক্ষমতায় গেলে
আগামী নির্বাচনে বিএনপি যোগ দিয়ে বিজয়ী হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী, বাঙালীর অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতিবিরোধী এবং উন্নয়নবিরোধী অপঘটনা সংঘটিত হতে পারে কি? তবে এ ধরণের দুর্ঘটনাগুলোর সম্ভাবনা যে বেড়ে যাবে তা কিন্তু বলা যেতে পারে। কেননা, এই দলের নেত্রী ও তার প্রবাসী পুত্র এবং বিএনপির জন্মদাতা জিয়ার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের আবাহমানের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অবিশ্বাস্য ঘটনাবলী পর্যবেক্ষণ করলে এই দলের ভবিষ্যত কর্মকান্ড কি হতে পারে, সেটি দিবালোকের মতো পরিষ্কার হয়ে যায়। বিএনপি নির্বাচনে জিতলে, আরও একটি ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট অথবা ২০০৪-এর ২১ আগস্ট সংঘটিত হওয়ার শতভাগ সম্ভাবনা তৈরি হবে। ’৭৫-এ বঙ্গবন্ধু, তার পরিবার ও ৩ নভেম্বর আওয়ামী লীগের চার জাতীয় নেতার হত্যাকান্ড শুধু জাতির জনককে নয়, আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার লক্ষ্যে আইএসআইএর প্রত্যক্ষ মদদে সংঘটিত হয়েছিল। তবে, ’৮১ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে দেশে প্রত্যাবর্তন করার অনুমতি দেয়ার কারণে ৩০ মে জিয়াউর রহমান হত্যাকান্ড হয়েছিল কিনা অথবা এটি মুক্তিযোদ্ধা সেনাদের নিছক ক্ষোভের ফল কিনা, সে নেপথ্য ইতিহাস এখনও অমীমাংসিতই রয়ে গেছে। জিয়া ’৭৫-এর পর প্রথমেই বঙ্গবন্ধু কর্তৃক প্রণীত দালাল আইন বাতিল করে গ্রেফতার হওয়া এবং বিচারের আওতাধীন, এমন কি দন্ডিত ’৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি দেয়! উল্টো, যুদ্ধাপরাধী শাহ আজিজ, মান্নানদের প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী পদে নিয়োগ দেয়! একই কাজ কিন্তু খালেদা, তারেকও সংগঠিত করেছে ২০০১ সালে বিএনপিপন্থী লতিফুর রহমানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সহায়তায় ভোট কারচুপি, সোয়া লাখ ভুয়া ভোটার, হিন্দুদের ওপর চরম নির্যাতন, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর অবর্ণনীয় নির্যাতন, তাদের এলাকা ছাড়া করা, কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন অফিসে তারেক, চার সচিব ও এক কূটনৈতিক মিলে ভোটের ফল পাল্টে দেয়া ইত্যাদির মাধ্যমে জয়ী হয়ে জামায়াতের যুদ্ধাপরাধীদের শিল্প ও কৃষিমন্ত্রীর পদে নিয়োগ দিয়ে। তাই আগামীতে ২০১৮’র নির্বাচনে বিএনপি বিজয়ী হলে, আসলে বিজয়ী হবে জামায়াত-যুদ্ধাপরাধীরা এবং ফলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তো বিলুপ্ত হবেই, অসাধারণভাবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ চালিয়ে যাওয়া বিচারক, প্রসিকিউটর, রায় প্রদানকারী বিচারক, সাক্ষীরা, এমন কি যুদ্ধাপরাধীর বিচার দাবিকারী সব মুক্তিযোদ্ধা, দেশপ্রেমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা জামায়াত-শিবির, বিএনপি, ও অন্য সকল মৌলবাদী-মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধীদের হাতে আক্রান্ত হবে, যেমনটি ২০০১-২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে হয়েছিল – তাতে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধীদের পরিবারের সদস্য, সন্তানরা অনুতপ্ত না হয়ে উল্টো খুনী পিতার, স্বামীর সমর্থক হওয়ার নিজেদের হাতে আইন তুলে নেবে। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী, পাকিস্তানপ্রেমী বাঙালী, বিহারী মৌলবাদীরাও হতাকান্ড চালাবে। আমাদের এই সোনার বাংলা পরিণত হবে বিভিষিকাময় ভুখন্ড। তবে বিষয়টি কিন্তু হালকাভাবে নেয়ার কোনো অবকাশ নেই, কারণ এটা কোনো দুঃস্বপ্নের কষ্ট-কল্পনা নয়, সম্ভাব্য পরিণতির যৌক্তিক বিশ্লেষন মাত্র। সুতরাং, সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমাদেরই – আগামীতে আমরা কাদের নির্বাচিত করবো? উন্নয়ন অগ্রযাত্রার নিরবিচ্ছিন্নতা চাই, নাকি ইতিহাসের চাকার উল্টা যাত্রাকেই আমাদের ভবিতব্য করবো!
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
আনিসুর রহমান বাবু ০৩/০৭/২০১৭ভাল লাগ্ল !