বন্ধ হোক তরুণদের খুনি বানানো ও ধর্মের নামে মানুষকে হত্যা
মৃত্যুতেই সব শেষ নয়, মৃত্যুর অন্ধকার পেরিয়েও রয়েছে আশার আলো। ধর্ম যুগে যুগে মানুষকে হতাশার মধ্যেও আশা জাগিয়েছে। কিন্তু ধর্মের নামে যখন চলে নিরাপরাধ মানুষ হত্যা তখন তাকে কী বলা যায়? অতীতে ধর্মের নামে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে ডাইনি অপবাদে, সহমরণে পাঠানো হয়েছে, নরবলি দেওয়া হয়েছে। আরও নানা রকম শোষণ, নিপীড়ন হত্যা করা হয়েছে বিভিন্ন ধর্মের নামে। বর্তমানেও ধর্মের নামে জঙ্গিবাদ, উগ্রতা, মৌলবাদ, মানুষকে হত্যা, জনসমাবেশে হামলা চলছেই। গুলশানের হলি আর্টিজান, ফ্রান্সে হামলা, ইংল্যান্ডে হামলা, জার্মানিতে হামলা, এবার আবার ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারে হামলা। নিরপরাধ মানুষের রক্ত ঝরা থামছে না। থামছে না জঙ্গিবাদের ছোবল। সবচেয়ে দুঃখজনক হলো এইসব হামলা, হত্যা, আক্রমণ সবটাই ঘটছে ধর্মের নামে। পরম পবিত্র, পরম কল্যাণময় আল্লাহর নাম নিয়ে মানুষ হত্যা করছে মানুষকে। এটা যে কত বড় দুঃখের ও বেদনার তা ভুক্তভোগী মাত্রই বুঝবেন। আমাদের দেশে বিভিন্ন জঙ্গি আস্তানায় একের পর এক অভিযান চলেছে। কিন্তু তারপরও গ্যারান্টি দেওয়া যাচ্ছে না যে, জঙ্গিবাদকে নির্মূল করা হয়েছে। সারা বিশ্বেই এই যে জঙ্গিবাদের উত্থান-তার আশু সমাধান দরকার। সবচেয়ে আগে দরকার তরুণ প্রজন্মকে জঙ্গি হওয়া থেকে বাঁচানো। জঙ্গি হওয়ার উৎসমুখকে বন্ধ করতে পারলে তবেই জঙ্গিবাদকে ঠেকানো সম্ভব। মধ্যপ্রাচ্যের অশান্ত পরিস্থিতি বিশ্বের অন্য এলাকার তরুণদেরও জঙ্গি হতে প্রণোদিত করছে। ম্যানচেস্টারের হামলাকারীও একজন লিবীয় বংশোদ্ভূত তরুণ। সিরিয়া থেকে শরণার্থী হয়ে আসা অনেক তরুণও পা বাড়াচ্ছে জঙ্গিবাদের দিকে। এইসব তরুণদের মগজ ধোলাই করা অনেক সহজ। তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে তোমার জন্মভূমির বেহাল দশার জন্য দায়ী পশ্চিমা বিশ্ব। অতএব স্বর্গে যেতে চাইলে এই বর্তমান সভ্যতাকে ধ্বংস করতে হবে। তোমাকে নাড়া দিতে হবে বিশ্বের ভিত্তিমূলে। এটাই জান্নাতের পথ। এই বিপথ তরুণরা অকালে জান্নাতের পথে পা বাড়াতে এবং আরও শত শত মানুষের মৃত্যুর ব্যবস্থা করতে এত ব্যগ্র হতো না যদি তাদের জীবন সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা দিয়ে মগজ ধোলাই করে দেওয়া না হতো। ধর্মের ভ্রান্ত ব্যাখ্যা দিয়ে তাদের বুঝানো হচ্ছে ‘ইসলামি বিশ্ব’ গড়ার পথ হলো মানুষকে হত্যা। এটাই নাকি ‘জিহাদ’। বাংলাদেশেও একইভাবে শত শত তরুণকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে জঙ্গিবাদের দিকে। এরাও একই রকম মগজ ধোলাইয়ের শিকার। এই অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। বন্ধ করতে হবে ধর্মের নামে তরুণদের খুনি বানানোর বিপথকে।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মোঃ নূর ইমাম শেখ বাবু ৩০/০৪/২০১৮সহমত
-
পরশ ০৪/০৬/২০১৭সমসা
-
কামরুজ্জামান সাদ ০২/০৬/২০১৭এটা নিঃসন্দেহে বৈশ্বিক সমস্যা