রমজানে বদলে গেছে দৈনন্দিন রুটিন
রমজান আসায় সব কিছুতে কিছু না কিছু পরিবর্তন এসেছে। সবসময় যেমন, এখন তার উল্টো। অনেক কিছ্ইু বদলে গেছে। প্রতিদিনের জীবনে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। ঘড়ির কাঁটা ঠিক থাকলেও, খাওয়া ঘুম জেগে ওঠা সব হচ্ছে নতুন নিয়মে। হ্যাঁ, রমজানই বদলে দিয়েছে । আরবি এই মাসের প্রথম দিন থেকে শুরু হয়েছে রোজা। এই কয়েকদিনেই পরিবর্তন স্পষ্ট। ঢাকা শহরের চেহারা বদলে গেছে। এখন ভোর রাতে শব্দ করে বেজে উঠছে এ্যালার্ম দেয়া ঘড়ি। প্রায় প্রতিটি ঘরের বাতি জ্বলে উঠছে। দিনের মতো সরব হয়ে উঠছে চারপাশ। পরিবারের প্রবীণ সদস্যরা ছোটদের ঘুম থেকে ডেকে তুলছেন। চোখ মুখ ধুয়ে একসঙ্গে বসে সেহেরি খাচ্ছেন। এ সময় ঢাকার অনেক রেস্তরাঁ খোলা থাকছে। সেগুলোতেও উপচে পড়া ভিড়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আশপাশের কেউ উঠতে ব্যর্থ হচ্ছেন কিনা, সে খবরও নেয়া শুরু হয়ে গেছে প্রথম দিন থেকে। এক বাসার লোকজন অন্য বাসার সামনে গিয়ে ডোরবেল বাজিয়ে ডেকে তুলেছেন। বিভিন্ন দল পাড়া মহল্লার ভেতর দিয়ে হেঁটে যেতে যেতে সুরেলা কণ্ঠে রোজদারদের ডাকেন। ঘুম থেকে ওঠার আহ্বান জানান। রোজার প্রথম দিন থেকেই বদলে গেছে সরকারী অফিস আদালতের সময়সূচী। এখন সরকারী, আধা-সরকারী ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের অফিস সকাল ৯টায় শুরু হয়ে চলছে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত। সুপ্রীমকোর্ট, ব্যাংক, ইনস্যুরেন্স, বাংলাদেশ রেলওয়ে, পোস্ট অফিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিজেদের সুবিধামতো সময়সূচী নির্ধারণ করে নিয়েছে। কর্মঘণ্টা কমে আসায় সর্বত্রই একটা তড়িঘড়ি অবস্থা। অফিস ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং রাস্তা ঘাটেও ব্যাপক ছোটাছুটি দৃশ্যমান হচ্ছে। একই কারণে বেড়েছে যানজট। দুপুরের পর থেকেই বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। ইফতারের আগে আগে বাড়ি ফিরতে চান সবাই। ফলে এ সময় যানবাহনের সঙ্কট দেখা দেয়। বহু মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করেন। একটি এসে দাঁড়ালেই হলো, প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়েন যাত্রীরা। যানজটে নাকাল হলেও, বাড়ি ফেরার আনন্দের কাছে ম্লান হয়ে যায় ভোগান্তি। আগে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার কথা যারা ভাবতেও পারতেন না, এখন তারা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কাটাচ্ছেন। এক টেবিলে বসে ইফতার সারছেন। মুসলিমরাই শুধু নয়, অন্য ধর্মাবলম্বীরাও মুখরোচক খাবার সামনে নিয়ে বসছেন। মজা করে খাচ্ছেন। এদিকে, ইফতারের আগে যেসব রাস্তায় যানজট লেগে থাকে ইফতারের সময় সেগুলো জনশূন্য হয়ে যায়। প্রধান প্রধান সড়কে গাড়ি তেমন দেখা যায় না। ফুটপাথ ফাঁকা পড়ে থাকে। দেখে মনে হয়, লম্বা কোন ছুটি চলছে শহরে। ইফতারের পর ধর্মপ্রাণ মানুষ তারাবি নামাজের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এবারও শহরের প্রায় সব মসজিদে ব্যবস্থা থাকছে খতমে তারাবির। ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিভিন্ন বাড়িতে, এপার্টমেন্ট হাউসের ছাদে গ্যারেজে নামাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ কারণেও ঢাকার রাস্তা ঘাট ফাঁকা হয়ে যায়। সব মিলিয়ে বদলে যাওয়া দৃশ্যপট। আরও বদলে যাওয়ার অপেক্ষায় এখন শহর ঢাকা।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মোঃ নূর ইমাম শেখ বাবু ০২/০৫/২০১৮ভাল
-
আলম সারওয়ার ৩১/০৫/২০১৭খুবই ভালো লাগে ।শুভেচ্ছা থাকল আমার
-
Tanju H ৩১/০৫/২০১৭ভালো-লাগল।শুভেচ্ছা রইল