www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

আঁধার শেষে আলো

সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় এতোদিনের আঁধার কেটে কর্ণফুলীর উত্তর পারের মতো দক্ষিণ পারও আলোকিত হতে যাচ্ছে। এতে বদলে যাবে পশ্চিম পটিয়া ও আনোয়ারা। এতোদিন কর্ণফুলীর উত্তর পারে চট্টগ্রাম বন্দর ঘিরে নগর ও শিল্পকারখানা গড়ে উঠলেও দক্ষিণ পারের পশ্চিম পটিয়া ও আনোয়ারা অংশ ছিল অন্ধকারে। ব্যাপক সম্ভাবনা থাকা সত্বেও সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে না উঠায় পিছিয়ে পড়ে দক্ষিণ পারের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। তবে আট হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে কর্ণফুলীর নিচে টানেল নির্মাণ, আনোয়ারায় চীনের বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি, কোরিয়ান ইপিজেডে পুরোদমে কার্যক্রম শুরু এবং মিরসরাই থেকে আনোয়ারা-বাঁশখালী হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত সমুদ্র উপকূলে মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণ ও বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘিরে সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এসব প্রকল্পকে কেন্দ্র করে পাল্টে যাচ্ছে পুরো এলাকা, আলোকিত হতে চলেছে পশ্চিম পটিয়া ও আনোয়ারার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। এতোদিন আনোয়ারার গুরুত্বপূর্ণ শিল্পাঞ্চল হয়ে উঠার প্রধান বাধা ছিল সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা। তবে কর্ণফুলীর নদীর নিচে টানেল চালু হলে একজন বিদেশি ক্রেতা চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যেই আনোয়ারায় পৌঁছতে পারবেন। একই সঙ্গে শিল্প-কারখানায় উৎপাদিত পণ্য এই পার থেকে সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে জাহাজে তুলে রপ্তানি করা যাবে। আর আমদানি পণ্যবাহী জাহাজ জেটিতে ভিড়ে সরাসরি কারখানায় নেয়া সম্ভব হবে। এতে আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহন খরচ অনেক কমে আসবে। এসব সুবিধা মাথায় রেখেই দেশের শীর্ষ শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো আনোয়ারায় কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে অনেক আগেই। সাড়ে আট হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে ২০২০ সালের মধ্যে কর্ণফুলীতে সাড়ে তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের টানেলের নির্মাণকাজ শেষ হলেই বদলে যেতে শুরু করবে দৃশ্যপট। এর মাধ্যমে দক্ষিণ চট্টগ্রামের পাশাপাশি কক্সবাজার, বান্দরবান ও টেকনাফের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে উন্মোচিত হবে নতুন দিগন্ত। বর্তমান সরকার তার সুদূরপ্রসারী উন্নয়ন রপ্তানিমুখী জাহাজ নির্মাণশিল্প, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স পণ্যসামগ্রী, ফার্নেস ও সিমেন্ট শিল্পকে সর্বাধিক প্রাধান্য দিয়ে আনোয়ারায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছে। এতে ৩৭১টি শিল্প-কারখানা থাকবে, যার মধ্যে ২৫০টিই দেশিয় জাহাজ নির্মাণ শিল্পের জন্য বরাদ্দ থাকবে। বাংলাদেশ এখন ক্রমশঃ হয়ে উঠছে এক ম্যাজিক অর্থনীতির দেশ। বর্তমানে বিদেশিরা বিনিয়োগের জন্য চট্টগ্রামকে যেভাবে বেছে নিচ্ছেন সেই চাহিদামতো জমি চট্টগ্রাম শহরে নেই, শিল্প কারখানা সম্প্রসারণের সুযোগ নেই। তাই এই অমিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতেই সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কর্ণফুলীর ওপারকে কাজে লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কর্ণফুলী টানেল নির্মিত হলে কর্ণফুলীর দক্ষিণ পার এবং চট্টগ্রাম শহরকে উন্নত বিশ্বের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে। দেশীয় পরিমন্ডলে কর্মসংস্থানে ব্যাপক গতির পাশাপাশি সমৃদ্ধতর হবে সার্বিক অর্থনৈতিক সক্ষমতা। এখন শুধু অপেক্ষা সেই সুন্দর আগামীর, কবে ফুটবে আঁধার শেষে আলো।
বিষয়শ্রেণী: সমসাময়িক
ব্লগটি ৫২১ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০১/০৩/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast