সুন্দর আগামীর স্বপ্নপূরণে
আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার মাধ্যমে সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গঠনের দায় সরকারের একার নয়। এক্ষেত্রে দায়বদ্ধতায় উজ্জীবিত হয়ে রাষ্ট্রের প্রতিটি ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান যদি তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্বপালনে ব্রতী হয় তবে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সোনার বাংলা বিনির্মাণের স্বপ্ন বাস্তব হয়ে উঠবে। আর এই দায়বদ্ধতা থেকেই ‘শিক্ষা ও সামাজিক উদ্যোগের জন্য বৃত্তি’ প্রতিপাদ্য নিয়ে দেশের অন্যতম শীর্ষ বিদ্যাপীঠ প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন ঢাবি'র ৭০০ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান করেছে। প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের মেধাবী, অসচ্ছল ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর প্রত্যেককে বছরে ৩০ হাজার টাকা করে দেয়া হবে। স্নাতক পর্যন্ত প্রতি শিক্ষার্থী চার বছরে মোট এক লাখ ২০ হাজার টাকা বৃত্তি পাবেন। এই উদ্যোগে বৃত্তিপ্রাপ্ত অসচ্ছল ও প্রতিবন্ধী ঐ সকল অদম্য মেধাবীদের শিক্ষাজীবন স্বাচ্ছন্দ্যে ও সুন্দরভাবে শেষ করার সুযোগ সম্প্রসারিত হবে। দেশের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠে আগামীতে তারা সুন্দর স্বদেশ নির্মাণের হাতিয়ারে পরিণত হবে। আমাদের উন্নয়নের পথে অগ্রযাত্রাকে সুসংহত করতে হলে দেশের বিত্তশালী, স্বনামধন্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এ ধরণের উদ্যোগ বাস্তবায়নে আরও অধিকহারে এগিয়ে আসতে হবে। কেননা দেশের অর্থনৈতিকভাবে পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর মেধাবী সন্তানেরা এ ধরণের সুযোগকেই নিয়ামক হিসেবে কাজে লাগিয়ে জীবনের বৃহত্তর ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছার মাধ্যমে নিজেদের আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়। সহায়তার এ ধরণের উদ্যোগই তাদের জন্য হয়ে উঠবে উচ্চাশা বা স্বপ্ন পূরণের প্রথম পদক্ষেপ। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামোর আর্থিক সক্ষমতা এখনো খুব বেশি দৃঢ়তা অর্জন করেনি। সম্পদের সীমাবদ্ধতার কারণেই দেশের উচ্চশিক্ষায় অবকাঠামোগত সুবিধা এখনো অনেক সীমিত। তবে বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার রাষ্ট্রপরিচালনায় আসার পর থেকে শিক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে নেয়া নানা পদক্ষেপে এক্ষেত্রে দৃশ্যমান উন্নতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে দেশের সামাজিক-অর্থনৈতিকভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত অগ্রজ প্রজন্মের সামাজিক সচেতনাপ্রসূত দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি পেলে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত হবেই। কেননা এতে করে একদিকে বর্তমান প্রজন্মের সুশিক্ষা নিশ্চিত হয়ে মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যত অগ্রগতির জন্য বিনিয়োগ হিসেবে পরিগণিত হবে। অন্যদিকে সামাজিক দায়বদ্ধতাপ্রসূত সহায়ক কর্মসূচির সুফল গ্রহণকারীরা আগামীতে নিজেরাও সমাজ ও রাষ্ট্রের সেবার মাধ্যমে অবশ্যই এই দায় শোধ করতে ব্রতী হবে। উল্লেখ্য, বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মন দিয়ে পড়ালেখা করে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে উঠা, আগামী চার বছর বিভিন্ন ছুটিতে নিজ গ্রামে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রমে অংশ নেয়া এবং কর্মজীবনে যোগদানের চার বছর পর কমপক্ষে একজন শিক্ষার্থীর পড়ালেখার দায়িত্ব গ্রহণ করার জন্য অ্যালামনাইদের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়। দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী এই ধরণের সামাজিক দায়বদ্ধতায় উজ্জীবিত নাগরিক কর্মদ্যোগ ক্রমশঃ সম্প্রসারিত হবে, নিশ্চিত হবে আমদের সমৃদ্ধ আগামী – এটাই সকলের প্রত্যাশা।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ২৮/০১/২০১৭শিক্ষার্থীদের জন্য এই অনুদান মহৎপ্রতিদানে পরিণত হোক।