গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় নতুন মাইলফলক
বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার জনরায় নিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর থেকে অতীতের নানা কুশাসনে জাতির বুকে তিল তিল করে জমা জঞ্জালের পাহাড় অপসারণ করে দেশে গণতন্ত্রকে একটি প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তির উপর সুপ্রতিষ্ঠিত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার অন্যতম পূর্বশর্ত স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠান আর এই কাজটি সুচারুরুপে সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজন স্বাধীন ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন। সরকার এবার দেশে একটি নতুন মাত্রার নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ অন্যান্য নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে মহামান্য রাষ্ট্রমতির সাথে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সংলাপ চলছে। এর মধ্য দিয়ে একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনের পথ প্রশস্ত হলো।উল্লেখ্য, আগামী আট ফেব্রুয়ারি বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। নয়া নির্বাচন কমিশন কাদের দিয়ে গঠিত হবে, তার উপর অনেকাংশে নির্ভর করছে দেশের ভবিষ্যত রাজনীতির মেরুকরণ। গণতান্ত্রিক পদ্ধতির প্রতি দায়বদ্ধতায় উজ্জীবিত মহামান্য রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে তাঁর দায়িত্বের অংশ হিসেবে এই উদ্যোগ নিয়েছেন। পূর্বসুরী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে তিনি বিভিন্ন দল থেকে প্রাপ্ত ব্যক্তিদের নাম যাচাই-বাছাই করে সংবিধান অনুযায়ী একটি সার্চ কমিটি গঠন করবেন। আর ভিত্তিতে হবে আগামী নির্বাচন কমিশন। এই কমিশনের অধীনেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ বিভিন্ন স্থানীয় নির্বাচন পরিচালিত হবে। সর্বজনগ্রাহ্য ইসির অধীনে সব রাজনৈতিক দলের স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ যেমন নির্বাচনকে প্রতিযোগিতামূলক করে, ঠিক তেমনি গণতন্ত্র হয়ে উঠে দৃঢ়তর। দূরীভূত হয় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাস, বৈরিতা, হানাহানি এবং গ্রহণ-বর্জনের মতো অপকৌশলের আগ্রাসন। গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচন কমিশনের অনেক ক্ষমতা, তবে প্রয়োগের ক্ষেত্রে দুর্বলতা ও ত্রুটি পরিহার করাই মূখ্য বিবেচ্য। নির্বাচনী ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ অংশীদাররা সচল হলে এবং সহায়ক হিসেবে সহায়তা করলেই সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে কোন অন্তরায় থাকে না। দেশে গণতন্ত্রের উন্নয়নে সরকারের সদিচ্ছা আর মহামান্য রাষ্ট্রপতির উদ্যোগ তখনই সফল হবে, যখন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িকতার প্রশ্নে বিরাজমান দূরত্ব ও বৈপরীত্য ঘুচিয়ে নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্যভাবে করার প্রয়োজনীয় কাজগুলো সম্পন্ন করা হবে। নতুন ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতি দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছেন সংবিধান অনুযায়ী, তবে তিনি কোনভাবেই সংবিধানের বাইরে যেতে পারবেন না। তাঁর দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সংবিধানে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে। সুতরাং যা কিছু হতে হবে, তা সংবিধান অনুসারেই হবে। রাষ্ট্রপতি সব দলের সঙ্গে সংলাপ শেষে সার্বিক বিষয়াদি পর্যালোচনা একটি সর্বজনগ্রাহ্য নির্বাচ কমিশন গঠন করবেন এটাই সকলের প্রত্যাশা। তার এই উদ্যোগে আগামীতে দেশে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য এবং অংশীদারিত্বমূলক নির্বাচন নিশ্চিত হবে। নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী ইসি গঠনে মহামান্য রাষ্ট্রপতির এই কার্যকর উদ্যোগ গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় নতুন মাইলফলক হিসেবেই বিবেচিত হবে।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
আব্দুল হক ২১/১২/২০১৬গঠনমূলক; ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ
-
সোলাইমান ২১/১২/২০১৬হুম ভাল
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ২১/১২/২০১৬ভালো উদ্যোগ। কিন্তু আজিজ-মার্কা সিইসি যেন না হয়।