পাহাড়ের অর্থনীতি বদলে দিয়েছে পার্বত্য চুক্তি
চুক্তি স্বাক্ষরের পর সরকার থেকে ঘোষণা করা হয়েছিলো চুক্তির ফলে পাহাড়ের মানুষ শান্তির সুবাতাস পাবে। পাহাড়ে অর্থনৈতিক ধারা উন্মোচিত হবে। গত ১৮ বছরে ঠিক তেমনটাই দেখা গেছে পাহাড়ে। চুক্তির আগে রাঙামাটি দর্শনে যেখানে পর্যটকরা ভয় পেতো সেখানে এখন পর্যটকরা নির্দ্বিধায় পাহাড়ে বেড়াতে আসছেন। আগে যোগাযোগ অসুবিধার কারণে ব্যবসা বাণিজ্যে তেমন একটা গতি না থাকলেও এখন সে গতি কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কাপ্তাই হ্রদে শান্তিু চুক্তির পূর্বে যেখানে সেখানে মাছ ধরতে না পারলেও এখন জেলেরা পাহাড়ের সব জায়গায় ইচ্ছামত মাছ শিকার করতে পারে। চুক্তির পর কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকার কয়েক গুণ বেড়ে যায়। অর্থনীতিতেও এখন কাপ্তাই হ্রদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। চুক্তির পূর্বে সরকার এই হ্রদ থেকে এক কোটি টাকা রাজস্ব না পেলেও এখন এই হ্রদ থেকে সরকার প্রতিবছর প্রায় দশ কোটি টাকার মতো রাজস্ব আদায় করছে। রাঙামাটির কয়েক হাজার পরিবার এখন কাপ্তাই হ্রদের ওপর নির্ভরশীল। পাহাড়ের জুম চাষ এখন আগের মতো অত না থাকলেও জুমে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। জুমের ফসল আগে বাজারে নিয়ে যেতে বিভিন্ন বিড়ম্বনার শিকার হলেও বর্তমানে সে বিড়ম্বনা অনেকটা লাঘব হয়েছে। সেনাবাহিনী তল্লাসির কারণে তখন জুমের ফসল বেশিরভাগই পথে নষ্ট হয়ে যেতো। কিন্তু বর্তমানে সে তল্লাসি তেমন একটা নেই। তাই জুমের ফসল বাজারে অনায়সে বিক্রি করতে পারছেন চাষিরা। চুক্তির পর যে খাতটি সবচে বেশি উন্নতি লাভ করেছে তা হচ্ছে কাঠ ব্যবসা। চুক্তির পর এ অঞ্চলে কাঠ ব্যবসা কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। পাহাড়ের ভেতরে আগে গাছের বাগান ক্রয় না করলেও এখন হরহামেশায় ব্যবসায়ীরা বাগান ক্রয় করছে। এতে বাগানিরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। প্রতিটি ধাপে অর্থনৈতিক উন্নতির কারণে পাহাড়ের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। চুক্তির আগে পার্বত্যাঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা ছিলো। সাধারণ লোকজন অবাধে চলাফেরা করতে পারতো না। দুপুর ৩টার পর রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যেতো। কিন্তু এখন আর সে দিন নেই। এখন মানুষ স্বাধীনভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য করছে। যোগাযোগ বৃদ্ধির ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যেও গতি এসেছে। শান্তি চুক্তির ফলে এখন পাহাড়ে শান্তির সুবাতাস বইছে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন আগের চেয়েও অনেক বেশি প্রাণ পেয়েছে। ফল উৎপাদন, মৎস্য উৎপাদনসহ আরো অনেক খাতেই উৎপাদন আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেড়েছে।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ০৩/১২/২০১৬শান্তিবাহিনীর দৌরাত্ম্য আরও কমাতে হবে।