ওরাও আমাদের আগামী
বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য বিশেষায়িত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে মাত্র ১৩২টি। কিন্তু বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার দেশের সকল শিশুর শিক্ষার অধিকার ও সম উন্নয়ন সুবিধা নিশ্চিত করার দায়বদ্ধতা থেকে সারা দেশে তাদের জন্য আরও ৬০৬টি স্কুল নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এসব স্কুলে শিক্ষার পাশাপাশি চিকিৎসা, পুনর্বাসনের লক্ষ্যে বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থাসহ অন্যান্য কার্যক্রম থাকবে। বেসরকারিভাবে পরিচালিত হলেও স্কুলগুলোর শিক্ষক, চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেবে সরকার। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এ লক্ষ্যে ‘প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কিত সমন্বিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা’র খসড়া চূড়ান্ত করেছে। এতে স্কুল প্রতিষ্ঠা, শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ, পাঠদান ও পাঠ্যসূচিসহ অন্যান্য বিষয় তদারকির দিকনির্দেশনা আছে। প্রস্তাবিত এসব স্কুল হবে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ পুনর্বাসন কেন্দ্র। ক্লাসের পাঠদান, প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়া, আসবাব এবং টয়লেট হবে প্রতিবন্ধী শিশুদের সহায়ক। শিক্ষার্থীদের চাহিদা ও প্রয়োজন অনুযায়ী নিউরোলজিক্যাল চিকিৎসা, অডিওলজিক্যাল পরীক্ষা এবং হিয়ারিং এইডের (শ্রবণযন্ত্র) ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়াও ফিজিওথেরাপি, স্পিচথেরাপি, অকুপেশনাল থেরাপি, বিহেভিয়ার থেরাপি, মনোবৈজ্ঞানিক নির্দেশনা (কাউন্সিলিং), সহায়ক উপকরণ এবং শরীর চর্চার ব্যবস্থা থাকবে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের সঙ্গে তাদের ভবিষ্যতের কর্মপরিকল্পনা বা বৃত্তি নির্বাচনের জন্য উপযোগী এবং চাহিদাভিত্তিক প্রাক-বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও নিশ্চিত করা হবে। প্রস্তাবিত নীতিমালা অনুযায়ী, প্রতি উপজেলায় একটি, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় তিনটি, পুরাতন জেলা সদরে দুটি, নতুন জেলা সদরে একটি বিশেষ স্কুল নির্মাণ করা হবে। এছাড়া ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন এলাকায় পাঁচটি করে দশটি এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় দুটি স্কুল নির্মিত হবে। শহরাঞ্চলের প্রতিটি স্কুলে কমপক্ষে ৫০ জন শিক্ষার্থী এবং হাওর, চরাঞ্চল, পশ্চাৎপদ এলাকা ও পার্বত্য জেলাতে অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীর বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। বেসরকারিভাবে প্রতিষ্ঠিত এসব স্কুলে শিক্ষক ও প্রশিক্ষককে সহজভাবে, যথাযথ পাঠ পরিকল্পনার মাধ্যমে বাস্তবভিত্তিক পাঠোপকরণ ব্যবহার করতে হবে। প্রতিবন্ধীদের ধরন, সক্ষমতা ও বয়স অনুযায়ী প্রাক-শৈশবকালীন বিকাশমূলক কার্যক্রম (ইসিডি), প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা পর্যন্ত লেখাপড়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে। ১৫ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষার পাশাপাশি পুনর্বাসনেরও ব্যবস্থা থাকতে হবে। ২৫ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ বয়স্ক শিক্ষা ও বিনোদন কার্যক্রম থাকবে।সকলকে মনে রাখতে হবে, প্রতিবন্ধীরাও আমাদের সন্তান – সঠিক শিক্ষা আর প্রশিক্ষণ সক্ষমতা উন্নয়নের মাধ্যমে তাদেরকেও গড়ে তুলবে আমাদের সুন্দর আগামী বিনির্মাণের সফল যোদ্ধা হিসেবে।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
নাইম আহম্মেদ ২৮/১০/২০১৬অবশ্যই...
-
আনিসা নাসরীন ২৫/১০/২০১৬ওরা আমাদের সহযোদ্ধা, বোঝা নয়।
-
সোলাইমান ২৩/১০/২০১৬yes
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ২২/১০/২০১৬সকলের ভাগ্য পরিবর্তিত হোক।