www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

জি-২০ হতে জি-৩০ এবং বাংলাদেশ

পৃথিবীতে বর্তমানে শিল্পোন্নত দেশের সংগঠন হিসেবে পরিচিত জি-২০। ক্রমবর্ধমান শিল্পোন্নয়নের ফলে এ ধরণের দেশের সংখ্যা বৃদ্ধিতে অচিরেই জি-৩০ উদ্ভব হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য অনন্য অর্জন আর সাফল্য এই যে, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যে বাংলাদেশকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল নিরবিচ্ছিন্ন অর্থনৈতিক অগ্রগতির কারণে এই প্রথম মার্কিন নীতি নির্ধারকদের মুখে সেই বাংলাদেশেরই বিশ্বের ‘শীর্ষ ত্রিশে’ ঠাঁই পাওয়ার আশাবাদ উচ্চারিত হয়েছে। প্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক অপশক্তির অব্যাহত ষড়যন্ত্র আর স্থিতিশীলতা বিনষ্টের অপচেষ্টায় মারাত্মক নিরাপত্তাগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সত্ত্বেও বর্তমান সরকারের দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিগত কয়েক বছরে খাদ্য আমদানিকারক থেকে রপ্তানিকারকে পরিণত হয়েছে। লাখ লাখ মানুষের চরম দারিদ্র্য থেকে উত্তরণ ঘটেছে, অর্জিত হয়েছে এমডিজির অনেক লক্ষ্য। মাতৃস্বাস্থ্যের উন্নতির পাশাপাশি ব্যাপকভাবে কমেছে শিশুমৃত্যুর হার। সমৃদ্ধির পথে অব্যাহত অগ্রযাত্রার ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছ থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সাফল্য সম্পর্কে তাই এতো আশাবাদ। ২০১৩ সালেই প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাচ খাদ্য, বেভারেজ, প্রযুক্তি, বস্ত্র, চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রিয়েল স্টেট খাতের বিনিয়োগের দিক থেকে বাংলাদেশকে ‘নেক্সট ইলেভেন ইকনোমি (এনইই)’ দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছিল। তবে মার্কিন মন্ত্রীর শীর্ষ ত্রিশে বাংলাদেশকে কল্পনা করাটা তখনই ইতিবাচক সাফল্যে পরিণত হবে যখন দেশের জনগণের মাথাপিছু আয় সন্তোষজনক পর্যায়ে পৌঁছাবে। কারণ জিডিপি বাড়লেই মাথাপিছু আয় সেভাবে বাড়ে না, তাই শুধু জিডিপি দিয়ে কোনে দেশের জনগণের আর্থিক সচ্ছলতা বুঝা যায় না। যেমন চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হলেও জি-২০-র মাথাপিছু আয়ের তালিকায় চীনের অবস্থান ১৮ (২০১৪)। দেশের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে হলে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সাথে সাথে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাকে লক্ষ্য ও গন্তব্য স্থির করে এটা অর্জনের চেষ্টা করতে হবে। এটা লক্ষণীয়, বিশ্বকে বর্তমানে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে তাদের মধ্যে সুবিধাবাদী ও কৌশলগত মৈত্রীর সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রবণতা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌঁছেছে। তাই আগে উন্নয়ন না গণতন্ত্র, সেই বিতর্কে না গিয়ে আমাদের নিশ্চিত করতে হবে উন্নত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামো বিনির্মাণের মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির অর্জন। কারণ গণতন্ত্র আর সমৃদ্ধির যুগলবন্দি সহাবস্থানই একাত্তরের লাখো শহীদের স্বপ্ন, মহান মুক্তিযুদ্ধের অনির্বাণ চেতনা।
বিষয়শ্রেণী: সমসাময়িক
ব্লগটি ৫৭৬ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২০/১০/২০১৬

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast