চলছে ভরা মৌসুম পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ
ইলিশ বাংলাদেশের সবচেয়ে সুস্বাদু মাছ। চলছে ইলিশের ভরা মৌসুম। গত ১০ বছরের বাংলাদেশে এবার সবচেয়ে বেশি ইলিশ ধরা পড়েছে। প্রতিদিন বঙ্গোপসাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে। জেলেদের মুখে হাসি ফুটছে। আর এই সময়টাতে সামর্থ্য অনুসারে সাইজভেদে ক্রেতারা কিনছেন ইলিশ মাছ। ইলিশ খুবই সুস্বাদু মাছ হওয়ায় দেশি-বিদেশি সবার কাছেই এত প্রিয়। কিন্তু সব ইলিশের স্বাদ বা ঘ্রাণ কিন্তু একই রকম হয় না। এছাড়া আসল ইলিশেও রয়েছে সাইজ ও স্বাদ অনুযায়ী রয়েছে রকমভেদ। সাগরের ইলিশের চেয়ে নদীর ইলিশের স্বাদ বেশি। যেকোনও ক্রেতার কাছে সব চেয়ে বেশি আকর্ষণীয় পদ্মার ইলিশ। তারপরও দেশের অন্য যেকোনও নদীর ইলিশের স্বাদ সাগরের ইলিশের তুলনায় বেশি। ইলিশ মাছ যত বেশি মিঠা পানির নদীতে দৌড়ায়, তত বেশি ইলিশের শরীর থেকে লবণাক্ততা দূর হয়। তাতেই স্বাদ বাড়ে। এ কারণে ব্যতিক্রম চট্টগ্রাম বা টেকনাফের ইলিশ সাগরের লবণ পানি থেকেই ধরা হয় বলে এসব মাছের স্বাদ কম থাকে।দেশের বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন নদীতে ইলিশ ধরা পড়লেও বিশেষ করে চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর হচ্ছে ইলিশ অধ্যুষিত জেলা। এই জেলাগুলোর আশপাশের নদীগুলোকে কেন্দ্র করেই গড়ে তালা হয়েছে ইলিশের অভয়ারণ্য। সাগর থেকে ইলিশের ঝাঁক এইসব জেলার আশপাশের নদীগুলোয় এসেই ডিম ছাড়ে। পদ্মাসহ চাঁদপুরের মেঘনা, ভোলার তেতুলিয়া, বরিশালের কীর্তনখোলা, পটুয়াখালীর পায়রা, আগুন মুখা, পিরোজপুরের বলেশ্বর ও সন্ধ্যা নদীর মাছ বেশি সুস্বাদু। ১০ বছর আগেও দেশের মাত্র ২১টি উপজেলার নদীতে ইলিশ পাওয়া যেত। এখন ইলিশ ছড়িয়ে পড়েছে দেশের ১২৫টি উপজেলার বিভিন্ন নদীতে।একটি মা-ইলিশের পেট থেকে দুই ফালি ডিম থেকে সর্বনিম্ন দেড় লাখ এবং সর্বোচ্চ ২৩ লাখ পর্যন্ত ডিম দেয়। দেশের মোট মৎস্য উৎপাদনের ১২ শতাংশ আসে জাতীয় ইলিশ থেকে, যার অর্থমূল্য আনুমানিক সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা। জিডিপিতে ইলিশের অবদান ১ দশমিক ১৫ শতাংশ। প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ ইলিশ আহরণে সরাসরি নিয়োজিত এবং ২০ থেকে ২৫ লাখ মানুষ ইলিশের পরিবহন, বিক্রয়, জাল ও নৌকা তৈরি, বরফ উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণসহ সংশ্লিষ্ট নানা কাজে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত।বিশ্বের মোট ইলিশের ৬০ শতাংশই বাংলাদেশে উৎপাদন হয়। ইলিশ উৎপাদনের সফলতা ধরে রাখার জন্য দেশের ১৫টি জেলায় ২ লাখ ২৪ হাজার ১০২টি জেলে পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা দিচ্ছে সরকার। এছাড়া যে সময় ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ থাকে সেই সময় জেলেদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাসহ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে জাটকা মৌসুমে মাছ ধরা অনেক কমে যায়। ফলে গত অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদনও যথেষ্ট বেড়েছে। সরকারের এই ধরনের পদক্ষেপের ফলে দেশে ইলিশ উৎপাদন দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
গোপেশ দে ৩০/০৯/২০১৬তথ্যবহুল লেখা
-
রোজারিও ৩০/০৯/২০১৬মা ইলিশের যত্ন ,ডিম ফোটা ,ঝাটকা সংরক্ষণ ও পরিচর্যা ইত্যাদি পর্যায়ে এখনো অনেক সমস্যা অনিয়ম রয়েছে ।সেগুলো তুলে ধরুন ।
-
আব্দুল হক ২৯/০৯/২০১৬লাভ ইউ
-
সোলাইমান ২৮/০৯/২০১৬সরকার যদি আরও কঠোর ভাবে অবারধ বা জাটকা ইলিশ ধরতে না দেয়, তাহলে জেলেরা সবাই হাসি খুসি মুখে আমাদের সুন্দর বড় ইলিশ মাছ উপহার দিতে পাবে আর তাদের অবারধের সময় তাদের ভাতার ব্যবস্থা করতে হবে।তাহলে আমরা সঠিক ভাবে এবং বেশি পরিমার ইলিশ মাছ পাব।
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ২৮/০৯/২০১৬সরকারের নজরদারি আরও বাড়াতে হবে। আর জাটকাশিকারীদের নির্মূল করতে হবে।