আই এস বাংলাদেশে কোনদিনও অবস্থান পাবেনা
এটি দৃঢ়ভাবে বলা যায় যে, বাংলাদেশ-মিয়ানমার ও ভারতে আইএস ঘাঁটি গাড়ার চেষ্টা করলেও বাংলাদেশে তাদের কথিত খেলাফত প্রতিষ্ঠার আন্দোলন সফল হবে না। এর কারণ বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান ও ভূমিবিন্যাস সশস্ত্র বিদ্রোহীদের জন্য অনুকূল নয়। বড় ধরনের সশস্ত্র তৎপরতা চালানোর জন্য বসতিহীন, জনমানবহীন বিশাল ভূমি এখানে নেই। কিছু পাহাড় ও জঙ্গল থাকলেও সেখানেও জনবসতি আছে। ফলে লোকচক্ষুর আড়ালে থেকে যে ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রয়োজন, সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর পক্ষে তা কঠিন। যে কারণে পাহাড়ে, দুর্গম চরে বা জঙ্গল থেকে অনেক জঙ্গিতে আটক করা হয়েছে এবং প্রায়ই এসব জায়গায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান চলে। কোনও বিদেশি নাগরিক যেমন আইএস বা এরকম জঙ্গি গোষ্ঠীর বিদেশি প্রশিক্ষকের বাংলাদেশে লুকিয়ে থাকা বা জনগণের সঙ্গে মিশে যাওয়া সম্ভব নয়। এত বেশি ঘনবসতিপূর্ণ দেশে যেকোনও অপরিচিত লোকই দ্রুত চিহ্নিত হয়ে যাবে।বাংলাদেশের প্রায় ৯০ শতাংশ সুন্নি মুসলমান হলেও তারা কোনও ধরনের কট্টরপন্থার সমর্থন করে না। একটা গোষ্ঠী ইসলামিক রাজনীতির পক্ষে বা ইসলামি অনুশাসনের পক্ষে সমর্থন দিলেও জঙ্গিগোষ্ঠী বা সশস্ত্র সংগঠনের পক্ষে দাঁড়াবে বা ন্যূনতম সমর্থন দেবে-এটি ভাবার কোনও অবকাশ নেই।স্থানীয় রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীর প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সমর্থন ছাড়া এখানে আইএস তাদের মতাদর্শ বিস্তৃত করতে পারবে না। জেএমবি, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম বা এরকম আরও যত সংগঠনই থাকুক না কেন, তারা যেহেতু মূলধারার রাজনৈতিক শক্তি নয়- সুতরাং এখানে আইএস-এর সাংগঠনিক ভিত্তি তৈরি করা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। এমনকি জাময়াতে ইসলামীও যদি আইএসকে সমর্থন দেয়, তাতেও সম্ভব নয়।স্থানীয় সশস্ত্র বাহিনী বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মদদ ছাড়াও আইএস তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে পারবে না। প্রতিবেশী কোনও দেশের সহায়তা ও সমর্থন ছাড়া সশস্ত্র সংগঠন শুধু নিজেদের ওপর ভরসা করে বড় ধরনের তৎপরতা চালাতে পারে না। বাংলাদেশে এখন যেভাবে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো দমিত ও কোনঠাসা হয়ে আছে, ভবিষ্যতেও নতুন-পুরনো যারাই হোক না কেন, তাদের জন্য পরিস্থিতি একই রকম হবে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এবং পরীক্ষিত বন্ধু হিসেবে ভারত এই ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলেই বারবার আশ্বস্ত করেছে। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আঞ্চলিক ঐক্যও বাড়ছে।ঐক্য বেড়েছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল, সাধারণ মানুষ এবং বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মধ্যে। আইএস-এর মতো সংগঠনের বিকাশের পেছনে রাষ্ট্রে যে ধরনের বিক্ষুব্ধ পরিস্থিতি বা যুদ্ধপরিস্থিতি বিরাজমান থাকার কথা, বাংলাদেশে তা অনুপস্থিত এবং শিগগির সেরকম পরিস্থিতি তৈরির কোনও লক্ষণও নেই। সুতরাং আইএস-এর পক্ষে এখানে সুবিধা করা কঠিন। দেখা যাবে, আইএস সেসব দেশেই শক্তিশালী, যেখানের রাজনৈতিক দল, জনসাধারণ এবং সশস্ত্র বাহিনীর একটি অংশ তাদের পক্ষে রয়েছে। বাংলাদেশের বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন। এখানে বিচ্ছিন্নভাবে দুয়েকটি হামলা চালানো সম্ভব হলেও তথাকথিত খেলাফত আন্দোলন বা জিহাদ এ দেশের জনগণ মেনে নেবে না।দুয়েকটি কট্টরপন্থি রাজনৈতিক দল আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গে যোগাযাগ রাখছে বলে শোনা গেলেও তারা এখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নজরদারি আছে বলেই আমরা জানি। সুতরাং এই নজরদারি এবং জঙ্গিবিরোধী অভিযান আরও ব্যাপক হলে দেশি হোক বা বিদেশি হোক-কোনও জঙ্গি সংগঠনই এখানে বড় ধরনের তৎপরতা চালানোর সাহস দেখাবে না।
চট্টগ্রাম বন্দরের পাশেই হচ্ছে তিনগুণ
চট্টগ্রাম বন্দরের পাশেই হচ্ছে তিনগুণ
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
স্বপ্নময় স্বপন ২৫/০৮/২০১৬মুগ্ধতার পরশ রেখে গেলাম!
-
পরশ ২৪/০৮/২০১৬সমসাময়িকি লেখা খুবই সুন্দর