আবেগ জড়ানো ভালবাসা
সে রাতের পরে
মোমিনুল হক আরাফাত
সে রাতে রিটা বিদায় নিয়েছিল জয়ের জীবন থেকে আর জয় বিদায় নিল মানব সমাজ থেকে। নিজেকে ভুলে গিয়ে আদর্শকে ত্যাগ দিয়ে জয় হয়ে উঠে, জয় থেকে গুরো। তার জীবন নিয়ে এই গল্পের সৃষ্টি।
দু-তলা বাড়িটা পুলিশ ঘিরে রাখল। পুলিশ মাইকিং করে বলল, জয় তুমি আত্নসমপন করো। আমরা তোমার ভালো চায়। পুলিশ অফিস্যার রুদ্র এই অপরেশনে নিজেও উপস্থিত ছিল। যাই হোক! পুলিশ জয়কে বার-বার সাবধান করে দিয়েছিল। সে চেয়ে ছিল জয়কে গুরো থেকে জয়ে পরিণত করতে। তবে জয় তো “সে রাতে” মারা গিয়ে গুরো নামে নতুন জন্ম হয়। এখন যত অপরাধ আছে সব করে। আর নেশা করে একে বারে দু-তিন দিন ঘুমিয়ে থাকে মাঝে-মধ্যে আদির সাথে দেখো হলে সুখ দুঃখের কথা হয়।
পুলিশরা জয়ের দরজায় এসে পিস্তল ধরে বলল, জয় বেরিয়ে আসো। না হয় গুলি করতে বাদ্ধ হবো। অবশ্য পুলিশরাও জানত জয় কিন্তু গুলি-ঠুলি এসবে ভয় পায় না। আরে মৃত্যু মানুষকে কীভাবে মারবে? জয় তো সে রাতে মরে গিয়েছিল।
পুলিশ অফিস্যার দরাজায় আঘাত করে বলতে লাগল জয় বেরিয়ে এসো; না হয় গুলি করতে বাদ্ধ হচ্ছি-কথা শেষ না হতে দু চারটা শব্দ হলো গুলির, সেই সাথে পুলিশ তার বাহিনী নিয়ে দৌঁড়ে এসে দরজা ভেঙে ঘরে ডুকল। আর দেখতে পেল জয়ের রক্তাত্ত দেহটি নিচে পড়ে আছে। ডান হাতটা প্রসারিত করে রাখল হাতে তার প্রিয় পিস্তলটা এখনো আছে। যে পিস্তলের ৬টি বুলেট একটি মাথায় ও বাকি পাঁচটা বুকের মধ্যে ডুকিয়ে চির নিদ্রায় ঘুমিয়ে পড়লো। বাম হাতটা বুকের বাম পাশে রাখা আছে হাতের নিচে একটি ছবি যেটা বরর্তমানে জয়ের হৃদয়ের উপর স্থান নিল। পুলিশ অফিসার ছবিটা তুলে নিল। ছবির মধ্যে একটি প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলা দেখা যাচ্ছে। তবে ছবিটা স্পষ্ট ভাবে বোঝা যাচ্ছে না; কারণ জয়ের বুকের রক্ত ছবির বিভিন্ন স্থান দখল করে নিল। পুলিশ অফিসার হতাস গলায় বলল, লাশ দাপনের ব্যবস্তা করো। তাদের মধ্যে থেকে একজন বলল, গুরোর তো কোনো ঠিকানা আমাদের জানা নাই। লাশ কেথায় দাপন হবে? অফিস্যার বলল, আদি নামের এক বন্ধু এখনো অবিশিষ্ট আছে জয়ের জীবনে আর কেউ নাই। আদিকে খবর দেওয়ার প্রয়োজন আছে একবার শেষ বিদায় জানাতে আসোক। আর আমি গুরোর লাশ দাপন করব। পুলিশ অফিস্যার পিছনে ফিরে দেখতে পেল আদি ইতি মধ্যে চলে আসল সাথে অফিস্যারের মেয়ে ইতিও আছে।
আদিঃ শেষ করে দিলেন তো-আর কি চান? আমাকে শেষ করবেন? করেন-গুলি করেন।
অফিস্যার চুপ করে রইল।
ইতি বলল, বাবা! আমি জানতাম এমন কিছু হবে। তাই শাদা শাড়ি পড়ে চলে আসলাম। জয়কে সবাই চিনতে ভুল করেছিল তবে আমি নয়। এমন কি রিটা মেমও জয়কে চিনতে পারে নাই। যদি চিনতো কখনো জয়কে ছেড়ে যেতো না। বাবা জয় এমন ছিল সে নিজে যা বুঝে তা করে ছাড়বে কারো বারণ সে শুনে না। আত্মসমপন করবে এমন ছেলে জয় নয়। একদিন জয় একটি কথা বলেছিল। তখন আমি কলেজ থেকে ফিরতেছি। জয়কে দেখতে পেলাম রাস্তার পাশে একটি দোকানে বসে আসে আমি তার দিকে অগ্রসর হলাম। জয় আমাকে দেখে দোকান থেকে বেরিয়ে এসে বলল-
জয়ঃ কলেজ থেকে ফিরছো?
ইতিঃ হ্যাঁ ফিরতেছি। বেশ কিছু দিন তোমায় দেখতেছি না। কোথায় ছিলা এখোনো কি খুন খারাপি নেশা-টেশা করো?
জয়ঃ মাথাটা নিচু করে বলল, এসব ছাড়া আর কিছু অবশিষ্ট রইল না। আমার জীবন থেকে বাবা-মা ভাই বোন এমন কি প্রাণ প্রিয় গ্রামটাও ত্যাগ দিলাম। তবু তো মেড্যামকে ভুলতে পারলাম না। মেড্যাম আমাকে পাগল করেদিয়ে গেছে।
আমি যেদিকে যায় শুধু মেড্যামকে দেখতে পায়। বাতাসের মধ্যে মেড্যামের গন্ধ পায়। তাই নেশা করে পড়ে থাকলে তো মেড্যাম আমায় আর জ্বালাতন করতে পারে না।
ইতিঃ পাগলামি ছাড়ো। এখনো সময় আছে ভাল হয়ে যাও-বাবার কাছে বার-বার ছোট হতে হচ্ছে তোমার জন্য। কখন ইনকাউন্টার করে দে হিসাব নাই।
জয়ঃ পারবে না।
ইতিঃ হ্যাঁ কি করে পারবে? পুলিশ অফিস্যারের মেয়ে তোমার হাতের মুটুয় আমার বাবা তোমায় ইনকাউন্টার করার আগে তুমি আমায় করে দিবে তাই না?
জয়ঃ ভুল দারণা এইটা তোমার। আমি অতটা পাষাণ না।
ইতিঃ তাহলে কি তুমি আমায় ভালবাসা?
জয়ঃ না। যত ভালবাসা ছিল সব রিটা মেড্যামকে দিয়েদিলাম। আসলে দেখ! সন্ত্রাসী ছাড়া তো আর কোন পথ আমার নাই। এই জগতে মানবতা, ভালবাসা, এগুলো আসহায়, এজগতে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে পাওয়ার লাগে, আর এই পাওয়ার হচ্ছে টাকা। টাকা ছাড়া দুনিয়া অচল তাই মেড্যাম আমার হলো না। মেড্যামকে পওয়ার মতো কোনো য্যোগ্যতা আমার ছিল না। তাই সে রাতে মেড্যামকে বিদায় দিয়ে জয় থেক গুরো পরিণত হলাম। আমি তো পাপী আমার এই পাপের প্রায়শ্চিত আমি নিজের হাতে করব, তোমার অফিস্যার বাবাকে গিয়ে বলো। আমাকে ইনকাউন্টার করার দরকার হবে না।
ইতিঃ বেশ দারুণ অনুভূতি হচ্ছে, তাহলে তুমি ভালো হচ্ছে যাচ্ছো?
জয়ঃ না-ভাল হচ্ছি না। তোমারা আমাকে ইনকাউন্টার করার সুযোগ পাবে না। জয় পিছন থেকে পিস্তলটা বের করে হাতে নিয়ে বলল, এই পিস্তলে ছয়টি বুলেট বর্তি আছে। যেদিন পেরার সময় আসবে; মানে তোমার বাবা আমাকে শেষ করেতে আসবে সেদিন এই পিস্তলের ছয়টি বুলেট গুরোর মধ্যে প্রবেশ করবে।
আজ সেদিন আসল।
জয়কে দাপন সম্পর্ণ করে আদি আর পুলিশ অফিস্যার রৃুদ্র চলে আসতেছে।
পুলিশ অফিস্যার আদির দিকে তাকিয়ে বলল, জয় আমারও খুব কাছের লোক হয়তো এ কথা জয়ও জানতো না। জয়ের বাবা আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তার অনুরোধে আমি জয়ের পিছু নিয়েছিলাম। চেয়েছিলাম গুরো থেকে জয়ে পরিণত করতে তবে-আমি হেরে গেছি।
এসব কথা কিন্তু আদির কানে যাচ্ছে না আদি স্তম্ভের মতো দাঁড়িয়ে আছে আর দু চোখে বেয়ে অশ্রু ঝড়তেছে।
আদি দেখতে পাচ্ছে সেদিন গুলে যেদিন জয় আমেরিকা থেকে এসে আদির বাসায় স্থান নিয়ে ছিল।
জয়ের পরিবার আমেরিকা বাস করে জয়ও এতোদিন আমেরিকা ছিল। পল্লীর প্রতি জয়ের গভীর আনুরাগের কারণে দেশে ঘুরতে এসেছিল আর ফিরে যায় নি। এক প্রর্যায়ে পরিবারের সাথেও সকল বাঁধন ছিন্ন করল জয়।
সকাল প্রায় নয়টা পেরিয়ে গেছে আদি তাড়া-হুড়া করে নাস্তা করে কলেজের উদ্দেশ্যে বেরুচ্ছে এমন সময় দেখতে পেল জলজ্যন্ত জয় তার সামনে এসে উপস্থিত আদিতো হতভাগ।
আদিঃ আরো গুরো তুই? আমেরিকা থেকে কখন আসলি? কিছু না জানিয়ে হঠাৎ দেশে?
জয়ঃ শুন! গুরো বলবি না আর কখনো। নামটার মাঝে সন্ত্রসের গন্ধ পায়। দেশের জন্য মন ছটপট করতেছে তাই চলে আসলাম। এইবার খালি পায়ে বাংলার মাট-ঘাটে ঘুরে বেড়াব। আর নিজেকে শান্ত করে নিব। তুই বুঝি কোথায় যাচ্ছিস?
আদিঃ ব্যাগটা রেখে বলল, আরে না! চল ভিতরে।
জয়ঃ আমাকে ফাঁকি দেওয়ার অভ্যাস এখনো যায় নি তোর। দেখতে পাচ্ছি ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে ছিলি।
আদিঃ হ্যাঁ কলেজে যেতে চেয়েছিলাম। এখন আর যাব না। তোকে পেয়েছি কাছে, এসুযোগ হারাবো না। তুই তো বেশি দিন দেশে থাকবি না।
জয়ঃ কি করব দোস্ত! বাবার ব্যবসা সামলাতে হয় আমেরিকা। তাই বেশি দিন সময় দিতে পারব না। সাপ্তাখানেক থাকব। তবে চল আমিও যাব তোর কলেজে।
আদিঃ চল।
দু জন কলেজে এসে উপস্থিত আদি সবাইকে পরিচয় করে দিচ্ছে এই হলো তার প্রাণ প্রিয় জয়; যার জন্য সে নিজের তাজা প্রাণটাও দিয়ে দিতে পারে।
এদিকে কলেজে আসতেছে তাদের নতুন মেড্যাম “রিটা” জয় দেয়ালের সাথে নিজের পিট লাগিয়ে হা করে তাকিয়ে আছে। আদি জয়ের দিকে তাকিয়ে চমকে উঠে বলল, দোস! তোর কি শরীর খারাপ হয়েছে? দু হাত দিয়ে জয়েকে নেড়ে ছেড়ে দেখল।
জয় একটু হেসে বলল, স্বাভাবিক আছি তবে অস্বাভাবিক হতে মন চাচ্ছে। জয় ম্যাডামের দিকে তাকিয়ে বলল, এইটা কে?
আদিঃ আহ্ঃ তোকে তো বলা হয় নি। ওহচ্ছে আমাদের মেড্যাম নতুন জয়েন হয়েছে। চল পরিচয় করে দি।
আদিঃ মেম! ওনি হচ্ছে আমার দোস্ত। আপনার প্রশংসা করল রূপের। সে আমেরিকা থাকে। কিছু দিনের জন্য ঘুরতে আসছে। (গলির মধ্যে হাঁটতে-হাঁটতে তাদের মধ্যে এসব কথা হচ্ছে।) মেড্যাম, বলল, তাই নাকি। সময় করে ওকে নিয়ে আমার বাসায় এসো।
সন্ধ্যা পেরিয়ে গেল। জয় হাত থেকে সিগেরটটা পেলে দিয়ে, গিটারটা হাতে নিল। আর আনমনে বাজাচ্ছে।
আদি তার দিকে তাকিয়ে বলল, কী’রে জয়? তোর কি মন খারাপ?
জয়ঃ না দোস্ত। আজ অনেক সুখী। জীবনে কখনো এত সুখ পায় নি।
আদিঃ তাই! কি হয়েছে খুলে বল?
জয়ঃ আসেল তোদের ম্যাডাম আমার মন কেঁড়ে নিল। আমি কিন্তু তার প্রেমে পড়ে গেছি।
আদি কিছু একটা বলতে চেয়ে থেমে গেলে। (আদি বলতে চেয়েছিল মেড্যাম বিবাহিত। তবে এই কথা শুনলে জয় কষ্ট পাবে। জয়ের কষ্ট মেনে নেওয়ার মতো শক্তি আদির ছিল না। আর জয় তো কয়েক দিনের জন্য দেশে ঘুরতে আসছে। আমেরিকা চলে গেলে সব ভুলে যাবে এইটা স্বাভাবিক তাই ম্যাডামের বিষয়টা ক্লিয়ার করে না বললেও সমস্যা নাই।)
জয় আদিকে লক্ষ্য করে বলল, কি হলো তোর চুপ হয়ে গেলি যে। আদি নড়ে চড়ে বসে বলল, না , কিছু হয় নি আমার। তুই তো দেশে বেশি দিন নাই। এসবে জড়ানো কি ঠিক? জয় জড়ানোর বাকি কি আছে? আমি তো মরে যাবো যদি না হয় আর কি-রিটা মেড্যাম যদি আমার না হয়। আদি বসা থেকে উঠে দৌঁড়ে এসে জয়কে বুকে জড়িয়ে ধরে বলল, আর কখনো না। এমন কথা কখনো বলবি না শালা। সব শেষ করি দিব আমার জয়ের যদি কিছু হয়।
জয়ঃ শান্তহ দোস্ত । আমার কিছু হবে না।
সকালে ঘুম থেকে উঠে দু-জন কলেজে গেল। কিন্তু মেড্যাম সেদিন কলেজে আসে নাই। আদি জয়ের মনের ভাব বুঝে মেড্যামকে কল দিয়ে বলল, জয় তার সাথে দেখা করতে চায়। মেড্যাম একটি পার্কের ঠিকানা দিয়ে বলল, জয়কে নিয়ে সেখানে চলে আসতে। আদি আর জয় সেখানে চলে আসল। এভাবে বেশ কিছু দিন চলে গেল। প্রতিদিন মেড্যাম এর সাথে কথা হয় দেখা হয়। জয় আমেরিকা যাওয়ার কথা ভুলে গিয়েছিল বাবা বার-বার কল দিয়ে বলতেছে কি হলো? কোনো সমস্যা হচ্ছে নাকি বাবা কি দেশে আসবে জয়কে সাহায্য করতে? এসব আর কি।
সম্পর্ক তাদের বেশ ভালো যাচ্ছে।
আদির একি সাথে পড়তো ইতি। ইতিও জয়কে বেশ পছন্দ করতো তবে যখন জানতে পারল জয় মেড্যামের প্রেমে হুবুডুডু খাচ্ছে তখন ইতি জয়কে আর বলে নাই। তবে আদি ঠিকেই জানত।
জয়ঃ আদিকে লক্ষ্য করে বলল, দেখ, বাবা একা ব্যবসা সামলাতে পারতেছে না। আমার চলে যাওয়া দরকার।
আদিঃ ঠিক তো! কবে যাচ্ছিস?
জয়ঃ বিয়ে করে।
আদিঃ মানে?
জয়ঃ রিটা মেড্যামকে বিয়ে করে আমেরিকা নিয়ে যাব। না, তা হবে না। আমরা দু জন দেশে থাকবো আর বাংলার মাট-ঘাটে দু জনে হাতে হাত রেখে হাঁটবো। দেশের বাইরে যাবো না।
আদিঃ জয় (এইটুকু বলে থেমে গেল)
জয়ঃ কিছু বলবি?
আদিঃ মেড্যামকে তো জানাতে হবে বিয়ের কথা সেযদি বিয়েতে রাজি না হয়-মানে সে যদি তোকে শুধু বন্ধু ভাবে।
কথা শেষ না হতে জয় আদির মুখে হাত রেখে বলল, দোস্ত এই কথা বলিছ না। আমি বাঁচবো না।
তারপর দু জন মেড্যাম এর বাসায় এসে উপস্থিত ।
আদিঃ জয়কে বলল, তুই একটু বস। আমি একটু মেড্যাম এর সাথে দেখা করে আসি। আদি যতটা সম্ভব আন্যায় আবদার করে যাচ্ছে বার-বার বলছে জয়কে বিয়ে করতে। আসলে তা তো কখনো সম্ভব ছিল না। তবে আদি জয়কে খুব ভালকরে জানে।
আদি ফিরে এসে বলল, চল জয়, আমরা চলে যায়।
জয়ঃ মানে? রিটা কই? আমি তো এখনো তার সাথে দেখাও করতে পারি নাই।
আদিঃ চল দোস্ত। এমন সময় বাসার দরজায় বেল বেজে উঠলো। একটু পর দেখে গেল একটি বালিকা বাড়িতে ডুকল।
জয়ঃ আদিকে জিঞ্জাসা করল, কে এইটা?
আদি জয়ের হাত ধরে বলল, চল।
জয়ঃ দোস্ত সব সময় পাজলামি করিস কেনো। দেখ না কত সন্দুর বেবিটা। এই বেবিটা কার।
আদি শক্ত করে জয়েরে শার্টের কলার দু হাতে ধরে গম্ভীর কণ্ঠে বলল, এইটা হচ্ছে মেড্যামের মেয়ে। মেড্যাম বিবাহিত।
তারপর কি হয়েছিল আমার জানা নাই। আকাশ ভেঙ্গে কি মাটিতে পড়েছিল? নাকি মাটি গুলো সব আকাশে উঠে গিয়েছিল?
সেদিন থেকে জয় হয়ে যায় গুরো। ছেড়ে দে রিটাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা। চলে যায় আদিকে ছেড়ে। নেশা করে রাস্তার পাশে পড়ে থাকে। এক সময় জয় তার অতীত ভুলে হয়ে যায় গুরো। হয়ে উঠে আন্ডারওয়াল্ডের ডন।
রদ্রের কানে শব্দ আসল গুলির। পিছন পিরে দেখতে পেল। আদির হাতটা ডলে পড়তেছে, মাথার কাছ থেকে পিস্তলটা একটু পরে মাটিতে পড়ে যায়। আদিও বিদায় জানাল। রুদ্র বাসায় ফিরে দেখতে পেল ইতির শাদা শাড়ির আঁচল পায়ের নিচে জুলতেছে আর ইতির গলায় দঁড়ি। ইতিও বিদায় নিল। তবে জানি না রিটা মেম, কতটা সুখে আছে স্বামী সন্তান নিয়ে?
এভাবে তিনটা প্রাণ চলে যাওয়ার গল্প লিখে নিজেও ভেঙ্গে পড়লাম।। দোয়া করবেন তাই যেন কখনো বাস্তবে নাহয়।
১৭ চৈত্র ১৪২৩ বাংলা
৩১-৩-২০১৭ ইংরেজি
মোমিনুল হক আরাফাত
সে রাতে রিটা বিদায় নিয়েছিল জয়ের জীবন থেকে আর জয় বিদায় নিল মানব সমাজ থেকে। নিজেকে ভুলে গিয়ে আদর্শকে ত্যাগ দিয়ে জয় হয়ে উঠে, জয় থেকে গুরো। তার জীবন নিয়ে এই গল্পের সৃষ্টি।
দু-তলা বাড়িটা পুলিশ ঘিরে রাখল। পুলিশ মাইকিং করে বলল, জয় তুমি আত্নসমপন করো। আমরা তোমার ভালো চায়। পুলিশ অফিস্যার রুদ্র এই অপরেশনে নিজেও উপস্থিত ছিল। যাই হোক! পুলিশ জয়কে বার-বার সাবধান করে দিয়েছিল। সে চেয়ে ছিল জয়কে গুরো থেকে জয়ে পরিণত করতে। তবে জয় তো “সে রাতে” মারা গিয়ে গুরো নামে নতুন জন্ম হয়। এখন যত অপরাধ আছে সব করে। আর নেশা করে একে বারে দু-তিন দিন ঘুমিয়ে থাকে মাঝে-মধ্যে আদির সাথে দেখো হলে সুখ দুঃখের কথা হয়।
পুলিশরা জয়ের দরজায় এসে পিস্তল ধরে বলল, জয় বেরিয়ে আসো। না হয় গুলি করতে বাদ্ধ হবো। অবশ্য পুলিশরাও জানত জয় কিন্তু গুলি-ঠুলি এসবে ভয় পায় না। আরে মৃত্যু মানুষকে কীভাবে মারবে? জয় তো সে রাতে মরে গিয়েছিল।
পুলিশ অফিস্যার দরাজায় আঘাত করে বলতে লাগল জয় বেরিয়ে এসো; না হয় গুলি করতে বাদ্ধ হচ্ছি-কথা শেষ না হতে দু চারটা শব্দ হলো গুলির, সেই সাথে পুলিশ তার বাহিনী নিয়ে দৌঁড়ে এসে দরজা ভেঙে ঘরে ডুকল। আর দেখতে পেল জয়ের রক্তাত্ত দেহটি নিচে পড়ে আছে। ডান হাতটা প্রসারিত করে রাখল হাতে তার প্রিয় পিস্তলটা এখনো আছে। যে পিস্তলের ৬টি বুলেট একটি মাথায় ও বাকি পাঁচটা বুকের মধ্যে ডুকিয়ে চির নিদ্রায় ঘুমিয়ে পড়লো। বাম হাতটা বুকের বাম পাশে রাখা আছে হাতের নিচে একটি ছবি যেটা বরর্তমানে জয়ের হৃদয়ের উপর স্থান নিল। পুলিশ অফিসার ছবিটা তুলে নিল। ছবির মধ্যে একটি প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলা দেখা যাচ্ছে। তবে ছবিটা স্পষ্ট ভাবে বোঝা যাচ্ছে না; কারণ জয়ের বুকের রক্ত ছবির বিভিন্ন স্থান দখল করে নিল। পুলিশ অফিসার হতাস গলায় বলল, লাশ দাপনের ব্যবস্তা করো। তাদের মধ্যে থেকে একজন বলল, গুরোর তো কোনো ঠিকানা আমাদের জানা নাই। লাশ কেথায় দাপন হবে? অফিস্যার বলল, আদি নামের এক বন্ধু এখনো অবিশিষ্ট আছে জয়ের জীবনে আর কেউ নাই। আদিকে খবর দেওয়ার প্রয়োজন আছে একবার শেষ বিদায় জানাতে আসোক। আর আমি গুরোর লাশ দাপন করব। পুলিশ অফিস্যার পিছনে ফিরে দেখতে পেল আদি ইতি মধ্যে চলে আসল সাথে অফিস্যারের মেয়ে ইতিও আছে।
আদিঃ শেষ করে দিলেন তো-আর কি চান? আমাকে শেষ করবেন? করেন-গুলি করেন।
অফিস্যার চুপ করে রইল।
ইতি বলল, বাবা! আমি জানতাম এমন কিছু হবে। তাই শাদা শাড়ি পড়ে চলে আসলাম। জয়কে সবাই চিনতে ভুল করেছিল তবে আমি নয়। এমন কি রিটা মেমও জয়কে চিনতে পারে নাই। যদি চিনতো কখনো জয়কে ছেড়ে যেতো না। বাবা জয় এমন ছিল সে নিজে যা বুঝে তা করে ছাড়বে কারো বারণ সে শুনে না। আত্মসমপন করবে এমন ছেলে জয় নয়। একদিন জয় একটি কথা বলেছিল। তখন আমি কলেজ থেকে ফিরতেছি। জয়কে দেখতে পেলাম রাস্তার পাশে একটি দোকানে বসে আসে আমি তার দিকে অগ্রসর হলাম। জয় আমাকে দেখে দোকান থেকে বেরিয়ে এসে বলল-
জয়ঃ কলেজ থেকে ফিরছো?
ইতিঃ হ্যাঁ ফিরতেছি। বেশ কিছু দিন তোমায় দেখতেছি না। কোথায় ছিলা এখোনো কি খুন খারাপি নেশা-টেশা করো?
জয়ঃ মাথাটা নিচু করে বলল, এসব ছাড়া আর কিছু অবশিষ্ট রইল না। আমার জীবন থেকে বাবা-মা ভাই বোন এমন কি প্রাণ প্রিয় গ্রামটাও ত্যাগ দিলাম। তবু তো মেড্যামকে ভুলতে পারলাম না। মেড্যাম আমাকে পাগল করেদিয়ে গেছে।
আমি যেদিকে যায় শুধু মেড্যামকে দেখতে পায়। বাতাসের মধ্যে মেড্যামের গন্ধ পায়। তাই নেশা করে পড়ে থাকলে তো মেড্যাম আমায় আর জ্বালাতন করতে পারে না।
ইতিঃ পাগলামি ছাড়ো। এখনো সময় আছে ভাল হয়ে যাও-বাবার কাছে বার-বার ছোট হতে হচ্ছে তোমার জন্য। কখন ইনকাউন্টার করে দে হিসাব নাই।
জয়ঃ পারবে না।
ইতিঃ হ্যাঁ কি করে পারবে? পুলিশ অফিস্যারের মেয়ে তোমার হাতের মুটুয় আমার বাবা তোমায় ইনকাউন্টার করার আগে তুমি আমায় করে দিবে তাই না?
জয়ঃ ভুল দারণা এইটা তোমার। আমি অতটা পাষাণ না।
ইতিঃ তাহলে কি তুমি আমায় ভালবাসা?
জয়ঃ না। যত ভালবাসা ছিল সব রিটা মেড্যামকে দিয়েদিলাম। আসলে দেখ! সন্ত্রাসী ছাড়া তো আর কোন পথ আমার নাই। এই জগতে মানবতা, ভালবাসা, এগুলো আসহায়, এজগতে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে পাওয়ার লাগে, আর এই পাওয়ার হচ্ছে টাকা। টাকা ছাড়া দুনিয়া অচল তাই মেড্যাম আমার হলো না। মেড্যামকে পওয়ার মতো কোনো য্যোগ্যতা আমার ছিল না। তাই সে রাতে মেড্যামকে বিদায় দিয়ে জয় থেক গুরো পরিণত হলাম। আমি তো পাপী আমার এই পাপের প্রায়শ্চিত আমি নিজের হাতে করব, তোমার অফিস্যার বাবাকে গিয়ে বলো। আমাকে ইনকাউন্টার করার দরকার হবে না।
ইতিঃ বেশ দারুণ অনুভূতি হচ্ছে, তাহলে তুমি ভালো হচ্ছে যাচ্ছো?
জয়ঃ না-ভাল হচ্ছি না। তোমারা আমাকে ইনকাউন্টার করার সুযোগ পাবে না। জয় পিছন থেকে পিস্তলটা বের করে হাতে নিয়ে বলল, এই পিস্তলে ছয়টি বুলেট বর্তি আছে। যেদিন পেরার সময় আসবে; মানে তোমার বাবা আমাকে শেষ করেতে আসবে সেদিন এই পিস্তলের ছয়টি বুলেট গুরোর মধ্যে প্রবেশ করবে।
আজ সেদিন আসল।
জয়কে দাপন সম্পর্ণ করে আদি আর পুলিশ অফিস্যার রৃুদ্র চলে আসতেছে।
পুলিশ অফিস্যার আদির দিকে তাকিয়ে বলল, জয় আমারও খুব কাছের লোক হয়তো এ কথা জয়ও জানতো না। জয়ের বাবা আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তার অনুরোধে আমি জয়ের পিছু নিয়েছিলাম। চেয়েছিলাম গুরো থেকে জয়ে পরিণত করতে তবে-আমি হেরে গেছি।
এসব কথা কিন্তু আদির কানে যাচ্ছে না আদি স্তম্ভের মতো দাঁড়িয়ে আছে আর দু চোখে বেয়ে অশ্রু ঝড়তেছে।
আদি দেখতে পাচ্ছে সেদিন গুলে যেদিন জয় আমেরিকা থেকে এসে আদির বাসায় স্থান নিয়ে ছিল।
জয়ের পরিবার আমেরিকা বাস করে জয়ও এতোদিন আমেরিকা ছিল। পল্লীর প্রতি জয়ের গভীর আনুরাগের কারণে দেশে ঘুরতে এসেছিল আর ফিরে যায় নি। এক প্রর্যায়ে পরিবারের সাথেও সকল বাঁধন ছিন্ন করল জয়।
সকাল প্রায় নয়টা পেরিয়ে গেছে আদি তাড়া-হুড়া করে নাস্তা করে কলেজের উদ্দেশ্যে বেরুচ্ছে এমন সময় দেখতে পেল জলজ্যন্ত জয় তার সামনে এসে উপস্থিত আদিতো হতভাগ।
আদিঃ আরো গুরো তুই? আমেরিকা থেকে কখন আসলি? কিছু না জানিয়ে হঠাৎ দেশে?
জয়ঃ শুন! গুরো বলবি না আর কখনো। নামটার মাঝে সন্ত্রসের গন্ধ পায়। দেশের জন্য মন ছটপট করতেছে তাই চলে আসলাম। এইবার খালি পায়ে বাংলার মাট-ঘাটে ঘুরে বেড়াব। আর নিজেকে শান্ত করে নিব। তুই বুঝি কোথায় যাচ্ছিস?
আদিঃ ব্যাগটা রেখে বলল, আরে না! চল ভিতরে।
জয়ঃ আমাকে ফাঁকি দেওয়ার অভ্যাস এখনো যায় নি তোর। দেখতে পাচ্ছি ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে ছিলি।
আদিঃ হ্যাঁ কলেজে যেতে চেয়েছিলাম। এখন আর যাব না। তোকে পেয়েছি কাছে, এসুযোগ হারাবো না। তুই তো বেশি দিন দেশে থাকবি না।
জয়ঃ কি করব দোস্ত! বাবার ব্যবসা সামলাতে হয় আমেরিকা। তাই বেশি দিন সময় দিতে পারব না। সাপ্তাখানেক থাকব। তবে চল আমিও যাব তোর কলেজে।
আদিঃ চল।
দু জন কলেজে এসে উপস্থিত আদি সবাইকে পরিচয় করে দিচ্ছে এই হলো তার প্রাণ প্রিয় জয়; যার জন্য সে নিজের তাজা প্রাণটাও দিয়ে দিতে পারে।
এদিকে কলেজে আসতেছে তাদের নতুন মেড্যাম “রিটা” জয় দেয়ালের সাথে নিজের পিট লাগিয়ে হা করে তাকিয়ে আছে। আদি জয়ের দিকে তাকিয়ে চমকে উঠে বলল, দোস! তোর কি শরীর খারাপ হয়েছে? দু হাত দিয়ে জয়েকে নেড়ে ছেড়ে দেখল।
জয় একটু হেসে বলল, স্বাভাবিক আছি তবে অস্বাভাবিক হতে মন চাচ্ছে। জয় ম্যাডামের দিকে তাকিয়ে বলল, এইটা কে?
আদিঃ আহ্ঃ তোকে তো বলা হয় নি। ওহচ্ছে আমাদের মেড্যাম নতুন জয়েন হয়েছে। চল পরিচয় করে দি।
আদিঃ মেম! ওনি হচ্ছে আমার দোস্ত। আপনার প্রশংসা করল রূপের। সে আমেরিকা থাকে। কিছু দিনের জন্য ঘুরতে আসছে। (গলির মধ্যে হাঁটতে-হাঁটতে তাদের মধ্যে এসব কথা হচ্ছে।) মেড্যাম, বলল, তাই নাকি। সময় করে ওকে নিয়ে আমার বাসায় এসো।
সন্ধ্যা পেরিয়ে গেল। জয় হাত থেকে সিগেরটটা পেলে দিয়ে, গিটারটা হাতে নিল। আর আনমনে বাজাচ্ছে।
আদি তার দিকে তাকিয়ে বলল, কী’রে জয়? তোর কি মন খারাপ?
জয়ঃ না দোস্ত। আজ অনেক সুখী। জীবনে কখনো এত সুখ পায় নি।
আদিঃ তাই! কি হয়েছে খুলে বল?
জয়ঃ আসেল তোদের ম্যাডাম আমার মন কেঁড়ে নিল। আমি কিন্তু তার প্রেমে পড়ে গেছি।
আদি কিছু একটা বলতে চেয়ে থেমে গেলে। (আদি বলতে চেয়েছিল মেড্যাম বিবাহিত। তবে এই কথা শুনলে জয় কষ্ট পাবে। জয়ের কষ্ট মেনে নেওয়ার মতো শক্তি আদির ছিল না। আর জয় তো কয়েক দিনের জন্য দেশে ঘুরতে আসছে। আমেরিকা চলে গেলে সব ভুলে যাবে এইটা স্বাভাবিক তাই ম্যাডামের বিষয়টা ক্লিয়ার করে না বললেও সমস্যা নাই।)
জয় আদিকে লক্ষ্য করে বলল, কি হলো তোর চুপ হয়ে গেলি যে। আদি নড়ে চড়ে বসে বলল, না , কিছু হয় নি আমার। তুই তো দেশে বেশি দিন নাই। এসবে জড়ানো কি ঠিক? জয় জড়ানোর বাকি কি আছে? আমি তো মরে যাবো যদি না হয় আর কি-রিটা মেড্যাম যদি আমার না হয়। আদি বসা থেকে উঠে দৌঁড়ে এসে জয়কে বুকে জড়িয়ে ধরে বলল, আর কখনো না। এমন কথা কখনো বলবি না শালা। সব শেষ করি দিব আমার জয়ের যদি কিছু হয়।
জয়ঃ শান্তহ দোস্ত । আমার কিছু হবে না।
সকালে ঘুম থেকে উঠে দু-জন কলেজে গেল। কিন্তু মেড্যাম সেদিন কলেজে আসে নাই। আদি জয়ের মনের ভাব বুঝে মেড্যামকে কল দিয়ে বলল, জয় তার সাথে দেখা করতে চায়। মেড্যাম একটি পার্কের ঠিকানা দিয়ে বলল, জয়কে নিয়ে সেখানে চলে আসতে। আদি আর জয় সেখানে চলে আসল। এভাবে বেশ কিছু দিন চলে গেল। প্রতিদিন মেড্যাম এর সাথে কথা হয় দেখা হয়। জয় আমেরিকা যাওয়ার কথা ভুলে গিয়েছিল বাবা বার-বার কল দিয়ে বলতেছে কি হলো? কোনো সমস্যা হচ্ছে নাকি বাবা কি দেশে আসবে জয়কে সাহায্য করতে? এসব আর কি।
সম্পর্ক তাদের বেশ ভালো যাচ্ছে।
আদির একি সাথে পড়তো ইতি। ইতিও জয়কে বেশ পছন্দ করতো তবে যখন জানতে পারল জয় মেড্যামের প্রেমে হুবুডুডু খাচ্ছে তখন ইতি জয়কে আর বলে নাই। তবে আদি ঠিকেই জানত।
জয়ঃ আদিকে লক্ষ্য করে বলল, দেখ, বাবা একা ব্যবসা সামলাতে পারতেছে না। আমার চলে যাওয়া দরকার।
আদিঃ ঠিক তো! কবে যাচ্ছিস?
জয়ঃ বিয়ে করে।
আদিঃ মানে?
জয়ঃ রিটা মেড্যামকে বিয়ে করে আমেরিকা নিয়ে যাব। না, তা হবে না। আমরা দু জন দেশে থাকবো আর বাংলার মাট-ঘাটে দু জনে হাতে হাত রেখে হাঁটবো। দেশের বাইরে যাবো না।
আদিঃ জয় (এইটুকু বলে থেমে গেল)
জয়ঃ কিছু বলবি?
আদিঃ মেড্যামকে তো জানাতে হবে বিয়ের কথা সেযদি বিয়েতে রাজি না হয়-মানে সে যদি তোকে শুধু বন্ধু ভাবে।
কথা শেষ না হতে জয় আদির মুখে হাত রেখে বলল, দোস্ত এই কথা বলিছ না। আমি বাঁচবো না।
তারপর দু জন মেড্যাম এর বাসায় এসে উপস্থিত ।
আদিঃ জয়কে বলল, তুই একটু বস। আমি একটু মেড্যাম এর সাথে দেখা করে আসি। আদি যতটা সম্ভব আন্যায় আবদার করে যাচ্ছে বার-বার বলছে জয়কে বিয়ে করতে। আসলে তা তো কখনো সম্ভব ছিল না। তবে আদি জয়কে খুব ভালকরে জানে।
আদি ফিরে এসে বলল, চল জয়, আমরা চলে যায়।
জয়ঃ মানে? রিটা কই? আমি তো এখনো তার সাথে দেখাও করতে পারি নাই।
আদিঃ চল দোস্ত। এমন সময় বাসার দরজায় বেল বেজে উঠলো। একটু পর দেখে গেল একটি বালিকা বাড়িতে ডুকল।
জয়ঃ আদিকে জিঞ্জাসা করল, কে এইটা?
আদি জয়ের হাত ধরে বলল, চল।
জয়ঃ দোস্ত সব সময় পাজলামি করিস কেনো। দেখ না কত সন্দুর বেবিটা। এই বেবিটা কার।
আদি শক্ত করে জয়েরে শার্টের কলার দু হাতে ধরে গম্ভীর কণ্ঠে বলল, এইটা হচ্ছে মেড্যামের মেয়ে। মেড্যাম বিবাহিত।
তারপর কি হয়েছিল আমার জানা নাই। আকাশ ভেঙ্গে কি মাটিতে পড়েছিল? নাকি মাটি গুলো সব আকাশে উঠে গিয়েছিল?
সেদিন থেকে জয় হয়ে যায় গুরো। ছেড়ে দে রিটাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা। চলে যায় আদিকে ছেড়ে। নেশা করে রাস্তার পাশে পড়ে থাকে। এক সময় জয় তার অতীত ভুলে হয়ে যায় গুরো। হয়ে উঠে আন্ডারওয়াল্ডের ডন।
রদ্রের কানে শব্দ আসল গুলির। পিছন পিরে দেখতে পেল। আদির হাতটা ডলে পড়তেছে, মাথার কাছ থেকে পিস্তলটা একটু পরে মাটিতে পড়ে যায়। আদিও বিদায় জানাল। রুদ্র বাসায় ফিরে দেখতে পেল ইতির শাদা শাড়ির আঁচল পায়ের নিচে জুলতেছে আর ইতির গলায় দঁড়ি। ইতিও বিদায় নিল। তবে জানি না রিটা মেম, কতটা সুখে আছে স্বামী সন্তান নিয়ে?
এভাবে তিনটা প্রাণ চলে যাওয়ার গল্প লিখে নিজেও ভেঙ্গে পড়লাম।। দোয়া করবেন তাই যেন কখনো বাস্তবে নাহয়।
১৭ চৈত্র ১৪২৩ বাংলা
৩১-৩-২০১৭ ইংরেজি
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।