ভালবাসা যেমনি হয়
তওবা
মোমিনুল হক আরাফাত
জয় সে এক চলচিত্র পরিচালাক। একের পর এক চলচিত্র তৈরি করে বেশ সুনাম অর্জন করছে।
রাত এগারটা বেজে গেল। এখনো জয় বাসায় ফিরল না। ভাবি কল দিয়ে জিজ্ঞাস করল-“বাসায় ফিরতে কী দেরি হবে? তোমার ভাইয়া না খেয়ে অপেক্ষায় রইল।”
জয় বলল, আমার একটু কাজ আছে। হয়তো আরো দু এক ঘন্টা লেগে যেতে পারে। ভাইয়াকে খাইয়ে নিতে বল।
জয় বাসায় ফিরার সাথে-সাথে, ভাবি আবার বলল, জয়, তোমার কী সমস্যা? তুমি কী ঘর-সংসার করবে না?
জয়ঃ ভাবি আমি তো আগে বলেছি বিয়ে কারা আমার পক্ষে সম্ভব না।
ভাবিঃ কেন সম্ভব না? তোমার কী সমস্যা? সারাদিন বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দেওয়া আর এদিক-ওদিক ঘুরা তার মানে জীবন না। আর বিয়ে করলে বন্ধুদের ত্যাগ দিতে হয় না।
জয়ঃ ভাবি তোমরা জান না, আমর সমস্যা কোথায়? আমি বিয়ে করব না।
ভাবিঃ সমস্যা মানে তোমার?
জয়ঃ সমস্যা মানে অন্য কোন সমস্যা না-আমি একজনকে ভালবাসি। তাকে ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করতে পারব না।
ভাবিঃ তো! সমস্যা কি? তাকে বিয়ে করে নাও। এইটা তো কোন অপরাধ না। আর তা ছাড়া তুমি তো একজন বিখ্যাত ব্যক্তি তোমাকে বিয়ে করতে না বলবে, এমন মেয়ে তো বাংলাদেশে নাই মনে হয়।
জয়ঃ বাংলাদেশে থাকলেও আমার সমস্যা হতো না। সমস্যাটা হচ্ছে সে বাংলাদেশী নয়।
ভাবিঃ বাংলাদেশী না-আবার কোন দেশী মেয়েকে ভাল লাগল?
জয়ঃ ইন্ডিয়ান!
ভাবিঃ তাহলে আর কী করা যায় দেখি-হ্যাঁ ইন্ডিয়া তো তোমার অনেক বন্ধু আছে। তাদের সাথে যোগাযোগ করে দেখ। তারা পারবে আশা করা যায়।
জয়ঃ তারাও পারবে না, সে অনেক উপরে উঠে গেছে সে তো ভুলে গেছে দু জন পৃথিবীতে আসার আগে এক সাথে ছিলাম। আসলে পৃথিবীটা এইরকম মানুষ প্রাচুর্যের লোভে সব ভুলে যায়। দেখি কি আর করা যায়।
ভাবিঃ এত হতাস হওয়ার কী আছে? তোমাদের তো টাকার অভাব নাই। এত ধন-সম্পদ-
জয়ঃ ভাবি সব চেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, সে এখন বিবাহিত। আর টাকা দিয়ে সব হয় না। মানবতা, ভালবাসা, এই গুলো টাকা দিয়ে পাওয়া যায় না।
ভাবিঃ মানে? আসলে কী তুমি সত্যি পাগল হয়ে গেছ? একজন বিবাহিত মেয়ের জন্য-
জয়ঃ না ভাবি, পাগল হইনি। পাগল হলে তার কাছে ছুটে যেতাম। তবে তার কাছ আর একটি জিনিস চাওয়ার আছে।
ভাবিঃ একটু হেসে বলল, কী চাইবে আর তার কাছে? বাকি আছে কী? সব তো-
জয়ঃ আমার প্রাণটা এখনো তার হাতে আছে। এই প্রাণটাকে ফিরিয়ে আনতে পারলে আমি সুখী। আমি তার কাছে এর বেশি কিছু চাই না। তাও চাইতাম না, আমার প্রাণটাও অকালে প্রাণ হারাবে আমাকে কাছে না পেলে।
ভাবিঃ তোমার প্রাণ তো ঐ মেয়েটি তাই না? যার জন্য তুমি ঘর সংসার করতেছ না।
জয়ঃ না ভাবি। আমার প্রাণ আরেকটি। কিন্তু সেইটা তার কাছে আছে, তাকে ফিরিয়ে আনতে হবে।
ভাবিঃ সেইটা কি?
জয়ঃ পরে বলব।
সকাল হলো “ভাবি” নাস্তা রেড়ি করে টেবিলে বসে আছে। জয়, হাত মুখ ধুয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে।
ভাবিঃ নাস্তা করে যাও।
জয়ঃ বাহিরে করে নিব।
ভাবিঃ আচ্ছা তোমার সমস্যাটা কী? এভাবে কী জীবন চলে, আর তোমার ভাই এসে আমাকে বকা-বকি করবে।
জয়ঃ ভাইয়াকে তুমি বুঝিয়ে নিও আমি যাচ্ছি।
ভাবিঃ আমি পারব না। তোমার কী মনে আছে কখন বাসায় নাস্তা করে ছিলে? আর মেয়েটির নাম কী? তোমার ভাইয়া নাম ঠিকানা জিঞ্জাস করেছিল।
জয়ঃ নাম ঠিকানার প্রয়োজন নাই। ছোট বেলা থেকে ভাইয়া আমার জন্য অনেক কষ্ট করছে-বাবা মা হারানোর যন্ত্রণাটা ভাইয়া কখনো আমাকে বুঝতে দেয়নি। আমার জন্য ভাইয়া অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছিল এবার আর নয়।
ভাবিঃ ভাইয়া তোমার জন্য জীবনটাও দিতে পারবে। বল মেয়েটির পরিচয় কি?
জয়ঃ না ভাবি এই কাজটিতে আর কাউকে জড়াতে চাই না। এইটা আমাকে করতে দাও। কারণ আমার জন্য আর কাউকে অপমানিত হতে দিতে চাই না।
জয়ঃ বাসা থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে।
ভাবিঃ গাড়ির চাবি’টা রেখে যাচ্ছ।
জয়ঃ গাড়ি লাগবে না।
জয় পলাশকে কল দিয়ে বলল, তোর সাথে কথা আছে একটু আমার সাথে দেখা করতে আয় ।
দু জন পার্কে গিয়ে বসল।
পলাশঃ কী হয়েছে তোর? এত ব্যস্ত মনে হচ্ছে কেন?
জয়ঃ আমি ইন্ডিয়াতে যাচ্ছি।
পলাশঃ যাও। সমস্যা কি?
জয়ঃ ইন্দ্রনীলকে খবরটা জানানোর প্রয়োজন আছে।
পলাশঃ ঠিক আছে। তবে ইন্ডিয়াতে গিয়ে কী করবি?
জয়ঃ সিনেমা তৈরি করব।
পলাশঃ বুঝি নাই?
জয়ঃ না বুঝার কী আছে?
পলাশঃ বাংলাদেশ ছেড়ে ইন্ডিয়াতে কেন? তোর তো এই দেশে বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে।
জয়ঃ ইন্ডিয়াতে এমন কেউ আছে ভেবে নে। আর আমি কখনো দেশকে ভুলি নাই। তবে নিজের জন্য এই কাজটা করতে বাদ্ধ হচ্ছি। হয়তো ভুল পথে চলতেছি, আর ছায়ার সাথে কথা বলতেছি। দেখ! আমরা তো মানুষ, মন বলতে তো কিছু একটা আছে, ঐ মন যখন চাচ্ছে কাছে যেতে কি আর করব দোস্ত?
জয়ঃ ইন্দ্রনীল’কে কল দিয়ে বলল, আমি ইন্ডিয়াতে আসতেছি আমার জন্য একটি বাড়ি খোঁজ।
ইন্দ্রনীল বলল, সমস্যা নাই। পায়েলের সাথে কথা হয়েছিল তাদেরে দুইটি ফ্লেট খালি পড়ে আছে। সমস্যাটা এইখানে- বাড়ি তৈরি করার সময় লোহা কম দিয়ে বাঁশ দিয়েছিল কংকিটের সাথে সিমেন্ট কম দিয়ে বালি মিশিয়ে ছিল এই গোজবটা ফাঁস হওয়ায় বাড়াটিরা বাসা বাড়া নিতে চাই না আর কি হুম! তুই চলে আয়।
জয় ইন্ডিয়া এসে উপস্থিত।
ইন্দ্রনীল, জয়কে পেয়ে আনন্দে আত্নহারা।
ইন্দ্রনীলঃ জয় আমি তো ভাবতেও পারতেছি না, তুই যে আমার সামনে বসে আসিছ, তোকে না কতবার বললাম আসতে। কিন্তুু তুই তো ব্যস্ত থাকিস।
জয়ঃ একটু হেসে বলল, আর যাব না। আমি ইন্ডিয়াতে থেকে যাব।
ইন্দ্রনীলঃ এইটা তো আমাদের সুভাগ্য।
জয়ঃ ইন্দ্রনীলকে বলল, আমি এখানে একটি সিনেমা তৈরি করতে চাই। বাংলাদেশে তো বেশে কয়েকটা করেছি। তোর আর পায়েলের সাহায্য লাগবে। তুই আর পায়েল তো ভাল অভিনয় করিছ।
ইন্দ্রনীলঃ সমস্যা নাই, তুই তো বেশ ভাল ছবি তৈরি করিস। ছবির স্কিপ্ট লিখে নিয়েছিস নাকি?
জয়ঃ সব ঠিক হয়ে গেছে। শুধু নায়িকাটা বাকি রয়ে গেল।
ইন্দ্রনীলঃ নায়কও তো লাগবে। শুধু নায়িকা দিয়ে কি ছবি শেষ হয়ে যাবে?
জয়ঃ হেসে উঠে বলল, হ্যাঁ নায়ক তো তুই আছিস আর নায়িকা তামান্নার সাথে কথা বলে দেখ। পায়েলের কিছু ভূমিকা আছে।
ইন্দ্রনীলঃ ঠিক আছে আমি তার সাথে ফোনে কথা বলে দেখতেছি ফ্রী আছে কি’না।
জয়ঃ ঠিক আছে বলে দেখ। আমি একটু আসতেছি।
ইন্দ্রনীলঃ কোথায় যা’বি?
জয়ঃ আরে! আমি কী ইন্ডিয়াতে নতুন আসছি না’কি? ছোট বেলায় তোর সাথে এই মাঠে-ঘাঠে কত হেঁটেছি। কত দুষ্টামি করেছি। কিনু্তু সময়ের অভাবের কারণে এতদিন আসতে পারি নাই।
সন্ধ্যায় দু জন ক্যান্টিনে বসল।
ইন্দ্রনীলঃ জয় তামান্নার সাথে কথা হয়েছিল। অবশ্যই সে কাজ নিয়ে অনেক ব্যস্ত আছে তারপরও তো তোর কাজটা করেদিতে হবে।
জয়ঃ মানে? আমার কাজ করেদিতে হবে মানে কি? এই ইন্ডিয়াতে কী সুপার ষ্টার এর অভাব হয়েছে না’কি? তাকে এত রিকোয়েষ্ট করে কাজ করার প্রয়োজন কি?
ইন্দ্রনীলঃ তুই এখনো আগের মতো রয়ে গেলি। মুখে এক কথা আর মনে আর এক কথা। আচ্ছা, মনের কথাটা বলতে সমস্যা কি?
জয়ঃ আসলে আমি অনেক পরিবর্তন হয়েছি। তবু আজ মনের কথাটা বলা হচ্ছে না।
ইন্দ্রনীলঃ আরে এত লজ্জার কী আছে? মানুষের তো পছন্দের অভিনেত্রী থাকতে পারে।
জয়ঃ তুই তা বুঝবি না। আমি তাকে দিয়ে অভিনয় করার জন্য এইখানে আসি নাই।
ইন্দ্রনীলঃ ব্যস্ত হয়ে বলল, তাহলে কি?
জয়ঃ সব বুঝতে পারবি আর আমাকে ক্ষমা করে দিস। আমার জন্য তোর সমস্যা হতে পারে।
ইন্দ্রিনীলঃ হেসে উঠে বলল, আমাকে নিয়ে একেবারে ভাবতে হবে না। তোর জন্য এই জীবনটাও হাসি মুখে দিয়ে দিতে পারি।
জয়ঃ হ্যাঁ আমি জানি, তুই আমার জন্য সব করতে পারিস, তাই তোর কাছে আসলাম।
ইন্দ্রনীলঃ তামান্না বলেছিল তোর যদি সময় হয় একবার তার বাসায় যেতে। সে দেখতে চায় কে সে তার এমন বক্ত?
জয়ঃ ইন্দ্রনীলের চেহেরার দিকে তাকিয়ে বলল, তার বাসায় যাওয়াটা কী ভাল হবে।
ইন্দ্রনীল হেসে উঠে বলল, আরে এইখানে ভাল খারাপের কি আছে? যদি সময় থাকে-
জয়ঃ ঠিক আছে কাল যাব।
দু জন বাসায় পৌঁছল তামান্না তাদেরে সাথে বসে অনেক গল্প গোজব করল। এমন সময় স্কুল থেকে ফিরল তামান্নার ছয় বছরের মেয়ে তওবা। তওবাকে দেখে জয় চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়াল।
তওবা প্রতিদিনের মতো আজ দৌঁড়ে এসে তামান্নাকে জড়িয়ে ধরল না। তামান্না অবাক দৃষ্টিতে তওবার দিকে তাকিয়ে রইল। তওবা দু এক পা সমনে এগিয়ে জয়ের দিকে তাকিয়ে রইল তার চোখে জল টল মল করতেছে। জয়ও তার দিকে তাকিয়ে রইল। তওবা দৌঁড়ে এসে জয়কে বুকে জড়িয়ে ধরে বলল, পাপ্পা তুমি এতদিন কোথায় ছিলে? আমি না তোমাকে অনেক খোঁজেছি।
জয়ঃ কোন কথার জবাব না দিয়ে তওবাকে বুকে জড়িয়ে ধরল।
ইন্দ্রনীল আর তামান্না বোবা হয়ে রইল।
তওবা জয়কে বলল, পাপ্পা তুমি যদি আমাকে একা রেখে আবার চলে যাও আমি অনেক কষ্ট পাব। পাপ্পা তুমি যেখানে যাও আমাকে নিয়ে যেও।
তামান্নাঃ জয়ের কাছে এসে বলল, সরী! আসলে ওর মানসিক সমস্যা আছে, মাঝে মাঝে সে এমন কথা বলে।
জয়ঃ তামান্নার দিকে তাকিয়ে বলল, তা কোন সমস্যা না। সব ঠিক হয়ে যাবে।
জয় আর ইন্দ্রনীল বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলো। জয় অল্প হেঁটে একটি বার তওবার দিকে তাকাল। তখন ইন্দ্রনীলের বুঝতে আর দেরি হল না। তওবাকে ছেড়ে আসতে জয়ের হৃদয়টা ভেঙ্গে চুছির হয়ে যাচ্ছে।
তওবাঃ তামান্নাকে দু হাত দিয়ে জড়িয়ে রইল আর দু চোখে থেকে জল ঝরতেছে।
বাসায় পৌঁছে ইন্দ্রনীল জয়কে বলল, আমি তো কিছুই বুঝতে পারলাম না।
জয়ঃ আমি কাল বাংলাদেশে চলে যাচ্ছি।
ইন্দ্রনীলঃ ব্যস্ত হয়ে বলল, কী হয়েছে তোর? আমার কাছে কিছু গোপন করবি না।
জয়ঃ আমি থাকলে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হবে আমি তা চাই না।
ভোর সকালে ইন্দ্রনীল জয়ের বাসায় এসে উপস্থিত।
জয়ঃ কী হয়েছে? তুই এত সাতসকালে?
ইন্দ্রনীলঃ তামান্না তোর মোবাইল নাম্বার চেয়ে ছিল-
জয় বলল, হ্যাঁ জানি আর তুই দিয়ে দিলি- সমস্যা নাই। আমি রিসিভ করি নাই।
ইন্দ্রনীলঃ তুই রিসিভ করিস নাই ঠিক আছে। তবে সে এখন আমার বাসায়।
জয়ঃ কি? এইটুকু বলে বিছনা থেকে উঠে দাঁড়াল।
জয়ঃ তামান্নার উদ্দেশ্যে রওনা হলো। বাসায় আসার সাথে সাথে তওবা জয়কে ঝড়িয়ে ধরে বলল, পাপ্পা তুমি কী আমাকে ছেড়ে চলে যা’বে?
জয়ঃ তার কথার কোন উত্তর দিতে পরল না। জয় তাকে বুকে ঝড়িয়ে ধরে চোখের জল মুছতে লাগল।
তামান্নাঃ আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত তবু- কথা শেষ না হতে জয় বলল, কোন চিন্তা করবেন না। তওবা আমার সাথে থাকবে।
তওবা এখন জয়ের সাথেই আছে। তওবার দেখা শোনার সব দায়িত্ব এখন জয়ের কাছে। তওবা জয়েকে ছাড়া এক মুহূর্তও থাকতে পারে না।
জয়ঃ সকালে তওবাকে স্কুলে পৌঁছে দিল। সেখানও সবাই জনতে পারল জয় তওবার বাবা। তওবা তো জয়কে ছাড়া আর কাউকে বাবা বলে মেনে নিতে পারতেছে না। সারা দেশের লোকে জানতে পারল “জয়” তওবার বাবা। তবে তামান্নার তো স্বামী আছে। তামান্না আরেক জনের স্ত্রী। এই বিতর্কটা সত্যি অসহ্য।
হঠাৎ তামান্না এসে জয়কে বলল, আপনি অনেক কষ্ট করছেন আমাদের জন্য- কথা শেষ না হতে জয় বলে উঠল এখন আর করতে হবে না তাই বলতেছেন তাই না? আসলে তওবাকে ছাড়া থাকতে আমারও কষ্ট হবে। আর এইখানে থাকলে আপনি বিতর্কে পড়বেন। তাই ঠিক করলাম আমি আজ বাংলাদেশে ফিরে যাব।
ইন্দ্রনীলঃ জয়কে বলল, জয়! এসবের মানে কী? আমি তো কিছুই বুঝতে পারতেছি না।
জয়ঃ ইন্দ্রনীলকে লক্ষ্য করে বলল, সত্যি তওবা আমার মেয়ে আর তামান্না-
ইন্দ্রীনীলঃ তাকী ভাবে সম্ভব?
জয়ঃ তামান্নার সাথে আমার প্রথম দেখা কয়েক দিন আগে হয়েছিল। আর তখন তওবার বয়স ছয় বছর। এসব ইশ্বরের ইচ্ছা। ইশ্বর যাকে যার সন্তান মনোনিত করে তাদের মাধ্যমে পৃথিবীতে পাঠাই। আর ইশ্বর চাইলে অন্য রূপও করতে পারেন। আর যেদিন তওবা তামান্নার গর্ভে আসে। সেদিন তার স্বামী তার কাছে ছিল না। যাই হোক! আমি চাই না একটি সুন্দর পরিবার নষ্ট করে দিতে। আমি কাল বাংলাদেশে চলে যাব। তোকে একটি কথা বলে যায়, তওবাকে বাঁচানো যাবে না।
ইন্দ্রনীলঃ তহলে তুই চলে যাবি কেন?
জয়ঃ আমার আর কোন উপায় নাই। যেভাবে মিড়িয়া প্রচার করতে লাগল। তামান্নার তো সমাজে মুখ দেখা দায় পড়ে যাচ্ছে।
ইন্দ্রনীলঃ জয় আমি তোকে যতটা চিনি এই পৃথিবীর আর কেউ ততটা জানে না। তুইতো অলৌকিক মানুষ। একটি সত্যি কথা বল আজ?
জয়ঃ বল কী কথা?
ইন্দ্রনীলঃ তামান্নটা কে?
জয়ঃ ইন্দ্রনীলকে বুকেটেনে নিয়ে বলল, কেন জানতে চাস্ কে সে? তারপর জয় চুপ হয়ে গেল-।
ইন্দ্রনীলঃ জয় চুপ করে থাকিস না, বল কে সে?
জয়ঃ সে আমার জীবন সঙ্গী। পৃথিবীতে আসার আগে দু-জন একি সাথে ঘর সাজিয়ে ছিলাম। সৌর জগতের একটি গ্রহে। আর তওবা আমাদের সন্তান।
তারপর জয় বাংলাদেশে চলে আসল। বাসায় আসা মাত্র ভাবি বলল, ভাইয়া-
জয়ঃ ভাবি যাই হওয়ার তাই হয়েছে। তাই নিয়ে আর ভেবে লাভ নাই- আমাকে এক গ্লাস পানি দাও।
নীরব নিস্তব্দ রাত। আকাশের মিটি মিটি তারা জ্বলতেছে। জোনাকিরা মনের সুখে ঘুরো বেড়াচ্ছে। ঝিঁ ঝিঁ অবিরত স্বজন হারা সুর তুলে যাচ্ছে। জয়ও আজ তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে বাসার ছাদের উপর নীরবে দাঁড়িয়ে আছে। তার নয়ন কোণে দু-এক ফোটা জল জমে রইল। হয়তো কোন বিষাদ বুকের মাঝে ঢেউ তুলল।
ভাবি এসে বলল, ভাইয়া রাত অনেক হয়েছে ঘুমাবে না? জয়, আনমনা হয়ে বলল, হ্যাঁ ঘুমাব।
পলাশ আর জয় দু জন নদীর পাড়ে বসে আছে। কারো মুখ দিয়ে কোন কথা আসতেছে না।
পলাশঃ জয়! তুইতো এখন আরো বেশি ভেঙ্গে পড়লি। তোকে সান্ত্বনা দেওয়ার মতো ভাষা আমার নাই।
জয়ঃ পলাশ আমি জানতাম না এত বড় সমস্যা সৃষ্টি হয়ে যাবে। তামান্না তো আমাকে ক্ষমা করতে পারবে না। সাবার কাছে তাকে-
পলাশঃ জয় চিন্তা করিস না সব ঠিক হয়ে যাবে। তবে তওবাকে তো দেশে নিয়ে আসা দরকার না হয়-
জয়ঃ আমার কিছুই করার নাই। তাকে যদি আমি নিয়ে আসি তামান্নার বুকটা খালি হয়ে যাবে। আমি তা চাই না। তবে কী করব নিজেও জানি না।
এদিকে তামান্নার স্বামী তার সাথে রেগে আছে।
তামান্নাঃ আসলে তুমি কি আমাকে সন্দেহ করতেছ?
স্বামীঃ সন্দেহ করার কী আছে? সব তো প্রমাণ হয়ে গেছে। সবাই জানতে পারল তুমি একটি নষ্ট মেয়ে।
তামান্নাঃ মুখ সামলে কথা বলো, ছোট একটি বিষয় নিয়ে এত চেছামেছির কী দরকার?
স্বামীঃ তুমি তো নষ্ট মেয়ে, তাই বিষয়টা তোমার কাছে ছোট।
তামান্নার চেহেরাই মেঘ নেমে আসল। তামান্না বলল, তুমি কী বলতে চাও?
স্বামীঃ তালাক।
তারপর দু জন আলাদা হয়ে গেল। তওবার বিষয়টা তামান্না জানত এইটা একটি মানসিক সমস্যা এইখানে কোন বাস্তবতা নাই।
জয় এখন ঘর সংসার থেকে অনেক দূরে। পরিবারের কারো সাথে কোন সম্পর্ক নাই।
জয় ব্রীজের উপর বসে আসে এমন সময় তার মোবাইল বেজে উঠল।
জয়ঃ প্রথমে কল রিসিভ করল না। বেশ কয়েক বার কল আসার পর দেখতে পেল ইন্দ্রনীলের কল। জয়, রিসিভ কারার সাথে সাথে বুঝতে দেরি হলো না। কোন বিপদ ঘঠে গেল।
ইন্দ্রনীল হাঁপতে লাগল। কোন কথা মুখ দিয়ে আসতেছে না।
ইন্দ্রনীলঃ জয় তুই ইন্ডিয়া চলে আয় তওবা এঙসিডেন্ট করছে। এখনো তার জ্ঞান ফিরে নাই।
জয় চলে আসল ইন্ডিয়া। হাসপাতালে গিয়ে দেখতে পেল তওবা চিটে শুয়ে আছে। তার পাশে ইন্দ্রনীল ও তামান্না বসে আছে।
জয়ঃ তওবাকে বুকে ঝড়িয়ে ধরে চিৎকার দিয়ে ডাকল। তবে কোন উত্তর আসল না। ডাক্তারের সাথে কথা বলল, ডাক্তার বলল, আমরা কিছুই বলতে পারতেছি না।
জয়, অশ্রুসিক্ত নয়ন নিয়ে মসজিদে এসে বলল, হে আল্লাহ! তুমি তো মুত্যুকে জীবিত কর আর জীবতকে মৃত্যু দাও। হে আল্লাহ! তুমি তো সব কিছুর অধিকারী। তুমি আমাকে এত বড় সাজা দিয় না। হে মওলা! আমার কাছ থেকে তওবাকে কেঁড়ে নিও না।
জয় পাগলের মতো হয়ে নিজের মাথা মাটির সাথে আঘাত করতে লাগল।
ইন্দ্রনীর দৌঁড়ে এসে বলল, জয়! তওবার জ্ঞান ফিরছে! তওবা তোকে খোঁজতেছে।
জয়, দৌঁড়ে গিয়ে তওবাকে বুকে টেনে নিল।
তওবাঃ জয়ের চেহেরাই হাত বুলিয়ে বলল, পাপ্পা! তুমি কী আমাকে ছেড়ে চলে যাবে?
জয়ঃ না মা! তোকে ছেড়ে কোথাও যাব না।
বেশ কয়েক দিন পর তওবা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠল। জয় বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। জয়ের সাথে তামান্না ও তওবা অল্প হেঁটে আসল।
ঠিক এই ভাবেঃ
জয় সামনে তওবা তার পিছনে আর তামান্না তওবার পিছনে। মানে হচ্ছে তওবার এক হাত জয় ধরে হাঁটতেছে আর এক হাত তামান্না ধরে রাখছে। অল্পক্ষণ হাঁটার পর তওবা থমকে দাঁড়ল। কারণ তামান্না আর সামনে না এগিয়ে দাঁড়িয়ে গেল। আপনারা তো বুঝতে পারছেন? তওবার হাতটা তামান্নার ধরা ছিল তাই তওবা আর সামনে পা বাড়াতে পারল না। জয়েরও বুঝার বাকি রইল না।
জয়ঃ তওবার হাতটা ছেড়ে দিয়ে সামনের দিকে এগুতে চাইল কিন্তুু তাও পারল না। কারণ জয় তওবার হাত ছেড়ে দেওয়ার সাথে সাথে তওবা জয়ের হাতটা ধরে পেলল। তামান্নারও আর বুঝার দেরি হলো না। তামান্না তওবার হাতটা ছেড়ে দিল। তামান্না যখন তওবার হাতটা ছেড়ে দিল তওবা তামান্নার হাতটা ধরে পেলল। বাকিটা বলব না।
৯ই অগ্রাহায়ণ ১৪২২ বাংলা, ২৩শে নভেম্বর ২০১৫ খৃষ্টাব্দ
সমাপ্ত
মোমিনুল হক আরাফাত
জয় সে এক চলচিত্র পরিচালাক। একের পর এক চলচিত্র তৈরি করে বেশ সুনাম অর্জন করছে।
রাত এগারটা বেজে গেল। এখনো জয় বাসায় ফিরল না। ভাবি কল দিয়ে জিজ্ঞাস করল-“বাসায় ফিরতে কী দেরি হবে? তোমার ভাইয়া না খেয়ে অপেক্ষায় রইল।”
জয় বলল, আমার একটু কাজ আছে। হয়তো আরো দু এক ঘন্টা লেগে যেতে পারে। ভাইয়াকে খাইয়ে নিতে বল।
জয় বাসায় ফিরার সাথে-সাথে, ভাবি আবার বলল, জয়, তোমার কী সমস্যা? তুমি কী ঘর-সংসার করবে না?
জয়ঃ ভাবি আমি তো আগে বলেছি বিয়ে কারা আমার পক্ষে সম্ভব না।
ভাবিঃ কেন সম্ভব না? তোমার কী সমস্যা? সারাদিন বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দেওয়া আর এদিক-ওদিক ঘুরা তার মানে জীবন না। আর বিয়ে করলে বন্ধুদের ত্যাগ দিতে হয় না।
জয়ঃ ভাবি তোমরা জান না, আমর সমস্যা কোথায়? আমি বিয়ে করব না।
ভাবিঃ সমস্যা মানে তোমার?
জয়ঃ সমস্যা মানে অন্য কোন সমস্যা না-আমি একজনকে ভালবাসি। তাকে ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করতে পারব না।
ভাবিঃ তো! সমস্যা কি? তাকে বিয়ে করে নাও। এইটা তো কোন অপরাধ না। আর তা ছাড়া তুমি তো একজন বিখ্যাত ব্যক্তি তোমাকে বিয়ে করতে না বলবে, এমন মেয়ে তো বাংলাদেশে নাই মনে হয়।
জয়ঃ বাংলাদেশে থাকলেও আমার সমস্যা হতো না। সমস্যাটা হচ্ছে সে বাংলাদেশী নয়।
ভাবিঃ বাংলাদেশী না-আবার কোন দেশী মেয়েকে ভাল লাগল?
জয়ঃ ইন্ডিয়ান!
ভাবিঃ তাহলে আর কী করা যায় দেখি-হ্যাঁ ইন্ডিয়া তো তোমার অনেক বন্ধু আছে। তাদের সাথে যোগাযোগ করে দেখ। তারা পারবে আশা করা যায়।
জয়ঃ তারাও পারবে না, সে অনেক উপরে উঠে গেছে সে তো ভুলে গেছে দু জন পৃথিবীতে আসার আগে এক সাথে ছিলাম। আসলে পৃথিবীটা এইরকম মানুষ প্রাচুর্যের লোভে সব ভুলে যায়। দেখি কি আর করা যায়।
ভাবিঃ এত হতাস হওয়ার কী আছে? তোমাদের তো টাকার অভাব নাই। এত ধন-সম্পদ-
জয়ঃ ভাবি সব চেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, সে এখন বিবাহিত। আর টাকা দিয়ে সব হয় না। মানবতা, ভালবাসা, এই গুলো টাকা দিয়ে পাওয়া যায় না।
ভাবিঃ মানে? আসলে কী তুমি সত্যি পাগল হয়ে গেছ? একজন বিবাহিত মেয়ের জন্য-
জয়ঃ না ভাবি, পাগল হইনি। পাগল হলে তার কাছে ছুটে যেতাম। তবে তার কাছ আর একটি জিনিস চাওয়ার আছে।
ভাবিঃ একটু হেসে বলল, কী চাইবে আর তার কাছে? বাকি আছে কী? সব তো-
জয়ঃ আমার প্রাণটা এখনো তার হাতে আছে। এই প্রাণটাকে ফিরিয়ে আনতে পারলে আমি সুখী। আমি তার কাছে এর বেশি কিছু চাই না। তাও চাইতাম না, আমার প্রাণটাও অকালে প্রাণ হারাবে আমাকে কাছে না পেলে।
ভাবিঃ তোমার প্রাণ তো ঐ মেয়েটি তাই না? যার জন্য তুমি ঘর সংসার করতেছ না।
জয়ঃ না ভাবি। আমার প্রাণ আরেকটি। কিন্তু সেইটা তার কাছে আছে, তাকে ফিরিয়ে আনতে হবে।
ভাবিঃ সেইটা কি?
জয়ঃ পরে বলব।
সকাল হলো “ভাবি” নাস্তা রেড়ি করে টেবিলে বসে আছে। জয়, হাত মুখ ধুয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে।
ভাবিঃ নাস্তা করে যাও।
জয়ঃ বাহিরে করে নিব।
ভাবিঃ আচ্ছা তোমার সমস্যাটা কী? এভাবে কী জীবন চলে, আর তোমার ভাই এসে আমাকে বকা-বকি করবে।
জয়ঃ ভাইয়াকে তুমি বুঝিয়ে নিও আমি যাচ্ছি।
ভাবিঃ আমি পারব না। তোমার কী মনে আছে কখন বাসায় নাস্তা করে ছিলে? আর মেয়েটির নাম কী? তোমার ভাইয়া নাম ঠিকানা জিঞ্জাস করেছিল।
জয়ঃ নাম ঠিকানার প্রয়োজন নাই। ছোট বেলা থেকে ভাইয়া আমার জন্য অনেক কষ্ট করছে-বাবা মা হারানোর যন্ত্রণাটা ভাইয়া কখনো আমাকে বুঝতে দেয়নি। আমার জন্য ভাইয়া অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছিল এবার আর নয়।
ভাবিঃ ভাইয়া তোমার জন্য জীবনটাও দিতে পারবে। বল মেয়েটির পরিচয় কি?
জয়ঃ না ভাবি এই কাজটিতে আর কাউকে জড়াতে চাই না। এইটা আমাকে করতে দাও। কারণ আমার জন্য আর কাউকে অপমানিত হতে দিতে চাই না।
জয়ঃ বাসা থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে।
ভাবিঃ গাড়ির চাবি’টা রেখে যাচ্ছ।
জয়ঃ গাড়ি লাগবে না।
জয় পলাশকে কল দিয়ে বলল, তোর সাথে কথা আছে একটু আমার সাথে দেখা করতে আয় ।
দু জন পার্কে গিয়ে বসল।
পলাশঃ কী হয়েছে তোর? এত ব্যস্ত মনে হচ্ছে কেন?
জয়ঃ আমি ইন্ডিয়াতে যাচ্ছি।
পলাশঃ যাও। সমস্যা কি?
জয়ঃ ইন্দ্রনীলকে খবরটা জানানোর প্রয়োজন আছে।
পলাশঃ ঠিক আছে। তবে ইন্ডিয়াতে গিয়ে কী করবি?
জয়ঃ সিনেমা তৈরি করব।
পলাশঃ বুঝি নাই?
জয়ঃ না বুঝার কী আছে?
পলাশঃ বাংলাদেশ ছেড়ে ইন্ডিয়াতে কেন? তোর তো এই দেশে বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে।
জয়ঃ ইন্ডিয়াতে এমন কেউ আছে ভেবে নে। আর আমি কখনো দেশকে ভুলি নাই। তবে নিজের জন্য এই কাজটা করতে বাদ্ধ হচ্ছি। হয়তো ভুল পথে চলতেছি, আর ছায়ার সাথে কথা বলতেছি। দেখ! আমরা তো মানুষ, মন বলতে তো কিছু একটা আছে, ঐ মন যখন চাচ্ছে কাছে যেতে কি আর করব দোস্ত?
জয়ঃ ইন্দ্রনীল’কে কল দিয়ে বলল, আমি ইন্ডিয়াতে আসতেছি আমার জন্য একটি বাড়ি খোঁজ।
ইন্দ্রনীল বলল, সমস্যা নাই। পায়েলের সাথে কথা হয়েছিল তাদেরে দুইটি ফ্লেট খালি পড়ে আছে। সমস্যাটা এইখানে- বাড়ি তৈরি করার সময় লোহা কম দিয়ে বাঁশ দিয়েছিল কংকিটের সাথে সিমেন্ট কম দিয়ে বালি মিশিয়ে ছিল এই গোজবটা ফাঁস হওয়ায় বাড়াটিরা বাসা বাড়া নিতে চাই না আর কি হুম! তুই চলে আয়।
জয় ইন্ডিয়া এসে উপস্থিত।
ইন্দ্রনীল, জয়কে পেয়ে আনন্দে আত্নহারা।
ইন্দ্রনীলঃ জয় আমি তো ভাবতেও পারতেছি না, তুই যে আমার সামনে বসে আসিছ, তোকে না কতবার বললাম আসতে। কিন্তুু তুই তো ব্যস্ত থাকিস।
জয়ঃ একটু হেসে বলল, আর যাব না। আমি ইন্ডিয়াতে থেকে যাব।
ইন্দ্রনীলঃ এইটা তো আমাদের সুভাগ্য।
জয়ঃ ইন্দ্রনীলকে বলল, আমি এখানে একটি সিনেমা তৈরি করতে চাই। বাংলাদেশে তো বেশে কয়েকটা করেছি। তোর আর পায়েলের সাহায্য লাগবে। তুই আর পায়েল তো ভাল অভিনয় করিছ।
ইন্দ্রনীলঃ সমস্যা নাই, তুই তো বেশ ভাল ছবি তৈরি করিস। ছবির স্কিপ্ট লিখে নিয়েছিস নাকি?
জয়ঃ সব ঠিক হয়ে গেছে। শুধু নায়িকাটা বাকি রয়ে গেল।
ইন্দ্রনীলঃ নায়কও তো লাগবে। শুধু নায়িকা দিয়ে কি ছবি শেষ হয়ে যাবে?
জয়ঃ হেসে উঠে বলল, হ্যাঁ নায়ক তো তুই আছিস আর নায়িকা তামান্নার সাথে কথা বলে দেখ। পায়েলের কিছু ভূমিকা আছে।
ইন্দ্রনীলঃ ঠিক আছে আমি তার সাথে ফোনে কথা বলে দেখতেছি ফ্রী আছে কি’না।
জয়ঃ ঠিক আছে বলে দেখ। আমি একটু আসতেছি।
ইন্দ্রনীলঃ কোথায় যা’বি?
জয়ঃ আরে! আমি কী ইন্ডিয়াতে নতুন আসছি না’কি? ছোট বেলায় তোর সাথে এই মাঠে-ঘাঠে কত হেঁটেছি। কত দুষ্টামি করেছি। কিনু্তু সময়ের অভাবের কারণে এতদিন আসতে পারি নাই।
সন্ধ্যায় দু জন ক্যান্টিনে বসল।
ইন্দ্রনীলঃ জয় তামান্নার সাথে কথা হয়েছিল। অবশ্যই সে কাজ নিয়ে অনেক ব্যস্ত আছে তারপরও তো তোর কাজটা করেদিতে হবে।
জয়ঃ মানে? আমার কাজ করেদিতে হবে মানে কি? এই ইন্ডিয়াতে কী সুপার ষ্টার এর অভাব হয়েছে না’কি? তাকে এত রিকোয়েষ্ট করে কাজ করার প্রয়োজন কি?
ইন্দ্রনীলঃ তুই এখনো আগের মতো রয়ে গেলি। মুখে এক কথা আর মনে আর এক কথা। আচ্ছা, মনের কথাটা বলতে সমস্যা কি?
জয়ঃ আসলে আমি অনেক পরিবর্তন হয়েছি। তবু আজ মনের কথাটা বলা হচ্ছে না।
ইন্দ্রনীলঃ আরে এত লজ্জার কী আছে? মানুষের তো পছন্দের অভিনেত্রী থাকতে পারে।
জয়ঃ তুই তা বুঝবি না। আমি তাকে দিয়ে অভিনয় করার জন্য এইখানে আসি নাই।
ইন্দ্রনীলঃ ব্যস্ত হয়ে বলল, তাহলে কি?
জয়ঃ সব বুঝতে পারবি আর আমাকে ক্ষমা করে দিস। আমার জন্য তোর সমস্যা হতে পারে।
ইন্দ্রিনীলঃ হেসে উঠে বলল, আমাকে নিয়ে একেবারে ভাবতে হবে না। তোর জন্য এই জীবনটাও হাসি মুখে দিয়ে দিতে পারি।
জয়ঃ হ্যাঁ আমি জানি, তুই আমার জন্য সব করতে পারিস, তাই তোর কাছে আসলাম।
ইন্দ্রনীলঃ তামান্না বলেছিল তোর যদি সময় হয় একবার তার বাসায় যেতে। সে দেখতে চায় কে সে তার এমন বক্ত?
জয়ঃ ইন্দ্রনীলের চেহেরার দিকে তাকিয়ে বলল, তার বাসায় যাওয়াটা কী ভাল হবে।
ইন্দ্রনীল হেসে উঠে বলল, আরে এইখানে ভাল খারাপের কি আছে? যদি সময় থাকে-
জয়ঃ ঠিক আছে কাল যাব।
দু জন বাসায় পৌঁছল তামান্না তাদেরে সাথে বসে অনেক গল্প গোজব করল। এমন সময় স্কুল থেকে ফিরল তামান্নার ছয় বছরের মেয়ে তওবা। তওবাকে দেখে জয় চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়াল।
তওবা প্রতিদিনের মতো আজ দৌঁড়ে এসে তামান্নাকে জড়িয়ে ধরল না। তামান্না অবাক দৃষ্টিতে তওবার দিকে তাকিয়ে রইল। তওবা দু এক পা সমনে এগিয়ে জয়ের দিকে তাকিয়ে রইল তার চোখে জল টল মল করতেছে। জয়ও তার দিকে তাকিয়ে রইল। তওবা দৌঁড়ে এসে জয়কে বুকে জড়িয়ে ধরে বলল, পাপ্পা তুমি এতদিন কোথায় ছিলে? আমি না তোমাকে অনেক খোঁজেছি।
জয়ঃ কোন কথার জবাব না দিয়ে তওবাকে বুকে জড়িয়ে ধরল।
ইন্দ্রনীল আর তামান্না বোবা হয়ে রইল।
তওবা জয়কে বলল, পাপ্পা তুমি যদি আমাকে একা রেখে আবার চলে যাও আমি অনেক কষ্ট পাব। পাপ্পা তুমি যেখানে যাও আমাকে নিয়ে যেও।
তামান্নাঃ জয়ের কাছে এসে বলল, সরী! আসলে ওর মানসিক সমস্যা আছে, মাঝে মাঝে সে এমন কথা বলে।
জয়ঃ তামান্নার দিকে তাকিয়ে বলল, তা কোন সমস্যা না। সব ঠিক হয়ে যাবে।
জয় আর ইন্দ্রনীল বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলো। জয় অল্প হেঁটে একটি বার তওবার দিকে তাকাল। তখন ইন্দ্রনীলের বুঝতে আর দেরি হল না। তওবাকে ছেড়ে আসতে জয়ের হৃদয়টা ভেঙ্গে চুছির হয়ে যাচ্ছে।
তওবাঃ তামান্নাকে দু হাত দিয়ে জড়িয়ে রইল আর দু চোখে থেকে জল ঝরতেছে।
বাসায় পৌঁছে ইন্দ্রনীল জয়কে বলল, আমি তো কিছুই বুঝতে পারলাম না।
জয়ঃ আমি কাল বাংলাদেশে চলে যাচ্ছি।
ইন্দ্রনীলঃ ব্যস্ত হয়ে বলল, কী হয়েছে তোর? আমার কাছে কিছু গোপন করবি না।
জয়ঃ আমি থাকলে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হবে আমি তা চাই না।
ভোর সকালে ইন্দ্রনীল জয়ের বাসায় এসে উপস্থিত।
জয়ঃ কী হয়েছে? তুই এত সাতসকালে?
ইন্দ্রনীলঃ তামান্না তোর মোবাইল নাম্বার চেয়ে ছিল-
জয় বলল, হ্যাঁ জানি আর তুই দিয়ে দিলি- সমস্যা নাই। আমি রিসিভ করি নাই।
ইন্দ্রনীলঃ তুই রিসিভ করিস নাই ঠিক আছে। তবে সে এখন আমার বাসায়।
জয়ঃ কি? এইটুকু বলে বিছনা থেকে উঠে দাঁড়াল।
জয়ঃ তামান্নার উদ্দেশ্যে রওনা হলো। বাসায় আসার সাথে সাথে তওবা জয়কে ঝড়িয়ে ধরে বলল, পাপ্পা তুমি কী আমাকে ছেড়ে চলে যা’বে?
জয়ঃ তার কথার কোন উত্তর দিতে পরল না। জয় তাকে বুকে ঝড়িয়ে ধরে চোখের জল মুছতে লাগল।
তামান্নাঃ আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত তবু- কথা শেষ না হতে জয় বলল, কোন চিন্তা করবেন না। তওবা আমার সাথে থাকবে।
তওবা এখন জয়ের সাথেই আছে। তওবার দেখা শোনার সব দায়িত্ব এখন জয়ের কাছে। তওবা জয়েকে ছাড়া এক মুহূর্তও থাকতে পারে না।
জয়ঃ সকালে তওবাকে স্কুলে পৌঁছে দিল। সেখানও সবাই জনতে পারল জয় তওবার বাবা। তওবা তো জয়কে ছাড়া আর কাউকে বাবা বলে মেনে নিতে পারতেছে না। সারা দেশের লোকে জানতে পারল “জয়” তওবার বাবা। তবে তামান্নার তো স্বামী আছে। তামান্না আরেক জনের স্ত্রী। এই বিতর্কটা সত্যি অসহ্য।
হঠাৎ তামান্না এসে জয়কে বলল, আপনি অনেক কষ্ট করছেন আমাদের জন্য- কথা শেষ না হতে জয় বলে উঠল এখন আর করতে হবে না তাই বলতেছেন তাই না? আসলে তওবাকে ছাড়া থাকতে আমারও কষ্ট হবে। আর এইখানে থাকলে আপনি বিতর্কে পড়বেন। তাই ঠিক করলাম আমি আজ বাংলাদেশে ফিরে যাব।
ইন্দ্রনীলঃ জয়কে বলল, জয়! এসবের মানে কী? আমি তো কিছুই বুঝতে পারতেছি না।
জয়ঃ ইন্দ্রনীলকে লক্ষ্য করে বলল, সত্যি তওবা আমার মেয়ে আর তামান্না-
ইন্দ্রীনীলঃ তাকী ভাবে সম্ভব?
জয়ঃ তামান্নার সাথে আমার প্রথম দেখা কয়েক দিন আগে হয়েছিল। আর তখন তওবার বয়স ছয় বছর। এসব ইশ্বরের ইচ্ছা। ইশ্বর যাকে যার সন্তান মনোনিত করে তাদের মাধ্যমে পৃথিবীতে পাঠাই। আর ইশ্বর চাইলে অন্য রূপও করতে পারেন। আর যেদিন তওবা তামান্নার গর্ভে আসে। সেদিন তার স্বামী তার কাছে ছিল না। যাই হোক! আমি চাই না একটি সুন্দর পরিবার নষ্ট করে দিতে। আমি কাল বাংলাদেশে চলে যাব। তোকে একটি কথা বলে যায়, তওবাকে বাঁচানো যাবে না।
ইন্দ্রনীলঃ তহলে তুই চলে যাবি কেন?
জয়ঃ আমার আর কোন উপায় নাই। যেভাবে মিড়িয়া প্রচার করতে লাগল। তামান্নার তো সমাজে মুখ দেখা দায় পড়ে যাচ্ছে।
ইন্দ্রনীলঃ জয় আমি তোকে যতটা চিনি এই পৃথিবীর আর কেউ ততটা জানে না। তুইতো অলৌকিক মানুষ। একটি সত্যি কথা বল আজ?
জয়ঃ বল কী কথা?
ইন্দ্রনীলঃ তামান্নটা কে?
জয়ঃ ইন্দ্রনীলকে বুকেটেনে নিয়ে বলল, কেন জানতে চাস্ কে সে? তারপর জয় চুপ হয়ে গেল-।
ইন্দ্রনীলঃ জয় চুপ করে থাকিস না, বল কে সে?
জয়ঃ সে আমার জীবন সঙ্গী। পৃথিবীতে আসার আগে দু-জন একি সাথে ঘর সাজিয়ে ছিলাম। সৌর জগতের একটি গ্রহে। আর তওবা আমাদের সন্তান।
তারপর জয় বাংলাদেশে চলে আসল। বাসায় আসা মাত্র ভাবি বলল, ভাইয়া-
জয়ঃ ভাবি যাই হওয়ার তাই হয়েছে। তাই নিয়ে আর ভেবে লাভ নাই- আমাকে এক গ্লাস পানি দাও।
নীরব নিস্তব্দ রাত। আকাশের মিটি মিটি তারা জ্বলতেছে। জোনাকিরা মনের সুখে ঘুরো বেড়াচ্ছে। ঝিঁ ঝিঁ অবিরত স্বজন হারা সুর তুলে যাচ্ছে। জয়ও আজ তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে বাসার ছাদের উপর নীরবে দাঁড়িয়ে আছে। তার নয়ন কোণে দু-এক ফোটা জল জমে রইল। হয়তো কোন বিষাদ বুকের মাঝে ঢেউ তুলল।
ভাবি এসে বলল, ভাইয়া রাত অনেক হয়েছে ঘুমাবে না? জয়, আনমনা হয়ে বলল, হ্যাঁ ঘুমাব।
পলাশ আর জয় দু জন নদীর পাড়ে বসে আছে। কারো মুখ দিয়ে কোন কথা আসতেছে না।
পলাশঃ জয়! তুইতো এখন আরো বেশি ভেঙ্গে পড়লি। তোকে সান্ত্বনা দেওয়ার মতো ভাষা আমার নাই।
জয়ঃ পলাশ আমি জানতাম না এত বড় সমস্যা সৃষ্টি হয়ে যাবে। তামান্না তো আমাকে ক্ষমা করতে পারবে না। সাবার কাছে তাকে-
পলাশঃ জয় চিন্তা করিস না সব ঠিক হয়ে যাবে। তবে তওবাকে তো দেশে নিয়ে আসা দরকার না হয়-
জয়ঃ আমার কিছুই করার নাই। তাকে যদি আমি নিয়ে আসি তামান্নার বুকটা খালি হয়ে যাবে। আমি তা চাই না। তবে কী করব নিজেও জানি না।
এদিকে তামান্নার স্বামী তার সাথে রেগে আছে।
তামান্নাঃ আসলে তুমি কি আমাকে সন্দেহ করতেছ?
স্বামীঃ সন্দেহ করার কী আছে? সব তো প্রমাণ হয়ে গেছে। সবাই জানতে পারল তুমি একটি নষ্ট মেয়ে।
তামান্নাঃ মুখ সামলে কথা বলো, ছোট একটি বিষয় নিয়ে এত চেছামেছির কী দরকার?
স্বামীঃ তুমি তো নষ্ট মেয়ে, তাই বিষয়টা তোমার কাছে ছোট।
তামান্নার চেহেরাই মেঘ নেমে আসল। তামান্না বলল, তুমি কী বলতে চাও?
স্বামীঃ তালাক।
তারপর দু জন আলাদা হয়ে গেল। তওবার বিষয়টা তামান্না জানত এইটা একটি মানসিক সমস্যা এইখানে কোন বাস্তবতা নাই।
জয় এখন ঘর সংসার থেকে অনেক দূরে। পরিবারের কারো সাথে কোন সম্পর্ক নাই।
জয় ব্রীজের উপর বসে আসে এমন সময় তার মোবাইল বেজে উঠল।
জয়ঃ প্রথমে কল রিসিভ করল না। বেশ কয়েক বার কল আসার পর দেখতে পেল ইন্দ্রনীলের কল। জয়, রিসিভ কারার সাথে সাথে বুঝতে দেরি হলো না। কোন বিপদ ঘঠে গেল।
ইন্দ্রনীল হাঁপতে লাগল। কোন কথা মুখ দিয়ে আসতেছে না।
ইন্দ্রনীলঃ জয় তুই ইন্ডিয়া চলে আয় তওবা এঙসিডেন্ট করছে। এখনো তার জ্ঞান ফিরে নাই।
জয় চলে আসল ইন্ডিয়া। হাসপাতালে গিয়ে দেখতে পেল তওবা চিটে শুয়ে আছে। তার পাশে ইন্দ্রনীল ও তামান্না বসে আছে।
জয়ঃ তওবাকে বুকে ঝড়িয়ে ধরে চিৎকার দিয়ে ডাকল। তবে কোন উত্তর আসল না। ডাক্তারের সাথে কথা বলল, ডাক্তার বলল, আমরা কিছুই বলতে পারতেছি না।
জয়, অশ্রুসিক্ত নয়ন নিয়ে মসজিদে এসে বলল, হে আল্লাহ! তুমি তো মুত্যুকে জীবিত কর আর জীবতকে মৃত্যু দাও। হে আল্লাহ! তুমি তো সব কিছুর অধিকারী। তুমি আমাকে এত বড় সাজা দিয় না। হে মওলা! আমার কাছ থেকে তওবাকে কেঁড়ে নিও না।
জয় পাগলের মতো হয়ে নিজের মাথা মাটির সাথে আঘাত করতে লাগল।
ইন্দ্রনীর দৌঁড়ে এসে বলল, জয়! তওবার জ্ঞান ফিরছে! তওবা তোকে খোঁজতেছে।
জয়, দৌঁড়ে গিয়ে তওবাকে বুকে টেনে নিল।
তওবাঃ জয়ের চেহেরাই হাত বুলিয়ে বলল, পাপ্পা! তুমি কী আমাকে ছেড়ে চলে যাবে?
জয়ঃ না মা! তোকে ছেড়ে কোথাও যাব না।
বেশ কয়েক দিন পর তওবা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠল। জয় বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। জয়ের সাথে তামান্না ও তওবা অল্প হেঁটে আসল।
ঠিক এই ভাবেঃ
জয় সামনে তওবা তার পিছনে আর তামান্না তওবার পিছনে। মানে হচ্ছে তওবার এক হাত জয় ধরে হাঁটতেছে আর এক হাত তামান্না ধরে রাখছে। অল্পক্ষণ হাঁটার পর তওবা থমকে দাঁড়ল। কারণ তামান্না আর সামনে না এগিয়ে দাঁড়িয়ে গেল। আপনারা তো বুঝতে পারছেন? তওবার হাতটা তামান্নার ধরা ছিল তাই তওবা আর সামনে পা বাড়াতে পারল না। জয়েরও বুঝার বাকি রইল না।
জয়ঃ তওবার হাতটা ছেড়ে দিয়ে সামনের দিকে এগুতে চাইল কিন্তুু তাও পারল না। কারণ জয় তওবার হাত ছেড়ে দেওয়ার সাথে সাথে তওবা জয়ের হাতটা ধরে পেলল। তামান্নারও আর বুঝার দেরি হলো না। তামান্না তওবার হাতটা ছেড়ে দিল। তামান্না যখন তওবার হাতটা ছেড়ে দিল তওবা তামান্নার হাতটা ধরে পেলল। বাকিটা বলব না।
৯ই অগ্রাহায়ণ ১৪২২ বাংলা, ২৩শে নভেম্বর ২০১৫ খৃষ্টাব্দ
সমাপ্ত
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
আলম সারওয়ার ১৮/০৫/২০১৭সুন্দর লিখনী চিরকাল বেচেঁ থাকবে। শুভেচ্ছা
-
শরীফ আহমাদ ১৫/০৫/২০১৭অনেক সুন্দর লেখণি....।ধন্যবাদ অশেষ...
-
মধু মঙ্গল সিনহা ১৫/০৫/২০১৭খুব সুন্দর মিলনাত্মক গল্প। ভালো লাগলো।
-
ফয়জুল মহী ১৫/০৫/২০১৭ভালবাসা এবং ভালবাসা