বিষাক্ত ভালবাসা
বিষাক্ত ভালবাসা
মোমিনুল হক আরাফাত
তামান্না বিশ্বাস ভাঙ্গল যত বিশ্বাস। পৃথিবীটা এই রকম এইখানে সকাল বিকাল চলে বিশ্বাস ভাঙ্গার পালা। জয়ের বিশ্বাসও ভাঙ্গল, তামান্না বিশ্বাস। তামান্না আজ অন্য কারো। যত দুঃখ সব জয়কে দিয়ে গেল। দেখি তাদের মাঝে কী হয়েছিল। কেন তামান্না জয়কে ভুলে গেল।
সৌরজগত অনেক গ্রহ আছে। তাদের মাঝে পৃথিবী নামের একটি গ্রহে বাস করে মানুষ। অন্য গ্রহে কী বাস করে আমরা না জানলেও তামান্না আর জয় ঠিকেই জানত। এই পৃথিবীতে মানুষ বাস করে। তামান্না আর জয় আমাদের মত মানুষ ছিল না। তারা দুজন বাস করত সৌরজগতের একটি গ্রহে। তাদের ছিল রাজ প্রাসাদ। ঐ গ্রহে তামান্না আর জয় ছাড়া অন্য কোন মানুষ বা প্রাণী বাস করত না। তারা দু জন অলৌকিক মানুষ। সৌরজগতে ছোট্ট গ্রহ দীপালি’তে বাস করত জয় আর তামান্না। তামান্না যেমন জয়কে অনেক ভালবাসত। জয়ও তেমন তামান্নার প্রেমে মগ্ন ছিল। দীপালি গ্রহে দিন রাতের পরিবর্তন হত না। ঐ গ্রহে সদা দিন থেকে যেত।
জয়ঃ তখন একটি মেঘের উপর বসে ধ্যান মগ্ন ছিল। তামান্না এসে জয়ের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। তামান্নার গন্ধ পেয়ে জয়ের ধ্যান ভেঙ্গে গেল। জয়, চোখ খুলে তামান্নার দিকে তাকিয়ে বলল, জান! কী হল তোমার? তোমাকে এত বিষন্ন দেখাচ্ছে কেন? তোমার কী মন খারাপ?
তামান্নাঃ জয়ের পাশে বসে বলল, হ্যাঁ গো! আমার এই দীপালি গ্রহে আর থাকতে ইচ্ছা হচ্ছে না।
জয়ঃ তামান্নার দিকে তাকিয়ে বলল, তামান্না! তুমি এসব কী বলতেছ? আমরা দু জন তো অনন্তকাল ধরে এই জগতে আছি। আগামীতেও থাকব।
তামান্নাঃ জান! তুমি তো জান আমার যা ইচ্ছা হয় তাই করতে হয়। না হয় আমার কিছু ভাল লাগে না।
জয়ঃ তা তো জানি! এখন কী করা যায়?
তামান্নাঃ আমি পৃথিবী জগতে যেতে চাই। আমি মানুষের সাথে বাস করতে চাই। আমি দেখতে চাই মানুষের জীবনটা কত বিচিত্র। এসব কথা শুনে জয়ের চেহেরায় মেঘ নেমে আসল।
জয়ঃ তামান্নাকে বুকে ঠেনে নিয়ে বলল, জান! তুমি কী জান না? পৃথিবী জগৎটা আমাদের জন্য কত কষ্টকর। আমরা তো এইখানে অনেক সুখে আছি।
তামান্নাঃ জয় আমি এত দিন এই জগতে সুখে ছিলাম। তবে এখন থেকে আর এক মুহূর্তের জন্যও আমি সুখী না।
জয়ঃ তামান্নার মাথায় হাত রেখে বলল, আমি জানি, তুমি সুখী হবে না এই গ্রহে। তবে তুমি জান না, আমি যা জানি।
তামান্নাঃ জয়ের দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে বলল, জয় তুমি কী জান?
জয়ঃ আমরা যদি পৃথিবীতে যাই। দু জন দু জনাকে হারিয়ে পেলব।
তামান্নাঃ ঠিক আছে তাহলে আমি পৃথিবী থেকে ঘুরে আসি।
জয়ঃ আমিও যাব।
তামান্নাঃ তাহলে তো দু-জন দু জনকে হারিয়ে পেলব।
জয়ঃ যদি হারিয়ে যাও খুঁজে নিব।
তামান্নাঃ না জয় ! এত বড় পৃথিবীতে তুমি আমাকে খুঁজে পাবে না।
জয়ঃ তুমি আমার অন্তরে তুমি গেঁতে আছ, কখনো তুমি হারিয়ে যেতে পর না। পৃথিবীর যে প্রান্তে থাক না কেন আমি তোমাকে খুঁজে নিব। তুমি যদি পৃথিবীতে যাও আর এই গ্রহে ফিরে আসবে না। এই গ্রহ আর আমার কথা তুমি ভুলে যাবে। তাই আমিও যাব। যেখানে থাক না কেন। আমি তোমাকেই খুঁজে পাব। তুমি মন খারাপ করো না।
তামান্নাঃ জয়কে বুকে ঠেনে নিয়ে তার কপালে একটি চুম্বন করল।
তামান্না বিশ্বাস বর্তমানে মুম্বাই বাস করতেছে। জয় বর্তমানে বাংলাদেশে।
ঘন অন্দকারের রাতে। জয় একটি পাহাড়ের উপর নামল। সকাল হল, জয় দেখতে পেল হাজার হাজার মানুষ চলা-চল করতেছে। জয় আজ বুঝতে পারল সত্যি সে তামান্নাকে হারিয়ে পেলল। পাহাড় থেকে নেমে দেখতে পেল একটি যুবক ছল ছল চোখে হেঁটে যাচ্ছে।
জয়ঃ তার পাশে দাঁড়াল। জয় যুবকটাকে বলল, তোমার কাছে যে অস্তটা আছে তা আমাকে দিয়ে দাও। যুবকটা হা করে তাকিয়ে রইল।
জয় বলল, চল।
যুবকটা বলল, কোথায়?
জয় বলল, তোমার বাসায়। তারপর দু জন বাসায় এসে উপস্থিত। জয় ছেলেটাকে বলল, তোমার নাম কী? ছেলেটা বলল, ইমন, জয় বলল, তুমি কী কর আমি জানি। ছেলেটি বলল, আমি বাদ্ধ হয়ে এই পথে এসেছি। এক সময় আমি সৎ ছিলাম, বিনা চিকিৎসাই বাবা মা মারা গেল। ছোট বোনটি আত্নহত্যা করল যৌতুকের টাকর করণে বিয়ে ভেঙ্গে ছিল বলে। তিন মাস জেলে থাকত হল বিনা অপরাধে।
জয় বলল, এসব ভুলে যাও। জয় ইমনকে বলল, ঐ দিকে তাকিয়ে কিছু দেখতে পাও কিনা দেখ। ইমন বলল, একটি রাজ প্রাসাদ দেখতে পাচ্ছি। জয় বলল, পছন্দ হয়েছে? ইমন বলল, পছন্দ হলেও কিছু কারার নাই। জয় একটু হেসে বলল, চোখ বন্ধ কর।
ইমন চোখ খোলে দেখতে পেল তারা দু জন রাজ প্রাসাদটিতে। ভয়ে ইমনের শরীর কাঁপতে লাগল। জয় বলল, ভয়ের কোন কারণ নাই আমি তোমার বন্ধু। তোমার যা প্রয়োজন হয় তাই পাবে। ইমন বলল, আপনি কে?
জয়ঃ আমি অলৌকিক মানুষ আমি আমার সঙ্গীকে খুঁজতে এই পৃথিবীতে এসেছি। ইমন জানলা দিয়ে তাকিয়ে দেখতে পেল একটি আগুনের টুকরু তাদের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ইমন বলল, জয়, দেখ কী-
জয়ঃ আগুনের দিকে হাত প্রসারিত করার সাথে সাথে আগুনটা বিলীন হয়ে গেল। জয়, ইমনকে লক্ষ্য করে বলল, ভয়ের কোন কারণ নাই ওরা কিছু শয়তান পৃথিবীর দিকে অগ্রসর হতে চেয়েছিল। তারা যদি পৃথিবীতে আগমন করত। পৃথিবীর বুকে ভয়াবহ বন্য হয়ে অনেক মানুষ মরা যেত।
জয়ঃ একটি মোম জ্বালিয়ে, ইমনকে বলল, ইমন তুমি এই আগুনের মাঝে কিছূ দেখতে পাচ্ছ? ইমন বলল, হ্যাঁ একটি সন্দুরী মেয়ে আর তার হাত ধরে হাঁটতেছে একটি যুবক। কথা শেষ না হতে জয়, একটি চুরি নিয়ে তার বাম হাতের উপর ডুকিয়ে দিল। ইমন ব্যস্ত হয়ে বলল, ভাই তোমার কী হয়েছে? তুমি কী পাগল হয়ে গেছ?
জয় বলল, হ্যাঁ ভাই আমি পাগল হয়েগেছি। জয়, ডান হাত দিয়ে ইশারা করার সাথে সাথে তার চারি ধারে আগুন জ্ববে উঠল। আর জয় আগুনের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে । ইমন শত চেষ্টার পরও আগুন নিভাতে না পেরে নিজেও আগুনের মাঝে লাপ দিলে। সাথে সাথে জয় আগুন নিভেয়ে নিল। জয় ইমনকে বলল, ভাই, তুই কেন আমার সাথে নিজেকে ঝড়াবি আমার ভিতর তো জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে। তাই আমি নিজেক কষ্ট দিচ্ছি।
ইমন বলল, আমার তো এই পৃথিবীতে তুমি ছাড়া আর কেউ নাই। তোমার যদি কিছু হয়ে যায়। আমি কী নিয়ে বাঁচব? তোমার কী হল কেন এই পাগলামি করতেছ। তুমি তো অলৌকিক মানুষ তুমি চাইলে সব করতে পার।
জয় বলল, হ্যাঁ আমি সব করতে পারি, তবে তোমার সাহায্য লাগবে। ইমন বলল, আমি তোমার জন্য সব করতে পারি। বল কী করতে হবে?
জয়ঃ আমি তো পৃথিবী সম্পর্কে অবগত নয়। দেখো তো এই লিখাটা কি। ইমন বলল, এইটা তো হিন্দি ভাষায় লিখা।
জয় বলল, এইটা কোন দেশ। ইমন বলল, এইটা ইন্ডয়া, ভাই তুমি তো অলৌকিক মানুষ তুমি তো অনেক কিছু জান ঐ দেশটা চিনতে পরতেছন না?
জয়ঃ না, আমি এই পৃথিবীর সম্পর্কে তেমন কিছূ পারি না। আমার এক হাজার কিলোমিটার এর মধ্যে যা হয় তা জানতে পারি শুধু।
ইমন বলল, তাহলে চল, আমরা ইন্ডিয়ায় যাই। দু জন মুম্বাই শহরে এসে উপস্থিত। ইমন বলল, ভাই অনেক দিন হচ্ছে মনে আনন্দের ছোঁয়া লাগতেছে না। আজ শান্তিনগর মহিলা কলেজে নিত্য অনুষ্ঠান হচ্ছে যদি-
জয় বলল, ঠিক আছে তুমি যাও।
ইমন বলল, যদি তুমি না যাও আমি যাব না। জয় বলল, আরে তুমি কী আমার সাথে রাগ করেছ? আমি তো একটু অন্য চিন্তার মধ্যে আছি তাই যেতে পারতেছি না, তুমি যাও ।
জয় বলল, আজ ভিন্ন গ্রহের একটি দানব পৃথিবীর বুকে আসতেছে সে মানুষদের হত্যা করেব। তাই আমি যেতে পারতেছি না।
ইমন চলল-
গানের অনুষ্ঠান শুরো হয়ে গেল।
জয়ঃ বিশাল একটি দালানের উপর দাঁড়িয়ে দানবটিকে দেখতে লাগল। দানবটি দ্রতু বেগে পৃথিবীর দিকে আসতেছে। জয়ও দানবটিকে লক্ষ্য করে আকাশেরে দিকে অগ্রসর হল। দানবটি বিশাল একটি পাথর নিয়ে পৃথিবীর দিকে ছুটে মারল। পাথরটা অনুষ্ঠানের দিকে অগ্রসর হল। ইমন, পাথরটা দেখতে পেয়ে সবাইকে সরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করল।
জয় উড়ে এসে পাথরটা ধরে পেলল। দানবটা জয়কে আঘাত করতে লাগল। জয়, পাথরটা দানবের উপর চাপিয়ে দিল। জয় মুক্তি পেয়ে গেল ভাবল। সবাই জয়ের দিকে তাকিয়ে রইল। পর মুহূর্তে দেখতে পেল পাথর ভেঙ্গে দানবটা উঠে গেল জয় দানবটির দিকে অগ্রসর হল। দানবটি আর জয়ের দিকে অগ্রসর না হয়ে। ঐ মেয়েটিকে আঘাত করতে চাইল; যে মেয়েটি মঞ্চ এর মধ্যে নাচ করেছিল। দানবটি এক কন্ড পাথর মেয়েটির উপর চাপিয়ে দিল।
জয়ঃ দৌঁড়ে গিয়ে মেয়েটিকে বুকে ঝুড়িয়ে নিল। এইবার জয়, হাত দিয়ে ইশারা করার সাথে সাথে দানবটির গায়ে অগুন লাগে গেল। মেয়েটি মুক্তি পেয়ে গেল।
জয় আর কারো সাথে কোন কথা না বলে চলে যাচ্ছে। মেয়েটা এসে জয়কে বলল, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আমার জীবন বাঁচানোর জন্য।
জয়ঃ কোন কথা না বলে সোজা সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। মেয়েটি জয়ের সামনে এসে দাঁড়িেয়ে বলল, কী হল আপনি কী কথা বলতে পারেন না?
জয়ঃ চুপ করে রইল।
ইমন বলল, কথা বলেেত পারে তবে মেয়েদের একটু লজ্জা পাই। মেয়েটি বলল, কথা বলতে লজ্জা পাই। আর মেয়েটিকে জড়িয়ে ধরতে লজ্জা পায় না মা’নে কি?
জয় বলল, তোমার জীবন বাঁচানোটা প্রয়োজন ছিল। তাই জড়িয়ে ধরে ছিলাম। যদি অপরাধ হয়ে থাকে ক্ষমা করে দিও। মেয়টি বলল, আমি তো অপরাধ বলি নাই-আচ্ছা বলেন তো আপনি কে?
জয়ঃ একটু হেসে বলল, আমার কোন পরিচয় নাই। মেয়েটি বলল, আচ্ছা! ঐ দানবটা কেন আমাকে আঘাত করতে চাইল? জয় বলল, তা কী করে আমি জানি? এই গুলো আপনাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমার কাজ শুধু নিরাপত্তা দেওয়া।
মেয়েটি বলল, আপনি যদি চলে যান ঐ দানবটি আবার আমাকে আঘাত করতে পারে। মেয়েটির কথা শোনে জয়, দাঁড়িয়ে গেল। জয় বলল, আমি যত দিন এই পৃথিবীর বুকে থাকব তত দিন কেউ তোমার কোন ক্ষতি করবে না, এইবার চলি। মেয়েটি বলল, না। আপনি যদি চলে যান আমার নিরাপত্তা নাই। জয় বলল, তাহলে কী করতে পারি? মেয়েটি বলল, আমার নিরপত্তার জন্য আপনাকে প্রয়োজন। জয় বলল, তোমার নিরাপত্তার জন্য যদি আমাকে প্রয়োজন হয় তাহলে সমস্যা হতে পারে তামান্না বিশ্বাস। মেয়েটি আশ্চর্য হয়ে বলল, আপনি আমার নাম জানেন? জয় বলল, আমি কখনো ভুলি না যা মানুষে ভুলে যায়।
জয় আর ঈমন, তামান্নার বাসায় এসে উপস্থিত।
ইমন জয়কে লক্ষ্য করে বলল, এত সুন্দরি একটি মেয়ে তোমাকে চাই তার পরও কী মন খারাপ?
জয়ঃ কোন উত্তর দিতে পারল না।
তামান্না এসে বলল, চল আমি-
কথা শেষ না হতে জয় বলল, যাও তোমার জন্য শুভ্র অপেক্ষা করতেছে।
তামান্নাঃ জয়ের দিকে তাকিয়ে বলল, আরে তুমি তার নামও জান।
জয়, কোন কথার উত্তর দিল না।
তামান্নাঃ চল দেরি হয়ে যাচ্ছে। জয়, বলল, তোমার কোন ক্ষতি হবে না তুমি একা যাও।
তামান্নাঃ তোমার কী কোন সমস্যা আছে?
জয়ঃ না সমস্যা নাই, মনে কষ্ট আছে। তাই একা থাকতে চাই।
তামান্নাঃ তাহলে ইমনকে নিয়ে যাই।
জয়ঃ যেতে পার এইটুকু বলে বাসা থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে।
তামান্না ব্যস্ত হয়ে বলল, কোথায় যাচ্ছ?
জয় কোন উত্তর দিল না। অল্প হাঁটার পর তার সারা শরীরে আগুন জ্বলে উঠল। তারপর কোথায় বিলীন হয়ে গেল কেউ বুঝতে পারল না।
তামান্নাঃ ইমনকে বলল, জয় কী মানুষ না? ইমন বলল, না সে মানুষ না। জয় তার সঙ্গীকে খোঁজতে এই পৃথিবীতে আসছে।
তামান্নাঃ শুভ্রর সাথে দেখা করে বাসায় ফিরার সময় দেখতে পেল জয়, রাস্তার পাশে পড়ে আছে।
তাকে বাসায় নিয়ে আসার পর যখন তার ঞ্জান ফিরল। তখন সে তামান্নার দিকে তাকিয়ে নম্র কণ্ঠে বলল, “তামান্না তুমি কী শুভ্রকে ভালবাস?”
তামান্না উত্তর দিলঃ জীবনেরে চেয়েও বেশি ভালবাসি।
জয়ঃ বলল, তুমি কী ভুলে গেছ তুমি কে?
তামান্নাঃ আমি আবার কে? কি অদ্ভত প্রশ্ন।
জয়ঃ হ্যাঁ অদ্ভত! আমরা তো দু জন এক অপরের জীবন সঙ্গী। আমরা দু জন দীপালি গ্রহে ছিলাম। তুমি এই পৃথিবীতে এসে সব ভুলে গেছ।
তামান্নাঃ জয়ের দিকে তাকিয়ে বলল, তুমি নেশা করে মাতলামি করতেছ, এখন আমার বাসা থেকে বেরিয়ে যাও।
ঈমন তামান্নাকে বুঝাতে চেষ্টা করল। কিন্তু তামান্না এসব কিছু বিশ্বাস করল না।
জয়ঃ আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল, এইটাই সত্য পৃথিবীটা বড় নির্মম। সঙ্গী হারা ব্যথাটা কত তীব হয়, তা বুঝেছি।
ঈমন আর জয় সাগরের তীরে দাঁড়িয়ে আছে। ঈমন জয়ের দিকে তাকিয়ে বলল, ভাই!
জয়ঃ ঈমনকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলল, তামান্নাকে হারিয়ে যত কষ্ট পেয়েছি। তার চেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে। তোকে ছেড়ে যেতে।
ঈমন বলল, আমারও কষ্ট হচ্ছে ভাই। তুমি এইখানে থেকে যাও।
জয় বলল, এই জগতে থাকলে বারে বারে তামান্নাকে মনে পড়বে।
তারপর সাগরের ভিতর থেকে একটি রাজ প্রাসাদ উঠে আসল। জয় ঐ প্রাসাদের ভিতর দিয়ে মহা শূন্যর দিকে চলে গেল। তার পর থেওে আর কোন দিন জয়কে পৃথিবীর বুকে দেখা যায় নি।
১১ই কর্তিক ১৪২২বাংলা,
২৪-১০-২০১৫
মোমিনুল হক আরাফাত
তামান্না বিশ্বাস ভাঙ্গল যত বিশ্বাস। পৃথিবীটা এই রকম এইখানে সকাল বিকাল চলে বিশ্বাস ভাঙ্গার পালা। জয়ের বিশ্বাসও ভাঙ্গল, তামান্না বিশ্বাস। তামান্না আজ অন্য কারো। যত দুঃখ সব জয়কে দিয়ে গেল। দেখি তাদের মাঝে কী হয়েছিল। কেন তামান্না জয়কে ভুলে গেল।
সৌরজগত অনেক গ্রহ আছে। তাদের মাঝে পৃথিবী নামের একটি গ্রহে বাস করে মানুষ। অন্য গ্রহে কী বাস করে আমরা না জানলেও তামান্না আর জয় ঠিকেই জানত। এই পৃথিবীতে মানুষ বাস করে। তামান্না আর জয় আমাদের মত মানুষ ছিল না। তারা দুজন বাস করত সৌরজগতের একটি গ্রহে। তাদের ছিল রাজ প্রাসাদ। ঐ গ্রহে তামান্না আর জয় ছাড়া অন্য কোন মানুষ বা প্রাণী বাস করত না। তারা দু জন অলৌকিক মানুষ। সৌরজগতে ছোট্ট গ্রহ দীপালি’তে বাস করত জয় আর তামান্না। তামান্না যেমন জয়কে অনেক ভালবাসত। জয়ও তেমন তামান্নার প্রেমে মগ্ন ছিল। দীপালি গ্রহে দিন রাতের পরিবর্তন হত না। ঐ গ্রহে সদা দিন থেকে যেত।
জয়ঃ তখন একটি মেঘের উপর বসে ধ্যান মগ্ন ছিল। তামান্না এসে জয়ের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। তামান্নার গন্ধ পেয়ে জয়ের ধ্যান ভেঙ্গে গেল। জয়, চোখ খুলে তামান্নার দিকে তাকিয়ে বলল, জান! কী হল তোমার? তোমাকে এত বিষন্ন দেখাচ্ছে কেন? তোমার কী মন খারাপ?
তামান্নাঃ জয়ের পাশে বসে বলল, হ্যাঁ গো! আমার এই দীপালি গ্রহে আর থাকতে ইচ্ছা হচ্ছে না।
জয়ঃ তামান্নার দিকে তাকিয়ে বলল, তামান্না! তুমি এসব কী বলতেছ? আমরা দু জন তো অনন্তকাল ধরে এই জগতে আছি। আগামীতেও থাকব।
তামান্নাঃ জান! তুমি তো জান আমার যা ইচ্ছা হয় তাই করতে হয়। না হয় আমার কিছু ভাল লাগে না।
জয়ঃ তা তো জানি! এখন কী করা যায়?
তামান্নাঃ আমি পৃথিবী জগতে যেতে চাই। আমি মানুষের সাথে বাস করতে চাই। আমি দেখতে চাই মানুষের জীবনটা কত বিচিত্র। এসব কথা শুনে জয়ের চেহেরায় মেঘ নেমে আসল।
জয়ঃ তামান্নাকে বুকে ঠেনে নিয়ে বলল, জান! তুমি কী জান না? পৃথিবী জগৎটা আমাদের জন্য কত কষ্টকর। আমরা তো এইখানে অনেক সুখে আছি।
তামান্নাঃ জয় আমি এত দিন এই জগতে সুখে ছিলাম। তবে এখন থেকে আর এক মুহূর্তের জন্যও আমি সুখী না।
জয়ঃ তামান্নার মাথায় হাত রেখে বলল, আমি জানি, তুমি সুখী হবে না এই গ্রহে। তবে তুমি জান না, আমি যা জানি।
তামান্নাঃ জয়ের দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে বলল, জয় তুমি কী জান?
জয়ঃ আমরা যদি পৃথিবীতে যাই। দু জন দু জনাকে হারিয়ে পেলব।
তামান্নাঃ ঠিক আছে তাহলে আমি পৃথিবী থেকে ঘুরে আসি।
জয়ঃ আমিও যাব।
তামান্নাঃ তাহলে তো দু-জন দু জনকে হারিয়ে পেলব।
জয়ঃ যদি হারিয়ে যাও খুঁজে নিব।
তামান্নাঃ না জয় ! এত বড় পৃথিবীতে তুমি আমাকে খুঁজে পাবে না।
জয়ঃ তুমি আমার অন্তরে তুমি গেঁতে আছ, কখনো তুমি হারিয়ে যেতে পর না। পৃথিবীর যে প্রান্তে থাক না কেন আমি তোমাকে খুঁজে নিব। তুমি যদি পৃথিবীতে যাও আর এই গ্রহে ফিরে আসবে না। এই গ্রহ আর আমার কথা তুমি ভুলে যাবে। তাই আমিও যাব। যেখানে থাক না কেন। আমি তোমাকেই খুঁজে পাব। তুমি মন খারাপ করো না।
তামান্নাঃ জয়কে বুকে ঠেনে নিয়ে তার কপালে একটি চুম্বন করল।
তামান্না বিশ্বাস বর্তমানে মুম্বাই বাস করতেছে। জয় বর্তমানে বাংলাদেশে।
ঘন অন্দকারের রাতে। জয় একটি পাহাড়ের উপর নামল। সকাল হল, জয় দেখতে পেল হাজার হাজার মানুষ চলা-চল করতেছে। জয় আজ বুঝতে পারল সত্যি সে তামান্নাকে হারিয়ে পেলল। পাহাড় থেকে নেমে দেখতে পেল একটি যুবক ছল ছল চোখে হেঁটে যাচ্ছে।
জয়ঃ তার পাশে দাঁড়াল। জয় যুবকটাকে বলল, তোমার কাছে যে অস্তটা আছে তা আমাকে দিয়ে দাও। যুবকটা হা করে তাকিয়ে রইল।
জয় বলল, চল।
যুবকটা বলল, কোথায়?
জয় বলল, তোমার বাসায়। তারপর দু জন বাসায় এসে উপস্থিত। জয় ছেলেটাকে বলল, তোমার নাম কী? ছেলেটা বলল, ইমন, জয় বলল, তুমি কী কর আমি জানি। ছেলেটি বলল, আমি বাদ্ধ হয়ে এই পথে এসেছি। এক সময় আমি সৎ ছিলাম, বিনা চিকিৎসাই বাবা মা মারা গেল। ছোট বোনটি আত্নহত্যা করল যৌতুকের টাকর করণে বিয়ে ভেঙ্গে ছিল বলে। তিন মাস জেলে থাকত হল বিনা অপরাধে।
জয় বলল, এসব ভুলে যাও। জয় ইমনকে বলল, ঐ দিকে তাকিয়ে কিছু দেখতে পাও কিনা দেখ। ইমন বলল, একটি রাজ প্রাসাদ দেখতে পাচ্ছি। জয় বলল, পছন্দ হয়েছে? ইমন বলল, পছন্দ হলেও কিছু কারার নাই। জয় একটু হেসে বলল, চোখ বন্ধ কর।
ইমন চোখ খোলে দেখতে পেল তারা দু জন রাজ প্রাসাদটিতে। ভয়ে ইমনের শরীর কাঁপতে লাগল। জয় বলল, ভয়ের কোন কারণ নাই আমি তোমার বন্ধু। তোমার যা প্রয়োজন হয় তাই পাবে। ইমন বলল, আপনি কে?
জয়ঃ আমি অলৌকিক মানুষ আমি আমার সঙ্গীকে খুঁজতে এই পৃথিবীতে এসেছি। ইমন জানলা দিয়ে তাকিয়ে দেখতে পেল একটি আগুনের টুকরু তাদের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ইমন বলল, জয়, দেখ কী-
জয়ঃ আগুনের দিকে হাত প্রসারিত করার সাথে সাথে আগুনটা বিলীন হয়ে গেল। জয়, ইমনকে লক্ষ্য করে বলল, ভয়ের কোন কারণ নাই ওরা কিছু শয়তান পৃথিবীর দিকে অগ্রসর হতে চেয়েছিল। তারা যদি পৃথিবীতে আগমন করত। পৃথিবীর বুকে ভয়াবহ বন্য হয়ে অনেক মানুষ মরা যেত।
জয়ঃ একটি মোম জ্বালিয়ে, ইমনকে বলল, ইমন তুমি এই আগুনের মাঝে কিছূ দেখতে পাচ্ছ? ইমন বলল, হ্যাঁ একটি সন্দুরী মেয়ে আর তার হাত ধরে হাঁটতেছে একটি যুবক। কথা শেষ না হতে জয়, একটি চুরি নিয়ে তার বাম হাতের উপর ডুকিয়ে দিল। ইমন ব্যস্ত হয়ে বলল, ভাই তোমার কী হয়েছে? তুমি কী পাগল হয়ে গেছ?
জয় বলল, হ্যাঁ ভাই আমি পাগল হয়েগেছি। জয়, ডান হাত দিয়ে ইশারা করার সাথে সাথে তার চারি ধারে আগুন জ্ববে উঠল। আর জয় আগুনের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে । ইমন শত চেষ্টার পরও আগুন নিভাতে না পেরে নিজেও আগুনের মাঝে লাপ দিলে। সাথে সাথে জয় আগুন নিভেয়ে নিল। জয় ইমনকে বলল, ভাই, তুই কেন আমার সাথে নিজেকে ঝড়াবি আমার ভিতর তো জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে। তাই আমি নিজেক কষ্ট দিচ্ছি।
ইমন বলল, আমার তো এই পৃথিবীতে তুমি ছাড়া আর কেউ নাই। তোমার যদি কিছু হয়ে যায়। আমি কী নিয়ে বাঁচব? তোমার কী হল কেন এই পাগলামি করতেছ। তুমি তো অলৌকিক মানুষ তুমি চাইলে সব করতে পার।
জয় বলল, হ্যাঁ আমি সব করতে পারি, তবে তোমার সাহায্য লাগবে। ইমন বলল, আমি তোমার জন্য সব করতে পারি। বল কী করতে হবে?
জয়ঃ আমি তো পৃথিবী সম্পর্কে অবগত নয়। দেখো তো এই লিখাটা কি। ইমন বলল, এইটা তো হিন্দি ভাষায় লিখা।
জয় বলল, এইটা কোন দেশ। ইমন বলল, এইটা ইন্ডয়া, ভাই তুমি তো অলৌকিক মানুষ তুমি তো অনেক কিছু জান ঐ দেশটা চিনতে পরতেছন না?
জয়ঃ না, আমি এই পৃথিবীর সম্পর্কে তেমন কিছূ পারি না। আমার এক হাজার কিলোমিটার এর মধ্যে যা হয় তা জানতে পারি শুধু।
ইমন বলল, তাহলে চল, আমরা ইন্ডিয়ায় যাই। দু জন মুম্বাই শহরে এসে উপস্থিত। ইমন বলল, ভাই অনেক দিন হচ্ছে মনে আনন্দের ছোঁয়া লাগতেছে না। আজ শান্তিনগর মহিলা কলেজে নিত্য অনুষ্ঠান হচ্ছে যদি-
জয় বলল, ঠিক আছে তুমি যাও।
ইমন বলল, যদি তুমি না যাও আমি যাব না। জয় বলল, আরে তুমি কী আমার সাথে রাগ করেছ? আমি তো একটু অন্য চিন্তার মধ্যে আছি তাই যেতে পারতেছি না, তুমি যাও ।
জয় বলল, আজ ভিন্ন গ্রহের একটি দানব পৃথিবীর বুকে আসতেছে সে মানুষদের হত্যা করেব। তাই আমি যেতে পারতেছি না।
ইমন চলল-
গানের অনুষ্ঠান শুরো হয়ে গেল।
জয়ঃ বিশাল একটি দালানের উপর দাঁড়িয়ে দানবটিকে দেখতে লাগল। দানবটি দ্রতু বেগে পৃথিবীর দিকে আসতেছে। জয়ও দানবটিকে লক্ষ্য করে আকাশেরে দিকে অগ্রসর হল। দানবটি বিশাল একটি পাথর নিয়ে পৃথিবীর দিকে ছুটে মারল। পাথরটা অনুষ্ঠানের দিকে অগ্রসর হল। ইমন, পাথরটা দেখতে পেয়ে সবাইকে সরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করল।
জয় উড়ে এসে পাথরটা ধরে পেলল। দানবটা জয়কে আঘাত করতে লাগল। জয়, পাথরটা দানবের উপর চাপিয়ে দিল। জয় মুক্তি পেয়ে গেল ভাবল। সবাই জয়ের দিকে তাকিয়ে রইল। পর মুহূর্তে দেখতে পেল পাথর ভেঙ্গে দানবটা উঠে গেল জয় দানবটির দিকে অগ্রসর হল। দানবটি আর জয়ের দিকে অগ্রসর না হয়ে। ঐ মেয়েটিকে আঘাত করতে চাইল; যে মেয়েটি মঞ্চ এর মধ্যে নাচ করেছিল। দানবটি এক কন্ড পাথর মেয়েটির উপর চাপিয়ে দিল।
জয়ঃ দৌঁড়ে গিয়ে মেয়েটিকে বুকে ঝুড়িয়ে নিল। এইবার জয়, হাত দিয়ে ইশারা করার সাথে সাথে দানবটির গায়ে অগুন লাগে গেল। মেয়েটি মুক্তি পেয়ে গেল।
জয় আর কারো সাথে কোন কথা না বলে চলে যাচ্ছে। মেয়েটা এসে জয়কে বলল, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আমার জীবন বাঁচানোর জন্য।
জয়ঃ কোন কথা না বলে সোজা সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। মেয়েটি জয়ের সামনে এসে দাঁড়িেয়ে বলল, কী হল আপনি কী কথা বলতে পারেন না?
জয়ঃ চুপ করে রইল।
ইমন বলল, কথা বলেেত পারে তবে মেয়েদের একটু লজ্জা পাই। মেয়েটি বলল, কথা বলতে লজ্জা পাই। আর মেয়েটিকে জড়িয়ে ধরতে লজ্জা পায় না মা’নে কি?
জয় বলল, তোমার জীবন বাঁচানোটা প্রয়োজন ছিল। তাই জড়িয়ে ধরে ছিলাম। যদি অপরাধ হয়ে থাকে ক্ষমা করে দিও। মেয়টি বলল, আমি তো অপরাধ বলি নাই-আচ্ছা বলেন তো আপনি কে?
জয়ঃ একটু হেসে বলল, আমার কোন পরিচয় নাই। মেয়েটি বলল, আচ্ছা! ঐ দানবটা কেন আমাকে আঘাত করতে চাইল? জয় বলল, তা কী করে আমি জানি? এই গুলো আপনাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমার কাজ শুধু নিরাপত্তা দেওয়া।
মেয়েটি বলল, আপনি যদি চলে যান ঐ দানবটি আবার আমাকে আঘাত করতে পারে। মেয়েটির কথা শোনে জয়, দাঁড়িয়ে গেল। জয় বলল, আমি যত দিন এই পৃথিবীর বুকে থাকব তত দিন কেউ তোমার কোন ক্ষতি করবে না, এইবার চলি। মেয়েটি বলল, না। আপনি যদি চলে যান আমার নিরাপত্তা নাই। জয় বলল, তাহলে কী করতে পারি? মেয়েটি বলল, আমার নিরপত্তার জন্য আপনাকে প্রয়োজন। জয় বলল, তোমার নিরাপত্তার জন্য যদি আমাকে প্রয়োজন হয় তাহলে সমস্যা হতে পারে তামান্না বিশ্বাস। মেয়েটি আশ্চর্য হয়ে বলল, আপনি আমার নাম জানেন? জয় বলল, আমি কখনো ভুলি না যা মানুষে ভুলে যায়।
জয় আর ঈমন, তামান্নার বাসায় এসে উপস্থিত।
ইমন জয়কে লক্ষ্য করে বলল, এত সুন্দরি একটি মেয়ে তোমাকে চাই তার পরও কী মন খারাপ?
জয়ঃ কোন উত্তর দিতে পারল না।
তামান্না এসে বলল, চল আমি-
কথা শেষ না হতে জয় বলল, যাও তোমার জন্য শুভ্র অপেক্ষা করতেছে।
তামান্নাঃ জয়ের দিকে তাকিয়ে বলল, আরে তুমি তার নামও জান।
জয়, কোন কথার উত্তর দিল না।
তামান্নাঃ চল দেরি হয়ে যাচ্ছে। জয়, বলল, তোমার কোন ক্ষতি হবে না তুমি একা যাও।
তামান্নাঃ তোমার কী কোন সমস্যা আছে?
জয়ঃ না সমস্যা নাই, মনে কষ্ট আছে। তাই একা থাকতে চাই।
তামান্নাঃ তাহলে ইমনকে নিয়ে যাই।
জয়ঃ যেতে পার এইটুকু বলে বাসা থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে।
তামান্না ব্যস্ত হয়ে বলল, কোথায় যাচ্ছ?
জয় কোন উত্তর দিল না। অল্প হাঁটার পর তার সারা শরীরে আগুন জ্বলে উঠল। তারপর কোথায় বিলীন হয়ে গেল কেউ বুঝতে পারল না।
তামান্নাঃ ইমনকে বলল, জয় কী মানুষ না? ইমন বলল, না সে মানুষ না। জয় তার সঙ্গীকে খোঁজতে এই পৃথিবীতে আসছে।
তামান্নাঃ শুভ্রর সাথে দেখা করে বাসায় ফিরার সময় দেখতে পেল জয়, রাস্তার পাশে পড়ে আছে।
তাকে বাসায় নিয়ে আসার পর যখন তার ঞ্জান ফিরল। তখন সে তামান্নার দিকে তাকিয়ে নম্র কণ্ঠে বলল, “তামান্না তুমি কী শুভ্রকে ভালবাস?”
তামান্না উত্তর দিলঃ জীবনেরে চেয়েও বেশি ভালবাসি।
জয়ঃ বলল, তুমি কী ভুলে গেছ তুমি কে?
তামান্নাঃ আমি আবার কে? কি অদ্ভত প্রশ্ন।
জয়ঃ হ্যাঁ অদ্ভত! আমরা তো দু জন এক অপরের জীবন সঙ্গী। আমরা দু জন দীপালি গ্রহে ছিলাম। তুমি এই পৃথিবীতে এসে সব ভুলে গেছ।
তামান্নাঃ জয়ের দিকে তাকিয়ে বলল, তুমি নেশা করে মাতলামি করতেছ, এখন আমার বাসা থেকে বেরিয়ে যাও।
ঈমন তামান্নাকে বুঝাতে চেষ্টা করল। কিন্তু তামান্না এসব কিছু বিশ্বাস করল না।
জয়ঃ আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল, এইটাই সত্য পৃথিবীটা বড় নির্মম। সঙ্গী হারা ব্যথাটা কত তীব হয়, তা বুঝেছি।
ঈমন আর জয় সাগরের তীরে দাঁড়িয়ে আছে। ঈমন জয়ের দিকে তাকিয়ে বলল, ভাই!
জয়ঃ ঈমনকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলল, তামান্নাকে হারিয়ে যত কষ্ট পেয়েছি। তার চেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে। তোকে ছেড়ে যেতে।
ঈমন বলল, আমারও কষ্ট হচ্ছে ভাই। তুমি এইখানে থেকে যাও।
জয় বলল, এই জগতে থাকলে বারে বারে তামান্নাকে মনে পড়বে।
তারপর সাগরের ভিতর থেকে একটি রাজ প্রাসাদ উঠে আসল। জয় ঐ প্রাসাদের ভিতর দিয়ে মহা শূন্যর দিকে চলে গেল। তার পর থেওে আর কোন দিন জয়কে পৃথিবীর বুকে দেখা যায় নি।
১১ই কর্তিক ১৪২২বাংলা,
২৪-১০-২০১৫
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
দ্বীপদেশ ১০/০১/২০১৭সুন্দর
-
খালেদ আহমদ ০৪/০১/২০১৭খুব দু:খ লাগলো
-
পরশ ২৯/১২/২০১৬নারীরা শুধুই ছলনা করে।
-
মোমিনুল হক আরাফাত ২৮/১২/২০১৬https://drive.google.com/open?id=0B40AfJSutSrYc2p4YTg5ODVjcXM
-
পরশ ২৭/১২/২০১৬ভাগ ভাগ করে লিখ্বেন
-
পরশ ২৪/১২/২০১৬ভাই ভাই পার্ট পার্ট করে লিখতে পারতেন
-
সোলাইমান ২৪/১২/২০১৬অনন্য গল্পের কাব্যে বিমোহিত হলাম।
শুভেচ্ছা রইলো কবি। -
আব্দুল হক ২৩/১২/২০১৬ভালোবাসা েযন ভালো থাকে, বিষাক্ত না হয়ে ওঠে , এই প্রথ্যাশা।
-
সৈয়দ আশিকুজ্জামান-আশিক ২৩/১২/২০১৬জয় ঐ প্রাসাদের ভিতর দিয়ে মহা শূন্যর দিকে চলে গেল। তার পর থেওে আর কোন দিন জয়কে পৃথিবীর বুকে দেখা যায় নি। Good Writing!Best of luck.