ধর্ম অনেক স্রষ্টা এক
ধর্ম অনেক স্রষ্টা এক!
মোমিনুল হক আরাফাত
আজ ২২শে আশ্বিন ১৪২২ বাংলা, ৭ই অক্টোবর ২০১৫ ইংরেজি। মন ভাল নাই কিছুই যেন ভাল লাগতেছে না কিছু অতীত স্মৃতি আমায় ব্যাতিত করে তুলে। তাই ভাবলাম দুই এক লাইন লিখে নি।
কোন এক মধ্য ভিত্ত পরিবারের সন্তান জয়। মানুষের উপকার করা তার স্বাভাব। অ-মানুষদেরকে মানুষ করার দায়িত্বটা কে তাকে দিয়েছিল আমার জানা নাই। কেন সে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিল দেশ জাতির কল্যাণে কেউ আজো তার উত্তর খোঁজে পাই নি। আমাদের মত নয় তার ধারণা আমরা মনে করি সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে প্রচুর টাকার প্রয়োজন। জয় বলত মানুষের মত মানুষ হতে চাইলে সুন্দর একটি হৃদয়ের প্রয়োজন। আর হৃদয়ে থাকতে হবে মানুষের জন্য অপুরান্ত ভালবাসা। জয়, বলে এই সমাজ আর ভাল লাগে না। আমি হিংস্র বাঘ সিংহ দেখলে ভয় পাই না। শুধু ভয় হয় মানুষ রূপি জানোয়ারদের। আমি তো আর কোন হিংস্র প্রাণীকে বন্ধু ভাবি না। যাদেরেকে বন্ধু ভাবি তারা হল মানুষ তারা পারে মানুষকে ধ্বংস করে দিতে। অবশেষে জয় গৃহ ত্যাগ করে গহীন অরণ্যে গিয়ে বাস করতেছে। রাতের অন্ধকারে হাঁটাটা তার নতুন স্বভাব না। রাত দশটা পেরিয়ে গেল। জয় হাতের সিগেরেটে টান লাগয়ি রাস্তা ভেয়ে হেঁটে যাচ্ছে। এমন সময় এক যুবকের ভাঙ্গা ভাঙ্গা কণ্টে কান্না ভেসে এল। জয়, ছেলেটির ধারে গিয়ে দেখতে পেল একটি চৌদ্দ-পনের বৎসরের বালক। শীতে শরীরটা কাঁপতে লাগল। জয়, তার গায়ের চাদরাটা তাকে পরিয়ে দিয়ে বলল, তোকে তো এই গ্রামে আর কখনো দেখি নাই। তোর বাসা কোথায়? কী করিস কোথায় থাকিস? এত রাতে রাস্তার পাশে বসে কান্না করতছিস কেন?
এই সমাজটা বড় নির্মম। কেউ তো তোর আর্তকারে সাড়া দিবে না। ছেলেটি চুপ করে রইল। জয় বলল, এই তুই কী বুঝি জ্বিনের ছেলে না’কি? ছেলেটি জয়ের দিকে তাকিয়ে বলল, গুরো আমি জ্বিনের ছেলে না। আমি মানুষের ছেলে। আমার বাবা প্রবাসে থাকে আমার মা নাই। আমার মা ওপাড়ে ভ্রমনে গেছে। এই জনমে তাঁর সাথে আর দেখা হবে না। আমি ফুফুর বাসায় থাকি সাকালে বিলেতে গিয়েছিলাম গরুর জন্য ঘাস কাটাতে। ওখানে কয়েকটি যুবক আমাকে বলল, আমার বাসা কোথায়? তারপর বলল, আমি না’কি এই গ্রামে বাস করতে পরব না। যদি এই গ্রামে বাস করতে হয় তাদের কথা মত চলতে হবে। আমি বললাম ঠিক আছে ভাই আমি তোমাদের কথা মত চলব। আগে গরুর জন্য ঘাস গুলো কেটেনি। তারা আমাকে বলল, তাদারে কাজ ঘাস কাটা না। তারা কেউ গরু পালন করে না। তারা আমাকে একটি স্কুল ছাত্রী দেখিয়ে দিয়ে বলল, এই চিঠিটা ঐ মেয়েটিকে দিয়ে আসতে। আমি তাদের কথা মত চিঠিটা দিয়ে আসছি । তারপরও আমাকে ওরা ঘাস কাটতে দেনি। ওরা বলল, তারা যা বলবে তাই করতে হবে। না হয় এই গ্রামে থাকা যাবে না। গুরো! আমার তো থাকার জায়গা নাই। ফুফুর বাসায় থাকার স্থান পেয়েছিলাম। সেখানেও আর থাকা হল না।
জয়ঃ বালকটির মাথায় হাত রেখে বলল, তোর কিছুই হবে না আমি বেঁচে থাকতে। তোর ফুফুকে বলবি তোর সাথে জয়ের দেখা হয়েছিল। আর এই কার্ডটা রাখ এইখানে আমার ঠিকানা লিখা আছে। কোন সমস্যা হবে না। তোর ফুফুও তোকে আর বোড়ি থেকে বের করেদিবে না। বালকটি বাড়িতে গিয়ে দরজায় আঘাত করল। তাকে দেখা মাত্র ফুফু রেগেগিয়ে বলল, তোর তো দেখছি সাহস অনেক বেড়ে গেল। এখন সামনে থেকে বেরিয়ে যা। বালকটি মুখে কিছু না বলে কার্ডটা দেখাল।
ফুফু আর কিছুই না বলে রুমে ডুকে গেল। আর ছোট ছোট শব্দ করে জয়কে অনেক গালিও দিল-“শালার কোন কাজ নাই মানব সেবা পরম ধর্ম তার, পকেটে যার দুই টাকা থাকে না। সে যদি সমাজের নেতা হয়ে যায়। সমাজে আর শান্তি কী করে থাকবে?”
সাকালে উঠে বালকটি চায়ের দোকানে গিয়ে দুই টাকা দিয়ে একটি চা এক টাকা দিয়ে একটি বিস্কিট নিল। চায়ের মধ্যে বিস্কটা ভিাজাল তবে মুখে দেওয়ার সাহস হল না। বালকটি দেখতে পেল গত কাল যে ছেলেরা তাকে পিটাল আজও তারা আসতেছে। সাইফুলের ভয়ে শরীর কাঁপতে লাগল। ছেলে গুলো এসে প্রথমে চা আর বিস্কিটটা খেয়ে নিল। সাইফুল হা করে তাকিয়ে রইল। তার রক্তে আগুন জ্বলতেছে, সময়ে অনেক কিছুর পরিবর্তন ঘটে। তাই সাইফুলও আজ শান্ত স্বভাবের ছেলে। যদি পরিবর্তন না হত। চার পাঁচ জনকে মেরে এক সাথে নাক মুখ ফাটিয়ে দেওয়াটা তার কাছে কোন ব্যাপার না। ছেলে গুলো মধ্যে থেকে এক জন সাইফুলকে লক্ষ্য করে বলল, তোর ভাগ্য বুঝি অনেক খারপ। কাল যে চিঠিটা দিলি, তা তো কোন কাজে আসে নাই। মেয়টি তো এখনো আমাকে ভালবাসে নাই। যত দিন তার মন পাব না। তত দিনের জন্য এই এলাকা ছেড়ে চলে যা, না হয় সকাল সন্ধ্যা দু পিটা দিব তোকে, তুই অলক্ষ্ণী।
সাইফুল অশ্রসিক্ত নয়ন নিয়ে বিলের মধ্যে শুয়ে আছে।
জয়ের প্রকৃতি দেখার সময় হল। জয় আর আমানত ইছামতি নদীর পাড়ে গিয়ে উপস্থিত। আমানতের চোখ গিয়ে পড়ল সাইফুলের দিকে। আমানত জয়কে বলল, দেখ তো ঐ ছেলেটা চিনিস কি’না? জয় বলল, না-তো! তাকে কাল রাতে দেখলাম রাস্তার ধারে বসে কান্না করতেছে এখন বিলের মাঝে-মানেটা কী? আমানত বলল, সে অনেক ইতিহাস এই গুলো বলা যাবে না। আমানত গিয়ে ছেলেটাকে ধরে নিয়ে এল জয়ের কাছে। জয়, ছেলেটিকে বলল, তোর কী সমস্যা? এদিক ওদিক ঘুরে কান্না করতেছিস কেন? কান্না করার বেশি ইচ্ছা না’কি? সাইফুল বলল, কেউ মনের সুখে কান্না করে না। জয় বলল, তোর মনে এত কষ্ট কীসের? তোর নাম কী?
সাইফুল বলল, আমার নাম “সাইফুল ইসলাম” আমার কোন ঠিকানা নাই। তাই কেউ কেউ ঘৃণা করে ফেরারী ডাকে। জয় বলল, আজ পর্যন্ত কেউ তোকে ভালবেসে সাইফুল ইসলাম ডাকল না। ফেরারীও ডাকল না। আমি তোকে ভালবেসে সাইফুল ডাকব। তোর কোন সমস্যা আছে? সাইফুল বলল, না সমস্যা নাই ডাকতেই থাকেন। জয় বলল, তোর এত দুঃখ কীসের? সাইফুল বলল, গুরো এসব আপনাকে বলে কোন লাভ নাই। আপনি তো এই যন্ত্রণা হ্রাস করতে পারবেন না। যদি পারেন একটি উপকার করেণ। জয় হেসে উঠে বলল, মানুষের উপকার করাতো আমার স্বভাবে পরিণত হল। বল! তোর কী সমস্যা? সাইফুল বলল, একটি থাকার জায়গার ব্যবস্থা করে দিলে ভাল হত।
জয় বলল, তা কোন সমস্যা না। আজ থেকে আমার বাড়িতে থাকবি ভয়ের কোন কারণ নাই। আমার পরিবাবে কোন লোক জন নাই। তোকে কেউ ফেরারী বলে ডাকবে না। সাইফুল বলল, ঠিক আছে একটি সমস্যা থেকে বেঁচে গেলাম। আর একটি উপকার করেদিন। জয় বলল, “বল কী করতে হবে?”
সাইফুলঃ গুরো আমি ভাবতাম আমার চেয়ে দুষ্ট আর কেউ জন্ম নেয় নি। এই এলাকায় এসে আমার ধারণা ভুল হয়ে গেল। এইখানের ছেলেরা আমার চেয়েও বেশি দুষ্ট তাদের যন্ত্রণাই জীবনটা অতিষ্ঠ হয়ে গেল। আমার বুকটা যন্ত্রণাই পেটে যাচ্ছে এমন সময় দুষ্ট ছেলেরা আমাকে আরো বেশি ব্যতিত করে তুলল।
জয় বলল, আজ থেকে কেউ তোকে ব্যতিত করবে না। কারণ তুই আমার বাসায় থাকবি। আমি ভদ্র, তবে অভদ্র হতেও দেরি হয় না। আমার এই এলাকাই এমন লোকের জন্ম এখনো হয়নি যে আমাদেরকে ভয় করে না।
সাইফুল বলল, ঠিক আছে তাহলে আমি ঘুরে আসি। জয় বলল, আগে আমার বাসাটা দেখে যা। সাইফুল বলল, না’রে গুরো, বাসা আমার পছন্দ হয়েছে। জয় বলল, আরে পছন্দ-অপছন্দের কথা আসতেছে না। বাড়ি তো চিনে রাখতে হবে?
সাইফুল বলল, আপনার সব কিছু আমার চেনা-জানা। আপনি অনেক ভাল লোক। আপনি আমাকে নিয়ে কোন দূর চিন্তা করবেন না। আপনি যেখানে থাকেন সেখান থেকে আমি আপনাকে খুঁজে নিব।
রাত যত গভীর হয় জয়ের যন্ত্রণা তত বেশি বেড়ে যায়। জয়, খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে আকাশের তারা গুনতেছে। সাইফুল, এসে বলল, গুরো আমরা তো অনেক দিন ধরে একি সাথে বাস করতেছি তবে-জয় বলল, তবে কী ভয় হয় না’কি আমাকে? সাইফুল একটু হেসে বলল, মাঝে মাঝে ভয়ও হয়। জয় বলল, কেন? সাইফুল বলল, আসলে আপনি কী মানুষ না’কি জ্বিন? জয় বলল, আমি মানুষও না জ্বিনও না। আমি দানব। সাইফুল বলল, গুরো আপনাকে কিছু কথা বলতে মন চায়।
জয় বলল, বলে দে।
সাইফুল বলল, গুরো আমি শুনেছি আপনার কেউ এই এলাকার লোক না।
জয় বলল, ঠিকেই শুনেছিস। আমি, আমানত, লুৎফর, ফারবেজ, কেউ এই এলাকার লোক না। আমারা এইখানে বাস করেতিছি কিছু কারণে। আমাদের ঘর বাড়ি বলতে কিছূই নাই। যখন যেখানে ইচ্ছা হয় সেখানে চলে যাই।
সাইফুল বলল, তাহলে এই এলাকার লোকেরা আপনাদেরকে এত ভয় কেন করে? জয় বলল, তুই কী শুনেছিস মারের নাম বাবা জি? সাইফুল বলল, হ্যাঁ শুনেছি। জয় বলল, তাহলে শোন এই এলাকাটা এক সময় অপরাধে ভরপুর ছিল। জুয়া, মদ, সুদ, এই গুলো ছিল এই এলাকায় সচরাচর একটি বিষয়। আমি আমানাত, লৎফর, ফারবেজ, এই এলাকায় এসে প্রথমে তদেরকে ভাল হওয়ার আহ্বান করেছিলাম কিন্তুু তারা আমাদের ডকে সাড়া না দিয়ে আমাদেরকে নিয়ে পরিহাস করতে লাগল। তারপর যখন মার শুরো করেদিলাম। সাবই লাইনে দাঁড়াল। এখন দেখছিস ওরা কত লক্ষ্ণী। সাইফুল বলল, অনেক লক্ষ্ণী তবে পুরোটা লক্ষ্ণী এখনো হতে পারে নি। আপনাদের অবর্তমানে এখনো ওরা দুষ্টামি করে বেড়ায়। জয় বলল, আমি তা জানি তাই এই এলাকাই এখনো বাস করেতেছি। যে দিন তারা মানুষ হবে সে দিন আমি এই এলাকা ছেড়ে চলে যাব। সাইফুল বলল, কোথায় যাবেন? জয় বলল, যে দিকে চোখ যায় সে দিকে। সাইফুল বলল, আপনার মনে বুঝি অনেক কষ্ট আছে?
জয়ঃ হ্যাঁ কষ্ট আছে। সাইফুল বলল, শুনতে পারি? জয় বলল, এখন না পরে শুনাব। পরের দিন রাতে সাইফুল আবার জয়ের ধারে এসে উপস্থিত। সাইফুল বলল, গুরো কিছু বলতে চায়।
জয়। বল-
সাইফুলঃ আচ্ছা গুরো আমানাত, লুৎফর, ফারবেজ, আপনারা কী একি এলাকার লোক? জয় বলল, না তাদেরকে খোঁজে নিয়েছি। সাইফুল বলল, ওরা তো কেউ স্থায়ি ভাবে এই এলাকায় বাস করে না শুধু আপনি-
জয় বলল, তোর চেয়েও বেশি যন্ত্রণা আমার বুকে আছে। তাই আমি এই ধু-ধু মরুভুমিতে পড়ে আছি। আমানত চট্টগ্রামে আছে। ফারবেজ কঙবাজারে লুৎফর রুমা শহরে তাদের কাজ মানুষকে ভালর দিকে নিয়ে আসা। প্রথমে তারা বুঝিয়ে ভাল পথে আনতে চায় আর না বুঝলে পিটিয়ে সোজা করে।
সাইফুল বলল, গুরো আপনি ঘর সংসার করেবে না? জয় বলল, কেন? তোর কী রান্না করে খেতে কষ্ট হয়? যদি কষ্ট হয়ে থাকে তুই একটি বিয়ে করে নে। সাইফুল বলল, আপনি তো আমার বড়; আপনি করে নিন। না হয় আমি করেতে পারতেছি না।
জয়ঃ আমার বিয়ে তো অনেক আগে হয়েছিল।
সাইফুল বলল, কার সাথে? আপনার স্ত্রী কোথায় থাকে? তাঁকে তো কখনো দেখি নাই।
জয় বললঃ শোনবি? সাইফুল বললঃ হ্যাঁ শোনব। জয়ের চোখে জল টল-মল করতেছে । সাইফুল ব্যস্ত হয়ে বলল, গুরো-
জয় শুরো করল অতীত কাহিনীঃ
সে অনেক দিন আগের কথা আমার পাশে ছিল বরুয়া পাড়া আমি আর এপি বরুয়া একি ক্লাসে লেখা পড়া করতাম। আমি মুসলিম সে বরুয়া আমাদরে ধর্ম আলাদা ছিল। আমি তা কখনো ভেবে দেখিনাই। এখনো দেখতে চাই না। ধর্ম আলাদা তাই বলে স্রষ্টা আলাদা নয়। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, মুসলিম যাই বলি না কেন। সবাইকে কিন্তুু এক জনেই সৃষ্টি করেছেন। আমারা পৃথিবীতে এসে তাকে নানা নামে স্মরণ করি। স্রষ্টা তো একজন। বরুয়াকে যিনি সৃষ্টি করেছেন মুসলিমকেও তিনি সৃষ্টি করেছেন। আমার আর এপি বরোয়ার ধর্ম আলাদা ছিল। স্রষ্টা কিনু্তু আলাদা ছিল না। বরুয়াকে এক স্রষ্টা সৃষ্টি করেছেন, মুসলিমকে আরেক স্রষ্টা সৃষ্ট করেছেন, হিন্দুকে অরেক, এমন কখনো না। যদি স্রষ্টা অনেক হত তাঁদের মাঝে যুদ্ধ লেগে যেতে। এক অপরের রাজ্য দখল করেনিত। মন্দিরে যাওয়ার সময় মুসলিম স্রষ্টা বাঁধা দিত আর মসজিদে যাওয়ার সময় হিন্দদের স্রষ্টা বাঁধা দিত। কখনো তো এমন হয় নি। তার কারণ স্রষ্টা শুধু একজন।
জয়ের অতীতে গঠে যাওয়া কাহিনীঃ
এপি বরুয়া জয়কে অনেক ভালবাসত জয়কে এক মুহূর্তের জন্যও আঁড়াল করতে চাইত না। সে জয়কে পাগলের মত ভালবাসত। জয়ের পরিবারের সাথে তাদের ভাল সম্পর্ক ছিল। এপি, অনেক বড় হয়ে গেছে। হঠাৎ কলেজ থেকে ফেরার সময় জয়, এপিকে দেখতে পেল। সে হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছে। অনেক দিন পর তার মুখে হাসি দেখে ভাল লাগল।
শুরোতে এপি, জয়ের হতটা ধরে বলল, জয়, আমি যদি কখনো তোমাকে আঘাত করি তুমি কী আমাকে ক্ষমা করে দিবে? জয়ঃ হেসে উঠে বলল, তুমি যদি আমার প্রাণটা কেঁড়ে নাও তবু অভিনাম করব না। এপি বলল, আমি সেইটাই করতে চায়। তার কথা শুনে জয়, অবাক হয়ে গেল। এপি জয়কে বলল, তাকে এই পৃথিবীথেকে বিদায় করে দিতে এই পৃথিবী তার কাছে অসহ্য হয়ে গেছে। কারণ জানতে চাইলে? এপি বরুয়া বলল, “জয় আমি জানি তুমি আমাকে কত ভাল+বাস। তবে আমাদের ধর্ম তো আলাদা। তোমার আর আমার বিয়ে হওয়া কখনো সম্ভব না। আমি কখনো তোমাকে বিয়ে করতে পারব না। এপির কথা শুনে জয়, অর্দ পাগল হয়ে গেল। তাকে কথা দিল তার জীবন থেকে সরে দাঁড়াবে।
জয়, নিজে সিকাতের হাতে এপিকে তুলে দিল ।
জয়ঃ সাইফুলকে লক্ষ্য করে বলল, এই ছিল আমার অতীত গটে যাওয়া দিন। তারপর চোখে আর কিছু দেখতে না পেয়ে তোর মত ফেররী হয়ে। কিছু দিন পাগলামি করেছিলাম। পরে এই গ্রামে ছুটে আসলাম আর খোঁজে নিয়েছিলাম আমানত লুৎফর ফারবেজকে।
সাইফুলঃ জয়কে বুকে টেনে নিয়ে বলল, গুরো আমাকেও আপন করে নিয়েছেন? জয় বলল, তোরা ছাড়া আর কে আছে আমার?
কিছুদিন পর জয়ের সব দায়িত্ব বুঝিয়ে দিল সাইফুকে। তারপর গুরো নিখোঁজ হয়ে গেল।
মোমিনুল হক আরাফাত
আজ ২২শে আশ্বিন ১৪২২ বাংলা, ৭ই অক্টোবর ২০১৫ ইংরেজি। মন ভাল নাই কিছুই যেন ভাল লাগতেছে না কিছু অতীত স্মৃতি আমায় ব্যাতিত করে তুলে। তাই ভাবলাম দুই এক লাইন লিখে নি।
কোন এক মধ্য ভিত্ত পরিবারের সন্তান জয়। মানুষের উপকার করা তার স্বাভাব। অ-মানুষদেরকে মানুষ করার দায়িত্বটা কে তাকে দিয়েছিল আমার জানা নাই। কেন সে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিল দেশ জাতির কল্যাণে কেউ আজো তার উত্তর খোঁজে পাই নি। আমাদের মত নয় তার ধারণা আমরা মনে করি সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে প্রচুর টাকার প্রয়োজন। জয় বলত মানুষের মত মানুষ হতে চাইলে সুন্দর একটি হৃদয়ের প্রয়োজন। আর হৃদয়ে থাকতে হবে মানুষের জন্য অপুরান্ত ভালবাসা। জয়, বলে এই সমাজ আর ভাল লাগে না। আমি হিংস্র বাঘ সিংহ দেখলে ভয় পাই না। শুধু ভয় হয় মানুষ রূপি জানোয়ারদের। আমি তো আর কোন হিংস্র প্রাণীকে বন্ধু ভাবি না। যাদেরেকে বন্ধু ভাবি তারা হল মানুষ তারা পারে মানুষকে ধ্বংস করে দিতে। অবশেষে জয় গৃহ ত্যাগ করে গহীন অরণ্যে গিয়ে বাস করতেছে। রাতের অন্ধকারে হাঁটাটা তার নতুন স্বভাব না। রাত দশটা পেরিয়ে গেল। জয় হাতের সিগেরেটে টান লাগয়ি রাস্তা ভেয়ে হেঁটে যাচ্ছে। এমন সময় এক যুবকের ভাঙ্গা ভাঙ্গা কণ্টে কান্না ভেসে এল। জয়, ছেলেটির ধারে গিয়ে দেখতে পেল একটি চৌদ্দ-পনের বৎসরের বালক। শীতে শরীরটা কাঁপতে লাগল। জয়, তার গায়ের চাদরাটা তাকে পরিয়ে দিয়ে বলল, তোকে তো এই গ্রামে আর কখনো দেখি নাই। তোর বাসা কোথায়? কী করিস কোথায় থাকিস? এত রাতে রাস্তার পাশে বসে কান্না করতছিস কেন?
এই সমাজটা বড় নির্মম। কেউ তো তোর আর্তকারে সাড়া দিবে না। ছেলেটি চুপ করে রইল। জয় বলল, এই তুই কী বুঝি জ্বিনের ছেলে না’কি? ছেলেটি জয়ের দিকে তাকিয়ে বলল, গুরো আমি জ্বিনের ছেলে না। আমি মানুষের ছেলে। আমার বাবা প্রবাসে থাকে আমার মা নাই। আমার মা ওপাড়ে ভ্রমনে গেছে। এই জনমে তাঁর সাথে আর দেখা হবে না। আমি ফুফুর বাসায় থাকি সাকালে বিলেতে গিয়েছিলাম গরুর জন্য ঘাস কাটাতে। ওখানে কয়েকটি যুবক আমাকে বলল, আমার বাসা কোথায়? তারপর বলল, আমি না’কি এই গ্রামে বাস করতে পরব না। যদি এই গ্রামে বাস করতে হয় তাদের কথা মত চলতে হবে। আমি বললাম ঠিক আছে ভাই আমি তোমাদের কথা মত চলব। আগে গরুর জন্য ঘাস গুলো কেটেনি। তারা আমাকে বলল, তাদারে কাজ ঘাস কাটা না। তারা কেউ গরু পালন করে না। তারা আমাকে একটি স্কুল ছাত্রী দেখিয়ে দিয়ে বলল, এই চিঠিটা ঐ মেয়েটিকে দিয়ে আসতে। আমি তাদের কথা মত চিঠিটা দিয়ে আসছি । তারপরও আমাকে ওরা ঘাস কাটতে দেনি। ওরা বলল, তারা যা বলবে তাই করতে হবে। না হয় এই গ্রামে থাকা যাবে না। গুরো! আমার তো থাকার জায়গা নাই। ফুফুর বাসায় থাকার স্থান পেয়েছিলাম। সেখানেও আর থাকা হল না।
জয়ঃ বালকটির মাথায় হাত রেখে বলল, তোর কিছুই হবে না আমি বেঁচে থাকতে। তোর ফুফুকে বলবি তোর সাথে জয়ের দেখা হয়েছিল। আর এই কার্ডটা রাখ এইখানে আমার ঠিকানা লিখা আছে। কোন সমস্যা হবে না। তোর ফুফুও তোকে আর বোড়ি থেকে বের করেদিবে না। বালকটি বাড়িতে গিয়ে দরজায় আঘাত করল। তাকে দেখা মাত্র ফুফু রেগেগিয়ে বলল, তোর তো দেখছি সাহস অনেক বেড়ে গেল। এখন সামনে থেকে বেরিয়ে যা। বালকটি মুখে কিছু না বলে কার্ডটা দেখাল।
ফুফু আর কিছুই না বলে রুমে ডুকে গেল। আর ছোট ছোট শব্দ করে জয়কে অনেক গালিও দিল-“শালার কোন কাজ নাই মানব সেবা পরম ধর্ম তার, পকেটে যার দুই টাকা থাকে না। সে যদি সমাজের নেতা হয়ে যায়। সমাজে আর শান্তি কী করে থাকবে?”
সাকালে উঠে বালকটি চায়ের দোকানে গিয়ে দুই টাকা দিয়ে একটি চা এক টাকা দিয়ে একটি বিস্কিট নিল। চায়ের মধ্যে বিস্কটা ভিাজাল তবে মুখে দেওয়ার সাহস হল না। বালকটি দেখতে পেল গত কাল যে ছেলেরা তাকে পিটাল আজও তারা আসতেছে। সাইফুলের ভয়ে শরীর কাঁপতে লাগল। ছেলে গুলো এসে প্রথমে চা আর বিস্কিটটা খেয়ে নিল। সাইফুল হা করে তাকিয়ে রইল। তার রক্তে আগুন জ্বলতেছে, সময়ে অনেক কিছুর পরিবর্তন ঘটে। তাই সাইফুলও আজ শান্ত স্বভাবের ছেলে। যদি পরিবর্তন না হত। চার পাঁচ জনকে মেরে এক সাথে নাক মুখ ফাটিয়ে দেওয়াটা তার কাছে কোন ব্যাপার না। ছেলে গুলো মধ্যে থেকে এক জন সাইফুলকে লক্ষ্য করে বলল, তোর ভাগ্য বুঝি অনেক খারপ। কাল যে চিঠিটা দিলি, তা তো কোন কাজে আসে নাই। মেয়টি তো এখনো আমাকে ভালবাসে নাই। যত দিন তার মন পাব না। তত দিনের জন্য এই এলাকা ছেড়ে চলে যা, না হয় সকাল সন্ধ্যা দু পিটা দিব তোকে, তুই অলক্ষ্ণী।
সাইফুল অশ্রসিক্ত নয়ন নিয়ে বিলের মধ্যে শুয়ে আছে।
জয়ের প্রকৃতি দেখার সময় হল। জয় আর আমানত ইছামতি নদীর পাড়ে গিয়ে উপস্থিত। আমানতের চোখ গিয়ে পড়ল সাইফুলের দিকে। আমানত জয়কে বলল, দেখ তো ঐ ছেলেটা চিনিস কি’না? জয় বলল, না-তো! তাকে কাল রাতে দেখলাম রাস্তার ধারে বসে কান্না করতেছে এখন বিলের মাঝে-মানেটা কী? আমানত বলল, সে অনেক ইতিহাস এই গুলো বলা যাবে না। আমানত গিয়ে ছেলেটাকে ধরে নিয়ে এল জয়ের কাছে। জয়, ছেলেটিকে বলল, তোর কী সমস্যা? এদিক ওদিক ঘুরে কান্না করতেছিস কেন? কান্না করার বেশি ইচ্ছা না’কি? সাইফুল বলল, কেউ মনের সুখে কান্না করে না। জয় বলল, তোর মনে এত কষ্ট কীসের? তোর নাম কী?
সাইফুল বলল, আমার নাম “সাইফুল ইসলাম” আমার কোন ঠিকানা নাই। তাই কেউ কেউ ঘৃণা করে ফেরারী ডাকে। জয় বলল, আজ পর্যন্ত কেউ তোকে ভালবেসে সাইফুল ইসলাম ডাকল না। ফেরারীও ডাকল না। আমি তোকে ভালবেসে সাইফুল ডাকব। তোর কোন সমস্যা আছে? সাইফুল বলল, না সমস্যা নাই ডাকতেই থাকেন। জয় বলল, তোর এত দুঃখ কীসের? সাইফুল বলল, গুরো এসব আপনাকে বলে কোন লাভ নাই। আপনি তো এই যন্ত্রণা হ্রাস করতে পারবেন না। যদি পারেন একটি উপকার করেণ। জয় হেসে উঠে বলল, মানুষের উপকার করাতো আমার স্বভাবে পরিণত হল। বল! তোর কী সমস্যা? সাইফুল বলল, একটি থাকার জায়গার ব্যবস্থা করে দিলে ভাল হত।
জয় বলল, তা কোন সমস্যা না। আজ থেকে আমার বাড়িতে থাকবি ভয়ের কোন কারণ নাই। আমার পরিবাবে কোন লোক জন নাই। তোকে কেউ ফেরারী বলে ডাকবে না। সাইফুল বলল, ঠিক আছে একটি সমস্যা থেকে বেঁচে গেলাম। আর একটি উপকার করেদিন। জয় বলল, “বল কী করতে হবে?”
সাইফুলঃ গুরো আমি ভাবতাম আমার চেয়ে দুষ্ট আর কেউ জন্ম নেয় নি। এই এলাকায় এসে আমার ধারণা ভুল হয়ে গেল। এইখানের ছেলেরা আমার চেয়েও বেশি দুষ্ট তাদের যন্ত্রণাই জীবনটা অতিষ্ঠ হয়ে গেল। আমার বুকটা যন্ত্রণাই পেটে যাচ্ছে এমন সময় দুষ্ট ছেলেরা আমাকে আরো বেশি ব্যতিত করে তুলল।
জয় বলল, আজ থেকে কেউ তোকে ব্যতিত করবে না। কারণ তুই আমার বাসায় থাকবি। আমি ভদ্র, তবে অভদ্র হতেও দেরি হয় না। আমার এই এলাকাই এমন লোকের জন্ম এখনো হয়নি যে আমাদেরকে ভয় করে না।
সাইফুল বলল, ঠিক আছে তাহলে আমি ঘুরে আসি। জয় বলল, আগে আমার বাসাটা দেখে যা। সাইফুল বলল, না’রে গুরো, বাসা আমার পছন্দ হয়েছে। জয় বলল, আরে পছন্দ-অপছন্দের কথা আসতেছে না। বাড়ি তো চিনে রাখতে হবে?
সাইফুল বলল, আপনার সব কিছু আমার চেনা-জানা। আপনি অনেক ভাল লোক। আপনি আমাকে নিয়ে কোন দূর চিন্তা করবেন না। আপনি যেখানে থাকেন সেখান থেকে আমি আপনাকে খুঁজে নিব।
রাত যত গভীর হয় জয়ের যন্ত্রণা তত বেশি বেড়ে যায়। জয়, খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে আকাশের তারা গুনতেছে। সাইফুল, এসে বলল, গুরো আমরা তো অনেক দিন ধরে একি সাথে বাস করতেছি তবে-জয় বলল, তবে কী ভয় হয় না’কি আমাকে? সাইফুল একটু হেসে বলল, মাঝে মাঝে ভয়ও হয়। জয় বলল, কেন? সাইফুল বলল, আসলে আপনি কী মানুষ না’কি জ্বিন? জয় বলল, আমি মানুষও না জ্বিনও না। আমি দানব। সাইফুল বলল, গুরো আপনাকে কিছু কথা বলতে মন চায়।
জয় বলল, বলে দে।
সাইফুল বলল, গুরো আমি শুনেছি আপনার কেউ এই এলাকার লোক না।
জয় বলল, ঠিকেই শুনেছিস। আমি, আমানত, লুৎফর, ফারবেজ, কেউ এই এলাকার লোক না। আমারা এইখানে বাস করেতিছি কিছু কারণে। আমাদের ঘর বাড়ি বলতে কিছূই নাই। যখন যেখানে ইচ্ছা হয় সেখানে চলে যাই।
সাইফুল বলল, তাহলে এই এলাকার লোকেরা আপনাদেরকে এত ভয় কেন করে? জয় বলল, তুই কী শুনেছিস মারের নাম বাবা জি? সাইফুল বলল, হ্যাঁ শুনেছি। জয় বলল, তাহলে শোন এই এলাকাটা এক সময় অপরাধে ভরপুর ছিল। জুয়া, মদ, সুদ, এই গুলো ছিল এই এলাকায় সচরাচর একটি বিষয়। আমি আমানাত, লৎফর, ফারবেজ, এই এলাকায় এসে প্রথমে তদেরকে ভাল হওয়ার আহ্বান করেছিলাম কিন্তুু তারা আমাদের ডকে সাড়া না দিয়ে আমাদেরকে নিয়ে পরিহাস করতে লাগল। তারপর যখন মার শুরো করেদিলাম। সাবই লাইনে দাঁড়াল। এখন দেখছিস ওরা কত লক্ষ্ণী। সাইফুল বলল, অনেক লক্ষ্ণী তবে পুরোটা লক্ষ্ণী এখনো হতে পারে নি। আপনাদের অবর্তমানে এখনো ওরা দুষ্টামি করে বেড়ায়। জয় বলল, আমি তা জানি তাই এই এলাকাই এখনো বাস করেতেছি। যে দিন তারা মানুষ হবে সে দিন আমি এই এলাকা ছেড়ে চলে যাব। সাইফুল বলল, কোথায় যাবেন? জয় বলল, যে দিকে চোখ যায় সে দিকে। সাইফুল বলল, আপনার মনে বুঝি অনেক কষ্ট আছে?
জয়ঃ হ্যাঁ কষ্ট আছে। সাইফুল বলল, শুনতে পারি? জয় বলল, এখন না পরে শুনাব। পরের দিন রাতে সাইফুল আবার জয়ের ধারে এসে উপস্থিত। সাইফুল বলল, গুরো কিছু বলতে চায়।
জয়। বল-
সাইফুলঃ আচ্ছা গুরো আমানাত, লুৎফর, ফারবেজ, আপনারা কী একি এলাকার লোক? জয় বলল, না তাদেরকে খোঁজে নিয়েছি। সাইফুল বলল, ওরা তো কেউ স্থায়ি ভাবে এই এলাকায় বাস করে না শুধু আপনি-
জয় বলল, তোর চেয়েও বেশি যন্ত্রণা আমার বুকে আছে। তাই আমি এই ধু-ধু মরুভুমিতে পড়ে আছি। আমানত চট্টগ্রামে আছে। ফারবেজ কঙবাজারে লুৎফর রুমা শহরে তাদের কাজ মানুষকে ভালর দিকে নিয়ে আসা। প্রথমে তারা বুঝিয়ে ভাল পথে আনতে চায় আর না বুঝলে পিটিয়ে সোজা করে।
সাইফুল বলল, গুরো আপনি ঘর সংসার করেবে না? জয় বলল, কেন? তোর কী রান্না করে খেতে কষ্ট হয়? যদি কষ্ট হয়ে থাকে তুই একটি বিয়ে করে নে। সাইফুল বলল, আপনি তো আমার বড়; আপনি করে নিন। না হয় আমি করেতে পারতেছি না।
জয়ঃ আমার বিয়ে তো অনেক আগে হয়েছিল।
সাইফুল বলল, কার সাথে? আপনার স্ত্রী কোথায় থাকে? তাঁকে তো কখনো দেখি নাই।
জয় বললঃ শোনবি? সাইফুল বললঃ হ্যাঁ শোনব। জয়ের চোখে জল টল-মল করতেছে । সাইফুল ব্যস্ত হয়ে বলল, গুরো-
জয় শুরো করল অতীত কাহিনীঃ
সে অনেক দিন আগের কথা আমার পাশে ছিল বরুয়া পাড়া আমি আর এপি বরুয়া একি ক্লাসে লেখা পড়া করতাম। আমি মুসলিম সে বরুয়া আমাদরে ধর্ম আলাদা ছিল। আমি তা কখনো ভেবে দেখিনাই। এখনো দেখতে চাই না। ধর্ম আলাদা তাই বলে স্রষ্টা আলাদা নয়। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, মুসলিম যাই বলি না কেন। সবাইকে কিন্তুু এক জনেই সৃষ্টি করেছেন। আমারা পৃথিবীতে এসে তাকে নানা নামে স্মরণ করি। স্রষ্টা তো একজন। বরুয়াকে যিনি সৃষ্টি করেছেন মুসলিমকেও তিনি সৃষ্টি করেছেন। আমার আর এপি বরোয়ার ধর্ম আলাদা ছিল। স্রষ্টা কিনু্তু আলাদা ছিল না। বরুয়াকে এক স্রষ্টা সৃষ্টি করেছেন, মুসলিমকে আরেক স্রষ্টা সৃষ্ট করেছেন, হিন্দুকে অরেক, এমন কখনো না। যদি স্রষ্টা অনেক হত তাঁদের মাঝে যুদ্ধ লেগে যেতে। এক অপরের রাজ্য দখল করেনিত। মন্দিরে যাওয়ার সময় মুসলিম স্রষ্টা বাঁধা দিত আর মসজিদে যাওয়ার সময় হিন্দদের স্রষ্টা বাঁধা দিত। কখনো তো এমন হয় নি। তার কারণ স্রষ্টা শুধু একজন।
জয়ের অতীতে গঠে যাওয়া কাহিনীঃ
এপি বরুয়া জয়কে অনেক ভালবাসত জয়কে এক মুহূর্তের জন্যও আঁড়াল করতে চাইত না। সে জয়কে পাগলের মত ভালবাসত। জয়ের পরিবারের সাথে তাদের ভাল সম্পর্ক ছিল। এপি, অনেক বড় হয়ে গেছে। হঠাৎ কলেজ থেকে ফেরার সময় জয়, এপিকে দেখতে পেল। সে হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছে। অনেক দিন পর তার মুখে হাসি দেখে ভাল লাগল।
শুরোতে এপি, জয়ের হতটা ধরে বলল, জয়, আমি যদি কখনো তোমাকে আঘাত করি তুমি কী আমাকে ক্ষমা করে দিবে? জয়ঃ হেসে উঠে বলল, তুমি যদি আমার প্রাণটা কেঁড়ে নাও তবু অভিনাম করব না। এপি বলল, আমি সেইটাই করতে চায়। তার কথা শুনে জয়, অবাক হয়ে গেল। এপি জয়কে বলল, তাকে এই পৃথিবীথেকে বিদায় করে দিতে এই পৃথিবী তার কাছে অসহ্য হয়ে গেছে। কারণ জানতে চাইলে? এপি বরুয়া বলল, “জয় আমি জানি তুমি আমাকে কত ভাল+বাস। তবে আমাদের ধর্ম তো আলাদা। তোমার আর আমার বিয়ে হওয়া কখনো সম্ভব না। আমি কখনো তোমাকে বিয়ে করতে পারব না। এপির কথা শুনে জয়, অর্দ পাগল হয়ে গেল। তাকে কথা দিল তার জীবন থেকে সরে দাঁড়াবে।
জয়, নিজে সিকাতের হাতে এপিকে তুলে দিল ।
জয়ঃ সাইফুলকে লক্ষ্য করে বলল, এই ছিল আমার অতীত গটে যাওয়া দিন। তারপর চোখে আর কিছু দেখতে না পেয়ে তোর মত ফেররী হয়ে। কিছু দিন পাগলামি করেছিলাম। পরে এই গ্রামে ছুটে আসলাম আর খোঁজে নিয়েছিলাম আমানত লুৎফর ফারবেজকে।
সাইফুলঃ জয়কে বুকে টেনে নিয়ে বলল, গুরো আমাকেও আপন করে নিয়েছেন? জয় বলল, তোরা ছাড়া আর কে আছে আমার?
কিছুদিন পর জয়ের সব দায়িত্ব বুঝিয়ে দিল সাইফুকে। তারপর গুরো নিখোঁজ হয়ে গেল।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ফয়জুল মহী ২৭/১২/২০১৬সমুজ্জ্বল লিখা
-
ডঃ সুজিতকুমার বিশ্বাস ১৯/১২/২০১৬বেশ ভালো।
-
কুয়াশা ১৮/১২/২০১৬ধর্ম যাই হোক না কেন কর্মই ধার্মিকের সবচেয়ে বড় পরিচয়। হোক না হিন্দু বা মুসলিম বা অন্য ধর্ম।
-
আব্দুল হক ১৮/১২/২০১৬মানুষ সবসময়ই নিজেকে বড় করে দেখে।
-
সোলাইমান ১৮/১২/২০১৬যার যার ধর্ম তার তার কাছে অনেক বড়।