অবেলার ধন
অস্তিত্ব বিলীন হবার পথে বাকরুদ্ধ সিরুখা।
সন্ধের ঠিক আগ মুহুর্তে প্রতিবেশিনীর দেয়া অপবাদে
তার এই করুণ হাল।এক সময় বাজারের পূর্ব দিক দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের পাড়ে নৌকোয় কাঁচা তরকারির জোগান দিতেন
ওপাড়ার মৃত হারুথ মাঝির তালাক প্রাপ্ত কন্যাকে বিয়ে করতে বাধ্য হতে হয়েছিল।অবশ্য এর পেছনে যথেষ্ট কারণও আছে।
হারুথ মাঝির বড় মেয়ের নাম ছিল জবা।বিয়ের সময়ে কাজী জিজ্ঞেস করেছিল পুরো নাম।উত্তরে বলেছিল মোসাম্মৎ জবা আক্তার কাঞ্চন বিবি।অতী সুন্দরী বিধায় চেয়ারম্যানের ছেলের চোঁখ অমন তিন বেলা না খাওয়া পরিবারটির উপরেই পড়েছিল।
পাপ ছাড়েনা বাপকেও।তাই চেয়ারম্যান ছেলেকে না করতে পারেনি।কিন্তু টাকা আর ক্ষমতাধর ব্যাক্তির ক্ষেত্রে একই ফুলের রস বেশিদিন মুখে চ্যুট করে না।তাই বেচারি জবার এক বৎসরও কাটল না তার শ্বশুরের গৃহালয়ে।
চৈত্রের কড়া দুপুরে, তাপখড় রোদের মতই তিন তালাক শব্দটি একমাত্র পুজি করে নিয়ে এই অবলাটির বাড়ি ফিরতে হয়েছিল।গরীবের ঘরের মেয়ে।বাপ নেই।মা কোন রকমের ক্ষেতের পাড়ের কলমি শাঁক আর পালা হাঁসের ডিম বিক্রি করে দিন পার করে।এমন অসাড় দিনে মেয়ের বাড়ি ফেরা তাও আবার মাথায় তিন তালাকের বোঝা।
লোকমুখে এখন নানা মত।করিম মিঞার চাঁয়ের দোকানে চলছে এ নিয়ে তর্ক বিতর্ক।তবে কথোপকথনের শেষ চরণ টি সবার একই "আহা বেচারা হারুর মরেও শান্তি নেই।"
এমন অকালে যেথায় পেট শুণ্য তিনটি ক্ষুধার্ত প্রাণী দিনপার করে, সেখানে এমন অপবাদযুক্ত আরেকটি প্রাণীর উপস্থিতি স্বয়ং মাতা মহিয়সিনীও সহ্য করতে পারলেন না।
সেদিন সন্ধেবেলা চার গ্রামের মানুষ একত্রিত করে
অকথ্য ভাষায় তাঁড়িয়ে দিয়েছিল নিজ গর্ভজাত জাতকটিকে।গ্রামের মানুষও ছিঁ ছিঁ কলরব তুলে ঘরের কবাট তুলেছিল।
উত্তর পাড়ের বাগান বাড়ির পার্শ্বে সিরুখা স্বল্প মূল্যের একটু জমি কিনে বাঁশের ছন দিয়ে নিবাস গড়ে।
সন্ধে বেলার অমন বর্বর কাহিনিতে বেচারা নির্বাক ছিল।সারারাত এক আধবোজা চোঁখে জেগে জেগে কল্পনা করছিল জবা এ রাতে কি নির্মম ভাবে রাত কাটাচ্ছে।
হঠাৎ তন্দ্রা ভেঙ্গে শুনতে পায় কে যেন শুঁকনো পাতা মাড়িয়ে গুন গুন করে কাঁদছে।সিরুখা ডাক দিল কেরে কাঞ্চন বিবি নাকি গো।কান্নার আওয়াজ বেড়ে যায়। আধ ভেজা কন্ঠে জবাব আসে হ আমি তোমার কাঞ্চন বিবি।
সিরুখা আর থাকতে পারেনা। কাঞ্চন ফুল দিয়ে একদিন জবাকে বলছিল আমার বৌ হবি জবা?তাহলে তোকে কাঞ্চন বিবি বলে ডাকবো।সেদিন সে নামটি গ্রহন করতে দ্বিধা করে নাই কিন্ত কথা দিবার দুঃসাহস তাঁর ছিল না।আটচল্লিশে বুড়োর অবিবাহিত থাকার পেছনের কারণ এতটুকোই।
কিন্ত নিশি রাতে অমন কান্নাজড়া কন্ঠে কাঞ্চন ফুলের গন্ধ কতটা যে তীব্র হয় সে কথা কারো অজানা নয়।সন্ধের করুন কাহিনির আর্তনাদে পোড়া বুড়ো আর থাকতে পারল না।কবাট খুলে জড়িয়ে ধরলো প্রিয়তমা কে।
ভোরের সাদা আলোয় পাখির কিচিরমিচির রব উঠেছে।কি প্রাণলব্ধ সে কলরব।ওদিকে গ্রামেও রব উঠেছে। আটচল্লিশে বুড়োর সাথে জবার পরকীয়া ছিল।।
সন্ধের ঠিক আগ মুহুর্তে প্রতিবেশিনীর দেয়া অপবাদে
তার এই করুণ হাল।এক সময় বাজারের পূর্ব দিক দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের পাড়ে নৌকোয় কাঁচা তরকারির জোগান দিতেন
ওপাড়ার মৃত হারুথ মাঝির তালাক প্রাপ্ত কন্যাকে বিয়ে করতে বাধ্য হতে হয়েছিল।অবশ্য এর পেছনে যথেষ্ট কারণও আছে।
হারুথ মাঝির বড় মেয়ের নাম ছিল জবা।বিয়ের সময়ে কাজী জিজ্ঞেস করেছিল পুরো নাম।উত্তরে বলেছিল মোসাম্মৎ জবা আক্তার কাঞ্চন বিবি।অতী সুন্দরী বিধায় চেয়ারম্যানের ছেলের চোঁখ অমন তিন বেলা না খাওয়া পরিবারটির উপরেই পড়েছিল।
পাপ ছাড়েনা বাপকেও।তাই চেয়ারম্যান ছেলেকে না করতে পারেনি।কিন্তু টাকা আর ক্ষমতাধর ব্যাক্তির ক্ষেত্রে একই ফুলের রস বেশিদিন মুখে চ্যুট করে না।তাই বেচারি জবার এক বৎসরও কাটল না তার শ্বশুরের গৃহালয়ে।
চৈত্রের কড়া দুপুরে, তাপখড় রোদের মতই তিন তালাক শব্দটি একমাত্র পুজি করে নিয়ে এই অবলাটির বাড়ি ফিরতে হয়েছিল।গরীবের ঘরের মেয়ে।বাপ নেই।মা কোন রকমের ক্ষেতের পাড়ের কলমি শাঁক আর পালা হাঁসের ডিম বিক্রি করে দিন পার করে।এমন অসাড় দিনে মেয়ের বাড়ি ফেরা তাও আবার মাথায় তিন তালাকের বোঝা।
লোকমুখে এখন নানা মত।করিম মিঞার চাঁয়ের দোকানে চলছে এ নিয়ে তর্ক বিতর্ক।তবে কথোপকথনের শেষ চরণ টি সবার একই "আহা বেচারা হারুর মরেও শান্তি নেই।"
এমন অকালে যেথায় পেট শুণ্য তিনটি ক্ষুধার্ত প্রাণী দিনপার করে, সেখানে এমন অপবাদযুক্ত আরেকটি প্রাণীর উপস্থিতি স্বয়ং মাতা মহিয়সিনীও সহ্য করতে পারলেন না।
সেদিন সন্ধেবেলা চার গ্রামের মানুষ একত্রিত করে
অকথ্য ভাষায় তাঁড়িয়ে দিয়েছিল নিজ গর্ভজাত জাতকটিকে।গ্রামের মানুষও ছিঁ ছিঁ কলরব তুলে ঘরের কবাট তুলেছিল।
উত্তর পাড়ের বাগান বাড়ির পার্শ্বে সিরুখা স্বল্প মূল্যের একটু জমি কিনে বাঁশের ছন দিয়ে নিবাস গড়ে।
সন্ধে বেলার অমন বর্বর কাহিনিতে বেচারা নির্বাক ছিল।সারারাত এক আধবোজা চোঁখে জেগে জেগে কল্পনা করছিল জবা এ রাতে কি নির্মম ভাবে রাত কাটাচ্ছে।
হঠাৎ তন্দ্রা ভেঙ্গে শুনতে পায় কে যেন শুঁকনো পাতা মাড়িয়ে গুন গুন করে কাঁদছে।সিরুখা ডাক দিল কেরে কাঞ্চন বিবি নাকি গো।কান্নার আওয়াজ বেড়ে যায়। আধ ভেজা কন্ঠে জবাব আসে হ আমি তোমার কাঞ্চন বিবি।
সিরুখা আর থাকতে পারেনা। কাঞ্চন ফুল দিয়ে একদিন জবাকে বলছিল আমার বৌ হবি জবা?তাহলে তোকে কাঞ্চন বিবি বলে ডাকবো।সেদিন সে নামটি গ্রহন করতে দ্বিধা করে নাই কিন্ত কথা দিবার দুঃসাহস তাঁর ছিল না।আটচল্লিশে বুড়োর অবিবাহিত থাকার পেছনের কারণ এতটুকোই।
কিন্ত নিশি রাতে অমন কান্নাজড়া কন্ঠে কাঞ্চন ফুলের গন্ধ কতটা যে তীব্র হয় সে কথা কারো অজানা নয়।সন্ধের করুন কাহিনির আর্তনাদে পোড়া বুড়ো আর থাকতে পারল না।কবাট খুলে জড়িয়ে ধরলো প্রিয়তমা কে।
ভোরের সাদা আলোয় পাখির কিচিরমিচির রব উঠেছে।কি প্রাণলব্ধ সে কলরব।ওদিকে গ্রামেও রব উঠেছে। আটচল্লিশে বুড়োর সাথে জবার পরকীয়া ছিল।।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
suman ১৩/০৫/২০১৮Bastobdhormi lekha, ei lekhok nimeshei onek pothh pari deben
-
সুকান্ত মন্ডল ১৭/০৩/২০১৮সামাজিক অবস্থা সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। খুবই ভাল লাগল।
-
সুব্রত ব্রহ্ম ০৮/০৩/২০১৮ভালো লাগলো।
-
মীর মুহাম্মাদ আলী ০৭/০৩/২০১৮সুন্দর।
-
নীল-অভিজিৎ ০৭/০৩/২০১৮বেশ লাগল