www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

অতি লোভে তাতী নষ্ট

বাসায় আজ অনেক মেহমান এসেছে, সেই উপলক্ষে মা আমার হাতে পাঁচ হাজার টাকা ধরিয়ে দিলেন বাজার করে আনতে। তাই বারান্দায় বসে বসে টাকাগুলো গুনছিলাম, টাকা গুনা শেষ করে করে সামনে তাকিয়ে দেখি, আমার ৬/৭ জন খালাতো ভাইবোন উঠানে দাড়িয়ে টাকা মারার ধান্দায় আমার দিকে লোভাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আমিও কম কিসে?
কিছু টাকা হাতের মুঠোয় নিয়ে তাদের ডাক দিলাম।

-রিনা, মিনা, টিনা, দিনা এখানে আয়।
-বলো।
-আমার হাতের মুঠোয় কিছু টাকা আছে, যদি তোরা আমার হাতের মুঠো খুলতে পারিস তবে টাকাগুলো তোদের।

আমার কথায় খুশিতে তারা লাফিয়ে উঠলো, এ যেন মেঘ না চাইতেই জল!

-দেরী করিস না শুরু কর।

এই বলে তাদের দিকে হাতটা বাড়িয়ে দিলাম। তারাও ঝাপিয়ে পড়লো আমার হাতের উপর, তাদের মাঝে একটা প্রতিযোগিতা প্রতিযোগিতা ভাব "কে কেরে নিতে পারবে এই টাকা?"
আধাঘণ্টা চেষ্টা করেও তারা আমার হাতের মুঠো খুলতে পারলো না। ততক্ষণে তারা হাপাচ্ছে। তাদের হাপানোর শব্দে মা খালারা পর্যন্ত বাইরে চলে এলো। কাহিনী শোনার পর তো তারা হেসেই বাচে না।

তখন ছোট খালার ছেলে টগর এগিয়ে এলো। তাকে দেখে সবাই নতুন করে হাসিতে ফেটে পড়লো। বড় বড় মেয়ে ছেলেরা যা পারলো না। ক্লাস টু তে পড়া এই পুচকে কিনা হাতের মুঠোয় থেকে টাকা খুলে নিবে!!

-ভাইয়া, আমিই তোমার হাতের মুঠো থেকে টাকা নেব।
-বেশ ভালো কথা, তবে টাকাগুলো এমনভাবে নিবি যেন কেউ টাকগুলো দেখতে না পায়, নিয়ে টুপ করে পকেটে রাখবি। মনে থাকবে।
-ওকে ভাইয়া।

টগরের দিকে হাত বাড়িয়ে হাতের মুঠো নরম করে ধরলাম, যাতে সে সহজেই টাকাগুলো নিতে পারে। এরপরের ঘটনা খুব সংক্ষিপ্ত টগর একটি বিজয়ের হাসি দিয়ে খালার কোলে গেল। উপস্থিত সবাই হতবাক!!

সবাই টাকাগুলো দেখতে চাইলেও টগর কাউকে দেখাতে চাচ্ছিলো না, অনেক অনুরোধ আবদার করার পর টগর পকেট থেকে টাকা বের করে সবার সামনে মেলে ধরল তিনটা দুই টাকার নোট।
রাগে, দুঃখে অপমানে খালাতো বোনেরা আমাকে এমন এক দৌড়ানি দিল যে, আমার বাজারে যাবার রিকশা বাড়াটাই বেচে গেল।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৬৭০ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৫/০৯/২০১৮

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast