সতী স্ত্রী (গল্প - চতুর্থ পর্ব)
।। পর্ব ৪ ।।
যাবার পথে স্বপ্নাকে ডেকে দেবার কথা আছে । যদি সত্যি কোনো প্ল্যান রানিও করে, তবে অবশ্যই স্বপ্নাকে পাঠিয়ে দেবে । আমি জানি অরবিন্দ আসবে না, তাকে রাজি করিয়ে আনতে এক-দেড় ঘন্টার ব্যাপার । তাছাড়া খুব তাড়াতাড়ি আসবে না সেটা বুঝতেই পেরেছি এত দিনে ।
ঘরে টিভি চালিয়ে বসলাম । প্রতীক্ষায় থাকলাম স্বপ্নার, প্রেম আজকে জমে যাবে । পকেটে ফোনটা বেজে উঠলো, অরুণের কল ।
- হ্যালো । হ্যাঁ বল্ -
ফোনের ভিতর থেকে শব্দ এলো - রানি অরবিন্দর বাড়ি আসলো । তুই বাড়িতে নেই ?
আমি বললাম,
- হ্যাঁ ভাই ।
- তবে ?
- প্ল্যান করে ওকে পাঠিয়েছি । তোকে পরে বলবখনি ।
এর মধ্যে স্বপ্না এসে ঘরে ঢুকলো, - আসতে পারি ?
- এসেই তো পড়েছো !
মনে মনে একটা অজানা রাগ এসে বলে গেল - আহ্ঃ পেয়ে গেছি ! এবার আমার খেলাও শুরু রানি, চালাক আমিও কম নয় ।
যাই হোক, ঘটনা যে এভাবে এগিয়ে আসবে তা আমি ভাবতে পারিনি । এ সময় জীবনের প্রথমবার ভগবান যে আমার সহায় হয়ছেন, তা বেশ বুঝতে পারছি । আমি স্বপ্নার সঙ্গে গভীর প্রেম খেলায় ডুবে গেলাম ।
রানি তোমার ব্যবস্থা করছি, খেলো প্রেম প্রেম, তোমার সময় ফুরিয়ে এসেছে । এবার আমার পালা, তুমি কত বড় খিলাড়ি হয়ে গেছো দেখছি । আমাকে ফাঁকি দিয়ে পরকে যৌবন দান ? শেষে তুমি একুলও হারাবে আর ওকুলও । তোমার মত বেশ্যা স্ত্রী-কে পুষতে আমার বয়ে গেছে । (তোমার স্থান যেন রাস্তার অলিতে-গলিতেই হয়।)
স্বপ্নাকে আমি জিজ্ঞাসা করলাম,
- তুমি প্রশান্তকে চেনো ?
স্বপ্না বললো,
- হ্যাঁ, কেন বলো তো ?
- শুধু চেনো, নাকি আরো কিছু ?
- তুমি তো সব জানো, কিন্তু কী হয়েছে ওর ?
আমি বললাম,
- কিছুই হয়নি, শুনলাম ও নাকি বিয়ে করেছে ? তুমি কি ওকে ছেড়ে দিয়েছো ?
স্বপ্না জবাব দিলোনা । আমার কথা শুনে ও অবাক ।
- সত্যি নাকি ?
আমি বললাম,
- হ্যাঁ, রানি আমাকে বলেছিলো, তোমাকে একথা জানানোর জন্য ডাকা হয়েছে ।
- রানি কোথায় গেলো ?
- অরবিন্দর কাছে । প্রেম করতে ।
- তুমি সবকিছু জানো দেখছি ।
আমি বললাম, জানতাম না, জানতে পেরে গেছি, সেদিনের পর থেকে । আর তোমার সম্পর্কে তো শুনেছিই অরুণের কাছে । তুমি তো জানো, ও আমার ভালো বন্ধু ।
কথা বলতে বলতে স্বপ্নার দিকে তাকিয়ে এই প্রথম দেখলাম ওর চোখে জল ।
চোখের জল গোপন করে আমাকে বললো,
- যার জন্য অমন ভালোমানুষটাকে ব্যাথা দিয়ে তাকে ছেড়ে চলে আসলাম, আজ সে-ই কিনা অন্য মেয়ের হাত ধরে চলে গেলো আমাকে ফেলে ! হায় রে, ভেবেছিলাম প্রশান্তকে বিয়ে করে সুখের সংসার গড়বো, কিন্তু প্রশান্ত যে আমার সঙ্গে প্রেমের নামে ভালোবাসার খেলা করতো, জানতে পারিনি ।
আমি স্বপ্নাকে আশ্বস্থ করতে চেয়ে বললাম,
- দুঃখ কোরো না স্বপ্না, আমি জানি কে কেমন মানুষ । অরুণের মতো মানুষ হয় না, তুমি ওকে ছেড়ে ভুল করেছো । তোমাদের শুনেছিলাম ভালোবাসা করে বিয়ে হয়েছিলো ?
- হ্যাঁ ।
- অরুণ তোমাকে আজো ভালোবাসে জানো, ও বিয়ে করেনি তোমার আশায়, যদি তুমি একদিন ভুল বুঝে ফিরে আসো, এই ভেবে ।
স্বপ্না আমাকে যা বললো, তাতে আমার মন বিষিয়ে গেলো । রানিকে কী কুক্ষণে দেখে যে ভালোলেগে গেছিলো ! এখন বুঝতে পারছি, সুন্দরী মেয়েদের কী গুণ । স্বপ্না আমাকে বললো,
- রানি তোমাকে কোনোদিন ভালোই বাসেনি । ও অরবিন্দর সঙ্গে.....
আমি ওর কথায় বাঁধা দিয়ে বললাম,
আমি জানি স্বপ্না, আমি সব জানি । কিন্তু তুমি তো এমন ছিলে না ?
স্বপ্না দীর্ঘশ্বাস ফেললো । কিছুক্ষণ বাদে আমাকে বললো,
- আমার সর্বনাশ করেছে রানি, আজকে আমি কত সুখে থাকতাম অরুণের সঙ্গে । সত্যি সে সময় রানির পাল্লায় পড়ে আমি কেমন যেন হয়ে পড়েছিলাম । তারপর কিছুই বুঝতে পারিনি, আজ আমিও ওর মতো হয়ে গেছি, ছিঃ ! আমি ভাবতে পারছি না ।
আমি বললাম,
- স্বপ্না আমি যে কী যন্ত্রণায় ভুগছি, তা তোমাকে বলে বোঝানোর নয় । কিন্তু তুমি আমাকে কেন জানাওনি যে, রানি ও পথেরই পথিক ?
স্বপ্না নীরবে বসেই থাকলো । আমার কিছু ভালো লাগছে না, স্বপ্না তুমি আমাকে কেন জানাওনি রানি এতটা বাজে মেয়ে, কেন আমাকে বলোনি ও আমাকে ভালোবাসে না । হে ভগবান, এখন আমি কী করবো ? কী যন্ত্রণা, কী অসহায়....
আমি ভেঙে পড়া মাটির মূর্তির মত মূর্চ্ছা গেলাম, মাথার যন্ত্রণা, বুকের যন্ত্রণা, হে ভগবান, এ কেমন সাজা তোমার, যত দোষ কী আমি করেছি ? হৃদয়ে আগুন জ্বলে উঠলো প্রবল, রানি, রানি ! চোখ দিয়ে দু'বিন্দু রক্ত ঝরে পড়লো ।
রানি যদি আমার সামনে থাকতো, ওকে কেটে কুচি কুচি করে ফেলতাম । মাথা খারাপ হয়ে গেলো আমার, আমি ঘরের শোকেস, টিভি ভেঙে ফেলতে লাগলাম পাগলের মতো, কাঁচের টুকরো আমার হাতে ফুটে রক্তের স্রোত বইতে থাকলো । ক্রমাগত রানির সেই মুখ ভেসে উঠছে, স্বপ্না আমাকে থামানোর চেষ্ঠা করছে । কিন্তু আমি উন্মাদ, খুন করে ফেলবো সবাইকে ।
হায় ! কাকে ভালোবেসেছি আমি ? কাকে নিয়ে সংসার করতে বসেছি ? কাকে, ভগবান কাকে ?
রানি এখন অরবিন্দর সঙ্গে প্রেম-খেলায় মগ্ন, আবার ভেসে উঠছে সে ছবি । ওফ্ঃ, কী যন্ত্রণা !
না ! আমি দেখতে চাই না ! দেখতে চাই না রানির মুখ । বারবার বারবার চোখে ভেসে উঠছে তবু । এত অপমান - এত যন্ত্রণা হায় !
ধীরে ধীরে ড্রয়ারটা খুললাম, সেখানে একটা বিষের শিশি রাখা ছিলো । আমি পাগলের মতো স্বপ্নাকে বললাম চলে যেতে । স্বপ্না দৌড়ে পালালো ।
এরপর পরবর্তী পর্বে....
যাবার পথে স্বপ্নাকে ডেকে দেবার কথা আছে । যদি সত্যি কোনো প্ল্যান রানিও করে, তবে অবশ্যই স্বপ্নাকে পাঠিয়ে দেবে । আমি জানি অরবিন্দ আসবে না, তাকে রাজি করিয়ে আনতে এক-দেড় ঘন্টার ব্যাপার । তাছাড়া খুব তাড়াতাড়ি আসবে না সেটা বুঝতেই পেরেছি এত দিনে ।
ঘরে টিভি চালিয়ে বসলাম । প্রতীক্ষায় থাকলাম স্বপ্নার, প্রেম আজকে জমে যাবে । পকেটে ফোনটা বেজে উঠলো, অরুণের কল ।
- হ্যালো । হ্যাঁ বল্ -
ফোনের ভিতর থেকে শব্দ এলো - রানি অরবিন্দর বাড়ি আসলো । তুই বাড়িতে নেই ?
আমি বললাম,
- হ্যাঁ ভাই ।
- তবে ?
- প্ল্যান করে ওকে পাঠিয়েছি । তোকে পরে বলবখনি ।
এর মধ্যে স্বপ্না এসে ঘরে ঢুকলো, - আসতে পারি ?
- এসেই তো পড়েছো !
মনে মনে একটা অজানা রাগ এসে বলে গেল - আহ্ঃ পেয়ে গেছি ! এবার আমার খেলাও শুরু রানি, চালাক আমিও কম নয় ।
যাই হোক, ঘটনা যে এভাবে এগিয়ে আসবে তা আমি ভাবতে পারিনি । এ সময় জীবনের প্রথমবার ভগবান যে আমার সহায় হয়ছেন, তা বেশ বুঝতে পারছি । আমি স্বপ্নার সঙ্গে গভীর প্রেম খেলায় ডুবে গেলাম ।
রানি তোমার ব্যবস্থা করছি, খেলো প্রেম প্রেম, তোমার সময় ফুরিয়ে এসেছে । এবার আমার পালা, তুমি কত বড় খিলাড়ি হয়ে গেছো দেখছি । আমাকে ফাঁকি দিয়ে পরকে যৌবন দান ? শেষে তুমি একুলও হারাবে আর ওকুলও । তোমার মত বেশ্যা স্ত্রী-কে পুষতে আমার বয়ে গেছে । (তোমার স্থান যেন রাস্তার অলিতে-গলিতেই হয়।)
স্বপ্নাকে আমি জিজ্ঞাসা করলাম,
- তুমি প্রশান্তকে চেনো ?
স্বপ্না বললো,
- হ্যাঁ, কেন বলো তো ?
- শুধু চেনো, নাকি আরো কিছু ?
- তুমি তো সব জানো, কিন্তু কী হয়েছে ওর ?
আমি বললাম,
- কিছুই হয়নি, শুনলাম ও নাকি বিয়ে করেছে ? তুমি কি ওকে ছেড়ে দিয়েছো ?
স্বপ্না জবাব দিলোনা । আমার কথা শুনে ও অবাক ।
- সত্যি নাকি ?
আমি বললাম,
- হ্যাঁ, রানি আমাকে বলেছিলো, তোমাকে একথা জানানোর জন্য ডাকা হয়েছে ।
- রানি কোথায় গেলো ?
- অরবিন্দর কাছে । প্রেম করতে ।
- তুমি সবকিছু জানো দেখছি ।
আমি বললাম, জানতাম না, জানতে পেরে গেছি, সেদিনের পর থেকে । আর তোমার সম্পর্কে তো শুনেছিই অরুণের কাছে । তুমি তো জানো, ও আমার ভালো বন্ধু ।
কথা বলতে বলতে স্বপ্নার দিকে তাকিয়ে এই প্রথম দেখলাম ওর চোখে জল ।
চোখের জল গোপন করে আমাকে বললো,
- যার জন্য অমন ভালোমানুষটাকে ব্যাথা দিয়ে তাকে ছেড়ে চলে আসলাম, আজ সে-ই কিনা অন্য মেয়ের হাত ধরে চলে গেলো আমাকে ফেলে ! হায় রে, ভেবেছিলাম প্রশান্তকে বিয়ে করে সুখের সংসার গড়বো, কিন্তু প্রশান্ত যে আমার সঙ্গে প্রেমের নামে ভালোবাসার খেলা করতো, জানতে পারিনি ।
আমি স্বপ্নাকে আশ্বস্থ করতে চেয়ে বললাম,
- দুঃখ কোরো না স্বপ্না, আমি জানি কে কেমন মানুষ । অরুণের মতো মানুষ হয় না, তুমি ওকে ছেড়ে ভুল করেছো । তোমাদের শুনেছিলাম ভালোবাসা করে বিয়ে হয়েছিলো ?
- হ্যাঁ ।
- অরুণ তোমাকে আজো ভালোবাসে জানো, ও বিয়ে করেনি তোমার আশায়, যদি তুমি একদিন ভুল বুঝে ফিরে আসো, এই ভেবে ।
স্বপ্না আমাকে যা বললো, তাতে আমার মন বিষিয়ে গেলো । রানিকে কী কুক্ষণে দেখে যে ভালোলেগে গেছিলো ! এখন বুঝতে পারছি, সুন্দরী মেয়েদের কী গুণ । স্বপ্না আমাকে বললো,
- রানি তোমাকে কোনোদিন ভালোই বাসেনি । ও অরবিন্দর সঙ্গে.....
আমি ওর কথায় বাঁধা দিয়ে বললাম,
আমি জানি স্বপ্না, আমি সব জানি । কিন্তু তুমি তো এমন ছিলে না ?
স্বপ্না দীর্ঘশ্বাস ফেললো । কিছুক্ষণ বাদে আমাকে বললো,
- আমার সর্বনাশ করেছে রানি, আজকে আমি কত সুখে থাকতাম অরুণের সঙ্গে । সত্যি সে সময় রানির পাল্লায় পড়ে আমি কেমন যেন হয়ে পড়েছিলাম । তারপর কিছুই বুঝতে পারিনি, আজ আমিও ওর মতো হয়ে গেছি, ছিঃ ! আমি ভাবতে পারছি না ।
আমি বললাম,
- স্বপ্না আমি যে কী যন্ত্রণায় ভুগছি, তা তোমাকে বলে বোঝানোর নয় । কিন্তু তুমি আমাকে কেন জানাওনি যে, রানি ও পথেরই পথিক ?
স্বপ্না নীরবে বসেই থাকলো । আমার কিছু ভালো লাগছে না, স্বপ্না তুমি আমাকে কেন জানাওনি রানি এতটা বাজে মেয়ে, কেন আমাকে বলোনি ও আমাকে ভালোবাসে না । হে ভগবান, এখন আমি কী করবো ? কী যন্ত্রণা, কী অসহায়....
আমি ভেঙে পড়া মাটির মূর্তির মত মূর্চ্ছা গেলাম, মাথার যন্ত্রণা, বুকের যন্ত্রণা, হে ভগবান, এ কেমন সাজা তোমার, যত দোষ কী আমি করেছি ? হৃদয়ে আগুন জ্বলে উঠলো প্রবল, রানি, রানি ! চোখ দিয়ে দু'বিন্দু রক্ত ঝরে পড়লো ।
রানি যদি আমার সামনে থাকতো, ওকে কেটে কুচি কুচি করে ফেলতাম । মাথা খারাপ হয়ে গেলো আমার, আমি ঘরের শোকেস, টিভি ভেঙে ফেলতে লাগলাম পাগলের মতো, কাঁচের টুকরো আমার হাতে ফুটে রক্তের স্রোত বইতে থাকলো । ক্রমাগত রানির সেই মুখ ভেসে উঠছে, স্বপ্না আমাকে থামানোর চেষ্ঠা করছে । কিন্তু আমি উন্মাদ, খুন করে ফেলবো সবাইকে ।
হায় ! কাকে ভালোবেসেছি আমি ? কাকে নিয়ে সংসার করতে বসেছি ? কাকে, ভগবান কাকে ?
রানি এখন অরবিন্দর সঙ্গে প্রেম-খেলায় মগ্ন, আবার ভেসে উঠছে সে ছবি । ওফ্ঃ, কী যন্ত্রণা !
না ! আমি দেখতে চাই না ! দেখতে চাই না রানির মুখ । বারবার বারবার চোখে ভেসে উঠছে তবু । এত অপমান - এত যন্ত্রণা হায় !
ধীরে ধীরে ড্রয়ারটা খুললাম, সেখানে একটা বিষের শিশি রাখা ছিলো । আমি পাগলের মতো স্বপ্নাকে বললাম চলে যেতে । স্বপ্না দৌড়ে পালালো ।
এরপর পরবর্তী পর্বে....
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
স্বপন রোজারিও (মাইকেল) ১৩/০৪/২০২০চমৎকার করে সাজিয়েছেন।
-
ফয়জুল মহী ১২/০৪/২০২০অসামান্য ভাবনায় নান্দনিক লেখনী