নিশি ডাকা ভূত
ক’দিন বেশ বৃষ্টি হয়েছে। পুকুর ডোবাগুলো পানিতে ভরে উঠেছে। মাসুমের মাছ ধরার খুব নেশা। মাসুম ও আরো দু তিনজন মিলে এক সঙ্গে রাতে ক্যাটা হাতে নিয়ে অনেক দূর পর্যন্ত চলে যায়। অনেক মাছও পাওয়া যায়। বিশেষ করে গভির রাতে প্রচুর মাছ পাওয়া যায়। মাসুম সুমনকে বলে রেখেছে রাত তিনটার দিকে এসে যেন ডাকে, কেননা ঐ সময় মাছ ধরার সবচেয়ে ভাল সময়। তার উপর আজ ভরা পূর্ণিমা। পূর্ণিমাতে পানির নিচের মাছরা চিক্ চিক্ করে তাদের পিঠ দেখিয়ে ঘুরে বেড়ায়। মাসুমরা সাধারণত বাড়ি থেকে কিলো তিনেক উত্তরে একটা ছড়া নদী আছে সেখানেই যায়। মাসুম এখনও বিয়ে করে নাই। সংসারে ওর মা আর ও । মাসুমের মা জানে ছেলের মাছ ধরার নেশা খুব বেশী। কিন্তু রাতে মাছ ধরতে গেলে কতরকম বিপদ আপদ হতে পারে! তাই সে তাঁর ছেলেকে বলেছে- বাবা, আমার মাছের দরকার নেই, তবু তুই রাত বিরাতে এমন করে মাছ ধরতে যাস না।
মাসুম মায়ের সব কথা শুনলেও এই কথাটা শুনতে পারেনা।
মাসুম - কেন মা, রাতে মাছ ধরলে কি সমস্যা?
মা - কেন বুঝিস না রাতে কত সাপ খোপ থাকে, আর তাছাড়া রাতে তেনারাও ঘুরে বেড়ায়।
মাসুম - তেনারা আবার কে?
মা- কে মানে! ভূতের দল।
মায়ের কথায় ছেলে হাসে, তুমি যে কি বল মা। ভূত পেঁত কি কিছু আছে?
মা- থাক না থাক, তোর রাতে মাছ ধরার কাজ কি?
মাসুম - আহ! মা, রাতে মাছ ধরা খুব সহজ।
ঠিক আছে ধরবি ধর কিন্তু কেউ যদি একবার এসে তোকে ডাকে তবে দরজা খুলবি না, কমপক্ষে তিনবার না ডাকা পর্যন্ত। আর হ্যা যদি কখনো সেই রকম সমস্যার সম্মুক্ষিণ হোস তবে যত তারাতারি সম্ভব ভয় কাটিয়ে উঠবি, মনে সাহস তৈরি করবি।
ছেলে হাসতে হাসতে বলে - আচ্ছা মা। তুমি এখন ঘুমাও।
মাসুম শুয়ে অনেক স্বপ্ন দেখে। একটা বৌ দরকার, মা একায় সংসারের সব কাজ করে। একটা ভাল মেয়ে দেখে সে বিয়ে করবে। তাহলে আর মা’র সমস্য হবে না। মাসুম কখন ঘুমিয়ে পড়েছে জানেনা। হঠাৎ মনে হলো সুমন তাঁকে ডাকছে, সে জাগনা হলো, মনে হলো দরজা ধ্বাক্কা দিয়ে মাসুম তাকে ডাকল। সে তাড়াতাড়ি ক্যাটা আর টচ্ লাইটটা নিয়ে বেড়িয়ে পড়ল। দেখে সুমন আঙিনার মাঝে দাঁড়িয়ে আছে। মাসুমকে বেড় হতে দেখে সে ঘুরে হাঁটতে লাগল। মাসুম সুমনের পিছনে পিছনে হাঁটতে হাঁটতে বলল
কিরে এতো জোড়ে হাঁটছিস কেন? একটু আস্তে যা।
মাসুম কোন কথার উত্তর না দিয়ে হাঁটতে লাগল। হাঁটতে হাঁটতে ছড়া নদীটার কাছে এসে দাঁড়াল। মাসুমকে কিছু না বলে সুমন আগেই পানিতে নেমে পড়ল। মাসুম কোন কিছু না ভেবেই সুমনের পিছন পিছন মাছ ধরার চেষ্টা করছে কিন্তু কি আশ্চার্য ব্যাপার, একটা মাছও চোখে পড়ছে না। মাসুম ভাবল কি ব্যাপার আজ সব মাছগুলো কি পালাল নাকি! সুমনের ঘুম ভাঙতে কিছুটা দেরিই হয়, কিন্তু খুব দেরি নয়। তিনটায় ওঠার কথা সেখানে তিনটা দশ মিনিট হবে হয়তো। তাড়াতাড়ি সে ক্যাটা আর টচ্টা নিয়ে সোজা মাসুমের বাড়িতে আসে। নিঃশ্চয় আজও মাসুম ঘুমিয়েই আছে। সে মাসুমের ঘরের কাছে এসে দেখে মাসুমের ঘর খোলা সে ঘরে নেই। মাসুমের মাকে ডেকে তোলে, চাচি মাসুম কোথায়? মাসুমের মায়ের ইদানিং ঘুমটা একটু কমই হয়। সে বুঝেছে মাসুম অনেক্ষণ আগেই ঘর থেকে বেড়িয়ে গেছে। তাই সে বলল কেন তুমি এর আগে ওকে ডাকতে আসো নি?
সুমনতো অবাক- কি বলেন চাচি! আমিতো এই মাত্র এলাম।
এবার মাসুমের মা ভয় পায়, দেখতো বাবা ছেলেটা কি একায় একায় মাছ ধরতে গেল নাকি? ওর মায়ের কথায় সুমন আর দেরি না করে নদীর দিকে ছুটতে থাকে। ছুটতে ছুটতে দেখে মাসুম এক গলা পানিতে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সুমন মাসুমকে ডাক দেয়, সুমনের ডাক শুনে পিছনে তাঁকিয়ে দেখে সুমন ওকে ডাকছে। পেছনে যদি সুমন হয় তবে সামনেরটা কে? হঠাৎ সামনের সুমন বলে ওঠে ওদিকে যাবি না আমার সঙ্গে আয়। সুমন ডেকে ডেকে বলে ঐ দিকে যাসনা ওখানে পানি বেশি তাঁড়া তাড়ি উঠে আয়। মাসুম হঠাৎ বিপাকে পড়ে যায় ও কার পিছনে যাচ্ছে? সামনে যে সুমন আছে তার পা পানির উপরে। এবার সে ভয় পায়, না এটা সুমন নয়। সে ঘুড়ে ডাঙার দিকে উঠে আসতে থাকে ভয়ে তার শরীর শীতল হয়ে যায়। কিন্তু একি তার পা মনে হয় কোন কিছুর সঙ্গে আটকা পড়েছে সে কিছুতেই আর সামনের দিকে এগুতে পারছে না। সমস্ত শক্তি দিয়ে সে ছট ফট করতে থাকে কিন্তু এক চুলও নড়তে পারলো না। সে দেখতে পাচ্ছে যে সুমনের সঙ্গে সে এসেছিল সে আর সুমন নেই। সে একটা মস্ত বড় ছায়ার মতো মানুষ হয়ে নদীর পানিতে ভাসতে ভাসতে তার দিকে এগিয়ে আসছে। সে মনে হয় জ্ঞান হারাবে ভয়ে শরীর দারুনভাবে কাঁপছে। আল্লাহ রসুলের নামও সেই সময় যেন ভুলে গেছে। উপর থেকে সুমন তাকে ডাকছে কিন্তু সে ডাক যেন ওর কানে এসে ঢুকছে না। মাসুম ভাবল আজ আর রক্ষা নাই। ভয়ে চোখ বন্ধ করে হঠাৎই তার মনে হলো মা বলেছে এই ব্যাপারে যেন সে সাহস রাখে। তাই মাসুম জোড় করে ভয়টা শরীর থেকে তাঁড়িয়ে দিয়ে হাতের কেটা বাগিয়ে টচ্রে আলো জ্বালাতেই যেন সব কিছু উধাও হয়ে গেল। সে স্পষ্ট শুনলো আজ তুমি বেঁচে গেলি। মাসুম সেখানে কিছুক্ষন ঠায় দাড়িয়ে ছিল, সুমন এসে তাকে টেনে উপরে উঠালো। সুমন বার বার তাকে জিজ্ঞেস করছে কি হয়েছিল তোর? মাসুম স্বাভাবিক হওয়ার পর সে সব কথা খুলে বলল। শুনে সুমনতো রিতিমত অবাক কি বলছে এসব। সেদিনের পর থেকে মাসুমকে আর মাছ ধরতে রাতে যেতে দিত না। মাসুমের এখন এক ছেলে বেশ বড়সড় হয়ে উঠেছে তারও মাসুমের মতো মাছের নেশা। রান্না ঘরে আগুনের পাশে বসে মাসুম তার ছেলেকে ঘটে যাও এই ঘটনাটা বলল।
মাসুম মায়ের সব কথা শুনলেও এই কথাটা শুনতে পারেনা।
মাসুম - কেন মা, রাতে মাছ ধরলে কি সমস্যা?
মা - কেন বুঝিস না রাতে কত সাপ খোপ থাকে, আর তাছাড়া রাতে তেনারাও ঘুরে বেড়ায়।
মাসুম - তেনারা আবার কে?
মা- কে মানে! ভূতের দল।
মায়ের কথায় ছেলে হাসে, তুমি যে কি বল মা। ভূত পেঁত কি কিছু আছে?
মা- থাক না থাক, তোর রাতে মাছ ধরার কাজ কি?
মাসুম - আহ! মা, রাতে মাছ ধরা খুব সহজ।
ঠিক আছে ধরবি ধর কিন্তু কেউ যদি একবার এসে তোকে ডাকে তবে দরজা খুলবি না, কমপক্ষে তিনবার না ডাকা পর্যন্ত। আর হ্যা যদি কখনো সেই রকম সমস্যার সম্মুক্ষিণ হোস তবে যত তারাতারি সম্ভব ভয় কাটিয়ে উঠবি, মনে সাহস তৈরি করবি।
ছেলে হাসতে হাসতে বলে - আচ্ছা মা। তুমি এখন ঘুমাও।
মাসুম শুয়ে অনেক স্বপ্ন দেখে। একটা বৌ দরকার, মা একায় সংসারের সব কাজ করে। একটা ভাল মেয়ে দেখে সে বিয়ে করবে। তাহলে আর মা’র সমস্য হবে না। মাসুম কখন ঘুমিয়ে পড়েছে জানেনা। হঠাৎ মনে হলো সুমন তাঁকে ডাকছে, সে জাগনা হলো, মনে হলো দরজা ধ্বাক্কা দিয়ে মাসুম তাকে ডাকল। সে তাড়াতাড়ি ক্যাটা আর টচ্ লাইটটা নিয়ে বেড়িয়ে পড়ল। দেখে সুমন আঙিনার মাঝে দাঁড়িয়ে আছে। মাসুমকে বেড় হতে দেখে সে ঘুরে হাঁটতে লাগল। মাসুম সুমনের পিছনে পিছনে হাঁটতে হাঁটতে বলল
কিরে এতো জোড়ে হাঁটছিস কেন? একটু আস্তে যা।
মাসুম কোন কথার উত্তর না দিয়ে হাঁটতে লাগল। হাঁটতে হাঁটতে ছড়া নদীটার কাছে এসে দাঁড়াল। মাসুমকে কিছু না বলে সুমন আগেই পানিতে নেমে পড়ল। মাসুম কোন কিছু না ভেবেই সুমনের পিছন পিছন মাছ ধরার চেষ্টা করছে কিন্তু কি আশ্চার্য ব্যাপার, একটা মাছও চোখে পড়ছে না। মাসুম ভাবল কি ব্যাপার আজ সব মাছগুলো কি পালাল নাকি! সুমনের ঘুম ভাঙতে কিছুটা দেরিই হয়, কিন্তু খুব দেরি নয়। তিনটায় ওঠার কথা সেখানে তিনটা দশ মিনিট হবে হয়তো। তাড়াতাড়ি সে ক্যাটা আর টচ্টা নিয়ে সোজা মাসুমের বাড়িতে আসে। নিঃশ্চয় আজও মাসুম ঘুমিয়েই আছে। সে মাসুমের ঘরের কাছে এসে দেখে মাসুমের ঘর খোলা সে ঘরে নেই। মাসুমের মাকে ডেকে তোলে, চাচি মাসুম কোথায়? মাসুমের মায়ের ইদানিং ঘুমটা একটু কমই হয়। সে বুঝেছে মাসুম অনেক্ষণ আগেই ঘর থেকে বেড়িয়ে গেছে। তাই সে বলল কেন তুমি এর আগে ওকে ডাকতে আসো নি?
সুমনতো অবাক- কি বলেন চাচি! আমিতো এই মাত্র এলাম।
এবার মাসুমের মা ভয় পায়, দেখতো বাবা ছেলেটা কি একায় একায় মাছ ধরতে গেল নাকি? ওর মায়ের কথায় সুমন আর দেরি না করে নদীর দিকে ছুটতে থাকে। ছুটতে ছুটতে দেখে মাসুম এক গলা পানিতে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সুমন মাসুমকে ডাক দেয়, সুমনের ডাক শুনে পিছনে তাঁকিয়ে দেখে সুমন ওকে ডাকছে। পেছনে যদি সুমন হয় তবে সামনেরটা কে? হঠাৎ সামনের সুমন বলে ওঠে ওদিকে যাবি না আমার সঙ্গে আয়। সুমন ডেকে ডেকে বলে ঐ দিকে যাসনা ওখানে পানি বেশি তাঁড়া তাড়ি উঠে আয়। মাসুম হঠাৎ বিপাকে পড়ে যায় ও কার পিছনে যাচ্ছে? সামনে যে সুমন আছে তার পা পানির উপরে। এবার সে ভয় পায়, না এটা সুমন নয়। সে ঘুড়ে ডাঙার দিকে উঠে আসতে থাকে ভয়ে তার শরীর শীতল হয়ে যায়। কিন্তু একি তার পা মনে হয় কোন কিছুর সঙ্গে আটকা পড়েছে সে কিছুতেই আর সামনের দিকে এগুতে পারছে না। সমস্ত শক্তি দিয়ে সে ছট ফট করতে থাকে কিন্তু এক চুলও নড়তে পারলো না। সে দেখতে পাচ্ছে যে সুমনের সঙ্গে সে এসেছিল সে আর সুমন নেই। সে একটা মস্ত বড় ছায়ার মতো মানুষ হয়ে নদীর পানিতে ভাসতে ভাসতে তার দিকে এগিয়ে আসছে। সে মনে হয় জ্ঞান হারাবে ভয়ে শরীর দারুনভাবে কাঁপছে। আল্লাহ রসুলের নামও সেই সময় যেন ভুলে গেছে। উপর থেকে সুমন তাকে ডাকছে কিন্তু সে ডাক যেন ওর কানে এসে ঢুকছে না। মাসুম ভাবল আজ আর রক্ষা নাই। ভয়ে চোখ বন্ধ করে হঠাৎই তার মনে হলো মা বলেছে এই ব্যাপারে যেন সে সাহস রাখে। তাই মাসুম জোড় করে ভয়টা শরীর থেকে তাঁড়িয়ে দিয়ে হাতের কেটা বাগিয়ে টচ্রে আলো জ্বালাতেই যেন সব কিছু উধাও হয়ে গেল। সে স্পষ্ট শুনলো আজ তুমি বেঁচে গেলি। মাসুম সেখানে কিছুক্ষন ঠায় দাড়িয়ে ছিল, সুমন এসে তাকে টেনে উপরে উঠালো। সুমন বার বার তাকে জিজ্ঞেস করছে কি হয়েছিল তোর? মাসুম স্বাভাবিক হওয়ার পর সে সব কথা খুলে বলল। শুনে সুমনতো রিতিমত অবাক কি বলছে এসব। সেদিনের পর থেকে মাসুমকে আর মাছ ধরতে রাতে যেতে দিত না। মাসুমের এখন এক ছেলে বেশ বড়সড় হয়ে উঠেছে তারও মাসুমের মতো মাছের নেশা। রান্না ঘরে আগুনের পাশে বসে মাসুম তার ছেলেকে ঘটে যাও এই ঘটনাটা বলল।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
Md. Rayhan Kazi ১৩/০৩/২০২২ভালোবাসা অবিরাম
-
মোঃ বুলবুল হোসেন ০৮/০৩/২০২২চমৎকার
-
এস. কে. সুবল চন্দ্র মামাহাত্ম্য ০৭/০৩/২০২২অসাধারণ। শুভেচ্ছা ও ভাল থাকার শুভকামনা।
-
ফয়জুল মহী ০৫/০৩/২০২২সুন্দর প্রকাশ বেশ ভালো লাগলো
-
আব্দুর রহমান আনসারী ০৫/০৩/২০২২বেশ ভালো লেখা