তিন্নি
(১)
কিশোর বয়সের প্রেমে আবেগটা খুব বেশি থাকে। অদ্ভূদ সব পাগলামি, ভয়ে ভয়ে গুটি গুটি পায়ে সময়ের ডিঙিতে করে তোমার কাছাকাছি চলে আসাটা অথবা কতটা সংকোচ নিয়ে প্রথম কোন মানবীকে "ভালোবাসি" বলা। কেন যেন সেই প্রথম ভালোলাগাটাই শেষে ভুল হিসেবে যুবকের কাছে ধরা দেয় একসময়। এরপর ও রাতের পর রাত তাকেই ভেবে সময়কে বিষিয়ে তোলা যে থামেনা। এই যেমন বিছানায় এপাশ ওপাশ করেও তোমার কথা আজ মন থেকে একটুকুও সরাতে পারছিনা। আচ্ছা তিন্নি, তোমার কি সেদিনের কথা মনে আছে? কাকডাকা ভোরে মোবাইলের ওপাশ থেকে কি তুমি আমার দ্রুত উঠানামা করা শ্বাস-প্রশ্বাস অনুভব করেছিলে? তোমার জবাবের আশায় থাকা সেই কয়েক মিনিটের নীরবতা কতটা ভয়ঙ্কর ছিল, কতটা যন্ত্রণার ছিল সে তোমাকে বুঝাতে পারব না। একবার মনে হলো কেটে দেই কল হয়ত রাগ করেছো আবার মনে হলো তুমি জবাব দিলে বুঝি আনন্দ নিয়ে।।
.
(২)
খুব ব্যস্ততায় দিন যাচ্ছে। বস কে খুশি রাখতে দিনরাত খেটে যাচ্ছি এর মাঝে বিয়ে নিয়ে উঠে পড়ে লেগেছে বাসায়। আমি বলে দিয়েছি তারাই যেন সবটা দেখে। আমার মনোযোগ যেভাবে সেভাবে কাজেই বসাতে লাগলাম। একদিন শুনলাম মায়ের পাত্রী পছন্দ হয়েছে দেখতে যেতে হবে। বাসার সবার মাঝে একটা পজিটিভ পরিবর্তন, অথচ এই আমি ই ৪ বছর আগে ছিলাম দিকভ্রান্ত সে কে বলবে। এখন যে এই রুমান এস্টাবলিশড একটা ছেলে। পাত্রী দেখে এলাম-অদ্ভূদ একটা ব্যাপার কি জানো তিন্নি? এই মেয়েটার নাম ও না তিন্নি। হাহাহা, কিন্তু মন বলে উঠে এই আমার তিন্নি নয়! আর ব্রেইন বলে "তোর ই হবে রোমান" আমি সেই দিব্যি রাত পার করে দিচ্ছি নিকোটিনে কিশোর প্রেম বুকে নিয়ে।, তিন্নি? তুমি রাগ করনি তো?
(৩)
জানো মায়া বড্ড খারাপ জিনিস তিন্নি, তুমি যখন আমাকে ছেড়ে চলে গেলে আমার মনে হয়েছিল এই পৃথিবীতে সব্বাই স্বার্থপর।একবার হলো কি, তোমাকে ইম্প্রেস করতে বাবার পকেট থেকে ৫০০ টাকা চুরি করে যখন তোমার জন্য কাজল আর চুড়ি নিয়েছিলাম তখন সে আবেগ দেখে পাড়ার বড় ভাইরা অনেক হেসেছিলো, যেমনটা এখন আমি কোন কিশোরকে প্রেমে পড়ে এ কাজ করতে দেখে হাসি। তুমি মায়া লাগিয়ে চলে গিয়েছিলে আর এখন আরেক তিন্নি জোর করে মায়া লাগাচ্ছে। মেয়েটা যেন এখন ই নিজেকে বউ ভাবা শুরু করে দিয়েছে। খবরদাড়ি করাটা কি তুমি শিখিয়েছিলে একে? না হলে এতটা মিল কিভাবে? নাকি সব মেয়েদের মন ই ভালোবাসার মানুষটার জন্য পোড়ে তিন্নি! তাকে শাসনে শাসনে রাখতে চায়! আমি তোমার সঙ্গে কতটা নিভৃতে রাতের পর রাত আবেগি হয়ে কথা বলেছিলাম, এই মেয়েটা এখন সে সব আবেগ যেন আমাকে পাই পাই করে ফিরিয়ে দিচ্ছে। সে যেন অন্য তিন্নি, এই তিন্নি কোন মায়াময়ী নয়তো?
.
(৪)
আজকে হয়েছে কি জানো তিন্নি? আজ আমার হবু বউ তোমার সাথে আমার কথোপকথন শুনেছিল। সে খুব কষ্ট পেয়ে চলে গিয়েছে। আমার ফোন ও পিকাপ করছেনা। এই মেয়টার ও তোমার মত একগাল অভিমান। এই মেয়টাও তোমার মত কাদঁলে চোখের কাজল লেপ্টে গিয়ে একাকার হয়ে যায়। ওড়ানার একপাশে সে কাজল জলে ভেজা চোখ আস্তে আস্তে মুছে ফেলে ফের কান্না জুড়ে দেয়। আমি চাইলেই কেন যেন ওর হাতটা ধরতে পারিনা, আমি চাইলেই কেন যেন ওকে ভালোবাসি বলতে পারিনা। তুমি ভালো করেছো ওকে কিছু বলোনি। মনে আছে তোমার অভিমানের সেদিনের কথা? জানি ভুলোনি। ৩ দিন জ্বরে ভুগেছিলাম বলে একটা কথা ও হয়নি আমাদের। মোবাইলে যুগে মোবাইলে ও হয়ত কথা বলতে পারতাম কিন্তু কেন যেন আমার মোবাইলে ব্যাপারটা মাথায় ই ছিল না,ব্যস এরপরের দেখায় আমার উপর দিয়ে গেল ভয়াবহ ঘূর্ণিপাক। সেদিন ই প্রথম তোমাকে আমার জন্য কাদতে দেখেছিলাম। তুমি কি আমার জন্য এখনো চোখের জল ফেলো তিন্নি? দিনকে দিন আমি তোমায় এত আসক্ত হয়ে যাচ্ছি, যেন সেই ১৮ এ ফিরে যাচ্ছি।
.
(৫)
আমি না ভীষণ অসুস্থ তিন্নি, তোমার হাতের নরম স্পর্শ কি আমার কপলের একটু ভালোলাগা ছড়াতে পারবে? আমাকে কি একটু সেই সময়ের মত ভালোবাসতে পারবে তিন্নি? ও তোমাকে ত একটা কথা বলা হয়নি জানো! তিন্নির সাথে না আমার বিয়ে হয়নি। হ্যা সত্যি, জানি অবাক হয়েছো কিন্তু কি করব আজ ই আমার জ্ঞান ফিরলো জানো! তাই তোমাকে জানাতে পারিনি। তিন্নি এসেছে আমাকে দেখতে, এইযে লোহার শেকলের মত বেড়িটা আমার পায়ে জড়ানো দেখছো এর জন্য ই ওকে দেখতে পাচ্ছিনা, তুমি যাও গিয়ে দেখো। তুমি ত মুক্ত, আমার মত বেড়ি নেই তোমার। ওর সাথেই ওর হাজবেন্ডকে দেখবে। অনেক হ্যান্ডসাম। দেয়াল টার ওপাশেই দাড়ানো ওরা। আমি দেখেছি ওকে আর ওর চোখের কোনে অশ্রুকে, যেমনটা তোমার ১৮ বছর বয়সী নিথর নীল বর্ণের দেহের ফ্যাকাশে চোখের কোনে ছিল তেমনটাই। দেখে হয়ত একটু সামান্য লাগবে সে জল কিন্তু আমি জানি তিন্নি কতটা চাপা কষ্টর সে অশ্রু, তখনো শুকায়নি। কেন এতটা কষ্ট নিয়ে চলে গিয়েছিলে তিন্নি? আমাকে অপরাধি করতেই?
.
কিশোর বয়সের প্রেমে আবেগটা খুব বেশি থাকে। অদ্ভূদ সব পাগলামি, ভয়ে ভয়ে গুটি গুটি পায়ে সময়ের ডিঙিতে করে তোমার কাছাকাছি চলে আসাটা অথবা কতটা সংকোচ নিয়ে প্রথম কোন মানবীকে "ভালোবাসি" বলা। কেন যেন সেই প্রথম ভালোলাগাটাই শেষে ভুল হিসেবে যুবকের কাছে ধরা দেয় একসময়। এরপর ও রাতের পর রাত তাকেই ভেবে সময়কে বিষিয়ে তোলা যে থামেনা। এই যেমন বিছানায় এপাশ ওপাশ করেও তোমার কথা আজ মন থেকে একটুকুও সরাতে পারছিনা। আচ্ছা তিন্নি, তোমার কি সেদিনের কথা মনে আছে? কাকডাকা ভোরে মোবাইলের ওপাশ থেকে কি তুমি আমার দ্রুত উঠানামা করা শ্বাস-প্রশ্বাস অনুভব করেছিলে? তোমার জবাবের আশায় থাকা সেই কয়েক মিনিটের নীরবতা কতটা ভয়ঙ্কর ছিল, কতটা যন্ত্রণার ছিল সে তোমাকে বুঝাতে পারব না। একবার মনে হলো কেটে দেই কল হয়ত রাগ করেছো আবার মনে হলো তুমি জবাব দিলে বুঝি আনন্দ নিয়ে।।
.
(২)
খুব ব্যস্ততায় দিন যাচ্ছে। বস কে খুশি রাখতে দিনরাত খেটে যাচ্ছি এর মাঝে বিয়ে নিয়ে উঠে পড়ে লেগেছে বাসায়। আমি বলে দিয়েছি তারাই যেন সবটা দেখে। আমার মনোযোগ যেভাবে সেভাবে কাজেই বসাতে লাগলাম। একদিন শুনলাম মায়ের পাত্রী পছন্দ হয়েছে দেখতে যেতে হবে। বাসার সবার মাঝে একটা পজিটিভ পরিবর্তন, অথচ এই আমি ই ৪ বছর আগে ছিলাম দিকভ্রান্ত সে কে বলবে। এখন যে এই রুমান এস্টাবলিশড একটা ছেলে। পাত্রী দেখে এলাম-অদ্ভূদ একটা ব্যাপার কি জানো তিন্নি? এই মেয়েটার নাম ও না তিন্নি। হাহাহা, কিন্তু মন বলে উঠে এই আমার তিন্নি নয়! আর ব্রেইন বলে "তোর ই হবে রোমান" আমি সেই দিব্যি রাত পার করে দিচ্ছি নিকোটিনে কিশোর প্রেম বুকে নিয়ে।, তিন্নি? তুমি রাগ করনি তো?
(৩)
জানো মায়া বড্ড খারাপ জিনিস তিন্নি, তুমি যখন আমাকে ছেড়ে চলে গেলে আমার মনে হয়েছিল এই পৃথিবীতে সব্বাই স্বার্থপর।একবার হলো কি, তোমাকে ইম্প্রেস করতে বাবার পকেট থেকে ৫০০ টাকা চুরি করে যখন তোমার জন্য কাজল আর চুড়ি নিয়েছিলাম তখন সে আবেগ দেখে পাড়ার বড় ভাইরা অনেক হেসেছিলো, যেমনটা এখন আমি কোন কিশোরকে প্রেমে পড়ে এ কাজ করতে দেখে হাসি। তুমি মায়া লাগিয়ে চলে গিয়েছিলে আর এখন আরেক তিন্নি জোর করে মায়া লাগাচ্ছে। মেয়েটা যেন এখন ই নিজেকে বউ ভাবা শুরু করে দিয়েছে। খবরদাড়ি করাটা কি তুমি শিখিয়েছিলে একে? না হলে এতটা মিল কিভাবে? নাকি সব মেয়েদের মন ই ভালোবাসার মানুষটার জন্য পোড়ে তিন্নি! তাকে শাসনে শাসনে রাখতে চায়! আমি তোমার সঙ্গে কতটা নিভৃতে রাতের পর রাত আবেগি হয়ে কথা বলেছিলাম, এই মেয়েটা এখন সে সব আবেগ যেন আমাকে পাই পাই করে ফিরিয়ে দিচ্ছে। সে যেন অন্য তিন্নি, এই তিন্নি কোন মায়াময়ী নয়তো?
.
(৪)
আজকে হয়েছে কি জানো তিন্নি? আজ আমার হবু বউ তোমার সাথে আমার কথোপকথন শুনেছিল। সে খুব কষ্ট পেয়ে চলে গিয়েছে। আমার ফোন ও পিকাপ করছেনা। এই মেয়টার ও তোমার মত একগাল অভিমান। এই মেয়টাও তোমার মত কাদঁলে চোখের কাজল লেপ্টে গিয়ে একাকার হয়ে যায়। ওড়ানার একপাশে সে কাজল জলে ভেজা চোখ আস্তে আস্তে মুছে ফেলে ফের কান্না জুড়ে দেয়। আমি চাইলেই কেন যেন ওর হাতটা ধরতে পারিনা, আমি চাইলেই কেন যেন ওকে ভালোবাসি বলতে পারিনা। তুমি ভালো করেছো ওকে কিছু বলোনি। মনে আছে তোমার অভিমানের সেদিনের কথা? জানি ভুলোনি। ৩ দিন জ্বরে ভুগেছিলাম বলে একটা কথা ও হয়নি আমাদের। মোবাইলে যুগে মোবাইলে ও হয়ত কথা বলতে পারতাম কিন্তু কেন যেন আমার মোবাইলে ব্যাপারটা মাথায় ই ছিল না,ব্যস এরপরের দেখায় আমার উপর দিয়ে গেল ভয়াবহ ঘূর্ণিপাক। সেদিন ই প্রথম তোমাকে আমার জন্য কাদতে দেখেছিলাম। তুমি কি আমার জন্য এখনো চোখের জল ফেলো তিন্নি? দিনকে দিন আমি তোমায় এত আসক্ত হয়ে যাচ্ছি, যেন সেই ১৮ এ ফিরে যাচ্ছি।
.
(৫)
আমি না ভীষণ অসুস্থ তিন্নি, তোমার হাতের নরম স্পর্শ কি আমার কপলের একটু ভালোলাগা ছড়াতে পারবে? আমাকে কি একটু সেই সময়ের মত ভালোবাসতে পারবে তিন্নি? ও তোমাকে ত একটা কথা বলা হয়নি জানো! তিন্নির সাথে না আমার বিয়ে হয়নি। হ্যা সত্যি, জানি অবাক হয়েছো কিন্তু কি করব আজ ই আমার জ্ঞান ফিরলো জানো! তাই তোমাকে জানাতে পারিনি। তিন্নি এসেছে আমাকে দেখতে, এইযে লোহার শেকলের মত বেড়িটা আমার পায়ে জড়ানো দেখছো এর জন্য ই ওকে দেখতে পাচ্ছিনা, তুমি যাও গিয়ে দেখো। তুমি ত মুক্ত, আমার মত বেড়ি নেই তোমার। ওর সাথেই ওর হাজবেন্ডকে দেখবে। অনেক হ্যান্ডসাম। দেয়াল টার ওপাশেই দাড়ানো ওরা। আমি দেখেছি ওকে আর ওর চোখের কোনে অশ্রুকে, যেমনটা তোমার ১৮ বছর বয়সী নিথর নীল বর্ণের দেহের ফ্যাকাশে চোখের কোনে ছিল তেমনটাই। দেখে হয়ত একটু সামান্য লাগবে সে জল কিন্তু আমি জানি তিন্নি কতটা চাপা কষ্টর সে অশ্রু, তখনো শুকায়নি। কেন এতটা কষ্ট নিয়ে চলে গিয়েছিলে তিন্নি? আমাকে অপরাধি করতেই?
.
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
নুর হোসেন ১৮/১২/২০১৯চমৎকার লিখেছেন
-
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ১৬/১২/২০১৯অসামান্য গল্প কথা | মুগ্ধতা রেখে গেলাম |