www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

বায়োস্কোপের শহরে (শেষ পর্ব)

তুষার আর শ্রাবন্তী গলি থেকে বেড়িয়ে গেল মেইন রাস্তাটার দিকে। রাস্তাটা নিরব। গুটিকয়েক মানুষ চলাচল করছে।
-আপু বিকেলে আমি ওখান থেকে আসার পর মেইন
রোডে নাকি ব্যাপক গ্যাঞ্জাম হইছে।
-কিসের গ্যাঞ্জাম?
-ঐ সরকারি বিরোধীদল আর পুলিশের মধ্যে। ককটেল ও ফাটানো হইছে, বেশ কয়জন আহত হইছে।
শ্রাবন্তী চুপ মেরে গেল, মনে অনেক খারাপ চিন্তা আসছে রাতুলের ব্যাপারে। শ্রাবন্তী তারপর ও মনকে বোঝাতে লাগলো "কিছু হয়নি, রাতুল ঠিক আছে"

মেইন রোডে যেয়ে দেখা গেল ফুলের দোকান তছনছ আর অনেক অংশ পুড়ে গেছে। পাশের লোকজন থেকে তথ্য নিয়ে তুষার জানতে পারল কয়েকজন লোক আহত হয়েছে আর কয়েকজন লোক পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে এখান থেকে। তুষার শ্রাবন্তী কে জানালো সব।
শ্রাবন্তী কেদে দিল। তুষার শান্তনা দেয়ার চেষ্টা করতে লাগলো শ্রাবন্তী কে। তুষার আর শ্রাবন্তী হাসপাতাল ও
থানায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। দুজনে প্রথমে গেল ঢাকা মেডিকেল কলেজে যেখানে আহতদের নিয়ে আসা হয়, কিন্তু রাতুল কে পাওয়া গেল না সেখানে।
আহতদের মধ্যে ফুলের দোকানদারের অবস্থা আশংকাজনক।
রাতুল কে হাসপাতালে না দেখে একটু স্বস্তি পেয়েছিল শ্রাবন্তী, পরক্ষণেই ভাবলো তাহলে রাতুল কোথায়?
শ্রাবন্তী যেন ভেঙে পড়ল। এরপর ওরা দুজন স্থানীয় থানায় গেল সেখানে খোঁজ নিয়েও রাতুলের কোন খবর পাওয়া গেলনা।
শ্রাবন্তী এখন অঝোরে কেদে যাচ্ছে। তুষার কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা।
-আপু ভাইয়া হয়তো বন্ধু, আত্মীয় কারো বাসায়
যেতে পারে এতটা দুশ্চিন্তা করবেন না। এসে পড়বে।
-হুম।

থানা থেকে বেড়োতেই শ্রাবন্তী র মোবাইল বেজে উঠে। স্ক্রিনে রাতুল নাম -
শ্রাবন্তী সাথে সাথে কল রিসিভ করে।
-হ্যালো।
-এই তুমি কই?
-তুমি কোথায় রাতুল?
-আমি ত বাসার দরযার সামনে দাড়িয়ে আছি, তালা দেয়া দরযায় তুমি কই?
-কুত্তা, তুমি দাড়াও আমি আসতেছি। আজ তোমার একদিন কি আমার একদিন।
রাতুল কিছু বলার বা বোঝার আগেই লাইনটা কেটে দেয় শ্রাবন্তী।
-কে ভাইয়া ছিল?
-হ্যাঁ, থ্যাঙ্কস তুষার আমার সাথে আসার জন্য।
-ইটস ওকেই আপু। ভাইয়ার কপালে ত আজ শনি আছে।
-ওর খবর আছে আজকে। বাসায় যাই আগে।
-হাহা
-ও বাসার দরযার সামনে দাড়িয়ে আছে।
-ভাইয়া সুস্থ আছেন ত?
-এটা ত জিজ্ঞাসা করি নাই।
-আচ্ছা তাড়াতাড়ি বাসায় চলে যাই চলেন।

রাতুল দুদিন ধরে বেডে শোয়া। ও পায়ে ব্যথা পেয়েছে, ভাগ্যিস দোকানের বাইরে ছিল নয়তো .....
রাতুলের এই হাল দেখে শ্রাবন্তীর সেকি কান্না। ফুপিয়ে ফুপিয়ে কেদে গেছে। রাতুল যতোই আকড়ে ধরে শ্রাবন্তী কে, শ্রাবন্তী ততোই কেদে যায়। ডাক্তার বলেছে সপ্তাহ খানেক বেড রেস্ট
নিতে। রাতুল এখন সারাদিন শ্রাবন্তী কে দেখে, নতুনভাবে দেখে। ভালবাসা এ কদিনে অনেকখানিই
বেড়ে গেছে। পরের দিনই ফকির কে একবেলা খাইয়েছে শ্রাবন্তী।
এখন রাতুলের আওয়াজ করে চা খাওয়ায় শ্রাবন্তী রাগ করেনা হেসে ফেলে।

অন্যদিকে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে থাকা ফুলের দোকানদারের শরীরের ৬৮% পুরে যাওয়ায় দুদিন ধরে মৃত্যুর সাথে লড়াই করে মৃত্যুর কাছে হার মেনে নেয়। মর্গের প্রথম সারির তৃতীয় লাশটা ঐ লোকটার, আজ
সন্ধ্যা নাগাদ কেউ খোঁজ না নিলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে তার দাফন সম্পন্ন করে ফেলবে।
কেউ কি লোকটার বৃদ্ধা মাকে গ্রামে একটা খবর দিবে!!
তার ছেলে মারা গেছে, নৃশংস ভাবে মারা গেছে।
আচ্ছা খুনি কে? উত্তর টা জানা থাকলে বলে দিয়েন।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৯৯৮ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৮/০২/২০১৫

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • সহিদুল ইসলাম ০২/০৩/২০১৫
    ভাই, আপনার রাতুল কে মেরে ফেলেছি আমি। হা হা হা, রাতুলদের বেঁচে থাকার মত পরিবেশ নেই আমাদের দেশে।
    • স্বপ্নীল মিহান ০৪/০৩/২০১৫
      কবি, এটা আপনার ঠিক হয়নি। আপনি আমার লেখাটার বিকৃতি ঘটিয়েছেন যা কাম্য নয়। হুবহু আমার কিছু প্যারাও তুলে দিয়েছেন অথচ আমাকে আগে বলেননি, এটা কাম্য ছিলোনা।
      • সহিদুল ইসলাম ০৫/০৩/২০১৫
        ভাই, এত সিরিয়াসলি নিবেন বুজতে পারিনি। আমি কোন প্রফেশনাল কবি বা লেখক নই। কোন পটভুমি তৈরী করতেও পারি না। আপনার লেখা ১ম পর্ব পড়ে ২য় পর্ব পড়ার আগ্রহ জন্মে কিন্তু ২য় পর্ব পড়ে হতাশ হই এবং চিন্তা করি যদি গল্পটা এমন হতো তাহলে কেমন হয়। আপনার মনে কষ্ট দেওয়ার জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত। শুধু মাত্র মজা করার জন্যই লেখা। আপনি কষ্টপেয়ে থাকলে ডিলিট করে দেব।
        • স্বপ্নীল মিহান ০৫/০৩/২০১৫
          না ভাইয়া থাক। আমিও শখে লিখি। স্যরি আমি একটু rude হয়ে গিয়েছিলাম। ভালো থাকবেন।
          • সহিদুল ইসলাম ০৫/০৩/২০১৫
            ধন্যবাদ ভাই। আমি আসলে কোন পটভুমি ঠিক করতে পারিনা। কেউ তালগাছের রচনা লিখলে, ঐ তালগাছের নিচে একটা ছাগল বেঁধে নিয়ে পুরো ছাগলের রচনা লিখে ফেলি।
  • সহিদুল ইসলাম ০১/০৩/২০১৫
    হতাশ হলাম।
  • সাইদুর রহমান ০১/০৩/২০১৫
    ভালো লাগলো গল্পটি।
    অনেক শুভেচ্ছা।
 
Quantcast