মায়াজাল ২-৩ (উপন্যাস)
দুই ২
রকি সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে বলল আহ বাবা ঝগড়া করছি না। এনিওয়ে বাবা, আমি স্বিকার করছি যে আমি অনেক ভিতু ছেলে। বাবার এই নোটটা পড়ে আমার একটা কথা বেশ মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে যে বাবা যখন সুইসাইড নোটটা লিখছিলেন বা বিশেষত যখন মারা যাচ্ছিলের তখন সে খুব মজা পাচ্ছিলেন। আমার তো মনে হয় বাবা হয়ত হো হো করে হাসছিলেন। তোদের কি মনে হয়?
আফরিন রাগত কিন্তু চাপা গলায় বলল ইডিয়ট একটা। তুই আসলে একটা ডানকি।
রকি আফরিনের কথা পাত্তা না দিয়ে মেরিনার দিকে করুন গলায় বলে, তাই কি মনে হচ্ছে না মেরিনা। তুই কি বলিস?
মেরিনা মৃদু স্বরে বলে সে কথা বাবা ছাড়া কেউ বলতে পারবেনা। আমি কি করে বলবো?
রকি মেরিনার দিকে ঝুকে এসে বলে তুই জানিস না। বলে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে মেরিনার মুখের দিকে। তারপর মেরিনাকে বলে তোকে একটা কথা বলি তুই কি সত্যি উত্তর দিবি।
-কি কথা?
-আমার মনে হয় বাবার ইনসিডেন্টটা সম্পর্ক্কে একমাত্র তুই সব জানিস।
-আমি! আমি কি করে জানবো।
-বাবা তোকে খুব ভালবাসাত, এটা তো সবাই জানে। আর সেই সাথে তুইও তাই বাসতি বাবাকে।
-তাতে কি হল?
-বাবা মারা যাবার পর তোকে এসে সব বলে যায়।
-তার মানে এসব কি বলছিস তুই।
রকি পরম বিশ্বস নিয়ে বলে, বাবার গোষ্ট এ বাড়িতে ঘুরে বেড়ায়। মনে হয় কাউকে কিছু বলতে চায়। আর তুই যেহেতু এ ঘরে-ইন দি রুম দি ইনসিডেন্ট টুক প্লেস-একা থাকিস। আমার মনে হয় বাবা তোকে এসে সব বলে যায়।
আফরিন রাগত স্বরে বলে চাবুক পেটানোর মতো করে শাট আপ।
রকি নির্বিকার মুখে বলে, তুই কি বলিস মেরিনা?
মেরিনা উদাস মুখ করে বলে, বাবার আত্মা আমার কাছে কখনও আসেনি। আর সবচেয়ে বড় কথা আমি ওসব বিশ্বাস ও করিনা।
-তাহলে তুই এ ঘরে একা থাকিস কেন? সেটা বল।
-এমনি।
-কিছু ফিল করিস না? কিছুই না?
-ফিল করি অবশ্যই ফিল করি।
আফরিন ও রকি দুজনে চমকে তাকায় মেরিনার দিকে।
-বাবাকে ফিল করি। তবে সেটা ভুত বলে না। লোকটাকে।
-তার মানে কি হল?
-বাবার কারেক্টার, বাবার ইমপ্রেশন এ ঘরময় ছড়ানো। অ্যাটমাসফেয়ার কিছু ক্যারি করে। আমি সেটাকে ফিল করি। বাবার বিছানায় ঘুমাই, বাবার টেবিলে পড়ি চেয়ারে বসি। বাবার জিনিষপত্র ছুই আর এভাবেই বাবাকে ফিল করি। তার বেশী কিছু না।
-তুই ব্রেভ। দারুন ব্রেভ।
আফরিন ইর্ষার চোখে মেরিনার দিকে চেয়ে ছিল। মেরিনা যে দারুন সাহসী তাতে কোন সন্দেহ নাই। এত সাহস তার নেই সত্যি। এ বাড়ির কারও নাই। হটাৎ আফরিন একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে, আমাদের যে কি হবে!!!
রকি তেমনি গা ছেড়ে বসে খুব নির্বিকার গলায় বলে, কী আর হবে। উই বিকাম রিয়েল পুওর। আপু তোর বিয়ে হওয়ার চান্স নেই। আমার হায়ার এডুকেশন হবে না। মেরিনার ভবিষৎ অনিশ্চিত।
মেরিনা একটু অবাকে হয়ে বলে কি সব আজে বাজে কথা বলছিস?
রকি তেমনি উদাস গলায় বলে হু হু যা বলছি ঠিক। আমি বাবা সব জানি।
মার সঙ্গে মামার প্রতিদিন এসব নিয়ে কথা হচ্ছে। জোড় ডিসকাশন চলছে। দেয়ার ইজ নাথিং লেফট। বনানীর বাড়ীটা ব্যাংকে মটগেজড আছে কয়েক কোটি টাকা লোন সেটার উপর। মহম্মদপুর সহ বেশ কয়েকটা বাড়ী নাকি বাবা কিনেছিল সব আগেই সেল করে দিয়েছিল বিজনেসের জন্য। শেয়ার মার্কেটে অনেক টাকা লস। বাবার লোন কয়েক কোটি টাকা। বিজনেসের পার্টনারশীপ নিয়েও নাকি তার কাছে অনেক টাকা তারা পাবে। ইনসিওরেন্স পলিসি যা আছে তা সামন্য। বিজনেসের কোন কাগজপত্র তেমন বাড়িতে নেই। বাবা মাকে কিছু জানাতো না। তাই বাবার কোথায় কি আছে তা মা বিশেষ জানেনা। মামা খোজ করে চলছেন তবে বেশী সুবিধা করতে পারছেন। অলমোষ্ট ব্যাংকরাপ্ট। থাকার মধ্যে আছে শুধু এ বাড়িটা।
আফরিন উত্তেজিত কন্ঠে বলল বাবার তাে নিজেস্ব ফার্ম ছিল।
মামা সব খবর নিয়েছে। আগে বেশ ভাল চলতো ফ্যাকটরী মাইর খেল আর ফার্ম বেশী ভাল চলতো না। আফিসের ভাড়া নাকি জমে আছে। ক্লিয়ার না। উই হ্যাভ বিকাম পুওর।
মেরিনা জানে তার বাবার টাকার নেশা ছিল। রকিযে মিথ্যাে বলছে না। যা দেখতো তাই কিনত। দুহাতে টাকা উড়াতো। জমাতে ভালবাসতোনা। অনেকবার বলতে শুনেছে জমাবো কার জন্য।? ছেলে মেয়ের জন্য? ওরা নিজেরা যদি উপার্জন করতে না শিখে তাহলে সারাজীবন ভুগবে। নিজেরা কিছু করতে পারবেনা। আর বাপের উপার্জনের উপর চলবে কেন। নির্ভর করবে কেন।
আফসার চৌধুরী জলের মতো টাকা খরচ করতো। বাসায় ৫টা গাড়ী অথচ এত গুলোর দরকার ছিল না। ৪ কোটি টাকা দামের ২টি গাড়ী কিনেছিল। সায়লা যেটা নিয়ে চলাফেরা করতো সেটা ২ কোটি টাকা দাম। আর দুটি বাচ্চাদের জন্য স্কুলে আনা নেয়ার জন্য। খরচ করতো প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে। আফসার চৌধুরীর ছেলে মেয়েরা বড় হয়েছে প্রাচুর্যের মধ্যে। একটার জায়গায় দশটা পোষাকে দিত বাবা। তাদের প্রত্যােকের জুতো জোয়া দশ বারো জোড়া করে। ঘরে মেলা আসবাব।
আফরিন আতঙ্কের চোখে চেয়ে ছিল ভাইয়ের দিকে। তুই সব সত্যি শুনেছিস।
-সব! আমার সামনেই তো সব কথা হয়।
আফরিন হাটুতে মুখ গুঁজল। রকি একটা অনিদিষ্ট তাল বাজাল টেবিল। মেরিনা আনমনা হয়ে গেল। বাইরের লন ধরে একটা প্রাডো জীপ ঢুকল। গাড়ী বারান্দায় এসে থামলো কে আসলো?
রকি সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে বলল আহ বাবা ঝগড়া করছি না। এনিওয়ে বাবা, আমি স্বিকার করছি যে আমি অনেক ভিতু ছেলে। বাবার এই নোটটা পড়ে আমার একটা কথা বেশ মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে যে বাবা যখন সুইসাইড নোটটা লিখছিলেন বা বিশেষত যখন মারা যাচ্ছিলের তখন সে খুব মজা পাচ্ছিলেন। আমার তো মনে হয় বাবা হয়ত হো হো করে হাসছিলেন। তোদের কি মনে হয়?
আফরিন রাগত কিন্তু চাপা গলায় বলল ইডিয়ট একটা। তুই আসলে একটা ডানকি।
রকি আফরিনের কথা পাত্তা না দিয়ে মেরিনার দিকে করুন গলায় বলে, তাই কি মনে হচ্ছে না মেরিনা। তুই কি বলিস?
মেরিনা মৃদু স্বরে বলে সে কথা বাবা ছাড়া কেউ বলতে পারবেনা। আমি কি করে বলবো?
রকি মেরিনার দিকে ঝুকে এসে বলে তুই জানিস না। বলে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে মেরিনার মুখের দিকে। তারপর মেরিনাকে বলে তোকে একটা কথা বলি তুই কি সত্যি উত্তর দিবি।
-কি কথা?
-আমার মনে হয় বাবার ইনসিডেন্টটা সম্পর্ক্কে একমাত্র তুই সব জানিস।
-আমি! আমি কি করে জানবো।
-বাবা তোকে খুব ভালবাসাত, এটা তো সবাই জানে। আর সেই সাথে তুইও তাই বাসতি বাবাকে।
-তাতে কি হল?
-বাবা মারা যাবার পর তোকে এসে সব বলে যায়।
-তার মানে এসব কি বলছিস তুই।
রকি পরম বিশ্বস নিয়ে বলে, বাবার গোষ্ট এ বাড়িতে ঘুরে বেড়ায়। মনে হয় কাউকে কিছু বলতে চায়। আর তুই যেহেতু এ ঘরে-ইন দি রুম দি ইনসিডেন্ট টুক প্লেস-একা থাকিস। আমার মনে হয় বাবা তোকে এসে সব বলে যায়।
আফরিন রাগত স্বরে বলে চাবুক পেটানোর মতো করে শাট আপ।
রকি নির্বিকার মুখে বলে, তুই কি বলিস মেরিনা?
মেরিনা উদাস মুখ করে বলে, বাবার আত্মা আমার কাছে কখনও আসেনি। আর সবচেয়ে বড় কথা আমি ওসব বিশ্বাস ও করিনা।
-তাহলে তুই এ ঘরে একা থাকিস কেন? সেটা বল।
-এমনি।
-কিছু ফিল করিস না? কিছুই না?
-ফিল করি অবশ্যই ফিল করি।
আফরিন ও রকি দুজনে চমকে তাকায় মেরিনার দিকে।
-বাবাকে ফিল করি। তবে সেটা ভুত বলে না। লোকটাকে।
-তার মানে কি হল?
-বাবার কারেক্টার, বাবার ইমপ্রেশন এ ঘরময় ছড়ানো। অ্যাটমাসফেয়ার কিছু ক্যারি করে। আমি সেটাকে ফিল করি। বাবার বিছানায় ঘুমাই, বাবার টেবিলে পড়ি চেয়ারে বসি। বাবার জিনিষপত্র ছুই আর এভাবেই বাবাকে ফিল করি। তার বেশী কিছু না।
-তুই ব্রেভ। দারুন ব্রেভ।
আফরিন ইর্ষার চোখে মেরিনার দিকে চেয়ে ছিল। মেরিনা যে দারুন সাহসী তাতে কোন সন্দেহ নাই। এত সাহস তার নেই সত্যি। এ বাড়ির কারও নাই। হটাৎ আফরিন একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে, আমাদের যে কি হবে!!!
রকি তেমনি গা ছেড়ে বসে খুব নির্বিকার গলায় বলে, কী আর হবে। উই বিকাম রিয়েল পুওর। আপু তোর বিয়ে হওয়ার চান্স নেই। আমার হায়ার এডুকেশন হবে না। মেরিনার ভবিষৎ অনিশ্চিত।
মেরিনা একটু অবাকে হয়ে বলে কি সব আজে বাজে কথা বলছিস?
রকি তেমনি উদাস গলায় বলে হু হু যা বলছি ঠিক। আমি বাবা সব জানি।
মার সঙ্গে মামার প্রতিদিন এসব নিয়ে কথা হচ্ছে। জোড় ডিসকাশন চলছে। দেয়ার ইজ নাথিং লেফট। বনানীর বাড়ীটা ব্যাংকে মটগেজড আছে কয়েক কোটি টাকা লোন সেটার উপর। মহম্মদপুর সহ বেশ কয়েকটা বাড়ী নাকি বাবা কিনেছিল সব আগেই সেল করে দিয়েছিল বিজনেসের জন্য। শেয়ার মার্কেটে অনেক টাকা লস। বাবার লোন কয়েক কোটি টাকা। বিজনেসের পার্টনারশীপ নিয়েও নাকি তার কাছে অনেক টাকা তারা পাবে। ইনসিওরেন্স পলিসি যা আছে তা সামন্য। বিজনেসের কোন কাগজপত্র তেমন বাড়িতে নেই। বাবা মাকে কিছু জানাতো না। তাই বাবার কোথায় কি আছে তা মা বিশেষ জানেনা। মামা খোজ করে চলছেন তবে বেশী সুবিধা করতে পারছেন। অলমোষ্ট ব্যাংকরাপ্ট। থাকার মধ্যে আছে শুধু এ বাড়িটা।
আফরিন উত্তেজিত কন্ঠে বলল বাবার তাে নিজেস্ব ফার্ম ছিল।
মামা সব খবর নিয়েছে। আগে বেশ ভাল চলতো ফ্যাকটরী মাইর খেল আর ফার্ম বেশী ভাল চলতো না। আফিসের ভাড়া নাকি জমে আছে। ক্লিয়ার না। উই হ্যাভ বিকাম পুওর।
মেরিনা জানে তার বাবার টাকার নেশা ছিল। রকিযে মিথ্যাে বলছে না। যা দেখতো তাই কিনত। দুহাতে টাকা উড়াতো। জমাতে ভালবাসতোনা। অনেকবার বলতে শুনেছে জমাবো কার জন্য।? ছেলে মেয়ের জন্য? ওরা নিজেরা যদি উপার্জন করতে না শিখে তাহলে সারাজীবন ভুগবে। নিজেরা কিছু করতে পারবেনা। আর বাপের উপার্জনের উপর চলবে কেন। নির্ভর করবে কেন।
আফসার চৌধুরী জলের মতো টাকা খরচ করতো। বাসায় ৫টা গাড়ী অথচ এত গুলোর দরকার ছিল না। ৪ কোটি টাকা দামের ২টি গাড়ী কিনেছিল। সায়লা যেটা নিয়ে চলাফেরা করতো সেটা ২ কোটি টাকা দাম। আর দুটি বাচ্চাদের জন্য স্কুলে আনা নেয়ার জন্য। খরচ করতো প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে। আফসার চৌধুরীর ছেলে মেয়েরা বড় হয়েছে প্রাচুর্যের মধ্যে। একটার জায়গায় দশটা পোষাকে দিত বাবা। তাদের প্রত্যােকের জুতো জোয়া দশ বারো জোড়া করে। ঘরে মেলা আসবাব।
আফরিন আতঙ্কের চোখে চেয়ে ছিল ভাইয়ের দিকে। তুই সব সত্যি শুনেছিস।
-সব! আমার সামনেই তো সব কথা হয়।
আফরিন হাটুতে মুখ গুঁজল। রকি একটা অনিদিষ্ট তাল বাজাল টেবিল। মেরিনা আনমনা হয়ে গেল। বাইরের লন ধরে একটা প্রাডো জীপ ঢুকল। গাড়ী বারান্দায় এসে থামলো কে আসলো?
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
একনিষ্ঠ অনুগত ০৪/০৯/২০১৪বেশ ভালো... এগিয়ে যান।।
-
মল্লিকা রায় ০১/০৯/২০১৪Fantastic golpo.