ভালোবাসার যন্ত্রণা
নিলয় অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্র আর ইভা ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী। রং নাম্বার থেকে তাদের পরিচয় হয়। পরিচয় হওয়ার পর থেকে তাদের মাঝে প্রতিদিন কথা হয়। দুজন দুজনের ভাল লাগা মন্দ লাগা সবকিছু শেয়ার করতে থাকে এইভাবে কথা বলতে বলতে বেশ কিছুদিন চলে যায়। একপর্যায়ে নিলয় নিজের অজান্তে ইভাকে ভালোবেসে ফেলে। একিদিন সে ইভাকে তার ভালোবাসার কথা বলে কিন্তু ইভা না করে দেয়, ইভা বলে তার পক্ষে এইটা সম্ভব না শুধু বন্ধু হয়ে কথা বলতে পারবে। নিলয় আর কিছু না বলে ছুপ হয়ে যায়।এরপরেও ইভা ভালোবাসুক আর নাইবা বাসুক নিলয়ের তা নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই সে প্রতিদিন তার ভালোবাসা প্রকাশ করতে থাকে এইভাবে ২বছর চলে যায়। ইভাকে তার ভালোবাসা প্রকাশ করতে করতে ইভার লোন সারা না পেয়ে বিরক্ত হয়ে যায় নিলয়, তাই সে ইভাকে তার অপেক্ষায় থাকবে বলে ইভার জীবন থেকে চলে যায়, ইভাকে আর কল, মেসেজ দেয়না ইভাও নিজ থেকে কল মেসেজ দিতনা। এইভাবে আরো একটি বছর চলে যায় এর মধ্যে ইভা স্কুল জীবন শেষ করে এখন কলেজে পড়ে অনেকদিন পর নিলয় ইভাকে কল দেয় আর ইভার নাম্বারটা অনেক্ষন ব্যাস্ত দেখে নিলয় ভাবতে থাকে ইভা কলেজে পড়ে এখন হয়তো কারো সাথে সমর্পকে জড়িয়েছে। এরপরেও কল দিতে থাকে কিছুক্ষন পর ইভা নিলয়ের কল রিসিভ করে আর নিলয় ইভাকে জিজ্ঞেস করে লাভার পাইছো তাকে নিয়ে ব্যাস্ত ইভা বলে হ্যা নিলয় আর কিছু না বলে কল কেটে দেয়। এরপর তাদের মাঝে আর যোগাযোগ হয়না। এরপরেও নিলয়ের বিশ্বাস ইভা একদিন তার জীবনে ফিরে আসবে, আর সে ইভাকে নিয়ে একটা গল্প লিখে। এরপর থেকে নিলয়কে কোন মেয়ে প্রেমের প্রস্তাব দিলে নিলয় জানিয়ে দিত তার লাভার আছে সবাইকে ইভার কথা বলত। তার বন্ধুদেরকেও বলে দিয়েছে ইভা নামের কাউকে সে লাভ করে ২৯ফেব্রুয়ারি ২০২০ সালে তারা বিয়ে করবে। এরমধ্যে নিলয় অনার্স শেষ করে আর দেশের রাজনীতি পরিস্তিতি খারাপের কারণে সে দেশের বাহিরে চলে যায়, দেশের বাহিরে প্রায় ৯মাস চলে যায়। আর ২বছরের মত ইভার সাথে তার যোগাযোগ নেই। হটাৎ একদিন অচেনা একটা ছেলের ফেসবুক আইডি থেকে নিলয়কে মেসেজ দেওয়া হয়, আর কে জিজ্ঞেস করতে সে আইডি থেকে রিফ্লে আসে আমি একটি মেয়ে, নিলয় কোন মেয়ে জানতে ছাইলে সে বলে তুমি আমার নাম বল আমি বলবনা। ইভার ফেসবুক আইডি ছিলনা, ২বছর তার সাথে যোগাযোগও ছিলনা এরপরেও নিলয়ের জীবনে অন্য কোন মেয়ে না থাকায় ইভার প্রতি ভালোবাসা থাকায় সে সহজে ইভার নাম বলে দিল।
ইভা তাতে অবাক হয়ে যায়, আর তাতে নিলয়ের প্রতি ইভার ভালোবাসাটা আরো গভীর হয়, কিন্তু ইভা তা প্রকাশ করেনা। নিলয় আবারো আগের মত তার ভালোবাসা প্রকাশ করতে লাগল কিন্তু ইভা আগের মত পাত্তাই দিলনা, ইভা তাকে বলতে লাগল এতো ভালোবাসলে কেন এতদিন খুঁজে নাওনি নিলয় তাকে বুঝাতে লাগল যে সে খুঁজেছে। তাদের মাঝে এখন প্রতিদিন কথা হয় দিনে অনেকবার চ্যাট হয় দুজন দুজনের অপেক্ষায় থাকে সারাক্ষণ কখন ফেসবুকে আসবে কখন কল দিবে। এইভাবে কিছুদিন যেতে না যেতে ইভা তার মনের কথা বলে ফেলে নিলয় কে। নিলয় ইভার কথাটা শুনে এতবেশি আনন্দিত হয়েছিল যা ভাষায় প্রকাশ করা যাবেনা। এইভাবে রাগ-অভিমাব নিয়ে তাদের সমর্পকের ৫টি মাস চলে যায়। ইভা নিলয়কে বিদেশে ভাল কিছু একটা করার জন্য বলে যাতে ইভার পরিবার নিলয়কে মেনে নিতে পারে, নিলয় ইভাকে পাওয়ার জন্য সব করতে রাজি তাই সে দেশ থেকে টাকা এনে বিদেশে ব্যাবসা শুরু করে। এর মাঝে ১৪ফেব্রুয়ারি চলে আসে আর নিলয় সেদিন দেশে যেতে চাই কিন্তু ইভা না করায় আর যায়নি। এরপর নিলয়ের জীবনে নেমে আসে অভিশপ্ত দিন, ১৪ফেব্রুয়ারি সারাদিন সারারাত অপেক্ষা করেও ইভার সাথে যোগাযোগ করতে পারেনি, কান্নায় ভেংগে পরে নিলয় পরেরদিন ইভা ফেসবুকে মেসেজ দিয়ে জানায় তার আম্মু মোবাইল ধরতে দেয়নি সেও সারারাত কান্না করছিল। আবার ২দিন ইভার সাথে যোগাযোগ নেয়, নিলয় যেন পাগল হয়ে যাচ্ছিল সে কষ্ট সহ্য করতে না পেরে সিগারেট খেতে লাগল আর কান্নার কিছু ছবি আর সিগারেট খাওয়ার কিছু ছবি ইভাকে পাঠাল। ইভা ফেসবুকে এসে নিলয়ের এইসব দেখে অনেক বকা দেয়, আর এইসব করতে না করে।এইভাবে ঝগড়া বিবাদের মাঝে ফেব্রুয়ারি শেষ হয়ে যায়, ২৮ফেব্রুয়ারি ইভা নিলয়কে মেসেজ দেয় তার বিয়ে সে যেন তার জন্য আর অপেক্ষা না করে, নিলয়ের মাথায় যেন আকাশ ভেংগে পড়ল অনেক চেস্টা করেও সেদিন ইভার সাথে কথ বলতে পারেনি। পরেরদিন নিলয় ইভাকে কথা বলতে বলে কিন্তু ইভা বলে যা হওয়ার হয়ে গেছে আর কিছু করার নেয় আমাদের আগে ভাবা উছিত ছিল, মা-বাবা যা করে তা আমার সুখের জন্য করে তাই আমি মা-বাবার কথা মেনে নিয়েছি এই কথা শুনার পর ইভার প্রতি খুব ঘৃণা হয় নিলয়ের একটা মেয়ে লাভ করার পর এমন কথা বলতে পারে এই প্রথম শুনেছে।
এরপর নিলয় ইভার কাছে তার সাথে যে ছেলের বিয়ে তার কথা জানতে ছাই কিন্তু ইভা ওইসব বলতে ছাইনা বলে জানিয়ে দেয়, ইভার ভয় ছিল নিলয় যদি কোন ক্ষতি করে।
নিলয় ভাবতে থাকে হয়তো সামনে ওর এইসসএইসসি পরিক্ষা হয়তো তাই বিয়ের নামে নাটক করতেছে যাতে ভাল করে পরতে পারে পরিক্ষা শেষে সব ঠিক হয়ে যাবে। আর ইভাকে বলে মিথ্যা বলা কি দরকার, ইভা তার মায়ের কসম করে বলে তার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে তখন কিছুটা বিশ্বাস হয় নিলয়ের, আর নিলয় তখন নিজেকে আঘাত করতে করতে রক্তাক্ত করে,এরপর ঘুমের ঔসধ খেয়ে একলা রুমে পরে থাকে একদিন কোন খবর না পেয়ে তার বন্ধুরা ছুটে আসে তার রুমে আর দেখতে পায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে নিলয় তারাতারি তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়, প্রায় ৬দিন হাসপাতালস মৃত্যুর সাথে লড়াই করে অবশেষে সুস্থ হয়ে ফিরে। এরপর আবার ইভাকে মেসেজ দেয়, ইভাকে বলে এই বিয়েটা তে রাজি না হতে, সে বাছতে পারবেনা তাকে ছাড়া, তার রক্তাক্ত ছবিগুলো দেয় কিন্তু ইভার মন এত বেশি নিষ্টুর ছিল সে ওইসবের পাত্তাই দেয়নি সে বলতে লাগল এইরকম অনেক হয় কিছুদিন পর সব ঠিক হয়ে যাবে। নিলয় অনেকবার বলেছিল আমি সবার মত নয়, আমি তোমাকে না দেখে লাভ করেছি, তুমি আমার জীবনে ছিলেনা
এরপরেও সবাইকে তোমার কথা বলেছি। কিন্তু ইভা নিলয়কে পাত্তাই দিলনা। নিরগুম রাত বালিশ ভিজিয়ে ভিজিয়ে কাটাতে থাকে নিলয়। একসময় নিলয় জীবনের মায়া ত্যাগ করে একদিন রাস্তায় চলন্ত গাড়ীর সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে পরে আর সেখান রক্তাক্ত হয়ে আবারো হাসপাতালে, হাসপাতালে কিছুদিন থাকার পর একটু সুস্থ হলে তাকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
আর দেশে গিয়ে নিলয় যে ছেলের সাথে ইভার বিয়ে ঠিক হয়েছে সে ছেলের সম্পর্কে সব খবর নেয় তার পুরো পরিবার সম্পর্কে খবর নেই, ছেলেটি জার্মান থাকে ওখানে পড়ালেখা করে, ইভাকেও জার্মানিতে নিয়ে পরাবে, ৫মাস পর সে দেশে আসবে আর তখন তাদের বিয়ে হবে।
এইসব জানার পর ইভার প্রতি ঘৃণা হতে লাগল, নিলয়ের কাছে মনে হচ্ছিল হয়তো ভাল ছেলে আর জার্মানিতে যাওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করতে ছাইনি বলে ইভা বিয়েতে রাজি হয়। নিলয় তখন তার দেশের বন্ধুদের সব কথা খুলে বলে আর তার বন্ধুরা সবাই তাকে বলে এই বিয়ে হবেনা বিয়ে তোর সাথে হবে যা করার তারা করবে, নিলয়কে ইভার বাসার ঠিকানা আর ওই ছেলের ঠিকানা দিতে বলে কিন্তু নিলয় জানিয়ে দেয় তার জন্য কারো ক্ষতি হউক সে ছাইনা, দরকার হলে নিজের জীবন দিব তবুও কারো ক্ষতি করতে পারবনা। ইভা কল দিতে নিষেধ করাই তার কাছের বান্ধুবী ফারিয়াকে মেসেজ দিয়ে ইভাকে ফেসবুকে আসতে বলে, পরেরদিন ইভা ফেসবুকে আসে আর নিলয় যে ছেলের সাথে তার বিয়ে ঠিক সে ছেলে কি করে , কোথায় থাকে, বিয়ে কখন, তাকেও জার্মান নিয়ে যাবে সবকিছু বলে ইভা এইসব শুনে আচার্য হয়ে যায় এইসব কি করে জানল আর সাথে ভয় পাচ্ছিল যদি নিলয় কিছু করে তাহলে বিয়েটা ভেংগে যাবে, সাথে তাদের সম্মান যাবে। নিলয় ইভাকে অনেক কথা বলে কিন্তু ইভা এইসব পাত্তাই দেয়নি সে উল্টা বলতে থাকে আমি এখন অন্যের আমানত, ৫মাস কথ বলা কি দোষ অন্য মেয়েরা কতকিছু করে আর আমি শুধু ৫মাস কথা বলছি, আমি দোয়া করি তুমি সুখি হবে। নিলয় অনেক বুঝিয়েছে সে কখনো সুখি হতে পারবেনা তাকে ছাড়া, নিলয় তাকে অনেক বলেছে যারা লাভ করে তারা বিয়ের দিনেও সুযোগ ফেলে লাভার কে আপন করে নেয় আর তোমার কাছে ৫মাস সময় আছে। ইভা বললো ওদের কথা দিয়েছে আমি ওদের আমানত, নিলয় ইভাকে বলছিল তুমিওতো আমাই কথা দিয়েছিলে তুমি শুধু আমার, তাহলে এমন কেন করলে। কিন্তু নিলয়ের কোন কথায় ইভার মন গলেনি। এরপরেও ইভাকে দূর থেকে দেখার জন্য ইভা যে কেন্দ্রে পরিক্ষা দিচ্ছে সেখানে ১দিন গিয়েছিল কিন্তু অসুস্থতার কারণে সেদিন ফিরে যেতে হয়। এইভাবে কষ্টের দিন যেতে থাকে নিলয়ের,
অবশেষে আঘাত সহ্য করতে না পেরে নিজেকে ধংসের পথে নিয়ে যায়, জড়িয়ে পরে নেশার জগতে,নেশার জগতে এত বেশি জড়িয়ে পরেছে তার পরিবার তাকে ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে, তার বন্ধুগুলো আজ তাকে সময় দেয়না। আজ সে সমাজে একজন খারাপ ছেলে, সবাই তাকে খারাপ বলে চিক্কার করে, নিলয় মৃত্যুর অপেক্ষায় নিজেকে শেষে করতে থাকে প্রতিনিয়ত। আর একদিন মৃত্যু নিলয়ের ডাকে সারা দেয়, সেদিনও প্রতিদিনের মত নেশা করে ঘুমিয়ে পরে কিন্তু প্রতিদিনের মত আর ঘুম ভাংলনা পরেরদিন, সবাইকে ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে যায় নিলয়।
...।।
আমাদের সমাজে এইভাবে প্রতিদিন ঝড়ে যাচ্ছে কত প্রাণ, যাদের সুন্দর স্বপ্ন থাকে।
যেসব ছেলে-মেয়েগুলো তাদের বাবা-মায়ের কাছে এত ভাল থাকতে ছাই, বাবা-মা যা করেন তা নিজের সুখের জন্য করেন একজন কে স্বপ্ন দেখিয়ে খুব
সহযে ওকে বলতে পারে আমি অন্যের আমানত তাদের কি দরকার কারো সাথে প্রেমে জড়িয়ে নিস্পাপ কোন জীবন ধংস করা?
একটা জীবনের মানে কি তারা বুঝেনা? একটা জীবন ধংস করা যায় কিন্তু একটা জীবন দেওয়া যায়না।
ইভা তাতে অবাক হয়ে যায়, আর তাতে নিলয়ের প্রতি ইভার ভালোবাসাটা আরো গভীর হয়, কিন্তু ইভা তা প্রকাশ করেনা। নিলয় আবারো আগের মত তার ভালোবাসা প্রকাশ করতে লাগল কিন্তু ইভা আগের মত পাত্তাই দিলনা, ইভা তাকে বলতে লাগল এতো ভালোবাসলে কেন এতদিন খুঁজে নাওনি নিলয় তাকে বুঝাতে লাগল যে সে খুঁজেছে। তাদের মাঝে এখন প্রতিদিন কথা হয় দিনে অনেকবার চ্যাট হয় দুজন দুজনের অপেক্ষায় থাকে সারাক্ষণ কখন ফেসবুকে আসবে কখন কল দিবে। এইভাবে কিছুদিন যেতে না যেতে ইভা তার মনের কথা বলে ফেলে নিলয় কে। নিলয় ইভার কথাটা শুনে এতবেশি আনন্দিত হয়েছিল যা ভাষায় প্রকাশ করা যাবেনা। এইভাবে রাগ-অভিমাব নিয়ে তাদের সমর্পকের ৫টি মাস চলে যায়। ইভা নিলয়কে বিদেশে ভাল কিছু একটা করার জন্য বলে যাতে ইভার পরিবার নিলয়কে মেনে নিতে পারে, নিলয় ইভাকে পাওয়ার জন্য সব করতে রাজি তাই সে দেশ থেকে টাকা এনে বিদেশে ব্যাবসা শুরু করে। এর মাঝে ১৪ফেব্রুয়ারি চলে আসে আর নিলয় সেদিন দেশে যেতে চাই কিন্তু ইভা না করায় আর যায়নি। এরপর নিলয়ের জীবনে নেমে আসে অভিশপ্ত দিন, ১৪ফেব্রুয়ারি সারাদিন সারারাত অপেক্ষা করেও ইভার সাথে যোগাযোগ করতে পারেনি, কান্নায় ভেংগে পরে নিলয় পরেরদিন ইভা ফেসবুকে মেসেজ দিয়ে জানায় তার আম্মু মোবাইল ধরতে দেয়নি সেও সারারাত কান্না করছিল। আবার ২দিন ইভার সাথে যোগাযোগ নেয়, নিলয় যেন পাগল হয়ে যাচ্ছিল সে কষ্ট সহ্য করতে না পেরে সিগারেট খেতে লাগল আর কান্নার কিছু ছবি আর সিগারেট খাওয়ার কিছু ছবি ইভাকে পাঠাল। ইভা ফেসবুকে এসে নিলয়ের এইসব দেখে অনেক বকা দেয়, আর এইসব করতে না করে।এইভাবে ঝগড়া বিবাদের মাঝে ফেব্রুয়ারি শেষ হয়ে যায়, ২৮ফেব্রুয়ারি ইভা নিলয়কে মেসেজ দেয় তার বিয়ে সে যেন তার জন্য আর অপেক্ষা না করে, নিলয়ের মাথায় যেন আকাশ ভেংগে পড়ল অনেক চেস্টা করেও সেদিন ইভার সাথে কথ বলতে পারেনি। পরেরদিন নিলয় ইভাকে কথা বলতে বলে কিন্তু ইভা বলে যা হওয়ার হয়ে গেছে আর কিছু করার নেয় আমাদের আগে ভাবা উছিত ছিল, মা-বাবা যা করে তা আমার সুখের জন্য করে তাই আমি মা-বাবার কথা মেনে নিয়েছি এই কথা শুনার পর ইভার প্রতি খুব ঘৃণা হয় নিলয়ের একটা মেয়ে লাভ করার পর এমন কথা বলতে পারে এই প্রথম শুনেছে।
এরপর নিলয় ইভার কাছে তার সাথে যে ছেলের বিয়ে তার কথা জানতে ছাই কিন্তু ইভা ওইসব বলতে ছাইনা বলে জানিয়ে দেয়, ইভার ভয় ছিল নিলয় যদি কোন ক্ষতি করে।
নিলয় ভাবতে থাকে হয়তো সামনে ওর এইসসএইসসি পরিক্ষা হয়তো তাই বিয়ের নামে নাটক করতেছে যাতে ভাল করে পরতে পারে পরিক্ষা শেষে সব ঠিক হয়ে যাবে। আর ইভাকে বলে মিথ্যা বলা কি দরকার, ইভা তার মায়ের কসম করে বলে তার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে তখন কিছুটা বিশ্বাস হয় নিলয়ের, আর নিলয় তখন নিজেকে আঘাত করতে করতে রক্তাক্ত করে,এরপর ঘুমের ঔসধ খেয়ে একলা রুমে পরে থাকে একদিন কোন খবর না পেয়ে তার বন্ধুরা ছুটে আসে তার রুমে আর দেখতে পায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে নিলয় তারাতারি তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়, প্রায় ৬দিন হাসপাতালস মৃত্যুর সাথে লড়াই করে অবশেষে সুস্থ হয়ে ফিরে। এরপর আবার ইভাকে মেসেজ দেয়, ইভাকে বলে এই বিয়েটা তে রাজি না হতে, সে বাছতে পারবেনা তাকে ছাড়া, তার রক্তাক্ত ছবিগুলো দেয় কিন্তু ইভার মন এত বেশি নিষ্টুর ছিল সে ওইসবের পাত্তাই দেয়নি সে বলতে লাগল এইরকম অনেক হয় কিছুদিন পর সব ঠিক হয়ে যাবে। নিলয় অনেকবার বলেছিল আমি সবার মত নয়, আমি তোমাকে না দেখে লাভ করেছি, তুমি আমার জীবনে ছিলেনা
এরপরেও সবাইকে তোমার কথা বলেছি। কিন্তু ইভা নিলয়কে পাত্তাই দিলনা। নিরগুম রাত বালিশ ভিজিয়ে ভিজিয়ে কাটাতে থাকে নিলয়। একসময় নিলয় জীবনের মায়া ত্যাগ করে একদিন রাস্তায় চলন্ত গাড়ীর সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে পরে আর সেখান রক্তাক্ত হয়ে আবারো হাসপাতালে, হাসপাতালে কিছুদিন থাকার পর একটু সুস্থ হলে তাকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
আর দেশে গিয়ে নিলয় যে ছেলের সাথে ইভার বিয়ে ঠিক হয়েছে সে ছেলের সম্পর্কে সব খবর নেয় তার পুরো পরিবার সম্পর্কে খবর নেই, ছেলেটি জার্মান থাকে ওখানে পড়ালেখা করে, ইভাকেও জার্মানিতে নিয়ে পরাবে, ৫মাস পর সে দেশে আসবে আর তখন তাদের বিয়ে হবে।
এইসব জানার পর ইভার প্রতি ঘৃণা হতে লাগল, নিলয়ের কাছে মনে হচ্ছিল হয়তো ভাল ছেলে আর জার্মানিতে যাওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করতে ছাইনি বলে ইভা বিয়েতে রাজি হয়। নিলয় তখন তার দেশের বন্ধুদের সব কথা খুলে বলে আর তার বন্ধুরা সবাই তাকে বলে এই বিয়ে হবেনা বিয়ে তোর সাথে হবে যা করার তারা করবে, নিলয়কে ইভার বাসার ঠিকানা আর ওই ছেলের ঠিকানা দিতে বলে কিন্তু নিলয় জানিয়ে দেয় তার জন্য কারো ক্ষতি হউক সে ছাইনা, দরকার হলে নিজের জীবন দিব তবুও কারো ক্ষতি করতে পারবনা। ইভা কল দিতে নিষেধ করাই তার কাছের বান্ধুবী ফারিয়াকে মেসেজ দিয়ে ইভাকে ফেসবুকে আসতে বলে, পরেরদিন ইভা ফেসবুকে আসে আর নিলয় যে ছেলের সাথে তার বিয়ে ঠিক সে ছেলে কি করে , কোথায় থাকে, বিয়ে কখন, তাকেও জার্মান নিয়ে যাবে সবকিছু বলে ইভা এইসব শুনে আচার্য হয়ে যায় এইসব কি করে জানল আর সাথে ভয় পাচ্ছিল যদি নিলয় কিছু করে তাহলে বিয়েটা ভেংগে যাবে, সাথে তাদের সম্মান যাবে। নিলয় ইভাকে অনেক কথা বলে কিন্তু ইভা এইসব পাত্তাই দেয়নি সে উল্টা বলতে থাকে আমি এখন অন্যের আমানত, ৫মাস কথ বলা কি দোষ অন্য মেয়েরা কতকিছু করে আর আমি শুধু ৫মাস কথা বলছি, আমি দোয়া করি তুমি সুখি হবে। নিলয় অনেক বুঝিয়েছে সে কখনো সুখি হতে পারবেনা তাকে ছাড়া, নিলয় তাকে অনেক বলেছে যারা লাভ করে তারা বিয়ের দিনেও সুযোগ ফেলে লাভার কে আপন করে নেয় আর তোমার কাছে ৫মাস সময় আছে। ইভা বললো ওদের কথা দিয়েছে আমি ওদের আমানত, নিলয় ইভাকে বলছিল তুমিওতো আমাই কথা দিয়েছিলে তুমি শুধু আমার, তাহলে এমন কেন করলে। কিন্তু নিলয়ের কোন কথায় ইভার মন গলেনি। এরপরেও ইভাকে দূর থেকে দেখার জন্য ইভা যে কেন্দ্রে পরিক্ষা দিচ্ছে সেখানে ১দিন গিয়েছিল কিন্তু অসুস্থতার কারণে সেদিন ফিরে যেতে হয়। এইভাবে কষ্টের দিন যেতে থাকে নিলয়ের,
অবশেষে আঘাত সহ্য করতে না পেরে নিজেকে ধংসের পথে নিয়ে যায়, জড়িয়ে পরে নেশার জগতে,নেশার জগতে এত বেশি জড়িয়ে পরেছে তার পরিবার তাকে ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে, তার বন্ধুগুলো আজ তাকে সময় দেয়না। আজ সে সমাজে একজন খারাপ ছেলে, সবাই তাকে খারাপ বলে চিক্কার করে, নিলয় মৃত্যুর অপেক্ষায় নিজেকে শেষে করতে থাকে প্রতিনিয়ত। আর একদিন মৃত্যু নিলয়ের ডাকে সারা দেয়, সেদিনও প্রতিদিনের মত নেশা করে ঘুমিয়ে পরে কিন্তু প্রতিদিনের মত আর ঘুম ভাংলনা পরেরদিন, সবাইকে ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে যায় নিলয়।
...।।
আমাদের সমাজে এইভাবে প্রতিদিন ঝড়ে যাচ্ছে কত প্রাণ, যাদের সুন্দর স্বপ্ন থাকে।
যেসব ছেলে-মেয়েগুলো তাদের বাবা-মায়ের কাছে এত ভাল থাকতে ছাই, বাবা-মা যা করেন তা নিজের সুখের জন্য করেন একজন কে স্বপ্ন দেখিয়ে খুব
সহযে ওকে বলতে পারে আমি অন্যের আমানত তাদের কি দরকার কারো সাথে প্রেমে জড়িয়ে নিস্পাপ কোন জীবন ধংস করা?
একটা জীবনের মানে কি তারা বুঝেনা? একটা জীবন ধংস করা যায় কিন্তু একটা জীবন দেওয়া যায়না।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
আলম সারওয়ার ১৩/০৫/২০১৭অসাধারণ
-
দীপঙ্কর বেরা ২১/০৪/২০১৭দারুণ
-
ফয়জুল মহী ২০/০৪/২০১৭অতুলনীয় উপস্থাপনা
-
শেলি ১৮/০৪/২০১৭সুন্দর গল্প
-
০।।০ ১৭/০৪/২০১৭খুবই সুন্দর গল্প ।। অনেক অনেক ভালো লাগা রেখে গেলাম
ভালো থাকুন সর্বদা ।। শুভ কামনা নিরন্তর... -
জয় নারায়ণ ভট্টাচার্য্য ১৬/০৪/২০১৭সহজাত লেখনী
-
ফয়জুল মহী ১৫/০৪/২০১৭উপভোগ্য লিখনী
-
মধু মঙ্গল সিনহা ১৫/০৪/২০১৭ভালো লাগলো।
-
মোঃওবায় দুল হক ১৪/০৪/২০১৭nice
-
মোঃ ইমরান হোসেন (ইমু) ১৩/০৪/২০১৭কিছুটা পরিমার্জন কররে বাল হয়!
-
মোঃ ইমরান হোসেন (ইমু) ১৩/০৪/২০১৭সাবার্থক ছোট গল্প।
অনেক ধন্যবাদ