অনুগল্প
সেলিব্রিটি
মো:ওবায়দুল হক
মেডিকেল কলেজ হসপিটালে মা'কে নিয়ে বসে আছি।
লম্বা সিরিয়াল শেষে মা'কে ডাক্টার দেখালাম। বেলা তিনটার ও বেশি বাজে। মা'কে একটি বেঞ্চে বসিয়ে বললাম, মা তুমি এখানে বসো, আমি ফার্মেসি থেকে তোমার ওষুধগুলো নিয়ে আসি।
-আচ্ছা ঠিক আছে। তয় তাড়াতাড়ি চলে আসিস কিন্তু।
-ওকে মা। আমি যাব আর আসবো।এই বলে,ঔষুধগুলো নিতে চলে এলাম।
দোকানে ভীর থাকার কারণে প্রাই একঘন্টা পর ফিরতে হলো। এসে দেখি মা নেই,বেঞ্চের নিচে ব্যাগটা পরে আছে! আমি পাগলের মতো আশেপাশেখুঁজতে লাগলাম। কোথাও না দেখতে পেয়ে,ভাবলাম বাথরুমের যায়নিতো? পরে বাথরুমের দিকে ছুঠলাম।
বাথরুমের কাছাকাছি আসতেই দেখলাম একটিমেয়ে মা'কে জড়িয়ে ধরে এদিকে আসছে,।
মা, মা বলে আমি মাকে জড়িয়ে ধরলাম।
মেয়েটি মা'কে আমার কছে ছেড়েদিয়ে বলল, উনা আপনার মা।
-জ্বি, আমার মা।
আপনার মা ওখানে বুমি করছিলেন, তাই উনাকে বাথরুম থেকে হাত মুখ ধুয়িয়ে নিয়ে আসলাম।
মায়ের গায়ের চাঁদরের দিকে লক্ষ্য করে আর্চায্য হলাম!
-মা, তুমি কি চাঁদর দুইটা নিয়ে আসছো ?
-না। একটাই।
-তোমার গায়েতো খয়েরি রঙের চাঁদর ছিল, সবুজ রঙের চাদর এলো কোথথেকে?
-মেয়েটি বলল, এটা আমার চাঁদর। উনার চাঁদরটা বুমি করে নষ্ট করে ফেলেছেন। এমনিতেই প্রচন্ড শীত তার মাঝে আবার মাথায় পানি দিয়েছি, তাই চাঁদটা দিয়ে ভালো করে ঢেকে দিলাম।
মেয়েটির কথা শুনে আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি! কি বলবো ভেবেপাচ্ছি না। ধন্যবাদ টুকোও মুখদিয়ে বেরোচ্ছে না.. এমন একটা মানুষেকে ধন্যবাদ দিয়ে কি করে ছোটকরি।
আমি মেয়েটিকে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি এখানে কি করছিলেন?
-আমি এই মেডিকেল কলেজের স্টুডেন্ট।
-তাই। দোয়ারইল আপনার জন্য।
-ধন্যবাদ। আপনাদের বাড়ি কি ঢাকাতেই?
-না। ব্রাম্মনবাড়িয়া, নবীনগর।
-কমিল্লা না গিয়ে ঢাকায় নিয়ে এলান কেন?
-দেখুন, কুমিল্লা,ব্রাম্মনবাড়িয়া হসপিটালে মাকে অনেক বার চিকিৎসা করানো হয়ছে। ওষুধ খাওয়ার পর কয়েকমাস ভালো থাকে। পরে আবারো আগের মতোই।
-অ। তাই এবার ঢাকা নিয়ে এলেন।
-বাবা মা, ভাই বোন ছেড়ে দূরপ্রবাসে থাকি, বাড়িতে ফোন করলে মায়ের অসুখের কথা শুনলে মনটা খারাপ হয়ে যায়। মা যদি ভালো না থাকে আমরা সন্তানরা কি করে ভালোথাকি বলুন?
- আপনি দেশের বাহিরে থাকেন বুজি?
-জ্বি। আট বছর পর গত দুইদিন আগে ছুটিতে দেশে আসলাম। এসে-ই মাকে নিয়ে ঢাকাই চলে এলাম।
-আপনার মায়ের প্রতি ভালোবাসা দেখে অনেক ভালোলাগল আমার।
এদিকে আমার মা, মেয়েটির দিকে নিষ্পলকে তাকিয়ে আছে। এমন ভাবে তাকিয়ে আছে মনে হচ্ছে জন্মের পরে এইপ্রথম একটা আর্চায্য কিছু দেখল!
মা'কে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে,মেয়েটি
মায়ের গলায় জড়িয়ে ধরে, গালের সাথে গাল লাগিয়ে বলল, খালাম্মা এভাবে আমাকে কি দেখছেন,?
-মা রে, তোমাকে দেখছি আর ভাবছি, কেমন মায়ের ঘরে তোমার জন্ম? কত্ত ভালোতুমি!তোমার মা'যে আরো কত ভালো!
- খালাম্মা,আমার মা আসলেই অনেক ভালো মানুষ।
আমি মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বললাম, আমার মা'ও ভালো। অনেক সরল সোজা মানুষ।এমন মায়ের গর্ভে আমার জন্ম কথাটা ভাবতেই আমার গর্বে বুকটা ভরে যায়।
-মেয়েটি আমার কথাটা শুনে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, পৃথিবীর সব মা'গুলোই ভালো। সন্তানদের কাছে সবার মা ই শেষ্ট মা।
ফোনটা বেজে উঠতেই, রিসিব করে মেয়েটা বলল, জ্বি আমি এক্ষুনি আসছি।
ফোনটা রেখে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, ভাইয়া আমাকে এক্ষুনি যেথে হবে এই বলে মায়ের পিটে হাত বুলিয়ে বলল, আসি আন্টি ভালো থাকবেন, সবসময়।
আমি আমার ব্যাগথেকে ডায়রিটা বের করে মেয়েটার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললাম,প্লিজ অটোগ্রাফ।
মেয়েটি বলল, অটোগ্রাফতো বড় বড় সেলিব্রিটিদের কাছথেকে মানুষ নিয়ে থাকেন! আমি কি এমন আহমারি মানুষ যে,আমার অটোগ্রাফ চায়ছেন?
-দেখুন, পৃথিবীতে কে কোন বড় সেলিব্রিটি, তা আমি মাপতে যাবো না। শুধু এটুকো বলবো, আমার চোখে আপনিই পৃথিবীর সবচায়তে বড় সেলিব্রিটি।
মেয়েটি আমার হাত থেকে ডায়রিটা নিয়ে, লিখে দিলো"
যারা মাকে ভালোবাসে, মায়ের সেবা করে ওরা ও সেলিব্রিটি, মা'য়ের প্রতি ভালোবাসাটা সবসময় ধরে রাখবেন"
-সাদিয়া আক্তার
মেয়েটা কয়েক কদম চলে যাওয়ার পর
আমি পেছন থেকে ডাকলাম, সাদিয়া, এই সাদিয়া।
মেয়েটি আমার ডাক শুনে পেছেনে ফিরে হাসি মাখামুখে আমার দিকে এগিয়ে আসছে।
আমি মেয়েটির চোখের দিকে তাকিয়ে বলতে থাকি, দ্যাখুন, ডা. লুৎফররহমান এর ধর্মজীবণগ্রন্থে পড়েছি"মানুষের মাঝেই শয়তান এবং ফেরেস্তা বসবাস।
ঐ অদৃশ্য শয়তান ও ফেরেস্তার দেখামিলে মানুষের মাঝে"
তাই একজন ফেরেস্তামানবীর মুখটাকে আর একবার দেখে নিলাম।
সমাপ্ত
মোঃওবায়দুল হক
মালায়শিয়া
মো:ওবায়দুল হক
মেডিকেল কলেজ হসপিটালে মা'কে নিয়ে বসে আছি।
লম্বা সিরিয়াল শেষে মা'কে ডাক্টার দেখালাম। বেলা তিনটার ও বেশি বাজে। মা'কে একটি বেঞ্চে বসিয়ে বললাম, মা তুমি এখানে বসো, আমি ফার্মেসি থেকে তোমার ওষুধগুলো নিয়ে আসি।
-আচ্ছা ঠিক আছে। তয় তাড়াতাড়ি চলে আসিস কিন্তু।
-ওকে মা। আমি যাব আর আসবো।এই বলে,ঔষুধগুলো নিতে চলে এলাম।
দোকানে ভীর থাকার কারণে প্রাই একঘন্টা পর ফিরতে হলো। এসে দেখি মা নেই,বেঞ্চের নিচে ব্যাগটা পরে আছে! আমি পাগলের মতো আশেপাশেখুঁজতে লাগলাম। কোথাও না দেখতে পেয়ে,ভাবলাম বাথরুমের যায়নিতো? পরে বাথরুমের দিকে ছুঠলাম।
বাথরুমের কাছাকাছি আসতেই দেখলাম একটিমেয়ে মা'কে জড়িয়ে ধরে এদিকে আসছে,।
মা, মা বলে আমি মাকে জড়িয়ে ধরলাম।
মেয়েটি মা'কে আমার কছে ছেড়েদিয়ে বলল, উনা আপনার মা।
-জ্বি, আমার মা।
আপনার মা ওখানে বুমি করছিলেন, তাই উনাকে বাথরুম থেকে হাত মুখ ধুয়িয়ে নিয়ে আসলাম।
মায়ের গায়ের চাঁদরের দিকে লক্ষ্য করে আর্চায্য হলাম!
-মা, তুমি কি চাঁদর দুইটা নিয়ে আসছো ?
-না। একটাই।
-তোমার গায়েতো খয়েরি রঙের চাঁদর ছিল, সবুজ রঙের চাদর এলো কোথথেকে?
-মেয়েটি বলল, এটা আমার চাঁদর। উনার চাঁদরটা বুমি করে নষ্ট করে ফেলেছেন। এমনিতেই প্রচন্ড শীত তার মাঝে আবার মাথায় পানি দিয়েছি, তাই চাঁদটা দিয়ে ভালো করে ঢেকে দিলাম।
মেয়েটির কথা শুনে আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি! কি বলবো ভেবেপাচ্ছি না। ধন্যবাদ টুকোও মুখদিয়ে বেরোচ্ছে না.. এমন একটা মানুষেকে ধন্যবাদ দিয়ে কি করে ছোটকরি।
আমি মেয়েটিকে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি এখানে কি করছিলেন?
-আমি এই মেডিকেল কলেজের স্টুডেন্ট।
-তাই। দোয়ারইল আপনার জন্য।
-ধন্যবাদ। আপনাদের বাড়ি কি ঢাকাতেই?
-না। ব্রাম্মনবাড়িয়া, নবীনগর।
-কমিল্লা না গিয়ে ঢাকায় নিয়ে এলান কেন?
-দেখুন, কুমিল্লা,ব্রাম্মনবাড়িয়া হসপিটালে মাকে অনেক বার চিকিৎসা করানো হয়ছে। ওষুধ খাওয়ার পর কয়েকমাস ভালো থাকে। পরে আবারো আগের মতোই।
-অ। তাই এবার ঢাকা নিয়ে এলেন।
-বাবা মা, ভাই বোন ছেড়ে দূরপ্রবাসে থাকি, বাড়িতে ফোন করলে মায়ের অসুখের কথা শুনলে মনটা খারাপ হয়ে যায়। মা যদি ভালো না থাকে আমরা সন্তানরা কি করে ভালোথাকি বলুন?
- আপনি দেশের বাহিরে থাকেন বুজি?
-জ্বি। আট বছর পর গত দুইদিন আগে ছুটিতে দেশে আসলাম। এসে-ই মাকে নিয়ে ঢাকাই চলে এলাম।
-আপনার মায়ের প্রতি ভালোবাসা দেখে অনেক ভালোলাগল আমার।
এদিকে আমার মা, মেয়েটির দিকে নিষ্পলকে তাকিয়ে আছে। এমন ভাবে তাকিয়ে আছে মনে হচ্ছে জন্মের পরে এইপ্রথম একটা আর্চায্য কিছু দেখল!
মা'কে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে,মেয়েটি
মায়ের গলায় জড়িয়ে ধরে, গালের সাথে গাল লাগিয়ে বলল, খালাম্মা এভাবে আমাকে কি দেখছেন,?
-মা রে, তোমাকে দেখছি আর ভাবছি, কেমন মায়ের ঘরে তোমার জন্ম? কত্ত ভালোতুমি!তোমার মা'যে আরো কত ভালো!
- খালাম্মা,আমার মা আসলেই অনেক ভালো মানুষ।
আমি মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বললাম, আমার মা'ও ভালো। অনেক সরল সোজা মানুষ।এমন মায়ের গর্ভে আমার জন্ম কথাটা ভাবতেই আমার গর্বে বুকটা ভরে যায়।
-মেয়েটি আমার কথাটা শুনে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, পৃথিবীর সব মা'গুলোই ভালো। সন্তানদের কাছে সবার মা ই শেষ্ট মা।
ফোনটা বেজে উঠতেই, রিসিব করে মেয়েটা বলল, জ্বি আমি এক্ষুনি আসছি।
ফোনটা রেখে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, ভাইয়া আমাকে এক্ষুনি যেথে হবে এই বলে মায়ের পিটে হাত বুলিয়ে বলল, আসি আন্টি ভালো থাকবেন, সবসময়।
আমি আমার ব্যাগথেকে ডায়রিটা বের করে মেয়েটার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললাম,প্লিজ অটোগ্রাফ।
মেয়েটি বলল, অটোগ্রাফতো বড় বড় সেলিব্রিটিদের কাছথেকে মানুষ নিয়ে থাকেন! আমি কি এমন আহমারি মানুষ যে,আমার অটোগ্রাফ চায়ছেন?
-দেখুন, পৃথিবীতে কে কোন বড় সেলিব্রিটি, তা আমি মাপতে যাবো না। শুধু এটুকো বলবো, আমার চোখে আপনিই পৃথিবীর সবচায়তে বড় সেলিব্রিটি।
মেয়েটি আমার হাত থেকে ডায়রিটা নিয়ে, লিখে দিলো"
যারা মাকে ভালোবাসে, মায়ের সেবা করে ওরা ও সেলিব্রিটি, মা'য়ের প্রতি ভালোবাসাটা সবসময় ধরে রাখবেন"
-সাদিয়া আক্তার
মেয়েটা কয়েক কদম চলে যাওয়ার পর
আমি পেছন থেকে ডাকলাম, সাদিয়া, এই সাদিয়া।
মেয়েটি আমার ডাক শুনে পেছেনে ফিরে হাসি মাখামুখে আমার দিকে এগিয়ে আসছে।
আমি মেয়েটির চোখের দিকে তাকিয়ে বলতে থাকি, দ্যাখুন, ডা. লুৎফররহমান এর ধর্মজীবণগ্রন্থে পড়েছি"মানুষের মাঝেই শয়তান এবং ফেরেস্তা বসবাস।
ঐ অদৃশ্য শয়তান ও ফেরেস্তার দেখামিলে মানুষের মাঝে"
তাই একজন ফেরেস্তামানবীর মুখটাকে আর একবার দেখে নিলাম।
সমাপ্ত
মোঃওবায়দুল হক
মালায়শিয়া
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ০৮/০৪/২০১৭গল্পটির বিষয়বস্তু ভালো। কিন্তু শব্দের গাঁথুনি আরও মজবুত চাই। শুভেচ্ছা রইলো।
-
মোঃ ইমরান হোসেন (ইমু) ০৮/০৪/২০১৭গল্পকার এবং ফেরেস্তামানবী উভয়ের জন্য তো বটেই এবং পাশাপাশি সকল মায়ের জন্য রইল আকৃতিম ভালবাসা। গ্রহণ করো সকল মায়েরা। তোমাদের পদধুলি নিয়ে যেন ধন্য হতে পারি।
ইমরান হোসেন, ঢাকা থেকে।