আমার মায়ের কাছ থেকে পাওয়া
১৯৯২ সাল।আমার বয়স ৭কি ৮ হবে,তখন আমি দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ি।
আমি ও আমার সমবয়সি কয়েক জন মিলে প্রাইভেট পড়তে যেতাম,আমাদের গ্রামের শেষ মাথায় পুব পাড়ায়।পূতিদিন বিকেলে গ্রামের নিচ দিয়ে বয়ে ফসলা কমির আইল ঘুরে ঘুরে বয়ে যাওয়া রাস্তা দিয়ে আসা যাওয়া করতাম।তখন ছিল,মরিচ,পেয়াজ,রসুনের সিজন।আমরা প্রাইভেট শেষে ফেরার পথে আমার সাথের বন্ধু গুলো রাস্তার পাশের জমি থেকে মরিচ, পেয়াজ,এসব তুলে পকেটে করে নিয়ে আসতো।একদিন আমিও এদের দেখা-দেখি কতো গুলো মরিচ পকেটে করে নিয়ে বাড়ী আসি।বঈ গুলো টেবিলে রেখে,মরিচ গুলো পকেট থেকে খোলে টেবিলের উপর রাখছিলাম।মা ঘরের ভেতর ঢোকে আমাকে বললঃকিরে কী করছিস।আমি মায়ের কথার কোন উত্তর দিচ্ছিলাম না। মা সামনে এগিয়ে এসে অভাক কন্ঠে বললঃকিরে,এই মরিচ কোথা থেকে আনছিস?আমি ভয়ে ময়ের কথার উত্তর দিচ্ছিলাম না।আমাকে চুপ থাকতে দেখে মা রেগে আমার মাথায় হাত দিয়ে ঠেলা দিয়ে বললঃকিরে কথা বলছিসনা কেন?এভার আস্তে আস্তসেএ বললামঃএকটা ক্ষেত থেকে এনেছি। মা বললঃকার ক্ষেত থেকে?
আমি বললামঃযানিনা।
মা বললঃ যানিস না তো আনছিস কেন?
আমি বলললামঃ এমনি।
মা রেগে এবার মাথায় ঠাসা মেরে বললঃএমনি মানে?যা,এক্ষুনি গিয়ে দিয়ে আয় যার ক্ষেতের জিনিস,তার ক্ষেতে।
আমি যেতে ভয় ও অনিহা করছিলাম।
মা আবার ও বললঃযা দেরি করিসনা,সন্ধা হয়ে যায়তেছে।
আমি তার পরে ও যাছিলামনা।
মা এভার রেগে আমাকে ঘার ধরে ঘর থেকে বাহিরে বের করে দিয়ে বললঃযা।নয়লে কিন্তু রাতে ভাত দেবনা।
আমি ঘার দাক্কা খেয়ে উঠুনে দাড়ীয়ে। আমাকে দাড়ীয়ে থাকতে দেখে
মা এবার ঘর থেকে বেরি এসে আমার হাত ধরে টেনে খেচরে নিয়ে চলছে আর বলছেঃ চল কার ক্ষেত থেকে আনছিস?মা সামনে টানে আর আমি পেছনে,এভাবে মা আমাকে নিয়ে চলছে আর বার বার বলছেঃকোন ক্ষেত থেকে নিছিস?
কিছুক্ষন যাবার পরে বললাম,এই ক্ষেত থেকে নিয়েছি।সে ক্ষেতের পাশের ক্ষেতের পাশে দাড়িয়ে থাকা একটি মহিলাকে মা জিজ্ঞাসা করল,ভাবি এই ক্ষেতটা কার? তখন মহিলা বললঃএটা তোমার মামা শুশুরের ক্ষেত।
যে ক্ষেত থেকে মরিচ গুলো এনেছিলাম সে জমিটা আমার বাবার আপন মামার।মাআমাকে নিয়া আমার বাবার মামা(আমার দাদার)কাছে গেল।দাদাতো আম্মাকে দেখে বললঃকিগো সাবুদ্দির জ্বি তুমি এ অবেলা কি মনে কয়রা।আমার নানার নাম সাহাবুদ্দিন তাই আমার এই দাদা আমার মাকে নানার নাম ধরে ডাকেন।দাদার কথার উত্তরে মা মরিচ গুলো দাদাকে দেখিয়ে বললঃমামা আমার পুলাইডা না বলে এই মরিচ গুলো তুলে নিয়ে যায়,পরে জান্তে পারলাম এটা নাকি আপনার জমি।দাদা মায়ের কথা শোনে হাসতে হাসতে বলল,তুরো সাবুদ্দির জ্বি বিডি,আমার নাতি দুইলা মইছ নিছে এর লাইগা তুমি বিডি আমার নাতিরে ধইরা লইয়া আইছ। মা দাদার কথা শোনে বললঃযদি আপনার ক্ষেত না হয়ে অন্যকারো হতো।তাছারা এভাবে করতে করতে অভ্যাস হয়ে যাবে।পরে আমাকে দাদা একটি ব্যগ আমার হাতে দিয়ে ঘরের ভেতরের তুলেএনে রাখা মরিচের টাল দেখিয়ে বলল,ভাই তোমার যতলা লাগে অতলা লয়ইয়া যাও?মা বলল,না মামা, এতো মরিচ দিয়ে কি করব।তার পরেওদাদা এক ব্যগ মরিচ জোর করে আমার হাতে ধরিয়ে দিল।এবার মা আমাকে নিয়ে হাটতে থাকে বাড়ীর দিকে।পরে খাবারের সময় মা আমাকে বুঝাল,আর কারো ফসল না বলে না আনি।কারো কোন জিনিস যেন চুরি না করি,এসব করা ভালনা।আজ অবদি আমি আমার মায়ের কাছ থেকে পাওয়া সে শিক্ষাই আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ অভিজ্ঞতা
আমি ও আমার সমবয়সি কয়েক জন মিলে প্রাইভেট পড়তে যেতাম,আমাদের গ্রামের শেষ মাথায় পুব পাড়ায়।পূতিদিন বিকেলে গ্রামের নিচ দিয়ে বয়ে ফসলা কমির আইল ঘুরে ঘুরে বয়ে যাওয়া রাস্তা দিয়ে আসা যাওয়া করতাম।তখন ছিল,মরিচ,পেয়াজ,রসুনের সিজন।আমরা প্রাইভেট শেষে ফেরার পথে আমার সাথের বন্ধু গুলো রাস্তার পাশের জমি থেকে মরিচ, পেয়াজ,এসব তুলে পকেটে করে নিয়ে আসতো।একদিন আমিও এদের দেখা-দেখি কতো গুলো মরিচ পকেটে করে নিয়ে বাড়ী আসি।বঈ গুলো টেবিলে রেখে,মরিচ গুলো পকেট থেকে খোলে টেবিলের উপর রাখছিলাম।মা ঘরের ভেতর ঢোকে আমাকে বললঃকিরে কী করছিস।আমি মায়ের কথার কোন উত্তর দিচ্ছিলাম না। মা সামনে এগিয়ে এসে অভাক কন্ঠে বললঃকিরে,এই মরিচ কোথা থেকে আনছিস?আমি ভয়ে ময়ের কথার উত্তর দিচ্ছিলাম না।আমাকে চুপ থাকতে দেখে মা রেগে আমার মাথায় হাত দিয়ে ঠেলা দিয়ে বললঃকিরে কথা বলছিসনা কেন?এভার আস্তে আস্তসেএ বললামঃএকটা ক্ষেত থেকে এনেছি। মা বললঃকার ক্ষেত থেকে?
আমি বললামঃযানিনা।
মা বললঃ যানিস না তো আনছিস কেন?
আমি বলললামঃ এমনি।
মা রেগে এবার মাথায় ঠাসা মেরে বললঃএমনি মানে?যা,এক্ষুনি গিয়ে দিয়ে আয় যার ক্ষেতের জিনিস,তার ক্ষেতে।
আমি যেতে ভয় ও অনিহা করছিলাম।
মা আবার ও বললঃযা দেরি করিসনা,সন্ধা হয়ে যায়তেছে।
আমি তার পরে ও যাছিলামনা।
মা এভার রেগে আমাকে ঘার ধরে ঘর থেকে বাহিরে বের করে দিয়ে বললঃযা।নয়লে কিন্তু রাতে ভাত দেবনা।
আমি ঘার দাক্কা খেয়ে উঠুনে দাড়ীয়ে। আমাকে দাড়ীয়ে থাকতে দেখে
মা এবার ঘর থেকে বেরি এসে আমার হাত ধরে টেনে খেচরে নিয়ে চলছে আর বলছেঃ চল কার ক্ষেত থেকে আনছিস?মা সামনে টানে আর আমি পেছনে,এভাবে মা আমাকে নিয়ে চলছে আর বার বার বলছেঃকোন ক্ষেত থেকে নিছিস?
কিছুক্ষন যাবার পরে বললাম,এই ক্ষেত থেকে নিয়েছি।সে ক্ষেতের পাশের ক্ষেতের পাশে দাড়িয়ে থাকা একটি মহিলাকে মা জিজ্ঞাসা করল,ভাবি এই ক্ষেতটা কার? তখন মহিলা বললঃএটা তোমার মামা শুশুরের ক্ষেত।
যে ক্ষেত থেকে মরিচ গুলো এনেছিলাম সে জমিটা আমার বাবার আপন মামার।মাআমাকে নিয়া আমার বাবার মামা(আমার দাদার)কাছে গেল।দাদাতো আম্মাকে দেখে বললঃকিগো সাবুদ্দির জ্বি তুমি এ অবেলা কি মনে কয়রা।আমার নানার নাম সাহাবুদ্দিন তাই আমার এই দাদা আমার মাকে নানার নাম ধরে ডাকেন।দাদার কথার উত্তরে মা মরিচ গুলো দাদাকে দেখিয়ে বললঃমামা আমার পুলাইডা না বলে এই মরিচ গুলো তুলে নিয়ে যায়,পরে জান্তে পারলাম এটা নাকি আপনার জমি।দাদা মায়ের কথা শোনে হাসতে হাসতে বলল,তুরো সাবুদ্দির জ্বি বিডি,আমার নাতি দুইলা মইছ নিছে এর লাইগা তুমি বিডি আমার নাতিরে ধইরা লইয়া আইছ। মা দাদার কথা শোনে বললঃযদি আপনার ক্ষেত না হয়ে অন্যকারো হতো।তাছারা এভাবে করতে করতে অভ্যাস হয়ে যাবে।পরে আমাকে দাদা একটি ব্যগ আমার হাতে দিয়ে ঘরের ভেতরের তুলেএনে রাখা মরিচের টাল দেখিয়ে বলল,ভাই তোমার যতলা লাগে অতলা লয়ইয়া যাও?মা বলল,না মামা, এতো মরিচ দিয়ে কি করব।তার পরেওদাদা এক ব্যগ মরিচ জোর করে আমার হাতে ধরিয়ে দিল।এবার মা আমাকে নিয়ে হাটতে থাকে বাড়ীর দিকে।পরে খাবারের সময় মা আমাকে বুঝাল,আর কারো ফসল না বলে না আনি।কারো কোন জিনিস যেন চুরি না করি,এসব করা ভালনা।আজ অবদি আমি আমার মায়ের কাছ থেকে পাওয়া সে শিক্ষাই আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ অভিজ্ঞতা
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী. ০৮/০৩/২০১৪খুব ভালো লাগলো।
-
ইসমাত ইয়াসমিন ০৬/০৩/২০১৪খুব সুন্দর লিখেছেন। ভাল লাগ্ল।