আমি না-ওরা দুইজন
রোদেলা মধ্যাহ্ন। ঘরের মধ্যে বাংলাদেশ বেতার অন করে বসেছিলাম। বাইরে থেকে কায়িক পরিশ্রম করে উঠানে প্রবেশ করেই পরিশ্রান্ত কন্ঠে বাবা আমাকে বললেন, “বাইরের কোন খুঁজ খবর কি রাখস্ নাকি ঘরে বসে থাকলেই সব কাম-কাইজ হয়ে যাবে? আমি জিজ্ঞাসা করলাম কি করতে হবে? বালোয়াটার ক্ষেতটা যে ফাইট্যা চৌচির হয়ে গেছে সেই চিন্তা কি আছে? মটরটা ঠিক হইছে কি না একটু ঘুরা-ফেরা করতে-করতেওত দেখা যায়! শেখের বাড়ী গিয়ে আলম ভাইকে বললাম, মটর ঠিক হয়েছে কিনা। তিনি বললেন তুই মেশিন ঘরে যা আমি আইতাছি। মেশিন ঘরে গিয়ে দেখলাম ঘরের মেঝে থেকে ৮-১০ ফুট গর্ত করে মটর ও টিউবওয়েল স্থাপন করা হয়েছে। কোনরকমে কলের সামনে দাড়িয়ে কল কল চাপা যায় তবে পিছনে মাটির দেয়ওয়াল। ঘরের পাশেই বারেক ভাইয়ের শবজির ক্ষেতে কাজ করছিলেন সামাদ ফুফা। ফুফাত ভাই আল-আমিন ঘরেই ছিল। তার সম্পর্কে একটু বলা প্রয়োজন বোধ করছি। সে অনেকটা ছোট। ৭-৮ বছর বয়সী একজন ছেলে। সে কোন দাঙ্গাহা
ঙ্গামার মধ্যে নাই। স্বতন্ত্র ভাবেই চলা ফেরা করে। বড়জোর দুই একজনের সাথে মেলামেশা করে। ফুফাকে সে প্রচন্ড রকমের ভয় পায়। কারণ, ঊনিশ থেকে বিশ হলেই বেধড়ম পেটাতে থাকেন ফুফা। তিনি খুব রাগি মানুষ।
মারতে থাকলে কেউ তাকে ঠেকাতে পারে না। ইচ্ছামত মারতে থাকেন, অজ্ঞান হোক আর রক্তাক্ত হোক তাতে ফুফার কিছুই যায় আসে না। আল-আমিনকে ততটা মার খেতে না হলেও বড় দুই ভাইকে মারতে দেখেই সব সময় ভয়ার্ত প্রাণে পথ চলে সে।
আলম ভাই এসে কলে পানি ঢেলে চাপতে লাগলেন। পানি উঠে এলো। গর্ত হতে উঠে এসে আমাকে নিচে গিয়ে কল চাপতে বললেন, নয়ত মটরের সুইচ অন করলে পানি উঠবে না। আলম ভাই উপরে মটরের সুইচ অন করার জন্য অপেক্ষা করছেন আর আমি নিচে কল চাপছিলাম। কল থেকে পানি বেরতে হতে লাগল। আমাকে আরও দ্রুত চাপতে বলা হল যাতে সুইচ অন করলেই সহজে পানি বের হয়ে আসে। আমি আরও দ্রুত চাপতে শুরু
করলাম। আমার পিছনে মাথার উপর পর্যন্ত মাটির দেওয়াল। বাম পাশেই উপরে উঠার বা নিচে নামার সরু আকৃতির সিঁড়ি ঘরের বেড়ার সহিত লাগানো।
আলম ভাই সুইচ অন করলেন আর তাকিয়ে আছেন ঘরের সম্মুখে হাউস অভিমুখি পাইপের মাথায় পানি বের হয় কি না তা দেখার জন্যে। অন্যদিকে সুইচ অন করার সাথে সাথে মটরের সাথে সংশিষ্ট কলটি মৃদু কম্পিত হয়ে পাইপের মাথায় পানি পড়ে পড়ে ভাব, বের হয় হয় না। এমতাবস্থায় আমার আপাদমস্তক সমুদ্রের বিশাল তরঙ্গের মত ঢেউ বইতে লাগল। সমুদ্রের ঢেউ অনুভব করলে চিত্ত হরষিত হয়ে উঠে, আর এ ঢেউ সুখের নয় শোকের, আতঙ্কের। আমি বুঝতে পারলাম আমি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছি। আমি আমার অজান্তেই অনেক জোরে এক চিৎকার করলাম। বুঝতে পারিনি যে আমি চিৎকার করেছি। আলম ভাই আমার চিৎকার শুনে বুঝতে পারেন নাই যে, আমি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছি। তিনি বোধ করলেন পানি উঠতে দেখে উচ্ছাসভরা মনে হৈ-চৈ করে উঠেছি, পানি উঠেছে,
পানি উঠেছে ! আমি চুপ-চাপ দাড়িয়ে আছি আর কাঁপতেছি। কল চাপতে পারছি না। আলম ভাই মনে করলেন, শুধু শুধু দাড়িয়ে আছি কল চাপছিনা। সে ওই সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে আমাকে সরিয়ে দিতে চাইলেন। হাত দিয়ে সরিয়ে দেবার জন্য ধাক্কা দিলেন বললেন, ‘সর’। সাথে-সাথে তিনিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে চিৎকার করলেন, তাও শুনতে পেলাম না। কলের হাতল ছাড়তে চেষ্টা করছিলাম কিন্তু হাতল আমাকে ছাড়ল না। শুধু ঝাকুনি
খাইতেছিলাম। সমস্ত শরীরের ঝাকুনিটা পড়তেছিল জিহ্বার উপর। উপরের পাটি আর নিচের পাটির দাতের আঘাতে-আঘাতে জিহ্বা ক্ষত-বিক্ষত, থেতলিয়ে রক্তাক্ত হয়ে গিয়েছিল। এসব কিছুই বুঝতেছিলাম না। শুধু
অনুভব করছিলাম কোন এক অদৃষ্ঠ শক্তি আমাকে কঠিনভাবে চাপ দিচ্ছে। আর একটা কথাই মনে পড়ছিল ‘এভাবেইতো মানুষ মারা যায়’।
আলম ভাই উপরে উঠার জন্য বেশ চেষ্টা করছিল। একপর্যায় তার এক পা মটরের সাথে লেগে যায়। আল-আমিন দাড়িয়ে দাড়িয়ে শুধু দেখছিল। তার মধ্যে এমন কোন ভাবের উদ্বেগ হয়নি যে, কাউকে ডেকে আনবে। পর-পর দুইটি চিৎকার শুনে বাইরে থেকে ফুফা জিজ্ঞাসা করলেন, ক্যারে আলামিন কি অইছে? আল-আমিন ভাবল, তার
যদি কোন দোষ হয়ে থাকে বা তার জন্যই যদি আমরা বিপদে পড়ে থাকি তবে তার রেহাই নাই। তাই সে অত্যন্ত ভয়ে তার বাবাকে উত্তর করল ‘আমি না, ওরা দুইজন!’ ফুফাও বুঝতে পারলেন না আমাদের কি হয়েছে।
আলম ভাই কোনরকমে মটর থেকে পা সরাতে না সরাতেই ডান হাত কলের কলের সাথে লেগে যায়। ঘরের চার কোণার খুটি ছিল সিমেন্টের তৈরী। আর মাঝের খামগুলো বাঁশের । সিঁড়ির নিম্মাংশ বরাবর বাঁশের খুটি ছিল। বাম হাত দিয়ে খুটির গোডা ধরে উপরে উঠার জন্য বল প্রয়োগ করলে বাঁশের নরম খুটিটি উপড়ে যায় এবং তিনি ব্যর্থ হন। অন্য একটি খুটি ধরে সজোরে বল প্রয়োগ করলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হতে রক্ষা পান। কিন্তু তিনি অতিব দুর্বল হয়ে পড়েন। সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠার মত জ্ঞান থাকলেও শক্তি নেই। কিন্তু আমাকে বাঁচাবার প্রবল ইচ্ছাশক্তি ছিল তার। সেই মনোবলেই তিনি উঠতে পেরেছিলেন। সমতল মেঝেরও একমাথা উপরে মটরের সুইচ। ওই সুইচ ধরতে গিয়েও দু-দুবার পড়ে যাবার উপμম হয়েছিলেন তিনি। এই দৃশ্য আমি ঘাড় ফিরায়ে দেখছিলাম। তৃতীয়
বারের মত তিনি সুইচটা বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছেন। আর আমি কঠিনতম যন্ত্রনা থেকে নিস্কৃতি পেয়েছিলাম ওই মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় এবং আলম ভাইয়ের সদেচ্ছায় অন্তত ৩৫-৪০ সেকেন্ড পর।
আমি উপরে উঠতে উঠতেই আলম ভাই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। আমি তাকে মেঝে শুয়াবস্থায় রেখে দৌড়ে যাই তাদের বাড়ীতে। ভাবীর সামনে কথাগুলো বলতে গিয়ে আমার কথার জড়তা লক্ষ্য করি। তখন বুঝতে পারি
আমার জিহ্বার কি অবস্থা হয়েছে। বাড়ি থেকে এবং আশ-পাশের সকলেই ঘটনাস্থলে হাজির হয়। কেউ হাত পা টিপে দিচ্ছে আবার কেউ পায়ের সেন্ডেল খুলে তাকে পেটাচ্ছেন। আমি ভাবলাম অজ্ঞান না হয়েই ভাল আছি
নইলে আমারও সেন্ডেলের বারি খেতে হতো।
আলম ভাইয়ের জ্ঞান ফিরার সাথে সাথেই আমার কথা জিজ্ঞাসা করলেন, জানতে চাইলেন, ‘আমি কেমন আছি।’ উঠে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলেন। কেউই অশ্রু সংবরণ করতে পারলাম না। এ ঘটনার কথা মনে হলে এখনো
আমার গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যায়।
আলম ভাইয়ের সাথে পরবর্তী কোন সময়ে সাক্ষাত হলেই তিনি মশকরা করে বলে উঠেন, “চল্ আর একদিন পানি দিতে যাই।” কোনদিন তার মনে না থাকলে আমি তাকে মনে করিয়ে দিয়ে বলে থাকি, “মেশিন ঘরে আবার
কবে আসব?”
ঙ্গামার মধ্যে নাই। স্বতন্ত্র ভাবেই চলা ফেরা করে। বড়জোর দুই একজনের সাথে মেলামেশা করে। ফুফাকে সে প্রচন্ড রকমের ভয় পায়। কারণ, ঊনিশ থেকে বিশ হলেই বেধড়ম পেটাতে থাকেন ফুফা। তিনি খুব রাগি মানুষ।
মারতে থাকলে কেউ তাকে ঠেকাতে পারে না। ইচ্ছামত মারতে থাকেন, অজ্ঞান হোক আর রক্তাক্ত হোক তাতে ফুফার কিছুই যায় আসে না। আল-আমিনকে ততটা মার খেতে না হলেও বড় দুই ভাইকে মারতে দেখেই সব সময় ভয়ার্ত প্রাণে পথ চলে সে।
আলম ভাই এসে কলে পানি ঢেলে চাপতে লাগলেন। পানি উঠে এলো। গর্ত হতে উঠে এসে আমাকে নিচে গিয়ে কল চাপতে বললেন, নয়ত মটরের সুইচ অন করলে পানি উঠবে না। আলম ভাই উপরে মটরের সুইচ অন করার জন্য অপেক্ষা করছেন আর আমি নিচে কল চাপছিলাম। কল থেকে পানি বেরতে হতে লাগল। আমাকে আরও দ্রুত চাপতে বলা হল যাতে সুইচ অন করলেই সহজে পানি বের হয়ে আসে। আমি আরও দ্রুত চাপতে শুরু
করলাম। আমার পিছনে মাথার উপর পর্যন্ত মাটির দেওয়াল। বাম পাশেই উপরে উঠার বা নিচে নামার সরু আকৃতির সিঁড়ি ঘরের বেড়ার সহিত লাগানো।
আলম ভাই সুইচ অন করলেন আর তাকিয়ে আছেন ঘরের সম্মুখে হাউস অভিমুখি পাইপের মাথায় পানি বের হয় কি না তা দেখার জন্যে। অন্যদিকে সুইচ অন করার সাথে সাথে মটরের সাথে সংশিষ্ট কলটি মৃদু কম্পিত হয়ে পাইপের মাথায় পানি পড়ে পড়ে ভাব, বের হয় হয় না। এমতাবস্থায় আমার আপাদমস্তক সমুদ্রের বিশাল তরঙ্গের মত ঢেউ বইতে লাগল। সমুদ্রের ঢেউ অনুভব করলে চিত্ত হরষিত হয়ে উঠে, আর এ ঢেউ সুখের নয় শোকের, আতঙ্কের। আমি বুঝতে পারলাম আমি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছি। আমি আমার অজান্তেই অনেক জোরে এক চিৎকার করলাম। বুঝতে পারিনি যে আমি চিৎকার করেছি। আলম ভাই আমার চিৎকার শুনে বুঝতে পারেন নাই যে, আমি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছি। তিনি বোধ করলেন পানি উঠতে দেখে উচ্ছাসভরা মনে হৈ-চৈ করে উঠেছি, পানি উঠেছে,
পানি উঠেছে ! আমি চুপ-চাপ দাড়িয়ে আছি আর কাঁপতেছি। কল চাপতে পারছি না। আলম ভাই মনে করলেন, শুধু শুধু দাড়িয়ে আছি কল চাপছিনা। সে ওই সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে আমাকে সরিয়ে দিতে চাইলেন। হাত দিয়ে সরিয়ে দেবার জন্য ধাক্কা দিলেন বললেন, ‘সর’। সাথে-সাথে তিনিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে চিৎকার করলেন, তাও শুনতে পেলাম না। কলের হাতল ছাড়তে চেষ্টা করছিলাম কিন্তু হাতল আমাকে ছাড়ল না। শুধু ঝাকুনি
খাইতেছিলাম। সমস্ত শরীরের ঝাকুনিটা পড়তেছিল জিহ্বার উপর। উপরের পাটি আর নিচের পাটির দাতের আঘাতে-আঘাতে জিহ্বা ক্ষত-বিক্ষত, থেতলিয়ে রক্তাক্ত হয়ে গিয়েছিল। এসব কিছুই বুঝতেছিলাম না। শুধু
অনুভব করছিলাম কোন এক অদৃষ্ঠ শক্তি আমাকে কঠিনভাবে চাপ দিচ্ছে। আর একটা কথাই মনে পড়ছিল ‘এভাবেইতো মানুষ মারা যায়’।
আলম ভাই উপরে উঠার জন্য বেশ চেষ্টা করছিল। একপর্যায় তার এক পা মটরের সাথে লেগে যায়। আল-আমিন দাড়িয়ে দাড়িয়ে শুধু দেখছিল। তার মধ্যে এমন কোন ভাবের উদ্বেগ হয়নি যে, কাউকে ডেকে আনবে। পর-পর দুইটি চিৎকার শুনে বাইরে থেকে ফুফা জিজ্ঞাসা করলেন, ক্যারে আলামিন কি অইছে? আল-আমিন ভাবল, তার
যদি কোন দোষ হয়ে থাকে বা তার জন্যই যদি আমরা বিপদে পড়ে থাকি তবে তার রেহাই নাই। তাই সে অত্যন্ত ভয়ে তার বাবাকে উত্তর করল ‘আমি না, ওরা দুইজন!’ ফুফাও বুঝতে পারলেন না আমাদের কি হয়েছে।
আলম ভাই কোনরকমে মটর থেকে পা সরাতে না সরাতেই ডান হাত কলের কলের সাথে লেগে যায়। ঘরের চার কোণার খুটি ছিল সিমেন্টের তৈরী। আর মাঝের খামগুলো বাঁশের । সিঁড়ির নিম্মাংশ বরাবর বাঁশের খুটি ছিল। বাম হাত দিয়ে খুটির গোডা ধরে উপরে উঠার জন্য বল প্রয়োগ করলে বাঁশের নরম খুটিটি উপড়ে যায় এবং তিনি ব্যর্থ হন। অন্য একটি খুটি ধরে সজোরে বল প্রয়োগ করলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হতে রক্ষা পান। কিন্তু তিনি অতিব দুর্বল হয়ে পড়েন। সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠার মত জ্ঞান থাকলেও শক্তি নেই। কিন্তু আমাকে বাঁচাবার প্রবল ইচ্ছাশক্তি ছিল তার। সেই মনোবলেই তিনি উঠতে পেরেছিলেন। সমতল মেঝেরও একমাথা উপরে মটরের সুইচ। ওই সুইচ ধরতে গিয়েও দু-দুবার পড়ে যাবার উপμম হয়েছিলেন তিনি। এই দৃশ্য আমি ঘাড় ফিরায়ে দেখছিলাম। তৃতীয়
বারের মত তিনি সুইচটা বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছেন। আর আমি কঠিনতম যন্ত্রনা থেকে নিস্কৃতি পেয়েছিলাম ওই মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় এবং আলম ভাইয়ের সদেচ্ছায় অন্তত ৩৫-৪০ সেকেন্ড পর।
আমি উপরে উঠতে উঠতেই আলম ভাই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। আমি তাকে মেঝে শুয়াবস্থায় রেখে দৌড়ে যাই তাদের বাড়ীতে। ভাবীর সামনে কথাগুলো বলতে গিয়ে আমার কথার জড়তা লক্ষ্য করি। তখন বুঝতে পারি
আমার জিহ্বার কি অবস্থা হয়েছে। বাড়ি থেকে এবং আশ-পাশের সকলেই ঘটনাস্থলে হাজির হয়। কেউ হাত পা টিপে দিচ্ছে আবার কেউ পায়ের সেন্ডেল খুলে তাকে পেটাচ্ছেন। আমি ভাবলাম অজ্ঞান না হয়েই ভাল আছি
নইলে আমারও সেন্ডেলের বারি খেতে হতো।
আলম ভাইয়ের জ্ঞান ফিরার সাথে সাথেই আমার কথা জিজ্ঞাসা করলেন, জানতে চাইলেন, ‘আমি কেমন আছি।’ উঠে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলেন। কেউই অশ্রু সংবরণ করতে পারলাম না। এ ঘটনার কথা মনে হলে এখনো
আমার গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যায়।
আলম ভাইয়ের সাথে পরবর্তী কোন সময়ে সাক্ষাত হলেই তিনি মশকরা করে বলে উঠেন, “চল্ আর একদিন পানি দিতে যাই।” কোনদিন তার মনে না থাকলে আমি তাকে মনে করিয়ে দিয়ে বলে থাকি, “মেশিন ঘরে আবার
কবে আসব?”
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।