তালহার অসমাপ্ত স্বপ্ন
গ্রীষ্মকালীন এক সপ্তাহ বন্ধ হয়েছে তালহার স্কুল। তালহা মতিজিল আইডিয়্যাল স্কুলে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে। বাবা ব্যাংকে চাকুরী করেন আর মা গৃহিনী। তালহার স্কুল বন্ধ হওয়ায় নানু বাড়িতে বেড়াতে যাবে। নানু বাড়িতে শুধু নানু আর মামা থাকেন। তালহার বয়স একবছর থাকতে নানা মারা গেছেন।
অনেক দিন হয়ে গেছে নানা বাড়ি যাওয়া হয়নি। সেই তৃতীয় শ্রেণীতে থাকতে গিয়েছিল। তালহার নানু বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায়।
নানু বাড়ি অনেক বিশাল। বাড়ির একপাশে ফুলের বাগান, পিছনে বড় পুকুর, বাড়িতে অনেক গাছগাছালি। বাড়ির মধ্যে অনেক ধরনের ফলের গাছ রয়েছে আম, জাম কাঠাল, কামরাঙ্গা, আতাফল, পেয়ারা, পেপে ইত্যাদি। বাড়ির সকল কিছু তার মামা দেখাশোনা করেন। তিনি খুব সৌখীন ও প্রকৃতি পরায়ণ তাই বাড়িকে মনের মতো সাজিয়ে রেখেছেন। তালহার নানু বাড়ি খুব ভালো লাগে।
তালহা নানুর সাথে ফোনে কথা বলেছে। নানুকে বলেছে আমি আসলে অনেক গল্প শুনাতে হবে, সাথে কোরআন পড়া ও নামাজ শিখাতে হবে। আগের বার নানুর কাছে কালেমা থেকে দুয়া কুনুত পর্যন্ত মুখস্ত শিখেছিল। তালহার নানু বাড়িতে ভোরে এলাকার ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা নানুর কাছে মক্তবের শিক্ষা নিতে আসে। তাদের সাথে তালহার ও পড়তে ভালো লাগে।
তালহা স্কুলে আর্ট শিখেছে। সে নানু কে দেখানোর জন্য নানু বাড়ির ছবি এঁকেছে।
তালহা ফোনে মামাকে বলেছে- আমাকে সাঁতার শিখাতে হবে, বেড়াতে নিয়ে যেতে হবে আর আমার জন্য একটা শালিক পাখি এনে দিতে হবে। আমি তাকে কথা বলা শিখাবো। স্কুল থেকে এসে তার সাথে খেলা করবো।
মামা বলেছেন বাবা তুমি আসো, তোমার জন্য সবকিছু তৈরি আছে।
তালহা ও তালহার আম্মু যাবার জন্য বের হলেন। বাবার ব্যাংক বন্ধ হয়নি তাই যেতে পারবেন না। রাত ১০ টায় তাদের বাস ছাড়বে। অনেক দূরের রাস্তা সকাল হয়ে যাবে পৌঁছাতে। আব্বু তাদের কে বাসে তুলে দিলেন। তাদের সিট সামনে পড়েছে। আব্বু তালহাকে বললেন - বাবা একদম দুষ্টুমি করবে না। মাকে না বলে কোথাও যাবে না। তালহা বাধ্য সন্তানের মতো বললো ঠিক আছে আব্বু। বাবা আদর করে গাড়ি থেকে নেমে গেলেন। গাড়ি ছেড়ে দিয়েছে। বাস এগিয়ে যাচ্ছে তালহার নানু বাড়ির দিকে। তালহা নানু বাড়িতে গিয়ে কি করবে কল্পনা করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েছে। তালহাদের গাড়ির ড্রাইভার খুব দ্রুত গাড়ি চালাচ্ছে। বাসের কয়েক জন লোক নিষেধ করলেন তাড়াহুড়া না করার জন্য কিন্তু ড্রাইভার কানেই দিচ্ছে না, এর মধ্যে মাঝে মধ্যে ফোনে কথা বলছে। তালহার মা খুব চিন্তিত, এমন ভাবে গাড়ি চলছে যদি এক্সিডেন্ট হয়।তিনি তালহাকে জড়িয়ে ধরলেন। যে হারে প্রতিদিন এক্সিডেন্ট বাড়ছে। প্রতিদিন টিভি ও প্রত্রিকা খুললেই এসব খবর পাওয়া যায়। এসব চিন্তা যখন ভর করেছে তখন হঠাৎ করে বাইপাস রাস্তা থেকে একটি ট্রাক মেইন রোডে উঠে পড়লো, তালহাদের গাড়ির অনেক গতি থাকায় নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে ট্রাকের সাথে ধাক্কা লাগলো । মূহুর্তেই সম্পূর্ণ গাড়ি শেষ হয়ে গেলো। এক্সিডেন্টের খবর পেয়ে ফাড়ি থেকে পুলিশ আসছে। পাশের এলাকা থেকেও লোকজন আসছে। সবাই এক্সিডেন্ট থেকে হতবাক হয়ে গেছে। গাড়ির ভিতর থেকে কান্নার আওয়াজ আসছে । এ যেন কারবালা প্রান্তর। এ্যাম্বুলেন্স আনা হলো, আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হলো। নিহতের সংখ্যা অনেক। নিহতের লাশ গাড়ি থেকে বের করে সারিবদ্ধ ভাবে রাখা হলো। তার মধ্যে তালহা ও তার আম্মুর একসাথে নিস্তেজ দেহ। তালহা তার প্রিয়জন সবাইকে অপেক্ষমাণ রেখে না ফেরার দেশে চলে গেছে। তার সকল স্বপ্ন রক্তের সাগরে ভাসিয়ে দিয়েছে অদক্ষ ও অসচেতন গাড়ির চালকেরা। এভাবেই প্রতিদিন কতো তালহার স্বপ্ন কেড়ে নিচ্ছে রোড এক্সিডেন্ট।
অনেক দিন হয়ে গেছে নানা বাড়ি যাওয়া হয়নি। সেই তৃতীয় শ্রেণীতে থাকতে গিয়েছিল। তালহার নানু বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায়।
নানু বাড়ি অনেক বিশাল। বাড়ির একপাশে ফুলের বাগান, পিছনে বড় পুকুর, বাড়িতে অনেক গাছগাছালি। বাড়ির মধ্যে অনেক ধরনের ফলের গাছ রয়েছে আম, জাম কাঠাল, কামরাঙ্গা, আতাফল, পেয়ারা, পেপে ইত্যাদি। বাড়ির সকল কিছু তার মামা দেখাশোনা করেন। তিনি খুব সৌখীন ও প্রকৃতি পরায়ণ তাই বাড়িকে মনের মতো সাজিয়ে রেখেছেন। তালহার নানু বাড়ি খুব ভালো লাগে।
তালহা নানুর সাথে ফোনে কথা বলেছে। নানুকে বলেছে আমি আসলে অনেক গল্প শুনাতে হবে, সাথে কোরআন পড়া ও নামাজ শিখাতে হবে। আগের বার নানুর কাছে কালেমা থেকে দুয়া কুনুত পর্যন্ত মুখস্ত শিখেছিল। তালহার নানু বাড়িতে ভোরে এলাকার ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা নানুর কাছে মক্তবের শিক্ষা নিতে আসে। তাদের সাথে তালহার ও পড়তে ভালো লাগে।
তালহা স্কুলে আর্ট শিখেছে। সে নানু কে দেখানোর জন্য নানু বাড়ির ছবি এঁকেছে।
তালহা ফোনে মামাকে বলেছে- আমাকে সাঁতার শিখাতে হবে, বেড়াতে নিয়ে যেতে হবে আর আমার জন্য একটা শালিক পাখি এনে দিতে হবে। আমি তাকে কথা বলা শিখাবো। স্কুল থেকে এসে তার সাথে খেলা করবো।
মামা বলেছেন বাবা তুমি আসো, তোমার জন্য সবকিছু তৈরি আছে।
তালহা ও তালহার আম্মু যাবার জন্য বের হলেন। বাবার ব্যাংক বন্ধ হয়নি তাই যেতে পারবেন না। রাত ১০ টায় তাদের বাস ছাড়বে। অনেক দূরের রাস্তা সকাল হয়ে যাবে পৌঁছাতে। আব্বু তাদের কে বাসে তুলে দিলেন। তাদের সিট সামনে পড়েছে। আব্বু তালহাকে বললেন - বাবা একদম দুষ্টুমি করবে না। মাকে না বলে কোথাও যাবে না। তালহা বাধ্য সন্তানের মতো বললো ঠিক আছে আব্বু। বাবা আদর করে গাড়ি থেকে নেমে গেলেন। গাড়ি ছেড়ে দিয়েছে। বাস এগিয়ে যাচ্ছে তালহার নানু বাড়ির দিকে। তালহা নানু বাড়িতে গিয়ে কি করবে কল্পনা করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েছে। তালহাদের গাড়ির ড্রাইভার খুব দ্রুত গাড়ি চালাচ্ছে। বাসের কয়েক জন লোক নিষেধ করলেন তাড়াহুড়া না করার জন্য কিন্তু ড্রাইভার কানেই দিচ্ছে না, এর মধ্যে মাঝে মধ্যে ফোনে কথা বলছে। তালহার মা খুব চিন্তিত, এমন ভাবে গাড়ি চলছে যদি এক্সিডেন্ট হয়।তিনি তালহাকে জড়িয়ে ধরলেন। যে হারে প্রতিদিন এক্সিডেন্ট বাড়ছে। প্রতিদিন টিভি ও প্রত্রিকা খুললেই এসব খবর পাওয়া যায়। এসব চিন্তা যখন ভর করেছে তখন হঠাৎ করে বাইপাস রাস্তা থেকে একটি ট্রাক মেইন রোডে উঠে পড়লো, তালহাদের গাড়ির অনেক গতি থাকায় নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে ট্রাকের সাথে ধাক্কা লাগলো । মূহুর্তেই সম্পূর্ণ গাড়ি শেষ হয়ে গেলো। এক্সিডেন্টের খবর পেয়ে ফাড়ি থেকে পুলিশ আসছে। পাশের এলাকা থেকেও লোকজন আসছে। সবাই এক্সিডেন্ট থেকে হতবাক হয়ে গেছে। গাড়ির ভিতর থেকে কান্নার আওয়াজ আসছে । এ যেন কারবালা প্রান্তর। এ্যাম্বুলেন্স আনা হলো, আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হলো। নিহতের সংখ্যা অনেক। নিহতের লাশ গাড়ি থেকে বের করে সারিবদ্ধ ভাবে রাখা হলো। তার মধ্যে তালহা ও তার আম্মুর একসাথে নিস্তেজ দেহ। তালহা তার প্রিয়জন সবাইকে অপেক্ষমাণ রেখে না ফেরার দেশে চলে গেছে। তার সকল স্বপ্ন রক্তের সাগরে ভাসিয়ে দিয়েছে অদক্ষ ও অসচেতন গাড়ির চালকেরা। এভাবেই প্রতিদিন কতো তালহার স্বপ্ন কেড়ে নিচ্ছে রোড এক্সিডেন্ট।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।