তিন ধারা
এক- "অসিম তুই আজ বিকেলে মাঠে অসিম কাজ আছে। আর শোন তুই স্বজলকেও ডেকে আনিস। ঠিক আছে! মাথা নেড়ে জবাব দিল অসিম।স্বপনের কথাগুলো আসলে তারা একটু আগ্রহের সাথে শোনে, কেননা সে এদের ছাড়া দুই বছরের সিনিয়র। তাই বাধ্য হয়ে শুনতে হয় তা নয় বরং সে সিদ্ধান্তের বেলায় একটু পটু ও আছে। আর দুই বছরের সিনিয়র যে বয়সের বেলায় তা নয় বরং দুই ক্লাস উপরে পড়ে সে। বাবার একমাত্র ছেলে হওয়ায় আদর যত্নে একবারে কম পায় বললে মহাভারত অশুদ্ধ হওয়ার উপক্রম আছে। তবে বাবা স্কুল শিক্ষক হওয়ায় তাকে একটু বাড়ির দেখাশুনার কাজ করতে হয়। দায়িত্ব বলে চাকরিটা ছোট বেলা থেকেয় তার মাথায় চেপে বসেছে। এই নিয়ে তার বেরে ওঠা। ওদিকে স্বজল একটু মেয়েলি টাইপের। তার কন্ঠস্বর মেয়েদের মত। দেয়ালের আড়াল থেকে যদি ভাইয়া বলে একটা ডাক দেয়। তাহলে নি:সন্দেহে সকলেই ধরে নেবে কোন ১৬ বছরের যুবতি মেয়ে এক বুক আশা নিয়ে খুব নিকটতম কাউকে সম্বধন করছে।একবার স্বজল ও অসিম স্কুল হতে আসার পথে তাকে হঠাৎ ভ্যান ও খালার সাথে কথা বলতে হয়েছিল। তো বেচারা ভ্যান ড্রাইভার মধুর কথায় বিস্মিত হয়ে আছে পাশে ডাকের উৎস খুজতে ব্যাস্ত হয়ে গিয়েছিল। শুধু তাই নয় মাঝে মধ্যে টিফিন ক্লাসের ছেলেরা তাকে নিয়ে মসকরা শুরু করে দিত। প্রথমে স্বজলের মায়েরকোন মেয়ে ছিল না। তাই কাজের জন্য তার মাকে সবসময় ব্যাস্ত থাকতে হতো। তাই কাজের কিছু অংশ স্বজল দায়িত্ব হিসেবে হাতে নিয়েছিল। সে রান্না করতে জানত ঠিক তার মায়ের মতোই। গোয়ালের কাজ ও কম বেশি জানত। যেমন- গরুর দুধ দহন করা জল খাওয়ানো ইত্যাদি। হাঁস মুরগি পালন ছিল তার অন্যতম একটা পেশা। তবে অসিম ও স্বপন পুরাটাই ভিন্নধর্মি। হওয়ায় সজল তার এই সাধনায় বেশিদুর অগ্রসর হতে পারেননি। পড়াশুনায় যে সে খুব একটা ভাল তা নয়।আর অসিম ছেলেটা সাধারন ছেলেটার থেকে ভিন্নধর্মি। সে দিনের আঠারো ঘন্টা চিন্তার উপর কাটাতো। কোন একটা জিনিসের মডেল দেখলে সে সেটা তৈরি করতে পারতো। প্রত্যেকটা জিনিস নিয়ে চিন্তা করাটাই ছিল তার স্বভাব। এ নিয়ে অনেক মাখামাখি। কখনো কখনো একা একা কথা বলত গাছের নিচে। একা একা ঘুরে বেড়ায়। ফসলের মাঠে নরম ঘাসের উপর দিয়ে হাঁটাচলা। সুর্য্য যখন অস্তমিত থাকে তখন বিশেষ একটা সময় সে চিন্তার সাগরে হাবুডুবু খেতে থাকে।পাথ দিয়ে কেউ ডেকে গেলেও সে যেন শুনতে পায় না। অথ্যাত সে শোনার জন্য তখন প্রস্তুত ছিল না। এ নিয়ে বন্ধু বান্ধবের মাঝে অনেক ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকে। কিন্তু এতে সে ইচ্ছা করলেও তার সাধনা থামাতে পারে না। আমার মতে না থামানোই ভালো, কেননা কোন নদী চলার পথে যদি হটাৎ থেমে যায় তাহলে দিনের পর দিন অস্তিত্ব হারায়। তাই এটি মন্দের ভালো। তার চিন্তার বিষয় গুলো হলো- মানুষের জীবন ধারা, প্রকৃতি বা বৈজ্ঞানিক ত্বত্ত এ সবধরনের। কখনো মহাজগৎ নিয়েও তার চিন্তার পরিধী গড়ে উঠত। কখনো কখনো পাখির ডাক নকল করতেও সে পছন্দ করত। আবার এই পাখির ডাকের মাঝেই মনের অজান্তেই সে হারিয়ে যেত। অনেক দুর হতে অদৃশ্ব্য পাখির অস্তিত্ব সে অনুভব করত। তার ভাবনা, চিন্তা, চেতনা সবই ছিল অসম্ভব ধরনের। কখনো কখনো গভীর রাতের স্বপ্ন আর বাস্তবকে আলাদা করতে তার অনেক কষ্ট হত। ছোটবেলায় যখন সে হাটত, চলত, খেলা করত, সে যেন মনো জাগতিক চিন্তার মাঝে সে হাসি খেলা চলাফেরা করত।একদিন সে রাতে একা একা ডিনার করছে, তখন অনেক ছোটমাত্র ক্লাস এখানে পড়ে। তো হঠাৎ সে বলছে তার খাওয়ার প্লেট থেকে কে যেন হাত বাড়িয়ে খাবার নিয়ে চলে গেছে। এই কথা শুনে তার বাবা-মা ও ভাই চলে আসল এবং কক্ষের ইদুরের খাঁদ পর্যন্ত তিল্লি তিল্লি করে খোঁজ করল কিন্তু কিছুই পেলনা। সবাই চলে গেল আর বলল অসিম তোমার ভুল হয়েছে। আসলে কিছুই আসেনি। কিছুখন পর সে একা একা কথা বলা শুরু করল। আজ যেন অদৃশ্য অনুভুতির সাথে তর্কা তর্কি করছে। সেগুলো ঠিক এরকম ছিল:-অসিম: তুই আজ আবার আমার রুমে এসেছিস কেন?অনুভুতি: এসেছি তো ঠিক হয়েছে! আমি যে তোকে না দেখে থাকতে পারিনা।অসিম: কিন্তু শয়তান তুই তো আমার কষ্ট দিস। তুই যখন আসিস আমার দম আটকে আসে। চোখ খুলতে পারিনা। বুকে প্রচন্ড ব্যাথা করে।অনুভুতি: তো কি করবো ওইগুলো তো আমি ইচ্ছা করে দেয় না। আমরা যখন মানুষের সাথে দেখা করতে চাই তখন এ রকম হয়।অসিম: তো তোরা মানুষের খাবার হতে খাবার চুরি করিস কেন?অনুভুতি: না করলে আমরা খাব কী? এ জন্যই তো এ গুলো করতে হয়।অসিম: চোর কোথাকার! তোর কি অধর্মের ভয় নেই?অনুভুতি: দেখ তুই আমার চোর বলে গালি করবি না। আমি একদম চোর না।অসিম: দাড়া আমার বাবাকে ডেকে দিচ্ছি তোর চুরি করার স্বাধ একদম........এমন সময় পাশের রুম হতে তার বাবা এসে................
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সুশান্ত বিশ্বাস ২৬/০৮/২০১৭অ ন ব দ্য
-
কামরুজ্জামান সাদ ২৬/০৮/২০১৭লেখা ভাল হয়েছে